আসসালামু আলাইকুম,
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই। আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। বর্তমানে রমজান মাস চলতেছে। রমজান মাসের গুরুত্বপূর্ণ কিছু আমল হলো যাকাত,দান সদকা। সবাই যদি নিজেদের সম্পদের সঠিক ভাবে হিসাব করে যাকাত দিতো তাহলে গরীব মানুষরা খুব সুন্দর ভাবে ঈদ পালন করতে পারতো। ধনী গরীবের বৈষম্যটা কিছুটা হলেও কমতো। যায়হোক চলুন মূল আলোচনায় আসি।
তেলে ভাজা জিনিষ আমি খুব কম খায়। খেতে মন চাইলেও মনকে বুঝায় বাহিরের তেলের জিনিষ খাওয়া ভাল না। মনকে যখন আর মানাতে পারি না তখন লোভে পড়ে তেলে ভাজা জিনিষ খায়। তো রমজানের কিছুদিন আগে সন্ধার সময় আফিস থেকে বাসায় যাওয়ার সময় একটি হোটেলে বসলাম। সিংগাড়া খাওয়ার জন্য।
আমি সব সময় লজ্জার কারনে হোটেল বা রেস্টুরেন্টের এক কোণায় গিয়ে বসি। ঐদিন কোণার টেবিল ফাঁকা না থাকায় ম্যানাজারের খুব কাছের একটি টেবিলে বসলাম। তার সব কথা শুনতে পাচ্ছিলাম। এমন সময় একজন বৃদ্ধা ভিক্ষুক এলেন। কাতর কন্ঠে বললেন, বাবা, খুব ক্ষুধা লেগেছে। কিছু খেতে দিতে পারো ?
ম্যানেজার একটা টেবিল দেখিয়ে বললেন, ঐ জায়গায় গিয়ে বসেন খালা। তারপর চিৎকার দিয়ে বললেন,খালাকে এক প্লেট খিচুড়ি দে। হোটেলটিতে তেমন বেচাকেনা হয় বলেও মনে হলো না। দুই তিন মিনিটের মধ্যেই আরো একজন বৃদ্ধা ভিক্ষুক ভিক্ষা নিতে এলেন। ম্যানেজার বললেন,খাওয়া দাওয়া হয়েছে খালা?
খালা চুপ করে দাড়িয়ে রইলেন। ম্যানাজার সে জন্য খালাকে আগের খালার পাশের চেয়ারে বসালেন এবং তাকেও এক প্লেট খিচুড়ি দেওয়া হলো। দুই জন ক্লান্ত পরিশ্রান্ত বৃদ্ধাকে খেতে দেখে কী যে ভালো লাগছিলো। আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে মনে মনে ভাবি হোটেল ছোট হলেও ম্যানাজারের মন অনেক বড়। কত বড় বড় হোটেলে কত খাবার নষ্ট হয় অথচ কত মানুষ খেতেই পায় না। আমার মনে হয় প্রত্যেকটা হোটেলেই খাবার নষ্ট হয়। এই খাবার গুলো ভিক্ষক দের দিয়ে দিলে খাবার গুলো অপচয় থেকে বেচেঁ যায়।
এরপর আরো একজন বৃদ্ধা ভিক্ষুক এলেন। ম্যানাজারের সামনে দাঁড়ালেন। বললেন, বাবা, ভিক্ষা করতে এসেছিলাম। তেমন ভিক্ষা পাইনি আজ। বাড়ি যাওয়ার ভাড়া নেই। ম্যানাজার বললো, আমারও আজকে তেমন বিক্রি হয়নি খালা। আপনি বরং কিছু খেয়ে যান। দেখেন কেউ ভাড়াটা দেয় কিনা। এতোক্ষণ যে হোটেল বয়টি খাবার পরিবেশন করছিলো সে বললো, খালা কয় টাকা ভাড়া লাগে বাড়ি যেতে? ভিক্ষুক খালা বললো ১৫ টাকা বাবা। হোটেল বয়টি পকেট থেকে ২০ টাকার একটা নোট বের করে খালার হাতে দিয়ে বললেন, নেন খালা এটা রাখেন। একটু খিচুড়ি খেয়ে বাড়ি যান। আমি খিচুড়ি দিচ্ছি। দুই জনের মুখেই অনেক হাঁসি।
হোটেল ম্যানাজার হাসতে হাসতে বললেন, শালা যেমন ম্যানাজার তেমন তার কর্মচারী। কেউ মানুষকে ফিরাতে জানে না। তারপর ম্যানাজার বললেন শোন, কোন ভিক্ষুক যেন খেতে এসে না ফিরে যায়। সবাইকে খাওয়াবি। সবাই যদি এমন মন মানুষিকতার হতো তাহলে পৃথিবীটা কত সুন্দর হতো।
