অবশেষে আমিও অসুস্থ হয়ে গেলাম।

হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই। আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আপনাদের সাথে নিজের অসুস্থতা নিয়ে একটি ব্লগ শেয়ার করতে যাচ্ছি।

বন্ধুরা আপনারা সবাই জানেন যে আমি মেডিকেল বিষয়ে একটি কোর্স করার পাশাপাশি আমি একটি ফার্মেসিতেও সময় দিচ্ছি। অর্থাৎ টুকটাক ওষুধ সেল করি, মানুষের বিভিন্ন রোগ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করি। সব মিলিয়ে মেডিকেল বিষয়ে জ্ঞান অর্জন চেষ্টা করতেছি। প্রতিদিন শত শত মানুষকে বিভিন্ন ধরনের রোগের ঔষধ দিয়ে তাদেরকে সুস্থ থাকার জন্য বিভিন্ন ধরনের উপদেশ দিয়ে থাকি। অবশেষে আজকে আমি নিজেই অসুস্থ হয়ে গেলাম। অসুস্থতা তো আমার কোন বাধ্যগত বিষয় না যে আমি ওষুধ সেল করি বলে ভয়ে আমার কাছে আসবে না, হা হা হা।

যেহেতু আবহাওয়া চেঞ্জ হয়তেছে, প্রত্যেকটা ফ্যামিলিতে জ্বর ঠান্ডা কাশির মত রোগ গুলো দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে যাদের ডাস্ট এলার্জি তাদের সমস্যাটা একটু বেশি হচ্ছে। ঠান্ডা পানি ধরার কারণে, ঠান্ডা ওয়েদারে বেশিক্ষণ থাকার কারণে, রাস্তা চলাচলের সময় মার্কস ব্যবহার না করার কারণে এছাড়াও বিভিন্ন কারণে ধুলাবালি নাকে মুখে প্রবেশ করার কারণে এলার্জি টা আমাদের শরীরে ভীষণ সমস্যা করছে।

আপনারা তো জানেন আমাদের দেশের রাস্তাঘাট কতটা ক্লিন.... রাস্তা দিয়ে গাড়ি আসা-যাওয়ার কারণে রাস্তার পাশে গাছপালা বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র থাকলে সেগুলোর শরীরে ধুলাবালি পরে গোরস্থানে পরিণত হয়ে যাই। অন্য কোন দেশের রাস্তার মধ্যে এত ধুলাবালি আছে কিনা সেটা আমার জানা নেই। বিশেষ করে শহরের দিকে রাস্তার ধুলাবালির কারণে এক সময় মন চায় শহর ছেড়ে গ্রামে চলে যাই। ধুলাবালির কারণে খুবই বিরক্ত হয়ে গেছি। যাই হোক তারপরও জীবিকার তাগিদে থাকতে হচ্ছে।

ফার্মেসিতে বসে থাকা অবস্থায় বিভিন্ন মানুষের অসুস্থতা সম্পর্কে জ্ঞান হচ্ছে। সব থেকে বেশি রোগী আসছে এলার্জি জনিত সমস্যা নিয়ে। আমি যেন দেখতেছি প্রত্যেকটা ফ্যামিলিতে দু এক জন মানুষের এলার্জি সমস্যা আছেই। এ সমস্যাটা বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে। কারো জন্মগতভাবে হয়ে থাকে, কেউ ধুলাবালিতে কাজ করলে এলার্জি হয়ে থাকে, কেউ এলার্জিজনিত খাবার খেলে সমস্যাটা দেখা দেয়। বিভিন্ন কারণেই হয়ে থাকে। এ ডাস্ট এলার্জির সমস্যাটা আমার নিজেরও রয়েছে। আমাদের অফিসে দুইজনের ডাস্ট এলার্জির মাত্রা নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে গেছে। তাদের সমস্যাটা দেখা দিলে এত পরিমানে হাঁচি দেয় যে অফিসের মধ্যে বসে থাকা দায় হয়ে যায়। তবে আমার সমস্যাটা এত গুরুতর নয়। মাঝে মাঝে দেখা দেয়।

গতকাল থেকেই শরীরটা কেমন যেন করছিলো। মাথার মধ্যে কিছুটা ব্যাথা ছিল। সারারাত তেমন কোন সমস্যা হয়নি তবে সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই হাঁচি শুরু হয়েছে। ভেবেছিলাম হয়তো এমনিতেই সেরে যাবে। কিন্তু সময় যত অতিক্রম হচ্ছে, হাচিঁর মাত্রা ততই বাড়ছে। বিকালের দিকে হাচিঁর কারণে অফিসের মধ্যে আর বসে থাকা যাচ্ছিল না। অন্যদিকে গত দুই সপ্তাহ ধরে অফিসে এত পরিমানে কাজের চাপ, মাথা এদিক থেকে ওদিকে ঘুরাতে পারছি না। অফিসের মধ্যে সব মিলিয়ে অনেক চাপের মধ্যে রয়েছি। সে সাথে আজকে প্রচন্ডভাবে অসুস্থ হয়ে গেলাম।

সন্ধ্যার পরে দেখলাম হাচিঁর সাথে মাথা ব্যাথা শুরু হয়েছে, সেই সাথে জ্বর চলে এসেছে। অনেক কষ্ট করে বাসায় এসেছি। বাসায় এসেও শান্তি নেই। আমাদের ছোট্ট বাবুটা প্রচুর দুষ্টামি শিখে গেছে। তার কারণে ঠিকভাবে শুয়ে থাকাও যাচ্ছিল না। তারপরেও দরজা বন্ধ করে এক রুমে অনেকক্ষণ শুয়ে ছিলাম। হঠাৎ করে মনে হলো আজকে এখনো পোস্ট করা হয়নি। সেজন্য অসুস্থ শরীর নিয়েই একটি পোস্ট লিখতে বসলাম।

আমি জানি বর্তমানে আমার মত অনেকেই অসুস্থ হয়ে আছেন। যারা সুস্থ আছেন তারা একটু সতর্কভাবে থাকবেন। যথাসম্ভব গরম পানি ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন। গরম পানি দিয়ে গোসল করলে ভালো হয়। বাসার মধ্যে অবশ্যই জুতা পড়ে থাকবেন। খালি পায়ে ফ্লোরে হাঁটবেন না। কারণ ফ্লোর অনেক ঠান্ডা। এই ঠান্ডার মধ্যে খালি পায়ে ফ্লোরে হাঁটলে অনেক ধরনের সমস্যা হতে পারে। ধীরে ধীরে শীতের আবহাওয়া বইতে শুরু করেছে। রাতের বেলা ভালোই ঠান্ডা লাগে। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠলে কুয়াশা দেখা যায়। আবহাওয়া অফিস থেকে জানা যাচ্ছে যে জানুয়ারি ফেব্রুয়ারিতে ভালই শীত পড়বে। সেজন্য সবাই আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখবেন।

তো বন্ধুরা আজকে আর কথা বাড়াচ্ছি না। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমিও সবার জন্য দোয়া করি। সবাই সতর্ক অবস্থানে থাকবেন। বিশেষ করে যাদের ডাস্ট এলার্জি রয়েছে, তারা অবশ্যই সতর্ক ভাবে চলাফেরা করবেন। আর এলার্জি এমন একটি রোগ যেটা চিরতরে ভালো হওয়ার কোন রাস্তা দেখি না। কত ধরনের ওষুধ খেয়েছি কোন লাভ হয় না। এখন ভালো হওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছি। সৃষ্টিকর্তা যদি ভালো করে, এমনি করবে। আর যদি ভালো না হয় তাহলে মরণ পর্যন্ত এই ডাস্ট এলার্জি নিয়েই থাকতে হবে। সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আবার আগামীকাল দেখা হবে, ইনশাআল্লাহ।

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।