আজ--২৫ ফাল্গুন| ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | শনিবার | বসন্তকাল |

আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।

তো চলুন শুরু করা যাক...!

শুভ দুপুর সবাইকে......!!

ছবিঃ- ইউটিউব থেকে স্কিনশট নেওয়া।

source

নাটকের কিছু তথ্য

নাটকের সংক্ষিপ্ত কাহিনীঃ-

পিতা বনাম পুত্রগং নাটকের ৬৩ পর্বের প্রথম অংশ লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে বাসার সাহেবের জামাই এবং চঞ্চল চৌধুরী একে অপরের সঙ্গে রাতের বেলা কথা বলছে। যদিও এই পর্বের প্রায় প্রত্যেকটা অংশই রাতের বেলা করা যার কারণে পুরো নাটকের অংশটাই কিছুটা অন্ধকার, সে যাই হোক আপনারা সকলেই জানেন যে চঞ্চল চৌধুরী এবং নাদিয়া একে অপরকে অনেক বেশি ভালোবাসে। আর তারা বিয়ে করতে চায় যেহেতু বাসার সাহেব তার সন্তানদেরকে বিয়ে দিতে চায় না যার কারণে বাসার সাহেবের জামাই বরাবরই তার সন্তানদেরকে অনেক রকম ভাবেই উসকে দেওয়ার চেষ্টা করে যাতে করে তারা বিয়ে করে ফেলে এবং সম্পত্তি ভাগাভাগি করে নেয়, সম্পত্তি ভাগাভাগি যখন হবে তখন সে যেন তার নিজের ভাগ পায় এটা ভেবেই সে মূলত বাসার সাহেবের জামাই বাসার সাহেবের সন্তানদের সাপোর্ট করে। সাপোর্ট করার পাশাপাশি সমস্ত রকমের কুবুদ্ধি তাদের মাথার মধ্যে প্রবেশ করে দেয় আর বাসার সাহেবের সন্তানেরা এতটাই বোকাশকা টাইপের যে তার কথা সবসময়ই বিশ্বাস করে।

এ পর্বে এসে বাসার সাহেবের জামাই চঞ্চল চৌধুরীকে জানাই যে তারা যেন খুব দ্রুতই বিয়ে করে নেয়। কিন্তু চঞ্চল চৌধুরী বরাবরই তার ছোট আম্মার উপর অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী সে বিশ্বাস করে তার ছোট আম্মা তাকে খুব দ্রুতই বিয়ে করিয়ে দেবে। এদিকে বাসা সাহেবের জামাই সে সব সময় যাচ্ছে যে তারা যেন বিয়ে করে ফেলে যাতে করে বাসার সাহেবের দুই সন্তানের মাঝে মারামারি হট্টগোল তৈরি হয় অর্থাৎ চঞ্চল চৌধুরী এবং আরফানের মাঝে যেহেতু আরফান নাদিয়াকেও ভালোবাসে। ব্যাপারটা একটু জটিল, আপন দুই ভাই একটা মেয়েকে ভালোবাসে এটা বাস্তবে কি কখনো হয়...!!

এর পরের অংশ লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে শাহনাজ খুশি তার ছোট ভাইকে কিছুটা শাসন করছে কারণ বাসার সাহেবের ছোট ছেলে শাহনাজ খুশির কাছে তার ছোট ভাইয়ের নামে অনেক রকম উল্টাপাল্টা কথা বলেছে। আর এ কথা শুনে শাহনাজ খুশি অনেক বেশি রাগান্বিত হয় যার কারণে ছোট ভাইকে কিছুটা শাসন করে। তবে পরবর্তীতে তার ছোট ভাই আরফানের কথা তার আপুর কাছে বলায় তার আপু তাকে জিজ্ঞেস করে যে আরফান খুবই অন্যরকম টাইপের একটা ছেলে যে কিনা নিজের স্বার্থের জন্য সবকিছুই করতে পারে। গত পর্বে আপনারা জেনেছিলেন যে আরফান সাহানাজ খুশির ছোট ভাইয়ের কাছে নাদিয়াকে দেওয়ার জন্য কিছু একটা দিয়েছিল, আর শাহনাজ খুশি আগে থেকেই সেটা অনুমান করতে পেরে তার কাছে সে ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে। কিন্তু সাহানাজ খুশির ছোট ভাই শাহনাজ খুশির কাছে এ ব্যাপারে মিথ্যে বলে যে আরফান তার কাছে নাদিয়াকে দেওয়ার জন্য কোন কিছু দেয়নি।

একটা বড় বোন তার ছোট ভাইকে যেরকম ভাবে আগলে রাখে যেরকম ভাবে ভালোবাসে নাটকের এ দৃশ্যে শাহনাজ খুশি তার ছোট ভাইকে ঠিক সেই রকম ভাবেই আগলে রাখার চেষ্টা করছে এবং শাসন করছে। কিন্তু সাহানাজ খুশির ছোট ভাই শাহনাজ খুশির কাছে মিথ্যে বলেছে এই ব্যাপারটা নিয়ে হয়তোবা পরবর্তী পর্বে অথবা ভবিষ্যতে কোন একটা ঝামেলা হবে বলে আমার মনে হচ্ছে। যাইহোক সেটাই এখন দেখার অপেক্ষায়।

আর এদিকে বাসার সাহেবের মেয়ে বরাবরই তার ছোট স্ত্রীর বাবার বাড়ি ঠিকানা জানার ব্যাপারে অনেক বেশি আগ্রহ প্রকাশ করছে। আর এই ব্যাপারটা নিয়েই সে এবং তার ফুফু একে অপরের সঙ্গে কথা বলছে। কিন্তু তার ফুফু বরাবরই ভিন্ন ধরনের একজন মানুষের সব সময়ই তার ভাইয়ের ভালো ছাড়া কখনো খারাপ চাইনি। এ ব্যাপারে কথা বলার এক পর্যায়ে আরফান এবং নাদিয়া এ দুজনের ব্যাপারে কথা উঠে সেইসাথে তার ফুফু তাকে জানাই যে চঞ্চল চৌধুরী এবং আরফান একে অপরের সঙ্গে মারামারি সহ খুবই খারাপ ব্যবহার করছে শুধুমাত্র সেই নাদিয়া মেয়েটার জন্য। আর এ কথা শুনে বাসার সাহেবের কন্যা তাকে জানায় যে একটা সময় গিয়ে দেখবে ওই মেয়ে এই দুইজনের কাউকেই বিয়ে করবে না অন্য কাউকে বিয়ে করবে আর এই দুজনকে এখন হাতের ইশারায় নাচাচ্ছে, এই কথাটা আমার অনেক বেশি ভালো লেগেছে মাঝে মাঝে আমারও এমনটাই মনে হয়েছে হয়তোবা নাদিয়া এই দুজনের সঙ্গে কিছুটা ফাইজলামি করছে বাস্তবিক অর্থে নাদিয়া ও হয়তোবা কাউকে ভালোবাসে না।

এর পরের অংশ লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে বাসার সাহেবের জামাই এবং তার দু সন্তান একে অপরের সঙ্গে কথা বলছে মূলত বড় সন্তান এবং মেজ সন্তান। আপনারা সকলেই জানেন যে বাসার সাহেবের জামাই বরাবরই একজন চালবাজ মানুষ। সে সবসময়ই তার সন্তানদেরকে অনেক রকম উল্টাপাল্টা বুদ্ধি দিয়ে থাকে এবারও সেরকমই একটা বুদ্ধি দিচ্ছে যে তারা বিয়ে করার ব্যাপারে যেন তার বাবার কাছে গিয়ে সেই লক্ষ্যে অটল থাকে যাতে করে এবার তাদের বিয়েটা সফল হয়। একথা বলতে বলতেই তারা হঠাৎ করেই বাসা সাহেবের মেজো জামাইয়ের কথা বলে অর্থাৎ বাসার সাহেবের হয়তোবা আরও একটা জামাই আছে। বোঝা যাচ্ছে যে নাটকটা এবার আরও বেশি জমে যাবে যখন তার মেজ জামাই এর এন্ট্রি হবে।

এর পরের অংশ লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে চঞ্চল চৌধুরীর রাতের বেলা চলে গিয়েছে নাদিয়ার বাসায়। নাদিয়ার বাসায় গিয়ে সে নাদিয়াকে অনেক রকম ভাবে ইমোশনাল করে ফেলে অনেক রকম কথাবার্তা বলে আর এই কথাগুলো শুনে না দিয়েও ইমোশনাল হয়ে যায়। এরপরে চঞ্চল চৌধুরী তাকে জানায় যে তার ছোট আম্মা তাদেরকে বিয়ে করতে বলেছে, আর এ কথা শুনে নাদিয়া কিছু সময় চোখ থেকে সেও চঞ্চল চৌধুরীকে বিয়ে করতে রাজি হয়ে যায়। যদিও আমি রীতিমতো অবাক হয়েছিলাম যে এত তাড়াতাড়ি নাদিয়া চঞ্চল চৌধুরীকে বিয়ে করতে রাজি হয়ে গেল কিভাবে। পরের দিন সকাল বেলা তারা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কিন্তু পরের অংশে দেখা যাবে যে আসলেই নাদিয়া তাকে বিয়ে করতে রাজি কিনা..!!

এর পরের অংশ লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে রাতের বেলা হঠাৎ করেই বাসা সাহেব তার ছোট স্ত্রীর রুমে আসে। আর এটা দেখে তার ছোট স্ত্রী অনেক বেশি অবাক হয়। কিন্তু এই পর্বের শেষের অংশটা আমার কাছে সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে এখানে কিছু টুইস্ট রেখে দিয়েছে পরিচালক। হঠাৎ করেই বাসার সাহেব তার ছোট স্ত্রীর কাছে এসে বলে যে আগামীকাল আমি শ্বশুর বাড়ি যাবো। মূলত এখানে বাসার সাহেব জানতে চাচ্ছে যে আসলে এই মেয়েটা কে, বাস্তবিক অর্থে আমরা সকলেই জানি যে বাসার সাহেব বরাবরই তার ছোট স্ত্রীকে অমান্য করছে কিন্তু সে এখন এটা জানতে চাচ্ছে যে আসলে তার বাবা-মাকে আর সে কোত্থেকে আসলো এটা জানার জন্য এসে তার ছোট স্ত্রীর কাছে গিয়ে বলে যে আগামীকালই সে শ্বশুরবাড়ি যাবে। বাসার সাহেবের মুখে এ কথা শুনে মৌসুমী হামিদ অনেকটাই অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে থাকে কিন্তু বাসার সাহেব তার সঙ্গে আর কোন কথা না বলে রুম থেকে বের হয়ে যায়।

আগামী পর্ব টা খুবই ইন্টারেস্টিং হতে চলেছে বলে আমার মনে হচ্ছে, যেহেতু এ পর্বে শেষের অংশটা কিছুটা রহস্য দিয়েই শেষ করেছে। পরবর্তী পর্ব দেখার আমন্ত্রণ রইল, যাইহোক আজ আর নয় এখানেই শেষ করছি, সকলেই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গে থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে...!!

শিক্ষণীয় দিক-

পিতা বনাম পুত্রগণ নাটকটি মূলত একদম বাস্তবতা অবলম্বনে নির্মিত করা হয়েছে। ‌ অনেক আগে গ্রাম অঞ্চলের লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে পিতা মাতারা তাদের সন্তানদেরকে বিয়ে দিতে মোটেও চাইত না। মূলত তারা বিয়ে দিতে চাইতো না কারণ তারা ভাবতে হয়তো অন্য ঘরের মেয়েরা সংসারে আসলে তারা সংসারটা নষ্ট করে দেবে বা তাদের ছেলেরা তাদেরকে ছেড়ে দিয়ে চলে যাবে। কিন্তু ছেলেদেরকে বিয়ে না দিলে তারা যে কতটা উতোলা হয়ে পড়ে সেটা এই নাটকটা দেখলে বোঝা যায়। নাটকের মধ্যে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে বিয়ে করার জন্য বাসার সাহেবের পাঁচ সন্তান খুবই উৎফুল্ল কিন্তু বাসার সাথে তাদেরকে বিয়ে দিচ্ছে না। মূলত এই নাটকের মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে যে, সন্তানদেরকে পর্যাপ্ত বয়সে বিয়ে না দিলে ভবিষ্যতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।

ব্যক্তিগত মতামত-

প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই সকাল আহমেদ স্যারকে এত সুন্দর একটি নাটক আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। পিতা বনাম পুত্রবাগ নাটকের মাধ্যমে আমরা অনেক কিছু জানতে পারছি এবং শিখছি। আমার মনে হয় এটা একটা বাস্তবধর্মী নাটক যেটা কিনা বর্তমান সময়ের সঙ্গেও কিছুটা মিল রয়েছে। বর্তমান সমাজের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে এমন অনেক পরিবার রয়েছে যারা কিনা সন্তানদেরকে দিয়ে দেয় না কিন্তু তার সন্তানেরা বাবা মার কাছে বলতেও পারে না যে তারা বিয়ে করবে। এটাই মূলত নাটকের মূল বিষয়বস্তু। আমি মনে করি এই নাটকটি সকল পিতা-মাতার দেখা উচিত এতে করে তারা এই নাটকের মাধ্যমে অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারবে।

ব্যক্তিগত রেটিং-