বড় ভাইয়ের দেওয়া গিফট-হানিনাট

in hive-129948 •  29 days ago 

আজ--১০ কার্তিক | ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |শনিবার | হেমন্তকাল|



আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।


আজ আমি আপনাদের মাঝে অফিসের বড় ভাইয়ের থেকে গিফট পাওয়ার অনুভূতি শেয়ার করবো।আশা করছি আমার এই পোস্ট আপনাদের সবার ভালো লাগবে।



  • প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
  • বড় ভাইয়ের দেওয়া গিফট-হানিনাট।
  • আজ--১০কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  • শুক্রবার


তো চলুন শুরু করা যাক...!


শুভ দুপুর সবাইকে......!!


Picsart_24-10-23_23-15-00-673.jpg

কভার ফটো তৈরিতে--@jibon47



গিফট পেতে পছন্দ করে না এরকম মানুষ খুব কমই আছে ব্যক্তিগতভাবে আমার এটাই মনে হয় যে গিফট পেতে আমরা সকলেই অনেক বেশি পছন্দ করি। আর সেই গিফটগুলো যদি কাছের মানুষগুলোর থেকে পাওয়া হয় তাহলে তো আর কোন কথাই নেই। আপনারা অনেকেই জানেন যে বর্তমান সময়ে আমি একটা কমপ্লায়েন্স ফ্যাক্টরিতে জব করছি মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্টে। যদিও প্রথম অবস্থায় যখন জব হয়েছিল তখন কারো সঙ্গেই খুব একটা বেশি পরিচয় ছিল না তবে অনেকটা দিন অতিবাহিত হবার সঙ্গে সঙ্গেই এখন সকলের সঙ্গে মোটামুটি ভাবে একটু একটু পরিচয় হয়ে গিয়েছে।। সেই পরিচয় থেকেই অনেকের সঙ্গে খুবই ভালো একটা রিলেশন হয়ে গিয়েছে সকলের সঙ্গেই কথাবার্তা কাজকর্ম চলাফেরায় এখন অনেক বেশি কমফোর্টেবল মনে হয় সেই সাথে স্বাচ্ছন্দ বোধ করি নিজের কাছে। জানিনা এরকম সুন্দরভাবে কতদিন তাদের সঙ্গে কাটাতে পারব তবে আমি সবসময়ই চেষ্টা করি সকলের সঙ্গে মিলেমিশে থাকার এবং সবসময়ই হাসিখুশি থেকে মানুষের সঙ্গে কথা বলার যার কারণেই সকলের সঙ্গে খুব দ্রুতই মনের মিল হয়ে যায়। যেহেতু অনেকদিন জব করা হয়ে গিয়েছে যার কারণেই কিছু কিছু মানুষের সঙ্গে সব থেকে বেশি মনের মিল হয়েছে এবং তারাও আমাকে অনেক বেশি পছন্দ করে আমিও তাদেরকে অনেক বেশি পছন্দ করি।

আমি যে ফ্যাক্টরিতে জব করি সেই ফ্যাক্টরির এক বড় ভাই আছে সে এই ফ্যাক্টরিতে প্রায় ৮ থেকে ১০ বছর জব করছে। বলতে গেলে তার চাকরির এক্সপেরিয়েন্স অনেক বেশি আমার থেকে যেখানে আমার শুধুমাত্র ৭ থেকে ৮ মাস হয়েছে সেখানে তার চাকরির বয়স প্রায় 8 থেকে 10 বছর। আমি তার থেকে প্রতিনিয়ত অনেক কিছু শিখছি এবং শেখার চেষ্টা করছি সেও আমাকে অনেক কিছু শেখানোর চেষ্টা করে অনেক কিছু জানানোর চেষ্টা করে মূলত সে আমাকে কোন কিছু জানাতে পারলে তার নিজের কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে সে নিজেই আমাকে এ কথা বলেছে যেদিন আমি এ কথা শুনেছিলাম তখন আমার অনেক বেশি ভালো লেগেছিল যার কারণে আমি সব সময় তার সঙ্গে থাকার চেষ্টা করি এবং তার থেকে কাজগুলো শেখার চেষ্টা করি। তার সঙ্গে এত ভালো সম্পর্ক হওয়ার কারণ হচ্ছে তার বাসাটা প্রায় আমাদের ওদিকেই মানে আমার বাসা কুষ্টিয়া আর তার বাসা হচ্ছে যশোর। কুষ্টিয়া এবং যশোর খুব একটা বেশি দূরে নয়, যার কারণেই তার সঙ্গে রিলেশনটা একটু গভীর হয়ে গিয়েছে। মূলত অফিসে গেলে তার সঙ্গে কথা না বলে অথবা তার সঙ্গে ক্যান্টিনে বসে চায়ের আড্ডা না দিলে ভালোই লাগে না এরকম একটা অবস্থা।

এইতো কিছুদিন আগে ভাই বাসায় গিয়েছিল যদিও আমি তার আগে বাসায় গিয়েছিলাম বাসা থেকে আসার পরে সে বাসায় গিয়েছিল গত সপ্তাহে। বাসায় যেদিন যায় সেদিন আমার মনটা একটু খারাপ ছিল কারণ তার সঙ্গে প্রায় চার থেকে পাঁচ দিন দেখা হবে না গল্প গুজব খুব একটা বেশি করতে পারবো না সেই সাথে ক্যান্টিনে বসে চায়ের আড্ডায় অনেকটা সময় কাটাতে পারব না এটা ভেবেই খারাপ লাগছিল তবে কি আর করার বাসায় তো সকলেরই যেতে মন চায় যেমন আমার বাসায় যেতে অনেক বেশি ভালো লাগে। সেসব কথা আর নাই বলি, ভাই বাসায় গিয়েছিল বাসায় থেকে এসেছে গত পরশু রাতে। যেহেতু পরশু হাতে তার নাইট ডিউটি ছিল যার কারনে সে অনেকটা ধীরে সুস্থে কর্মস্থলে ফিরে আসতে পেরেছে। জেনারেল ডিউটি থাকলে হয়তো বা তার একটু কষ্ট হয়ে যেত যেহেতু নাইট ডিউটি যার কারণে সে সারাদিন সময় নিয়ে কর্মস্থলে ফিরে এসেছে এবং কর্মস্থলে ফিরে এসেই সে আমাকে ফোন দিয়ে ব্যাপারটা জানিয়ে ছিল।

IMG_20241023_230810.jpg

IMG_20241023_230714.jpg

IMG20241020232150.jpg

IMG20241020232124.jpg

IMG20241020232310.jpg

বেশ ভালই লাগছিল আবার অনেকদিন পরে তার সঙ্গে দেখা হবে কথা হবে এবং ক্যান্টিনে বসে চায়ের আড্ডা হবে যেহেতু আমি ফ্যাক্টরির মধ্যেই থাকি যার কারণে তার সঙ্গে দেখা করাটা খুব একটা বেশি সমস্যা না। যদিও ফ্যাক্টরির মধ্যে থাকার সেরকম কোনো নিয়ম নেই কিন্তু আমাকে শুধুমাত্র ফ্যাক্টরির মধ্যে থাকতে দেওয়া হয়েছে এটা অনেক বড় একটা প্রসঙ্গ সেদিকে আর না যাই। আমি সারাদিনের ডিউটি শেষ করে রুমে এসে গোসল খাওয়া দাওয়া করে একটু রেস্ট করছিলাম তখন প্রায় রাত্রি সাড়ে দশটা বেজে গিয়েছিল। হঠাৎ করে সেই বড় ভাই আমাকে ফোন দিল ফোন দিয়ে বলল অফিস রুমে আসতে। যদিও আমি তাকে বলছিলাম যে কিছুক্ষণের মধ্যে যাব কারণ আমি একটু ক্লান্ত ছিলাম রেস্ট করাটা খুব বেশি প্রয়োজন ছিল। কিন্তু বড় ভাই বলল যে এখনই অফিস রুমে যেতে যেহেতু সে খুব দ্রুতভাবে যেতে বলছে তাই আর বেশি দেরি না করে রেডি হয়ে চলে গেলাম অফিস রুমের উদ্দেশ্যে। অফিস রুমে গিয়ে দেখি যাদের নাইট ডিউটি থাকে তারা সকলেই চলে এসেছে এবং বসে গল্পগুজব করছে বড় ভাই আমাকে দেখে চেয়ার থেকে উঠে এসে হাতে হাত মিলিয়ে বুকে বুক মেলালো ভীষণ ভালো লাগছিল ভাইয়ের সঙ্গে অনেকদিন পরে দেখা হয়।

যেহেতু অফিসের রুমের মধ্যে অনেক মানুষ আছে তাই আমরা দুজন রুম থেকে বের হয়ে বাহিরে একটা জায়গায় গিয়ে বসে গল্পগুজব করছিলাম। গল্প করতে করতে আমরা ফ্যাক্টরির বাহিরে গিয়ে একটা চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছিলাম আর আড্ডা দিচ্ছিলাম সেই সাথে ভাইয়ের বিগত দিনগুলো কেমন কেটেছে সেই বিষয়ে ভাই অনেক গল্প করছিল বাসায় গিয়ে কি কি কাজ করেছে কেমন ভাবে কেটেছে এসব গল্প শুনছিলাম ভীষণ ভালো লাগছিল। এরপরে অনেকটা সময় আড্ডা দেওয়ার পরে চিন্তা-ভাবনা করলাম যে এখন আমি রুমে চলে যাব কারণ সারাদিন অনেক কাজ করেছিলাম অনেকটাই ক্লান্ত ছিলাম যার কারণে রুমে চলে আসতেই ভাই বলল যে অফিস-রুমের সামনে তুমি আবার আর একটু দাঁড়িয়ে থাকবে তোমার জন্য একটা গিফট আছে। এরপরে আমি বড় ভাইয়ের কাছে জিজ্ঞেস করি কি গিফট সেটা আগে বলেন যদি গিফট আমার পছন্দ হয় তাহলে নেব আর যদি পছন্দ না হয় তাহলে নেব না,এটা আমি মজা করেই বলেছিলাম হাহাহা। বড় ভাই একথা শোনার পরে বলল অবশ্যই এই গিফট তোমার অনেক বেশি পছন্দ হবে।

IMG20241020232133.jpg

IMG20241020232315.jpg

IMG20241020232144.jpg

IMG20241020232321.jpg

এরপরে ভাই অফিস রুমের মধ্যে গিয়ে দেখি একটা হানিনাটের বোতল নিয়ে আসছে আমার কাছে। এটা ৫০০ গ্রাম হানি নাট এগুলোর মধ্যে থাকে কাজুবাদাম কাঠবাদাম এবং মধু। সাথে আরো অন্যান্য কিছু মেশানো ছিল তার মধ্যে অন্যতম ছিল কালিজিরা। যদিও এই হানি নাট আমি অনেকদিন ধরেই কিনতে চাচ্ছিলাম কিন্তু কেনা হয়ে ওঠেনি তবে বড় ভাইয়ের এরকম হঠাৎ করেই হানিনাট গিফট করা দেখে বেশ ভালই লাগছিল। এরপরে আমি তার কাছে জিজ্ঞেস করলাম শুধুমাত্র আমার জন্যই নিয়ে এসেছেন নাকি অন্য সবার জন্যই, এরপরে বড় ভাই বলল যে আমি আমার জন্য কিনেছিলাম আর তোমার জন্য এক বোতল নিয়ে এসেছি এগুলো স্বাস্থ্যের পক্ষে অনেক উপকার খাবে ভাল লাগবে। এরপরে বড় ভাইকে ধন্যবাদ দিয়ে আমি রুমে চলে আসলাম রুমে এসেই আমি কোটা খুলে কয়েক চামচ খেয়েছিলাম বেশ ভালই লেগেছিল।

মাঝে মাঝে এরকম ছোটখাটো গিফট পেতে আমরা সকলেই অনেক বেশি ভালোবাসি এবং পছন্দ করি তবে আমি সত্যিই অনেক বেশি সারপ্রাইজড ছিলাম আমি হয়তোবা ভেবেছিলাম যেহেতু ভাই গিফট এর কথা বলছে তার মানে হয়তোবা বাসা থেকে কোন খাবার নিয়ে এসেছে সেটাই হয়তো নিয়ে আসবে। কিন্তু এরকম ভাবে যে হানিনাট দিয়ে আমাকে অবাক করে দেবে সেটা বুঝতে পারিনি। যাইহোক বড় ভাইয়ের দেওয়া গিফট পেয়ে ভীষণ খুশি ছিলাম সেদিন। এটাই ছিল আমার আজকের সংক্ষিপ্ত পোস্ট আশা করছি আমার এই পোস্ট আপনাদের সকলের কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আজ আর নয় এখানেই শেষ করছি, সকলেই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে...!!



সমাপ্ত


আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা

বিবরণ
বিভাগজেনারেল রাইটিং
বিষয়বড় ভাইয়ের দেওয়া গিফট-হানিনাট
পোস্ট এর কারিগর@jibon47
অবস্থান[সংযুক্তি]source


এটাই আমি..!!

IMG_5290-01.jpeg

আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নেম @jibon47। আমি মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে অনেক বেশি ভালোবাসি। আব্বু আম্মু আর ছোট বোনকে নিয়েই আমার পরিবার। এই তিনজন মানুষকে কেন্দ্র করেই আমার পৃথিবী।একসাথে সবাইকে খুশি করা তো সম্ভব নয়, তারপরও আমি চেষ্টা করি পরিবারের সবাইকে খুশি রাখার। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে।আমি বর্তমানে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটিতে মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্ট থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং লেখাপড়া করছি। আমি গান গাইতে, কবিতা লিখতে, এবং ভাই ব্রাদারের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করতে অনেক বেশি ভালোবাসি। সত্যি বলতে আমি প্রচন্ড রকমের অভিমানী, হতে পারে এটা আমার একটা বদ অভ্যাস। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব,"আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, পরিশ্রম সফলতার চাবিকাঠি।



সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ
@jibon47



VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

অফিসের বয়স বড় ভাই মানে বড় কলিগদের থেকে এরকম গিফট পেতে মাঝেমধ্যে ভালোই লাগে। হানিনাট এমনিতে খেতে খুব সুন্দর হয় তাও আবার যদি গিফটের হয় তবে তো আরই সুস্বাদু লাগে। আপনার সাথে আপনার কলিগের সম্পর্ক খুবই ভালো থাকুক। শুভকামনা জানাই।

ঠিক বলেছেন ভাইয়া গিফট পেতে আমাদের সকলেরই ভালো লাগে।আর যদি কেউ ভালবেসে কোন গিফট দেয় তাহলে আরো বেশি আনন্দ হয়। বেশ মজাদার একটি খাবার উপহার পেয়েছেন ভাইয়া। এই হানি নাট খেতে খুবই সুস্বাদু হয়। আপনার এবং আপনার অফিসের বড় ভাইয়ের সম্পর্ক দেখে খুবই ভালো লাগলো।দোয়া করি অটুট থাকুক চিরকাল এই সম্পর্ক।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

কাজের জায়গা এমন দুই একজন বড় ভাই থাকা দরকার। তাদের থেকে বেশ সাহায্য পাওয়া যায়। বড় ভাই আপনাকে হ‍্যানি নাট উপহার দিয়েছে খারাপ না দেখে ভালো লাগল। একটা সময় ফেসবুকে ঢুকলে শুধু এই হানি নাটের বিজ্ঞাপন সামনে আসত।