কেমন আছেন আপনারা? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার সহায়তায় ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবেসে উপস্থিত হলাম সুন্দর একটি বাংলা নাটক রিভিউ নিয়ে। বৃন্দাবন দাস রচিত জনপ্রিয় এই নাটকের নাম আলতা সুন্দরী। এই নাটকে মোট ৬২ পর্ব। আজকে আমি উপস্থিত হলাম ২৪ তম পর্ব রিভিউ করে শেয়ার করতে। চলুন তাহলে শুরু করি।

রহিম বাদশা গানের দলে নাম লেখানোর জন্য ইচ্ছা পোষণ করেছিল। কারন সে জানে যদি গানের দলে নিজের অংশগ্রহণ সম্ভব হয়, তাহলে সে খুব সহজেই আলতা সুন্দরীর সাথে দেখা করতে পারবে কথা বলতে পারবে। কিন্তু সে এখানে আসার পর লক্ষ্য করে দেখেছে গানের দলের ওস্তাদের কথার মূল্য যেন দিন দিন কমে যাচ্ছে। কেন জানি তাকে সবাই অ্যাভয়েড করে চলছে। এদিকে গানের দলের হাসেম জোয়ারে শহর থেকে নায়ক নায়িকা এনেছে গানের দলের ওস্তাদকে না বলে। এই নতুন নায়ক নায়িকা আনার বিষয়টা আরো যেন সমস্যা সৃষ্টি করেছে। আর তাদের উদ্ভট আচরণ গুলো মোটেও পছন্দ করছিল না রহিম বাদশা। দিন দিন যেন সে আলতা সুন্দরীর দেখার আশা নিরাশাই পরিণত হতে দেখছে। তাই তার কোন কিছুই ভালো লাগেনা এ সমস্ত বিষয়গুলো একটু বোঝার চেষ্টা করে ওস্তাদের পরিবারের কাছে। কিন্তু সুযোগে দেখা যায় ওস্তাদের মেয়ে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করে সে নিজেই আলতা সুন্দরী। কিন্তু মাসুমাকে কখনোই আলতা সুন্দরী হিসাবে রহিম বাদশা গ্রহণ করবে না। সে স্বচক্ষে হালদা সুন্দরীকে দেখেছে একাধিকবার এবং তার সাথে চলতি পথে তাল লেগেছে একবার। তাই সে খুব ভালো করে আলতা সুন্দরী কে চিনে। আর এগুলো বলার মধ্য দিয়ে যেন হালকা হতে পারে। কিন্তু কথায় কথায় লক্ষ্য করে দেখা গেল ওস্তাদের স্ত্রী তাকে বুঝতে পারল না। সেও একটু উল্টাপাল্টা কথা বলল রহিম বাদশা কে। এরপর রহিম বাদশা তার বেশ কিছু কষ্টের অনুভূতি প্রকাশ করল এতে ওস্তাদের স্ত্রী মর্মাহত হল। আর এরপরে সে তাদেরকে জানালো আর এই গ্রামে রহিম বাদশা আসবেনা। যেখানে আলতা সুন্দরীর সাথে তার আর দেখা হলো না সে আর কি করতে আসবে এখানে। তার এমন কষ্ট লাগার কথা শুনে সত্যিই কষ্ট পেলেও ওস্তাদের স্ত্রী।

গানের দলে উপস্থিত হওয়া নতুন নায়িকা যখন গান নাচ প্র্যাকটিস করতে থাকে তখন বাজানো হয় ক্লাসিক গান। বেশ কিছুটা সময়ের পর সে বলতে থাকে এই সমস্ত গানে তার নাচ হবে না। সে আধুনিক যুগের ডিজে গানের তালে নাচতে চাই। এদিকে নায়িকার সাথে নাচবে কে এই বিষয় নিয়ে যখন কথা ওঠে তখন সবাই উল্টাপাল্টা কথা নিয়ে গ্যাঞ্জাম সৃষ্টি করার চেষ্টা করে। গানের দলের ভিলেন আর হাসেম জোয়ারী বলেছিল নতুন নায়িকার সাথে নতুন নায়ক নাচবে। তখন দেখা যায় নায়িকা নতুন নায়কের সাথে নাচতে রাজি হন না, কারণ সে নাচ জানে না। এদিকে পুরাতন নায়ক অর্থাৎ মেচের নায়কের সাথে নাচার সম্মতি প্রকাশ করে। অনেকে বলাবলি করছিল নায়িকা নাকি পুরাতন নায়কের সাথে নাচবে না। তখন নায়িকা বলেছিল আমি কখনো একথা বলি নাই আমার নামে মিথ্যা বলে আছে কেউ। তখন দেখা গেল মিথ্যা কথা প্রকাশ পেয়ে গেল এবং পুরাতন নায়কের মান মর্যাদা ফিরে আসলো। এরপর নতুন নায়িকা আর পুরাতন নায়ক একসাথে নাচতে থাকলো।

নতুন নায়ক সবসময় মিথ্যা কথা বলে গানের দলের ভিলেনকে বোঝানোর চেষ্টা করে। সে এভাবে গানের দলের ভিলেনের কাছে কথা বলে যে বিভিন্ন সিনেমায় সে অভিনয় করেছে। শহরের মানুষজন তার অভিনয় দেখার জন্য পাগল। তার অনেক ফ্যান ফলোয়ার রয়েছে। এমন ভাবে মিথ্যা বলা শুরু করে যেন নসু ভিলেন তার কথায় মেতে ওঠে। আর এভাবে একটা মুহূর্তে দেখা যায় গানের দলের আগত নতুন নায়ক মনের মত মিথ্যা কথা বলতে থাকে এবং ভিলেনের কাছে বড় হওয়ার চেষ্টা করতে থাকে। তবে কথায় কথায় একটি পর্যায়ে নসু লিলেন স্বীকার করে কোন এক সিনেমায় তাকে দেখেছে। কিন্তু সিনেমার নামটা কি ছিল নায়কের কাছে জানতে চাইলে নায়ক বলতে পারে না। এখানে তার চিটারি কথাবাত্রা প্রকাশ পায়। তাই সে কথাটা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য নসু ভিলেন কে বলে সে সিনেমা দেখেছে, সিনেমায় তাকে দেখেছে কিন্তু সিনেমার নামটা মনে রাখেনি কেন। এখানেই নসু ভিলেন একটু কনফিউজড হয়ে যায়।

এদিকে পথ চলতে গিয়ে হাসেম জুয়ারী গুলজার কে দেখে উল্টাপথে চলে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু গুলজার তাকে দেখে ডাকা শুরু করলো। কারণ গুলজার জানে হাসেম জোয়ারী শহর থেকে নায়ক নায়িকা এনেছে গানের দলে যুক্ত করেছে কিন্তু গুলজার যে গানের দলে ঢোকার জন্য অনেকদিন ধরে চেষ্টা করছে কেন সে গুলজারের কথা রাখল না। এক পর্যায়ে দেখা গেল বিভিন্ন কথার মধ্য দিয়ে হাশেম জুয়ারি গুলজার কে বোঝানোর চেষ্টা করল নতুন নায়িকার মাধ্যমে কৌশল করে গুলজার কে গানের দলে আনবে হাসান জোয়ারী। তবে কোনোভাবেই যেন গুলজার তার কথা মন থেকে মেনে নিতে পারছিল না। তবে হাসান দুয়ারী কৌশল করে এই চিন্তা মন থেকে আউট করে দিয়ে কিভাবে আবারো জুয়া খেলায় গুলজার কে আনা যায় সে প্রচেষ্টা চালিয়ে গেল। এক মুহূর্তে দেখা যায় গুলজার বিষ খাওয়ার চিন্তা মুখে নিয়েছিল। তার বোনের কাছে বিষের কথা বলেছিল। সে সমস্ত চিন্তাগুলো তার মাথা থেকে আউট হয়ে গেছে। সে এখন নতুন স্বপ্ন দেখছে কিভাবে গানের দলে যুক্ত হওয়া যায়।

আলতা সুন্দরী নাটকের এই পর্বে আমরা সবচেয়ে বেশি সুকৌশলীবুদ্ধি লক্ষ্য করেছি হাসেম জোয়ারের মধ্যে। সে কৌশল করে গানের দলের মধ্যে নিজের অধিকার বিস্তার লাভ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে যেন গানের দলের ওস্তাদ দলের কেউ নয় হাসেম জোয়ারী সব। কারণ হাসন জোয়ারে জানে গানের দল যদি সচল হয় তার জুয়া খেলা জমবে ভালো ইনকাম হবে ভালো। তাই নিজের মতো করে গানের দলটাকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার চিন্তা করছে। কিন্তু গানের দলের কেউ তাকে মান্য করার চেষ্টা করছে না, শুধুমাত্র নসু ভিলেন তার পক্ষ নিয়েছে। নতুন নায়িকা কে নিজের মতো করে পরিচালনা করার চিন্তা করছিল কিন্তু একটি পর্যায়ে লক্ষ্য করা যায় নতুন নায়িকা পুরাতন নায়কের সাথেই নাচ গান করতে চায়। এ তো জানো গানের দলের ভাবমূর্তি সঠিক পর্যায়ে ফিরে আসার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়াও রোহিম বাদশার মনের কষ্টটা মনেই রয়ে গেল দেখা হলো না আলতা সুন্দরী সাথে। নতুন নায়িকা পুরাতন নায়কের সাথে নাচার কারণে নায়ক মেসের বেশ আনন্দ পেল এবং গর্ভবোধ করলো। আর এভাবেই এই পর্বের সুন্দর অভিনয় আমরা উপভোগ করলাম। তবে আমি সর্বক্ষেত্রে বেশি লক্ষ্য করেছি হাসেম জোয়ারির সু কৌশলটা। একদিকে বিউটি যেমন নিজের কৌশল অবলম্বন করে নাটকের বিভিন্ন পর্যায় সৃষ্টি করেছিল ঠিক তেমনি এখন লেগেছে হাসেম জোয়ারী। হয়তো হাসেম জোয়ারের জন্য আগামীতে আরো নতুন কিছু আশা করা যায়।

আমি মোছাঃ জান্নাতুল ফেরদৌস শশী। বাসা গাংনী মেহেরপুর, বাংলাদেশ। আমি আপনাদের bidyut01 এর পরিবার। আমি একজন গৃহিণী। স্বামী সন্তান সহ আমাদের যৌথ পরিবার। এক পরিবার থেকে "আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে" চারজন সদস্য রয়েছি। এইচএসসি পাশ করার পর বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে আমার লেখাপড়া স্থগিত হয়। আমার ভালোলাগা রেসিপি তৈরি, নাটক রিভিউ, ভিডিও ও ফটোগ্রাফি করা সহ ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। আমার ইচ্ছে আমি এই কমিউনিটিতে দীর্ঘদিন ব্লগ করব। পাশাপাশি আমার নিকটস্থ প্রিয়জনদের সহায়তা করব এই কমিউনিটিতে সদস্য হয়ে পোস্ট শেয়ার করার।