আমার প্রণের কমিউনিটি
পৃথিবীটা হলো একটি যুদ্ধক্ষেত্র,আমরা হলাম সেই যুদ্ধেক্ষেত্রের যুদ্ধা। জন্মের পর থেকেই আমাদের যুদ্ধ শুরু হয়।আর শেষ নিঃশ্বাস থাকা পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হয়। জন্মের পরেই শিশু খাবারের জন্য চিৎকার করে,সেটাই তার জন্য যুদ্ধ, একটু বড় হয়ে হাটার চেষ্টা করতে গিয়ে এখানে সেখানে পরে যায়,ব্যথা পায় এটাও তার জন্য একটি যুদ্ধ। আরেকটু বড় হয়ে পড়াশোনা নিয়ে করতে হয় যুদ্ধ,পড়াশোনা শেষ হওয়ার আগেই শুরু হয় আরেক যুদ্ধ। আর সেই যুদ্ধটাই সব থেকে কঠিন যুদ্ধ। সেই যুদ্ধটা চালিয় যেতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয়,কারো বাড়ি ছাড়তে হয়,কারো দেশ ছাড়তে হয়,কারো আবার দুনিয়াও ছাড়তে হয়। মোট কথা দুনিয়া ছাড়ার আগ পর্যন্ত যুদ্ধটা চালিয়ে যেতে হয়। আর সেই যুদ্ধের নাম হলো জীবন যুদ্ধ।
কিছু দিন আগে বাংলাদেশ সহ দক্ষিণ এশিয়ার আকাশ আমাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে আমাদের উপর আগুন ছেড়ে ছিল। তারপরও আমাদের শিক্ষ হয়নি। গত কাল প্রথম আলো পত্রিকার একটি নিউজ দেখলাম রাস্তা প্রসস্থ করতে গিয়ে উপর মহল থেকে কুমিল্লা সহ দেশের বিভিন্ন জাগায় চার লাখ গাছ কাটার অনুমদন দিয়েছে। যেহেতো রাস্তা করতে হবে,গাছ কেটেছে সমস্যা নেই,যেখানে রাস্তা করা শেষ, রাস্তা প্রসস্থ হয়ে গেছে, সেখানে চার লাখ গাছ লাগানোর অনুমদন দিক। সেটা তো দিবে না,গাছ কাটবে কিন্তু গাছ লাগাবে না। যার ফল ভোগ করে আমাদের মত সাধারন মানুষ। যারা গাছ কাটার অনুমদন দেয় তারা কিন্তুু সূর্যের উত্তাপ ভোগ করে না। তারা জনগনের টাকায় গাড়িতে,বাড়িতে,অফিসে এসি লাগিয়ে নিয়েছে। তাদের গরম ঠান্ডার ব্যপারে তেমন কোন মাথা ব্যাথাে নেই। মাথা ব্যাথা আমাদের, কারন আমরা এই দেশের হতভাগা জনগন। আমাদের ভাগ্য খারাপ আমরা এই দেশে জন্মগ্রহন করেছি।
কিছুদিন আগে দুপুর বেলা অফিস থেকে যোহরের নামাজ পড়ে,ছাতা মাথায় দিয়ে লাঞ্চ করার জন্য বাসায় যাচ্ছিলাম। তখন যেমন রোদ ছিল তেমন গরম ছিল। তখন অবস্থাটা আমার কাছে এমন মনে হয়েছে যে,সূর্য যেন পৃথিবীতে আগুনের বৃষ্টি জড়াচ্ছে। আমার মত অনেক মানুষ যত দ্রুত সম্ভব রোদ অতিক্রম করে ছায়ায় যাওয়ার চেষ্টা করছে। কিছুদুর যাওয়ার পরে এক ব্যাক্তিকে একটি ভ্যানগাড়িতে বিভিন্ন প্লাস্টিকের জিনিষ বিক্রয় করতে দেখলাম। আমি দুর থেকে লক্ষ করলাম লোকটির হাতে কোন ছাতা নেই,বরং মাথার মধ্যে কয়েকটি প্লাস্টিকের জালী দিয়ে রেখেছে। সেটা দিয়ে সে রোদ থেকে তার মাথাটা বাঁচানোর চেষ্টা করছে। যদি ছাতা মাথায় দেয়,তাহলে একটি হাত বন্ধ হয়ে যায়। বেচা কেনা করতে তার সমস্যা হয়। যার জন্য সে ছাতা মাথায় দেয় না। আমি তাকে দেখে ভ্যানগাড়িটির পাশে গিয়ে দাড়ালাম।
