আসসালামুআলাইকু/ নমস্কার/ আদাব।
আজকে আপনাদের সাথে “একটি রোমান্টিক গল্পের হৃদয় বিধায়ক সমাপ্তি”র গল্প শেয়ার করবো।
রাত প্রায় দুটো বাজে, হঠাৎ নীপার মোবাইলে অপরিচিত একটি নাম্বার থেকে কল আসলো। নীপা তখনও ঘুমাইনি। ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। কলটি রিসিপ করার সাথে সাথে অপর পাশ থেকে বলতো লাগলো কিছু প্রডাক্টস অর্ডার দিবো। কালেক্ট করে দিতে পারবেন ..? নীপা একটি ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে অনলাইনে বিভিন্ন গিফট আইটেম সহ মেয়েদের কসমেটিক্স সামগ্রি বিক্রয় করে থাকে। সে বর্তমানে ইডেন মহিলা কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। পড়া শোনার পাশাপাশি সে এই বিজনেসটা করে থাকে। নীপা জানায় আজকে পারবো না তবে সময় দিলে আগামীকাল দিতে পারবো। লোকটি বললো সমস্যা নেই। এক সাপ্তাহ সময় পাবেন। আজকে এগারো তারিখ আমার লাগবে আগামী ষোল তারিখ রাত দশটার সময়। নীপা বললো আচ্ছা ঠিক আছে বলেন কি কি লাগবে।
অপর পাশ থেকে একটি ছেলে কল দিয়েছিলো। ছেলেটি বললো একটি কাগজে লিখে নিন। নীপা একটি কলম দিয়ে কাগজে নোট করে নিলো। পাচঁটি শাড়ি, পাঁচ ডজন কাচেঁর চুড়ি, পাচঁটি লিপিস্টিক, হাতের একটি ব্রেসলাইট, দুইটি নীল পলিশ,মেহেদি সহ আরো কিছু কসমেটিক্সস সামগ্রি। লোকটি বললো টোটাল হিসাব করে বলেন কতটাকা বিল এসেছে। নীপা সব কিছু ভালভাবে ক্যালকুলেশন করে জানায় যে ছত্তিশ হাজার তিনশত নব্বই টাকা বিল হয়েছে। তারপর ছেলেটি বললো আপনার বিকাশ নাম্বার দিন, আমি বিকাশে টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছি। এই কথা বলে লোকটি ফোন কেটে দিলো।
ফোন রেখে দেওয়ার পরে নীপা বসে বসে চিন্তা করে এত গুলো টাকার প্রডাক্টস নিবে কিনা কে জানে। আমি যদি সব গুলো প্রডাক্টস সংগ্রহ করি আর সে যদি না নেয়, তাহলে আমি প্রডাক্টস গুলো দিয়ে কি করবো। এমন সময় হঠাৎ করে নীপার মোবাইলে একটি ম্যাসেজ আসলো। একটি অপরিচিত নাম্বার থেকে নীপার বিকাশ নাম্বারে পঁচিশ হাজার টাকা আসে। একটু পরেই আবার ছেলেটি ফোন দিয়ে জানায় যে, এখন সে পচিঁশ হাজার টাকা দিতে পেরেছে,কারন আজকে পচিঁশ হাজার টাকার বেশি সেন্ড করতে পারতেছে না। লিমিটি শেষ হয়ে গেছে। বাকি টাকা পরের দিন সেন্ড করে দিবে। এ কথা বলে লোকটি ফোনটা রেখে দিলো।
ফোন রাখার পরে নীপা চিন্তা করে যেহেতো পঁচিশ হাজার টাকা অগ্রিম দিয়েছে সেহেতু সে প্রডাক্টস নিবে। নীপা তারাতারি ঘুমিয়ে গেল কারন দিনের বেলা তাকে অনেক জাগায় ঘুরে ঘুরে এগুলো সংগ্রহ করতে হবে। নীপা সকাল দশটার সময় ঢাকা নিউ মার্কেট,বসুন্ধরা শপিংমল সহ কয়েকটা মার্কেট ঘুরে ঘুরে প্রায় ৯০% প্রডাক্ট সংগ্রহ করে ফেলেছে। আর কিছু টুকটাক বাকি আছে। সে গুলো সে আগামী কাল সংগ্রহ করবে। রাতে বাসায় শুয়ে শুয়ে সে কি যেন চিন্তা করতেছে এমন সময় নীপার মোবাইলে আরেকটি ম্যাসেজ আসলো। ম্যাসেজে দেখা গেল বিকাশ নাম্বারে বারো হাজার টাকা এসেছে। সাথে সাথে ঐ ছেলেটি কল দিয়ে বললো যে সে বাকি টাকা সেন্ড করে দিয়েছে। নীপা জানায় যে টাকা বেশি এসেছে। সে বললো বাকিটা আপনার বকশিস। আর আমি কিছু বাক্য দিবো আপনি সে গুলো কাগজে লিখে প্রত্যেকটা প্রডাক্টসের সাথে লাগিয়ে দিবেন। নীপা বললো আচ্ছা ঠিক আছে আপনি সে গুলো আমার ম্যাসেন্জারে পাঠিয়ে দেন। আমি সেখান থেকে নিয়ে নিবো। আর আমি এলরেডি অনেক প্রডাক্টস কিনে ফেলেছি। লোকটি বললো এত তাড়াহুড়ো করার দরকার নেই। ষোল তারিখ আমার গার্লফ্রেন্ডের জন্মদিন। আমাকে পনের তারিখ দিলেই হবে। এ কথা বলে লোকটি ফোনটা রেখে দিলো।
নীপা শুয়ে শুয়ে ভাবে লোকটি তার গার্লফ্রেন্ডের জন্মদিন উপলক্ষে কত কিছু করছে। এমন একজন লোককে যে বয়ফ্রেন্ড হিসাবে পেয়েছে সে অনেক ভাগ্যবতী। এমন অনেক কিছু চিন্তা করে নীপা ঘুমিয়ে গেল। পরের দিন সকালে অর্ডার করা সমস্ত প্রডাক্টস কিনে রাতে সব গুলো প্যাকেট করতে বসেছে। ম্যাসেনজারে বাংলাতে লেখা বাক্য গুলো পড়ে নীপা রীতিমত অবাক হয়ে যাচ্ছে। এত সুন্দর সুন্দর বাক্য সে আগে কখনো পড়েছে কিনা তার জানা নেই। অবশেষে সব কিছু প্যাকেট করে রাতের বেলা ঘুমিয়ে গেল।
অর্ডার করার তৃতীয় দিন মানে তের তারিখ সারাদিন রাত লোকটি আর নীপাকে ফোন দেয় নি। চতুর্থ দিনও ফোন না দেওয়ায় নীপা রাতের বেলা লোকটির নাম্বারে ফোন দিলো। কিন্তুু তার নাম্বার বন্ধ পেল। নীপা চিন্তা করলো এত গুলো টাকার প্রডাক্টস কিনে এখন লোকটির নাম্বার বন্ধ কেন। এমন হাজারো চিন্তা করে নীপা রাতের বেলা ঘুমিয়ে গেল। পরের দিন পনের তারিখ যেদিন পন্য গুলো নেওয়া কথা সেইদিনও কোন খুজখবর নেই। আর মোবাইল ও বন্ধ। নীপার কাছে যত গুলো নাম্বার ছিল সব গুলো নাম্বারে চেষ্টা করেও তার সাথে যোগাযোগ করতে পারলো না। অবশেষে নীপা ঔলোকটির ফেসবুক আইডতে ঢুকলো। সেখানে তার কয়টা ছবি ছাড়া আর তেমন কিছু পেল না। আর ঠিকানাও দেওয়া নেই। রাত প্রায় সাড়ে এগারোটার সময় নীপা দেখলো লোকটি অনলাইনে এসেছে। সাথে সাথে তাকে ম্যাসেজ দিলো। আপনি কোথায়..? আপনার প্রডাক্টস গুলো কবে নিবেন। লোকটি বললো আপনার জন্মদিন কবে,নীপা বললো সামনে মাসের পনের তারিখ কিন্তু কেন..? লোকটি বললো এগুলো আপনার জন্মদিনের গিফট হিসাবে রেখে দিন। কারন গত তের তারিখ আমার গার্লফ্রেন্ডকে বাসায় পৌছে দেওয়ার সময় আমরা বাইক এক্সিডেন্ট করি। সেই এক্সিডেন্টে আমার গার্লফ্রেন্ড মারা যায়।
কথাটি শুনে নীপার হাত থেকে মোবাইলটি পড়ে গেল। নীপার মুখের আওয়াজ বন্ধ হয়ে গেল।।
সবাই ভাল থাকেবেন,সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Thank you, friend!
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmd7of2TpLGqvckkrReWahnkxMWH6eMg5upXesfsujDCnW/image.png)
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmWDnFh7Kcgj2gdPc5RgG9Cezc4Bapq8sQQJvrkxR8rx5z/image.png)
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এতো কষ্টের একটা সমাপ্তি হবে ভাবিও নি আমি। আহা লোকটার জন্য অনেক খারাপ লাগছে। সে অনেক কষ্ট পেয়েছে। তার মনের মানুষটাই আর পৃথিবীতে নেই। কিছু গল্প যেনো এভাবেই শেষ হয়ে যায়।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। সুন্দর একটি কমেন্ট করেছেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit