মাতৃভাষা বাংলার একমাত্র কমিউনিটি
Image Source-https://pixabay.com/illustrations/window-girl-alone-woman-young-5850628/
হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই, আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আপনাদের সাথে একটি বাস্তব জীবনের গল্প শেয়ার করবো। কিছু কিছু বিষয় আছে যেগুলো বাস্তব, কিন্তু আমরা সমাজের ভয়ে, লোকমুখের কথার ভয়ে, সেগুলো স্বীকার করতে পারি না। কিন্তু আমরা সেগুলো একটু চিন্তা করলে, গভীরভাবে অনুভব করলে, সে বিষয়গুলো বুঝতে পারি। আজকে যে গল্পটা শেয়ার করবো, এই গল্পটি ঘটেছে গত শনিবারে আমার বড় ভাইয়ের ফ্যামিলিতে। ঘটনাটি ঘটার পরে প্রথমদিকে আমরা সবাই একটু অন্যমনস্ক হলেও সম্পূর্ণ ঘটনাটি শোনার পরে আমরা তার বাস্তবতা বুঝতে পেরেছি। আশা করি যদি ব্লগটি আপনার মনোযোগ সহকারে পড়েন। তাহলে আপনারও বিষয়টা অনুধাবন করতে পারবেন।
আমি শুক্রবারে ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে গিয়েছিলাম। শনিবার রাতের বেলা ঢাকায় এসে রবিবারের সকালে অফিসে গিয়ে জানতে পারি আমার এক বড় ভাই অফিসে আসে নাই। তারপর খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারি আমার বড় ভাইয়ের ফ্যামিলিতে একটি ঘটনা ঘটেছে। তারা দুই ভাই। তাদের পূর্ব পুরুষদের বাড়ি ছিল বাংলাদেশের দক্ষিনে সুন্দরবনের পাশে বাগেরহাট জেলায়। সেখান থেকে তিনির বাবা সরকারি চাকরি করার সুবাদে ঢাকায় এসে বসবাস শুরু করেন। তিনির বাবা চাকরি থেকে রিটায়ার্ড হয়ে নারায়ণগঞ্জে জায়গা কিনে বাড়ি করেন। তারা দুই ভাইয়ের মধ্যে ছোট ভাই বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি করে। আর বড় ভাই আমাদের সাথে প্রাইভেট কোম্পানিতে জব করে।
দুজনই বিয়ে করেছে, দুজনের একটি করে সন্তান রয়েছে। দুজনের সন্তানের বয়স পাঁচ থেকে সাত বছর হবে। শুক্রবারে ছোট ভাইয়ের বউ সন্তানকে বাসায় রেখে শপিং করতে মার্কেটে গিয়েছিল। কিন্তু রাত হয়ে যাওয়ার পরেও মার্কেট থেকে ঐদিন আর বাড়িতে আসে নাই। তার মোবাইল বন্ধ ছিল, সব আত্মীয়-স্বজনের বাসায় ফোন করে খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে, কারো বাসায় ও যায়নি। এ বিষয়টা নিয়ে সবার মধ্যে একটি আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছিল, থানাতে সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ওই বড় ভাই দুইদিন অফিসে আসে নাই।
শুক্রবার শনি রবি সোম এই চারদিন পার হওয়ার পরে জানা গেছে, ছোট ভাইয়ের বউ ঢাকার মিরপুরে তার মামার বাসায় রয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে এভাবে উধাও হওয়ার কারণ কি জানতে চাইলে, সে জানাই সে নাকি ইচ্ছে করেই চার দিন যাবত আত্ম গোপনে ছিল। তারপর আজকে সকালবেলা ঘটনার মূল সত্য বের হয়ে এসেছে।
মূল ঘটনা হলো ছোট ভাইয়ের শশুর মারা গেছে কয়েক মাস আগে। ছোট ভাইয়ের বউ তাদের মা বাবার একমাত্র সন্তান ছিল। সে ছাড়া তাদের আর কোন ভাই-বোন ছিল না। এখন তার বাবা মারা যাওয়ার পরে তার মা দ্বিতীয় বিয়ে করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তবে পাত্র হিসেবে মেয়ের চাচাতো মামা শ্বশুর কে পছন্দ করেছে। মামাশ্বশুর আবার এই মেয়ের মাকেও বিয়ে করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ছোট ভাইয়ের শাশুড়ির বয়স আনুমানিক ৩৫ বছর হবে। ছোট ভাইয়ের বউয়ের বয়স ২০ থেকে ২২ বছর হবে। মেয়ের মা এই বয়সে আবার বিয়ে করবে এই লজ্জার কারণে সে আত্মগোপনে ছিল। তাও আবার পরিচিত চাচাতো মামাশশুর ।
এখন আমার মতামত হলো একটি মহিলার যদি ৩৫ বছর বয়সে তার স্বামী মারা যায়। তাহলে সে অবশ্যই দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারে। কারণ ৩৫ বছর বয়সে তার জীবন যৌবন শেষ হয়ে যায়নি। তার বৃদ্ধ বয়সে একটি খুঁটি দরকার। তার বৃদ্ধ বয়সে একজন সঙ্গী দরকার। মানুষ একা বাঁচতে পারে না, একাকীত্ব মানুষকে কুড়ে কুড়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। তাই একাকীত্ব কাটানোর জন্য সামর্থ্য থাকলে পুরুষদের যেমন বিয়ে করা জরুরি, ঠিক তেমনিভাবে একটি মহিলাও তার জীবন সঙ্গী বেছে নেওয়ার অধিকার রয়েছে।
এ বিষয়টা আয়নার মতো ঝকঝকে পরিষ্কার। যেহেতু মহিলার মাত্র ৩৫ বছর হয়েছে, তার জীবনের আরো অনেক সময় বাকি আছে। এই সময়টা সে কি করবে। এক মেয়ে ছাড়া তার আর কোন ছেলেমেয়ে নেই। মেয়ে থাকে স্বামীর সংসারে। মহিলাটি একা একা কয়দিন বাঁচতে পারবে। এখন মহিলাটি যদি বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে সেটাকে আমরা খারাপ চোখে কেন দেখবো...? আর এখানে তো লজ্জার কিছু নেই। ৫০-৬০ বছরের একজন পুরুষ যদি বিয়ে করতে পারে তাহলে ৩৫ বছরের একজন মহিলা অবশ্যই বিয়ে করতে পারবে।
৩৫ বছর বয়সে স্বামী মারা গেছে বলে তার স্বাদ আহলাদ জীবন যৌবন চাহিদা, চাওয়া পাওয়া সবকিছু মরে যায়নি। সে অবশ্যই আবার নতুনভাবে জীবন শুরু করার অধিকার রাখে। কিন্তু আমরা সমাজের মানুষ এ বাস্তব সত্যটা স্বীকার করতে পারি।না। যদি নিজের বেলা হয়, তখন আমরা সেটা বিশ্বাস করি। কিন্তু অন্যের বেলায় সেটা বিশ্বাস করতে আমাদের কষ্ট হয়। সমাজের মানুষের কথার ভয়ে এমন হাজারো নারী পুরুষ একাকীত্বকে বরণ করে নিয়েছে। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও, জীবন যৌবন থাকা সত্ত্বেও দ্বিতীয় সঙ্গী গ্রহণ করতে পারে না। এ বিষয়টা আমাদের সমাজে অনেক রয়েছে। আমরা বিষয়টা বুঝেও, বোঝার চেষ্টা করি না। আমি মনে করি কারো সামর্থ্য থাকলে, কারো ইচ্ছা থাকলে, প্রথম সঙ্গীর বিয়োগ হলে দ্বিতীয় সঙ্গি অবশ্যই গ্রহণ করতে পারে। একটা দোষের অথবা লজ্জার কিছু নেই। এই বাস্তব সত্যটা আমাদের সমাজের সবার বোঝা উচিত।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
পুরো ঘটনাটি পড়লাম, তবে আমার একটি বিষয় খারাপ লেগেছে যে ঐ বউটি তার বাচ্চাকে একা ফেলে রেখে চলে গিয়েছে।আপনার কথা অনুযায়ী ছোট বউয়ের বয়স 20 থেকে 22 বছর তার উপরে তাদের সন্তানের বয়স 5 থেকে 7 বছর।তাহলে কি ওই মহিলার বাল্যবিবাহ হয়েছিল?আপনি ঠিকই বলেছেন, যার স্বামী মারা গিয়েছেন তিনি অবশ্যই বিয়ে করতে পারেন।এতে তার পূর্ন অধিকারও রয়েছে, কিন্তু মনে হয় তার মেয়ে সম্পত্তির লোভে এমনটা করতে বাঁধা দিচ্ছেন।ভালো লাগলো বাস্তবধর্মী ঘটনাটি পড়ে, ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
তাদের বয়স গুলো আমি আনুমানিক ধরেছি। কমবেশি ও হতে পারে। আর মেয়ের এমন করার কারনটি সম্পত্তির লোভ হতে পারে। ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আচ্ছা ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Task Done
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এখানে কে কী বলবে আমার জানা নেই। তবে ঐ মেয়ের মায়ের সিদ্ধান্ত ঠিক। তার বয়স এখনও কম। তার পুরো জীবন পড়ে রয়েছে সে অন্য একজনের সাথে নতুন করে শুরু করতেই পারে। আমাদের দেশের মানুষের কাছে এটা বাজে মনে হতে পারে। কিন্তু তারা তো খারাপ কিছু করেনি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জী ভাই ঠিক বলেছেন। আমিও মনে করি ঐ মহিলা নতুন করে জীবন শুরু করতে পারে। ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit