"আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা - ৪৮ || শীতকালীন ফটোগ্রাফি।

আসসালামু আলাইকুম

আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবৃন্দকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে অনেক ভাল আছি।

আজকে একটু ভিন্ন ধরনের পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।আজকে আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব শীতকালীন ফটোগ্রাফি।যেটি "আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা -৪৮ এর বিষয়বস্তু।আমি সকল মডারেটর ভাইদের ধন্যবাদ জানাই আমাদের মাঝে এত সুন্দর একটি প্রতিযোগিতা নিয়ে আসার জন্য।শীতকাল পছন্দ করে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।আমার মনে হয় সবাই শীতকালকে অনেক বেশি পছন্দ করে।আমিও শীতকাল অনেক ভালোবাসি।

বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ।গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত ও বসন্ত এই ছয় ঋতু নিয়েই আমাদের বাংলাদেশ।পৌষ ও মাঘ মাস নিয়ে শীতকাল।এখন হেমন্ত ঋতু চলছে।তবে সকালের কুয়াশা যেন শীতের আগমনের কথাই বলছে।শেষ রাতে এবং সকালের দিকে বেশ ভালোই শীত পড়ছে কিছুদিন।সকালের এই হালকা শীত আমার কাছে খুবই ভালো লাগে।তবে কুয়াশার জন্য বাইরে যেতে পারিনা। কোল্ড এলার্জি থাকার কারণে প্রচুর হাঁচি হয়। কিন্তু, প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য সবকিছুকে হার মানিয়ে সকালে বের হয়েছিলাম শীতকালের সুন্দর দৃশ্য ক্যামেরা বন্দি করতে।

সূর্যোদয়ের ফটোগ্রাফি

শীতকালে সকালের সূর্য যেন মানুষের মনে প্রশান্তি জাগায়।শীতকালে যখন সূর্য কুয়াশার চাদর ভেদ করে উঁকি দেয় তখন সেই মুহূর্তকে উপভোগ করার মজাই আলাদা। আজকের সকালটা আমার জন্য খুবই ভালো ছিল। হালকা শীতের মধ্যে যখন সূর্যের মিষ্টি রোদ গায়ে পড়ছিল তখন খুবই আরাম লাগছিল।

কুয়াশার চাদরে ঢাকা সকালের মাঠ

সকালের মাঠ দেখে মনে হয় যেন কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে আছে। এখন সকালে বেশ ভালই কুয়াশা পড়ে। কুয়াশার জন্য চারিদিকে কিছু দেখা যায় না। তবে আমি সূর্য ওঠার পরে মাঠে গিয়েছিলাম এবং ফটোগ্রাফিগুলো করেছিলাম। তাই মাঠে কুয়াশার পরিমাণ খুব বেশি নেই।

শিশির ভেজা সরিষা ফুল

শীতকালে আকর্ষণীয় জিনিসের মধ্যে রয়েছে সরিষা ফুল। সরিষা ফুল যেন শীতের সময়ে মাঠের সৌন্দর্য বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। এবং সরিষা ফুলের মিষ্টি গন্ধ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। সকালে যখন শিশিরের বিন্দু বিন্দু পানি সরিষা ফুলের উপর পড়ে তখন এই ফুল গুলো দেখতে খুবই চমৎকার লাগে।

শীতকালীন শাক-সবজি

শীত এমন একটা ঋতু, যে ঋতুতে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি চাষ করা হয়। এছাড়া শীতের সময় চাষ করা এই শাক-সবজিগুলো খেতেও অনেক সুস্বাদু হয়। আজকে আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব আমাদের সবজি বাগানে রোপন করা বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজির ফটোগ্রাফি। এই সমস্ত শাক-সবজি আমার বাবার নিজের হাতে চাষ করা।

মটর শাক :

মটর শাক আমার খুবই পছন্দের একটি খাবার। এই শাক তিতা হলেও খেতে খুবই সুস্বাদু। প্রতিবছরই শীতকালে আমাদের সবজি বাগানে, আমার বাবা এই মটর শাক রোপন করে।সকালে কুয়াশার বিন্দু বিন্দু পানি মটর শাকের উপর পড়েছে।

মুলা :

শীতের সময়ে মুলা একটি পরিচিত সবজি।অনেকেই এই সবজিটা খুবই পছন্দ করে। তবে আমার খেতে তেমন ভালো লাগেনা। তবে মুলার শাক আমার খুবই পছন্দের একটি খাবার।

উচ্ছে ফুল :

আমাদের সবজি বাগানে উচ্ছে গাছও আছে। এর স্বাদও খুবই তিতা। আমার বাবা এই সবজি খুবই পছন্দ করে।তবে আমার বেশি ভালো লাগে না।হলুদ রঙের উচ্ছে ফুলের উপরও শিশিরের পানি জমে আছে।

বরবটি:

আমাদের সবজি বাগানে চাষ করা গতবছরের বরবটির থেকে এবারের বরবটি যেন আরো বেশি সুন্দর হয়েছে। বরবটির সাইজও বেশ বড়। খেতেও ভারী মজার। বরবটি ভাজি খেতে সব থেকে বেশি সুস্বাদু লাগে।

পালং শাক:

সবুজ রঙের পালং শাকের উপর পড়ে থাকা শিশিরের বিন্দুকে দেখে মনে হচ্ছে বৃষ্টির পানি পড়ে আছে। শীতের সকালের কুয়াশার পানি এই সমস্ত শাক-সবজিকে সতেজতা প্রদান করে।

বেগুনের ফুল :

আমাদের সবজি বাগানের দক্ষিণ পাশে কিছু বেগুনের গাছ আছে। কয়েকটা গাছে ভালো ফুল ধরেছে। কিছুদিনের মধ্যেই বেগুন হবে। বেগুনি রঙের ফুলটি দেখতে খুবই চমৎকার লাগছিল। তাই, দেখা মাত্রই আমি এটা ক্যামেরাবন্দি করে নিয়েছিলাম।

ধানের মাঠ

হেমন্তকালে মাঠে সোনালী আমন ধানের দেখা মেলে।সবুজ ধান পেকে সোনালী বর্ণ ধারণ করেছে। ধান গাছের উপর সকালের কুয়াশা পড়ায় দেখতে অন্যরকম সুন্দর লাগছে। ধানের মাঠের পাশে থাকা তুলসী গাছটিকে অনেক বেশি সুন্দর লাগছে। এই অগ্রহায়ণ মাসেই কৃষকেরা পাকা আমন ধান কেটে ঘরে তোলে। এবং বাঙালিদের মাঝে নবান্ন উৎসবের দেখা মেলে।

আখের পাতার উপর শিশিরবিন্দু

সবজি বাগানের পূর্ব দিকে কিছু আখ রয়েছে। এগুলোও আমার বাবা নিজের হাতে লাগিয়েছে। সকালের শিশিরের বিন্দু আখের পাতার উপর পড়ে খুবই সুন্দর দৃশ্য তৈরি করেছে। এই সুন্দর দৃশ্য দেখা মাত্রই আমি এটি ক্যামেরা বন্দি করে নিলাম।

দুপুরের সুন্দর আকাশ

সকালে বেশ কুয়াশা থাকলেও দুপুরে কুয়াশার ছিটেফোঁটাও নেই। আকাশ খুবই পরিষ্কার। নীল আকাশের মাঝে সাদা পেঁজা তুলোর মতো মেঘ দেখতে খুবই আকর্ষণীয় লাগে। আকাশের দিকে তাকালে মনে হয় আকাশের মাঝে হারিয়ে যাই। দুপুরে শীত নেই বললেই চলে।

সূর্যাস্তের ফটোগ্রাফি

সূর্যাস্তের সময় আকাশের দৃশ্য খুবই সুন্দর ছিল। পাখিরা তাদের সারা দিনের কাজ শেষে বাসায় ফেরার জন্য ব্যস্ত ছিল। সূর্য অস্ত যাওয়ার সময় সূর্যের আলো খুবই উজ্জ্বল থাকার জন্য সূর্যের দিকে তাকাতে একটু সমস্যা হচ্ছিল। তবে ফটোগ্রাফিটা আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে।

সকালে সূর্যোদয়ের সময় থেকে সন্ধ্যা সূর্যাস্তের সময় পর্যন্ত আমার ক্যামেরা বন্দি করা সুন্দর সকল মুহূর্ত আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করলাম।আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে। প্রতিযোগিতা- ৪৮ এ অংশগ্রহণ করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। কারণ, প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য প্রকৃতির এতো সুন্দর পরিবেশের সঙ্গে পরিচিত হতে পেরেছি।আজ এখানেই শেষ করছি।আপনারা সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন।

পোস্ট তৈরির বিবরণ:

ডিভাইস	oppo A15s

শ্রেণী	শীতকালীন ফটোগ্রাফি

ফটোগ্রাফার	@jerin-tasnim

লোকেশন	কুষ্টিয়া,বাংলাদেশ

আমার পোস্টটি পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ

আল্লাহ হাফেজ