ভ্যানগাড়িতে দেখলাম সংসারে কাজে লাগে এমন চল্লিশ পঞ্চাশ প্রকারের জিনিষ রয়েছে। এখানে রয়েছে প্লাস্টিকের কলম দানি, জালী, চামচ, ঢাকনা, বেলচা, ছাঁকনী, বাটি, বালতি, বক্স সহ অনেক কিছু। তবে প্রতি পিচ জিনিষ মাত্র দশ টাকা। কয়েক জন মহিলা কিছু জিনিষ পত্র নিয়ে টাকা আনার জন্য বাড়ির ভিতরে গেছে। লোকটি সেই টাকার জন্য দাড়িয়ে আছে। পাশে গিয়ে লোকটির নাম জিঙ্গেস করলাম। তার নাম মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ, (ছদ্ম নাম) তার গ্রামের বাড়ি বগুড়া। সে প্লাস্টিকের জিনিষ বিক্রয় করে আজকে চার বছর। এক মেয়ে ও এক ছেলে আছে। তারা দুইজনই একটি মাদ্রাসায় পড়ে। তার মা তার সাথেই থাকে। সব মিলিয়ে তাদের ফেমিলির সদস্য পাঁচ জন। সে যে টাকা ইনকাম করে বর্তমান বাজারে দুই সন্তানের পড়াশোনা চালিয়ে সংসার চলে না। যার ফলে তার ওয়াইফ গার্মেন্টসে কাজ করে।
আমি তার অনুমতি নিয়ে তার একটি ফটোগ্রাফি নিলাম। সে বলে ভাই গরমে অবস্থা খুবই খারাপ। রোদের কারনে মানুষের জীবন যায় যায় অবস্থা। বিশেষ করে আমরা খুবই কষ্টের মধ্যে আছি। আমি রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে জিনিষ পত্র বিক্রয় করি। গরমের কারনে ঘরে বসে থাকলে আমাদের সংসার চলবে না। তাই বাধ্য হয়ে এই গরমের মধ্যেই ভ্যানগাড়ি নিয়ে বের হয়েছি। মাস শেষে ঘর ভাড়া,ছেলে মেয়েদের পড়াশোনার খরচ,দোকানের বিল দিতে হয়। এটাই হলো জীবন যুদ্ধ। আর তারা হলো জীবন যুদ্ধে হার না মানা সৈনিক।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | realme-53 |
শিরোনাম | প্রতি পিস দশটাকা।। |
স্থান | রামারবাগ, নারায়নগঞ্জ, ঢাকা, বাংলাদেশ। |
তারিখ | ০৫ /০৫ /২০২৪ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাই এটা বাংলাদেশ এখানে কাটা যায় কিন্তু তার পতিস্থাপন করা যায় না।এখানে আপনি নিমিশেই করতে পারবেন কিন্তু গরতে পারবেন৷ না দারুন একটি ব্লগ লিখেছেন।এই বাজারে আসলেই মানুষ যে টিকে আছে এটাই অনেক বড় পাওয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জি ভাই বর্তমানে দেশের ও বাজারের যা অবস্থা। মানুষ যে এ অবস্থায় বেঁচে আছে, জীবন যুদ্ধের টিকে আছে, এটাই অনেক কিছু। ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে জীবন যুদ্ধটা খুবই কঠিন মানুষ কত রকম কিছু করেই তার জীবিকার নির্বাহ করে থাকে..। এ ধরনের প্লাস্টিক জিনিসের অনেক ভ্যান গাড়ি মাঝেমধ্যে দেখা যায় যেগুলো প্রতিপিচ মাত্র ১০ টাকা ২০ টাকা অথবা এমন লেখা থাকে প্রতি পিস মাত্র ৬০ টাকা। যাই হোক আপনি বাস্তব জীবন থেকে অনেক সুন্দর একটি গল্প আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জি ভাইয়া বাস্তব অভিজ্ঞতার গল্পগুলো সবার সাথে শেয়ার করতে ভালো লাগে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit