অন্ধকারময় বৃষ্টির দিন

in hive-129948 •  last month 

আজ--২৮ আশ্বিন | ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |রবিবার | শরৎকাল|



আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।


আজ আমি আপনাদের মাঝে অন্ধকারময় বৃষ্টির দিনের গল্প শেয়ার করবো,সেই সাথে প্রকৃতির রূপ নিয়েও কিছু কথা তুলে ধরবো।আশা করছি আমার এই পোস্ট আপনাদের সবার ভালো লাগবে।



  • প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
  • অন্ধকারময় বৃষ্টির দিন
  • আজ--২৮আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  • রবিবার


তো চলুন শুরু করা যাক...!


শুভ রাত্রি সবাইকে......!!


Picsart_24-10-13_13-51-58-446.jpg

কভার ফটো তৈরিতে--@jibon47



বর্তমান সময়ের প্রকৃতি এবং পরিবেশ কখন কি রকম যে হয় সেটা আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না। এই প্রচন্ড রোদ্রে সবকিছু একদম চৌচির হয়ে যাচ্ছে আবার কিছুক্ষণ পরেই দেখা যাচ্ছে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। কখনো কখনো বা আমরা দেখতে পাই মেঘলা আকাশ আবার সেই সাথে এটাও দেখতে পাই হালকা বৃষ্টি। বর্তমান সময়ে পরিবেশটা হয়তোবা এমনই আসলে এটাই হয়তোবা প্রকৃতির আসল সৌন্দর্য। জলবায়ু কয়েক বছর পর পর পরিবর্তন হলেও আবহাওয়া কিন্তু কখনোই জলবায়ুর মত এরকম ভাবে স্থায়ী থাকে না এটা সব সময় পরিবর্তন শীল। আর আবহাওয়া যেহেতু পরিবর্তনশীল যার কারণেই পৃথিবীতে এক এক সময়ে এক এক রকম এক রূপ নিয়ে হাজির হয় বিশেষ করে বাংলাদেশের আবহাওয়া এবং ঋতু বরাবরই অনেক বেশি সুন্দর এখানে ছয়টি ঋতু রয়েছে আর প্লাক্রমে এক একটার পরে আরেকটা ঋতু এসে সামনে হাজির হয়। ভাদ্র মাস শেষ হয়ে গিয়েছে এখন আশ্বিন মাস আর এই আশ্বিন মাসেও কিছুটা ভাদ্র মাসের আবহাওয়া আমরা দেখতে পাচ্ছি। সত্যি বলতে এরকম পরিবেশে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেয়ার মাঝেও রয়েছে এক অন্যরকম ভালোলাগা। গত পরশুদিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই দেখি প্রচন্ড রৌদ্র উঠেছে সকাল সকালই মনে হচ্ছিল যেন সবকিছু কেমন যেন শুকিয়ে গিয়েছে।

প্রচন্ড রৌদ্রের মধ্যে কাজ কর্ম করাটা অনেকটাই কষ্টসাধ্য তবে আশ্বিন মাসেও যে এরকম ভাবে সূর্যের প্রচণ্ড তাপ দেখা যায় সেটাই ভাবার বিষয়। ভেবেছিলাম এরকম ভাবেই হয়তোবা সারাটা দিন কাটবে প্রচন্ড গরমে কোন কিছুই করতে ভালো লাগছিল না অফিসে গিয়ে অনেকটা সময় বসে ছিলাম এতটা বেশি গরম লাগছিল আর শরীর ঘামছিল যে কোন কাজেই মনোনিবেশ করতে পারছিলাম না। দুপুর পর্যন্ত এরকম ভাবেই একটানা প্রচন্ড রৌদ্র পড়েছিল রৌদ্রের তাপে সবকিছু চৌচির হয়ে যাচ্ছিল তবে দুপুরের পর থেকেই পরিবেশটা একটু ঠান্ডা হয়ে উঠেছিল রৌদ্রের তাপ কিছুটা কমেছিল সেই সাথে মাঝে মাঝে ঝরোয়া বাতাস বইছিল। তখন পরিবেশটা সকাল কার থেকে একটু ভিন্ন হয়ে গিয়েছিল বেশ ভালই লাগছিল তখন। যতই সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে যাচ্ছিল সময় যতই যাচ্ছিল ততই যেন পরিবেশটা ঠান্ডা এবং শীতল হয়ে যাচ্ছিল বিকেল হবার সঙ্গে সঙ্গেই পশ্চিম আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা। এরকম কালো মেঘের ঘনঘটা আগে কখনো দেখেছি বলে মনে হয় না বিকেল চারটা বাজার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়ে গেল মুষলধারে বৃষ্টি।

সকালবেলা যেখানকার পরিবেশটা ছিল অনেক উত্তপ্ত বিকেল হবার সঙ্গে সঙ্গেই পুরো পরিবেশটা একদম শীতল হয়ে গেল। সত্যি বলতে এরকম মেঘ আর এরকম বৃষ্টি আমি এর আগে কখনোই দেখিনি চারিদিকে একদম অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল। মনে হচ্ছিল যেন সন্ধ্যে নেমে এসেছে নেমে এসেই। মনে হচ্ছিল এ যেন বিকেলবেলা নয় এটা কোন এক রাত্রিবেলা চারিদিকে অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল সেই সাথে বৃষ্টি এবং বজ্রপাত দু-এ মিলে পরিবেশটা একদমই ভিন্ন ছিল। প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তোবা কিছুক্ষণ বৃষ্টি হবে তারপরে সবকিছু আবার আগের মত হয়ে যাবে কিন্তু তা না দেড় থেকে দু'ঘণ্টা বৃষ্টি হয়েছিল রাস্তাঘাটে পানি জমে গিয়েছিল তার মানে বুঝতেই পারছেন কতটা বৃষ্টি হয়েছিল। এরকম বৃষ্টির দিনে শরীরটা একদমই ছেড়ে দেয়, শরীরের মধ্যে ঝিমুনি ঝিমুনি একটা ভাব চলে আসে প্রচুর ঘুমাতে মন চায়। অফিসে বসেই ঝিমাচ্ছিলাম মনে হচ্ছিল যেন রাজ্যের যত ঘুম আমার চোখে এসে ভর করেছে।

IMG20241001170844.jpg

IMG20241001170849.jpg

IMG20241001170915.jpg

IMG20241001170901.jpg

IMG20241001171111.jpg

উপরের এই ছবিগুলো আপনারা গভীরভাবে লক্ষ্য করলে বুঝতেই পারবেন যে বৃষ্টির তীব্রতা আসলে কতটা ছিল। অনেকটা সময় অফিসে বসে ছিলাম সবাই মিলে গল্প করছিল, আমিও বসে বসে গল্প শুনছিলাম কিন্তু চোখে প্রচন্ড রকমের ঘুম ছিল দেড় থেকে দু ঘন্টা বৃষ্টি হবার পরে পুরো পরিবেশটা একদম ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল মনে হচ্ছিল এই বুঝি শীত চলে আসবে নিমিষেই। বৃষ্টি শেষ হবার পরে অফিসের বাহিরে চলে আসি বাহিরে এসে দেখি রাস্তাঘাটে অনেক পানি জমে গিয়েছে মানুষজন অনেকেই ভিজে গিয়েছে সেই সাথে রাস্তা দিয়ে যারা হেঁটে বাসায় ফিরছে অনেকেরই পায়ের কনুই পর্যন্ত পানির নিচে। যাইহোক এরকম পরিবেশে চা খেতে খুবই মন চায় ঠান্ডা পরিবেশে চা খেতে পছন্দ করে না এরকম মানুষ হয়তো বা খুঁজেই পাওয়া যাবে না। কিন্তু বিশ্বাস করুন এতটা বেশি বৃষ্টি হয়েছে যে অফিসের বাহিরে গিয়ে দেখি প্রত্যেকটা দোকান বন্ধ হয়ে গিয়েছে সবাই দোকান বন্ধ করে দিয়ে হয়তো বা বাসায় চলে গিয়েছে শেষমেষ চলে আসলাম অফিসের ক্যান্টিনে। অফিসের ক্যান্টিনেরটা আমি সচরাচর খুব একটা বেশি খাই না কারণ সেখানে মেশিনের টা অনেকটাই মিষ্টি এবং অন্যরকম একটা ফ্লেভার দেওয়া হয় যার কারণে ক্যান্টিনের তা খুব একটা খেতে মন চায় না যেহেতু কোথাও চায়ের ব্যবস্থা নেই সেহেতু এখন ক্যান্টিনের চা খেতে হবে কিছু করার নেই।

ক্যান্টিনে বসে পরপর দু'কাপ চা খেয়ে ক্যান্টিনের বাহিরের পরিবেশটা দেখার চেষ্টা করছিলাম তাই চলে আসলাম ক্যান্টিনের বারান্দায়। সেখানে গিয়েও ভিন্ন রকমের এক পরিবেশ দেখেছিলাম বৃষ্টি ইতোমধ্যে থেমে গিয়েছে তবে হালকা বৃষ্টি তখনো হচ্ছিলই। সেখানে বসে অনেকটা সময় বৃষ্টি উপভোগ করেছিলাম, যেখানে ক্যান্টিনে আগে বসার জায়গা পাওয়া যেত না কিন্তু গতকাল ক্যান্টিনে গিয়ে দেখি পুরো ক্যান্টিনে একদম ফাঁকা। বৃষ্টি শেষ হয়েছে বলেই হয়তো বা সকলে বাসায় ফিরে গিয়েছে যেহেতু সকলের ডিউটি শেষ হয়ে গিয়েছিল তার মানে ক্যান্টিনের থাকার কোন প্রশ্নই আসে না তবে ডিউটি টাইমেও অনেক মানুষ ক্যান্টিনে এসে বসে থাকে খাবার খায় অন্যান্য সময়ের তুলনায় সেদিনের ক্যান্টিন টা একটু বেশি ফাঁকা ছিল। যাই হোক, শেষমেষ আমরা এটাই বুঝতে পারলাম যে প্রকৃতিক পরিবেশ আসলে কখন কোন রূপ ধারণ করে এটা কেউ কখনোই বুঝতে পারে না এটা সৃষ্টিকর্তার এক অন্যতম নিদর্শন বা সৌন্দর্য আপনি যেটাই বলেন না কেন। এই সুন্দর্য কে সবসময়ই উপভোগ করতে হয়।

IMG20241001170854.jpg

IMG20241001172917.jpg

IMG20241001172927.jpg

যদি আপনি সৃষ্টিকর্তার এই সৌন্দর্য মন থেকে উপভোগ করতে পারেন তাহলে আপনি আসলে বুঝতে পারবেন যে প্রকৃতি কতটা সুন্দর সেই সাথে আপনি আনমনেই সৃষ্টিকর্তার প্রশংসা করতে বাধ্য হবেন কত সুন্দরভাবে তিনি আমাদের জন্য প্রকৃতিকে সাজিয়েছেন। প্রকৃতির এরকম সৌন্দর্য আছে বলেই হয়তো বা পৃথিবী এতটা সুন্দর, যাইহোক সেদিনের বিকেল বেলার শেষ বিকেলের সূর্যটা আর দেখা যায়নি কারণ দুপুর থেকে শুরু করে রাত অব্দি হালকা হালকা বৃষ্টি হচ্ছিলই তবে সেদিনের সেই মুহূর্তগুলো সত্যিই অনেক বেশি সুন্দর ছিল।

আর আমিও ভালোভাবেই পুরো পরিবেশটা বা পুরো সময়টা চমৎকারভাবে উপভোগ করার চেষ্টা করেছিলাম ভীষণ ভালো লেগেছিল। বৃষ্টির দিন এমনিতেই আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে তবে খুব বেশি বৃষ্টি আবার বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়, যাইহোক আপনারা অনেকেই বৃষ্টি পছন্দ করেন এটা আমি জানি বৃষ্টির দিনে বৃষ্টির মধ্যে গোসল করতেও বেশ ভালো লাগে। এটাই ছিল আমার আজকের পোস্ট আশা করছি আমার এই অন্ধকারময় বৃষ্টির দিনের গল্প আপনাদের সকলের কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আজ আর নাই এখানেই শেষ করছি, সকলেই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে...!!



সমাপ্ত


আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা

বিবরণ
বিভাগজেনারেল রাইটিং
বিষয়অন্ধকারময় বৃষ্টির দিন
পোস্ট এর কারিগর@jibon47
অবস্থান[সংযুক্তি]source


এটাই আমি..!!

IMG_5290-01.jpeg

আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নেম @jibon47। আমি মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে অনেক বেশি ভালোবাসি। আব্বু আম্মু আর ছোট বোনকে নিয়েই আমার পরিবার। এই তিনজন মানুষকে কেন্দ্র করেই আমার পৃথিবী।একসাথে সবাইকে খুশি করা তো সম্ভব নয়, তারপরও আমি চেষ্টা করি পরিবারের সবাইকে খুশি রাখার। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে।আমি বর্তমানে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটিতে মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্ট থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং লেখাপড়া করছি। আমি গান গাইতে, কবিতা লিখতে, এবং ভাই ব্রাদারের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করতে অনেক বেশি ভালোবাসি। সত্যি বলতে আমি প্রচন্ড রকমের অভিমানী, হতে পারে এটা আমার একটা বদ অভ্যাস। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব,"আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, পরিশ্রম সফলতার চাবিকাঠি।



সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ
@jibon47



VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

হ্যাঁ আবহাওয়া টা কেমন যেন এলোমেলো হঠাৎ করেই প্রচন্ড বৃষ্টি আবার হঠাৎ করেই প্রচন্ড রোদ। মজার বিষয় শীতের সময় প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছে আবার মোটামুটি আবহাওয়া গরম আছে। যাই হোক ছবিগুলো দেখে বোঝা যাচ্ছে আসলেই প্রচন্ড বৃষ্টি হয়েছে একদম বৃষ্টিতে চারিপাশ অন্ধকার।

আজ আপনি দারুন একটা পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছেন। আসলে এই অন্ধকারময় বৃষ্টির দিনে বাইরে ঘুরতে খুব মন চায়। এছাড়া আপনি খুব সুন্দর ভাবে এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনি আপনার মনের কথাগুলো আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

কয়েকদিন আগেও সত্যি অনেক গরম ছিল। আর গরমের কারণে কোন কিছুই করতে ভালো লাগতো না। গরমের পরেই হঠাৎ করে বৃষ্টি হওয়াতে ভালোই লেগেছে। আর বর্তমানে অবশ্য আবহাওয়া মোটামুটি ভালোই আছে ভাইয়া।

শরৎকালের এই সময় টা এমনই ভাই। কখনও রোদ কখনও বৃষ্টি। আপনি ঠিকভাবে বুঝতেই পারবেন না। বৃষ্টির সময় টা ক‍্যান্টিনে বসে একেবারে অলস কেটেছে আপনার। তবে উপভোগ করেছেন বৃষ্টি টা এটা বলেন। বেশ লাগল আপনার পোস্ট টা। বৃষ্টির জন্য সত্যি চারিদিক একেবারে অন্ধকার হয়ে গিয়েছে।