আমাকে কখন সিংঙ্গারা দিয়ে গেছে সেটা আমার খেয়াল নেই। আমি বসে বসে সব দৃশ্য গুলো দেখছি আর চিন্তা করছি। আমাদের কাছে ভিক্ষুকরা ভিক্ষা চাইলে বলি ভাংতি নাই। আর একটি হোটল বয়ও বিক্ষুককে খুশি মনে যাওয়ার ভাড়া দিয়ে দিলো। সে বেতনই বা কয় টাকা পায়।
আমার সিংঙ্গারা খাওয়া শেষ হলে বিল দেওয়ার জন্য ম্যানাজারের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বললাম, ভাই, আপনার ঐ কর্মচারী ছেলেটি কয় টাকা বেতন পায়। ম্যানেজার বললো ব্যবসা তো তেমন চলে না ভাই। সারাদিন হোটেল খোলা থাকে। রাত নয়টা পর্যন্ত কাজ করলে ওকে ১২০ টাকা দিই। তার মা মারা যাওয়ার পর বাবা অন্য জাগায় বিয়ে করে বউ নিয়ে আলাদা থাকে। দুনিয়াতে আপন বলতে তার নানা নানিই আছে। নানা-নানিও বৃদ্ধ তেমন কোন কাজ করতে পারে না। সেই যত টাকা পায় সেটাই তারা তিনজন মিলে খায়।
এখন রমজান মাস প্রায় শেষের পথে। একদিন বা দুইদিন পরেই ঈদ। আসুন আমরা সবাই অসহায়দের পাশে দাড়ায়। নিজের একটা পোষাক কম কিনে হলেও অসহায়দের একটি নতুন জামা পড়ার সুযোগ করে দেয়। তাদের মুখে হাসিঁ ফুটালে সৃষ্টিকর্তা আপনার মুখে হাসিঁ ফুটাবে।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঠিক তাই আমরা যদি সবাই সবার সাধ্যমত অসহায় মানুষের পাশে দাড়াতে পারতাম,তবে সমাজটা অনেক সুন্দর হতো। আমরা এখন সবাই নিজেকেই নিয়ে ব্যস্ত । কে কত দামী ড্রেস কিনেছে কত টাকার ঈদ শপিং করেছে তার কম্পিটিশন চলছে। সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জী আপু ঠিক বলেছেন এখন কম্পিটিশন করে মার্কেট করা হয়। অথচ দান করার সময় ভাংতি থাকে না। ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাইয়া আপনার পোস্টটি পড়ে ভালো লেগেছে অনেক।আসলেই এই ঈদের সময় যদি আমরা দানের হাতটা একটু প্রসারিত করি,তাহলে সাধারণ মানুষের ঈদ টাও মধুর হয়।কারণ তারা অল্পতেই খুশি থাকে। ঈদ এর আনন্দ সবার মাঝে ভাগ করে নেওয়াটাই প্রকৃত আনন্দ।হোটেলের ম্যানেজার অনেক বড় মনের মানুষ।এরকম মানুষ আছে বলেই পৃথিবীটা এখনও অনেক সুন্দর।গল্পটি ভালো লেগেছে ভাইয়া।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জী আপু এমন মনের মানুষ দুনিয়ায় না থাকলে দুনিয়াটা ধ্বংস হয়ে যেত। ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সত্যি ভাইয়া আমরা যদি সবাই হোটেল ম্যানেজারের মতো হতাম, তাহলে আমাদের দ্বারা অন্যরা উপকৃত হতো। মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব তাই আমাদের সবারই উচিত যার যার সাধ্য মতো মানুষের পাশে দাঁড়ানো।আর এটা ভাবা উচিত মানুষ মানুষের জন্য। আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগল, সুন্দর লিখেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জী আপু হোটেল ম্যানেজারের মতো মন মানুষিকতা সবার দরকার। ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit