হ্যালো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আমি কিছুটা মানুষিক টেনশনে থাকলেও আলহামদুল্লিহ,ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে মানুষের বিয়োগান্তের বিষয়ে কিছু আলোচনা করবো। আশা করি ব্লগটি আপনাদের কাছে অনেক ভালো লাগবে।
মহাগ্রন্থ পবিত্র আল-কোরআন মাজীদে মহান সৃষ্টিকর্তা উল্লেখ করেছেন,“প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করতে হবে”। যারা পৃথিবীতে জন্মগ্রহন করেছে সবাইকে একদিন মরতে হবে। যে যেখানেই থাকুক না কেন কেউ মৃত্যুর হাত থেকে রেহাই পাবে না। শেষ বিচারের আগে সবাইকে মৃত্যুবরণ করতে হবে। আর এই বিষয়ে সৃষ্টিজগতের কারো কোন সন্দেহ নেই। সৃষ্টির শুরু থেকে আজ অব্দি এই প্রক্রিয়া চলে আসতেছে। শেষ বিচারের দিন পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।
গত কাল সন্ধা সাড়ে ছয়টার সময় অফিস থেকে বের হয়ে দেখি হালকা বৃষ্টি পড়ছে। একটি দোকানে পরিচিত এক ভাইয়ের সাথে কথা হলো। সেখানে চা বিস্কিট খেলাম। বৃষ্টি থামার পরে বাসার দিকে পা চালালাম। হঠাৎ করে শুনতে পায় মসজিদের মাইক থেকে একজন মানুষের মৃত্যুর সংবাদ বলতেছে। সেই সংবাদ শুনতে শুনতে ফার্মেসির দিকে এগিয়ে যেতে লাগলাম। কিছুদূর যাওয়ার পর দেখি সেই এলাকায় অনেক দোকান-পাট বন্ধ। তখনও বিষয়টা বুঝতে পারিনি। আমি যে ফার্মেসিতে বসি সেখানে গিয়ে দেখি ফার্মেসি আর একটি মুদি দোকান বাদে সব দোকান বন্ধ। আঙ্কেলকে জিঙ্গেস করলাম,আজকে কি হয়েছে। সব দোকান বন্ধ কেন।
তিনি যেটা বললেন তার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা হলো, আমাদের ফার্মেসির সামনের বাড়িতে মা ছেলে সহ দুইজন এক সাথে মারা গেছে। মা বেশ কয়েকদিন যাবৎ অসুস্থ,তবে আজকে সকাল থেকে বেশি অসুস্থ হওয়ার কারণে নারায়নগঞ্জ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যায়। লাশ বাড়িতে এনে দাফন কাফনের ব্যবস্থা হচ্ছে,আত্নীয় স্বজন আসলে আছরের নামাজের পরে জানাজার নামাজ পড়ে কবর দেওয়া হবে। যোহরের নামাজের আগেই মায়ের শোক সহ্য করতে না পেরে ছেলেও হঠাৎ করে মারা যায়।
উপস্থিত মানুষজন সহ এলাকা বাসি সবাই আশ্চর্য হয়ে গেল। শুরু হলো কান্নাকাটি,আরেকটি লাশের দাফন কাফনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এখন এলাকাবাসি সবাই মিলে পরামর্শ করে দুইজনকে এক সাথে এশার নামাজের পড়ে জানাজা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হলো। আমি যখন ফার্মেসিতে প্রবেশ করলাম তখনই দুইটা লাশ চোখের সামনে দিয়ে নিয়ে গেল। লাশ গুলো দেখে হৃদয়টা কেমন যেন কেঁপে উঠলো। সবাইকে একদিন এমন ভাবে খাটের উপর শুয়ে শেষ বিদায় নিতে হবে।
সাড়ে নয়টার দিকে জানতে পারলাম আজকে এই এলাকার শেষ মাথায় দুই বাড়ি থেকে দুই জন করে চার জন মানুষ মারা গেছে। আর গত কালকের আগের দিন আরো একজন মানুষ পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে। অর্থাৎ দুই দিনে সাতজন মানুষ মারা গেছে। এলাকার মধ্যে কেমন যেন একটা নিরব নিস্তব্ধ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এক এলাকা থেকে দুই দিনে সাত জন মানুষ চলে যাওয়াকে কেউ মেনে নিতে পারছে না। সবাই এলাকার স্থানীয় পরিচিত মানুষ। তাদের সাথে যারা চলাফেরা করেছে সবাই বলতেছে বিশ্বাস করা যাচ্ছে না যে,এখন মানুষ গুলো পৃথিবীতে বেঁচে নেই। সকাল সন্ধায় তাদের সাথে কথা হতো,আলাপ আলোচনা হতো অথচ এখন তারা ইহ জনম ত্যাগ করে পর জনমে চলে গেছে।
একদিন সবাইকেই পৃথিবী থেকে চলে যেতে হবে। ঘর-বাড়ি,জায়গা সম্পত্তি,টাকা-পয়সা,ধন-ধৌলত,ক্ষমতা সবই থাকবে শুধু আমরা থাকবো না। আমাদের ব্যবহৃত জিনিষ পত্র গুলো পড়ে রবে,সব কিছু স্মৃতি হয়ে যাবে। হয়তো আপনজনরা কিছুদিন মনে রাখবে। তারপর নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত হয়ে সব কিছু ভুলে যাবে। যদি আমরা কোন ভালো কাজ করে থাকি তাহলে হয়তো সেই কাজের উসিলায় কিছু মানুষ আমাদের স্বরন করবে। প্রবাদ আছে, “এমন জীবন করিও গঠন মরিলে হাসিবে তুমি কাঁদিবে ভুবন ”। আমাদের প্রত্যেকের উচিৎ মৃত্যুর কথা স্বরন করে হলে অন্যের ক্ষতি করা থেকে বিরত থাকা।
আমাদের জীবনটা ক্ষনস্থায়ী। একজন মানুষ কয়দিন আর বাচঁবে। আমরা মারা যাওয়ার পরে যদি মানুষ আমাদেরকে গালি দেয়,আমাদের চলে যাওয়াতে মানুষ খুশি হয়,মিষ্টি বিতরন করে,অসুস্থ হলে তিরষ্কার করে,মারা যাওয়ার জন্য দোয়া করে তাহলে বুঝতে হবে আমাদের জন্ম,জীবন ব্যর্থ। ক্ষমতার দাপটে আমরা যদি মৃত্যুর কথা ভুলে যায় তাহলে হবে না। বর্তমানে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন একজন আলোচিত ব্যাক্তি অসুস্থ হয়ে সিঙ্গাপুরে গেছেন। তার খরব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে মানুষের কমেন্ট দেখলে তার জীবন নিয়ে তিরষ্কার হওয়া উচিৎ। আরো একবার এমন অসুস্থ হয়ে সিঙ্গাপুর থেকে এসেছে। তখনও মানুষ তাকে নিয়ে নানা রকম মন্তব্য করেছে। কিন্তুু মানুষ শিক্ষা নেয় না। সৃষ্টিকর্তা যেন সবাইকে সঠিক জ্ঞান দান করেন।।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা,ডিজাইন করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বেশ মর্মান্তিক ঘটনা ভাইয়া। শুনেই তো কেমন জানি লাগছে। আসলে এমন খবর গুলোতে মনের মধ্যে বেশ একটা চাপা চাপা ভাব চলে আসে। আপনার কথা গুলো পড়তে যেন কেমন লাগছিল। তবে দোয়া রইল সবার জন্য। সবাই যেন জান্নাতের সুউচ্চ স্থান পেতে পারে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জী আপু এক এলাকা থেকে একদিনে এত গুলো মানুষ চলে গেলে খুবই খারাপ লাগে। ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার পোস্ট পড়েই কেমন যেন গায়ে কাঁটা দিচ্ছে ভাই। এত লোকের মৃত্যু একসাথে, এটা গ্রামের জন্যও যেমন আতঙ্ক, তেমনি অত্যন্ত দুঃখের। এই ধরনের ঘটনাগুলো আমাকে অনেক বেশি মর্মাহত করে। সবার জন্য সৃষ্টি কর্তার কাছে প্রার্থনা রইল।
আমিও ভাই তাই মনে করি ভাই, ক্ষনস্থায়ী এই জীবনে কারো ক্ষতি না করে সবার উপকার করা উচিত।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জী ভাইয়া খবরটা শুনে আমার নিজের কাছেও খুবই খারাপ লেগেছে। ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
একদমই মর্মান্তিক একটি ঘটনা। এই ঘটনা পড়েও যেন খুব খারাপ লেগে উঠছে। এই ঘটনাগুলো কিছুদিন আগে অহরহ ছিল৷ এখনকার সময়ে এই ঘটনাগুলো দেখে খুব খারাপ লাগলো৷ তবে দোয়া করি সকলে যেন জান্নাতবাসী হতে পারে৷
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জী ভাইয়া মহামারি ছাড়াই এত গুলো মানুষ এভাবে চলে যাবে,কেউ কল্পনা করেনি। ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit