আজ--২২ পৌষ | ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |সোমবার | শীতকাল|
আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
- প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
- অনেকদিন পরে বাড়ি ফেরার অনুভূতি।
- আজ--২২শপৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
- সোমবার
তো চলুন শুরু করা যাক...!
শুভ বিকেল সবাইকে......!!
আমরা যারা বাসার বাহিরে থাকি একমাত্র তারাই বাসায় ফেরার জন্য কতটা অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করতে হয়। অনেকেই আমরা চাকরি করি আবার অনেকেই লেখাপড়া করি সব সময় তো আর বাড়ি ফেরা হয়ে ওঠে না। বাড়ি ফিরতে হলে নির্দিষ্ট একটা সময়ের প্রয়োজন নির্দিষ্ট একটা সময় করে সেই নির্দিষ্ট তারিখেই আমাদের বাড়ি ফিরতে হয়। আবার বাড়ি ফিরে নির্দিষ্ট একটা তারিখের মধ্যেই আমাদেরকে আবার আগের জায়গাতে ফিরে আসতে হয়। তবে বাড়ি যাওয়ার আগ মুহূর্তের অনুভূতিটা সত্যিই অন্যরকম অনেকদিন ধরেই অনেক রকমের পরিকল্পনা করে সেই পরিকল্পনা মাফিক কাজকর্ম শেষ করে আমাদের বাড়ি ফিরতে হয়। বাড়ি ফেরার যখন দিন তারিখ ঘনিয়া আসে তখন নিজের কাছে এক অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করে সব সময় আর এই ভালো লাগাটা কখনো বর্ণনা করে বোঝানো সম্ভব নয়। খুব কাছের প্রিয় মানুষদের সঙ্গে সময় কাটাবো তাদের সঙ্গে আড্ডা দিব পরিবারের মানুষদের সঙ্গে দেখা করব এর থেকে ভালো লাগার মুহূর্ত এর থেকে ভালোলাগার বিষয় আর কি হতে পারে। এটাই হয়তো পৃথিবীর অন্যতম সুখের মধ্যে একটা সুখ বলে আমি মনে করি। কিছু কিছু ভালোলাগা মানুষ সহজে বর্ণনা করে কাউকে বোঝাতে পারে না ঠিক তেমনি ভাবে আমার কাছে বাড়িতে ফিরে পরিবারের মানুষদের সঙ্গে দেখা করার মাঝে যে আনন্দ এই আনন্দ আমি কখনোই কাউকে বলে বোঝাতে পারবো না।
খুব ইচ্ছে হয় বাসায় ফিরতে, কিন্তু লেখাপড়া এবং চাকরির এত বেশি প্রেসার যে দুই থেকে তিন মাসের মধ্যেও বাসায় ফেরা হয়ে ওঠে না তবে শেষ বাসায় গিয়েছিলাম আগস্ট মাসে। যেহেতু পঞ্চম পর্বের ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হয়েছে তার মানে আগে থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে বাসায় যাব সেই অনুযায়ী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে বাসায় যাওয়ার জন্য মন স্থির করি এবং সেই অনুযায়ী সকল কাজকর্ম শেষ করে অফিস থেকে ছুটি নিয়ে ডিসেম্বরে লাস্ট উইকে কোন একদিন সন্ধ্যেবেলায় বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলাম। এখন বাসায় যাওয়াটা অনেকটাই সহজ হয়ে গিয়েছে কারণ পদ্মা সেতু হওয়াতে ট্রেনে করে বাসায় যেতে খুব একটা বেশি সময় লাগে না আর ট্রেনের টিকেট আমি অনেক আগে থেকেই অনলাইনে কেটে রেখেছিলাম। কারণ স্টেশনে গিয়ে তখন আর টিকিট পাওয়া যায় না দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে যেতে হয় এই কারণে আমি বাসায় যাওয়ার চার থেকে পাঁচ দিন আগেই অনলাইনে টিকেট কেটে রেখেছিলাম। আমার ট্রেনের সময় ছিল ১১:৪৫ এ। সন্ধ্যে হবার পরপরই আমি স্টেশনের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলাম যদিও রাস্তায় অনেক বেশি জ্যাম ছিল তবে স্টেশনে আমি সাড়ে নয়টার মধ্যেই পৌঁছে গিয়েছিলাম বুঝতেই পারছেন আমি অনেকটা আগেই স্টেশনে পৌঁছেছিলাম।
স্টেশনে পৌঁছানোর পরে পাশেই একটা জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট আছে, খুব যে বেশি জনপ্রিয় তা নয় তবে সেই রেস্টুরেন্টের খিচুড়ি এবং মাংস ভুনা আমার কাছে অনেক বেশি সুস্বাদু লাগে। যেদিন আমি বাসায় যাই সেই দিনই সেই রেস্টুরেন্টে গিয়ে আমি খিচুড়ি এবং মাংস ভুনা খাই। সেদিন ও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি স্টেশনে গিয়ে কিছুটা সময় ঘোরাঘুরি করে টিকেট কাউন্টারে গিয়ে আমি জেনে নেই কোন প্লাটফর্ম থেকে টেনে উঠতে হবে তারা আমাকে শহরতলী প্ল্যাটফর্ম দেখিয়ে দেয় এবং বলে দেয় যে ১১ঃ৪৫ এ কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে শহরতলী প্ল্যাটফর্ম থেকে বেনাপোল এক্সপ্রেস সেরে যাবে আপনি সঠিক সময়ে সেখানে পৌঁছে যাবেন। এরপরে আমি ভাবলাম যেহেতু অনেকটা সময় হাতে আছে সেহেতু খাওয়া দাওয়া করে নেওয়া যায় আর এদিকে আমার ক্ষুধা ও লেগেছিল বটে।
এরপরে আমি সেই রেস্টুরেন্টে গিয়ে খিচুড়ি এবং মাংস ভুনা খেয়ে সেখান থেকে বের হয়ে এসে স্টেশনের পাশে বসে ছিলাম। রাতের বেলা কমলাপুর স্টেশনের দৃশ্যটা আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে তবে যেহেতু তখন হালকা শীত ছিল যার কারণে মাঝে মাঝে শীতার্ত মানুষের দুঃখ-কষ্টের দৃশ্য দেখে নিজের কাছে অনেকটাই বেশি খারাপ লেগেছিল। যেহেতু আমি একা একা ছিলাম আর আমার সাথে কোন লোক ছিল না আমি স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের উপর বসে বসে হেডফোনে গান শুনছিলাম গেমস খেলছিলাম আস্তে আস্তে স্টেশনে মানুষের ভিড় জমতে থাকে। প্রথম অবস্থায় আমি ভেবেছিলাম যেহেতু শীতকাল আর শীতকালে হয়তোবা সেইরকম মানুষের ভিড় হবে না তবে আমার ধারণা মিথ্যে করে দিয়ে যতই সময় অতিবাহিত হচ্ছিল মানুষের ভিড়ের তীব্রতা ততটাই বৃদ্ধি পাচ্ছিল। একা একা বসে থাকতে অনেকটাই বোরিং লাগছিল যার কারণে এদিকে ওদিকে হাটাহাটি করছিলাম আবার মন চাইছিল চায়ের কাপের চুমুক দিতে কিন্তু সেখানে কোন দোকান পাচ্ছিলাম না যার কারণে ভেবেই রেখেছিলাম ট্রেনে উঠেই চা অথবা কফি যেটাই পাবো সেটাই খেয়ে ফেলবো। এরপরে ট্রেন ১১ টার মধ্যে স্টার্ট দিয়ে দেয়।
যে যার মত করে নিজের সিটে গিয়ে বসি, যেহেতু আমি অনেক আগে থেকেই ট্রেনের টিকেট কেটে রেখেছিলাম আর আমি সবসময়ই জানালার পাশের টিকেট কাটার চেষ্টা করি কারণ জানালার পাশে বসে যেতে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে। জানালার পাশে গিয়ে বসেছিলাম হঠাৎ করে অপরিচিত এক লোক এসে আমাকে জানায় যে তারা দুই বন্ধু বাসায় যাচ্ছে কিন্তু তাদের দুজনের সিট দুই জায়গাতে পড়েছে আমি যদি তাদেরকে একটু সেক্রিফাইস করি তাহলে তারা দুই বন্ধু একত্রে একসঙ্গে যেতে পারবে, মানে তারা এটা বলতে চাচ্ছে যে আমি যদি তাদের সিট ছেড়ে দেই তাহলে তারা দুজন একসঙ্গে বসে যেতে পারবে আর তাদের সিটে গিয়ে আমি বসব। এরপরে তারা আমাদেরকে এটাও জানায় যে আমাদের অন্য যে সিট রয়েছে সেটাও জানালার পাশে আপনার হয়তোবা তেমন কোন সমস্যা হবে না। এ কথা শুনে আমি আর দ্বিধা না করে আমার সিট ছেড়ে দিয়ে তাদের সিটে গিয়ে বসলাম যদিও তারা অনেক খুশি হয়েছিল। এরপরে তারা আমাকে ধন্যবাদ দিয়ে আমার সিটে গিয়ে বসলো আর আমি তাদের সিটে গিয়ে বসলাম বেশ ভালই লাগছিল অবশেষে ঠিক ১১ঃ৪৫ এ ট্রেন চালু হল।
অনেকটা সময় জানালার দিকে তাকিয়ে বাহিরের দৃশ্য দেখছিলাম বেশ ভালই লাগছিল। দূর দূরান্তের রাতের লাইটিং করা বিল্ডিং সহ অন্যান্য কিছু খুব দ্রুতই মনে হচ্ছিল অনেক দূরে সরে যাচ্ছে। অবশেষে পদ্মা সেতু পার হলাম তখন অব্দি জেগে ছিলাম পদ্মা সেতু পার হবার পরে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম সেটা বুঝতেই পারিনি। হঠাৎ করেই ঘুম ভেঙ্গে যায় ঘুম ভেঙে যাওয়ার পরে দেখি আমি প্রায় রাজবাড়ীতে চলে এসেছি। এদিকে এক বড় ভাই কে ফোন দিয়েছিলাম আমাদের উপজেলা স্টেশনে বাইক নিয়ে আসতে কারণ আমি খোকসাই স্টেশনে গিয়ে যখন পৌঁছাবো তখন প্রায় রাত্রি সাড়ে তিনটা বেজে যাবে আর তখন আমি সেখান থেকে গাড়ি পাবনা। যার কারনে তাকে অনেক আগেই বলে রেখেছিলাম রাজবাড়ী পার হবার পরে আমি তাকে ফোন দেই তারপর সে সেই রাত সাড়ে তিনটার আগেই বাইক নিয়ে স্টেশনে চলে গিয়েছিল। ছোট ভাইয়ের সঙ্গে সে স্টেশনে গিয়েছিল আমি রাত্রি সাড়ে তিনটার পরে খোকসা স্টেশনে গিয়ে পৌঁছাই।
অনেকদিন পরে খুব কাছের প্রিয় দুই মানুষের সঙ্গে দেখা হয়ে ভীষণ ভালো লাগছিল কিন্তু ট্রেনের মধ্যে যতক্ষণ ছিলাম ততক্ষণ অব্দি শীতের তীব্রতা খুব একটা বুঝতে পারিনি আর এদিকে আমি শীতের পোশাকও সাথে নেইনি। ট্রেন থেকে বের হবার পরেই শীতের তীব্রতা অনুভব করেছিলাম এরপরে যখন বাইকের উপরে উঠলাম তখন আরো বেশি শীত অনুভব করেছিলাম। ওভাবেই আস্তে আস্তে বাইক চালিয়ে বাসায় পৌঁছেছিলাম প্রায় রাত্রি ০৪:০০ টার পরে।। বাসায় গিয়ে দেখি আম্মু এবং আমার ছোট বোন এখনো অব্দি জেগেই আছে, এই মুহূর্তের অনুভূতির গল্প অন্য কোনদিন শেয়ার করব। আশা করছি আপনাদের সকলের কাছে আমার এই পোস্ট ভাল লেগেছে। সকলেই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে...!!!
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা
বিভাগ | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
বিষয় | অনেকদিন পরে বাড়ি ফেরার অনুভূতি। |
পোস্ট এর কারিগর | @jibon47 |
অবস্থান | [সংযুক্তি]source |
আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নেম @jibon47। আমি মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে অনেক বেশি ভালোবাসি। আব্বু আম্মু আর ছোট বোনকে নিয়েই আমার পরিবার। এই তিনজন মানুষকে কেন্দ্র করেই আমার পৃথিবী।একসাথে সবাইকে খুশি করা তো সম্ভব নয়, তারপরও আমি চেষ্টা করি পরিবারের সবাইকে খুশি রাখার। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে।আমি বর্তমানে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটিতে মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্ট থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং লেখাপড়া করছি। আমি গান গাইতে, কবিতা লিখতে, এবং ভাই ব্রাদারের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করতে অনেক বেশি ভালোবাসি। সত্যি বলতে আমি প্রচন্ড রকমের অভিমানী, হতে পারে এটা আমার একটা বদ অভ্যাস। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব,"আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, পরিশ্রম সফলতার চাবিকাঠি।
@jibon47
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সেই লাস্ট আগস্ট মাসে বাড়ি গিয়েছিলেন অনেকদিন হয়ে গেল বাড়ি যান না। আমি নিজেও অনেকদিন হয়ে গেল বাড়ি যাই না। তবে আগস্টের পরে একবার গিয়েছিলাম। বাইরে থাকতে থাকতে যখন বাড়ি যাওয়ার একটু সুযোগ আসে তখন আসলেই অনেক ভালো লাগে। আমরা যারা বাইরে থাকি তাদের একটু বাড়িতে যাওয়ার জন্য মনটা ছটফট করে। আমারও এক্সাম শেষ হয়েছে আজ পরশুদিন হয়তো বাড়ি যাবো। বাড়ি যাবো ভেবেই মনের মধ্যে ভালো লাগছে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আসে ভাইয়া জন্মস্থান সবার প্রিয়। আর অনেক দিন পরে বাড়িতে যাওয়ার অনুভূতি সত্যি অনেক আনন্দের। আর সেই অনুভূতি গুলো হয়তো কখনো বলে বা লিখে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। যাইহোক অবশেষে ভালো মতো পৌঁছাতে পেরেছেন এটাই অনেক।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit