কলকাতার ইডেন গার্ডেনে পাঞ্জাব আইপিএলে এক নতুন ইতিহাস গড়লো।।

আজকে আমার অন্য একটি বিষয় নিয়ে ব্লগ লেখার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তুু গতকালকে আইপিএলে কলকাতা আর পাঞ্জাবের খেলা দেখে আমার সেই পরিকল্পনা পরিবর্তন করতে বাধ্য হলাম। গতকালকে আমি যে খেলা দেখলাম সেটা আমার চোখে ধাঁধা লাগিয়ে দিয়েছে। কি খেলা কিভাবে ঘুরিয়ে ফেললো কিছু বুঝতে পারি নাই। চোখের সামনে এক পক্ষের খেলা অন্য পক্ষে চলে গেলো। কলকাতার হাঁসি শেষ না হতেই কান্না শুরু হয়ে গেলো। যদিও পয়েন্ট টেবিলে পাঞ্জাবের অবস্থা তেমন ভালো না। তারপরও আশা বাঁচিয়ে রেখেছে।

গতকাল শুক্রবার হওয়ার কারনে অফিস বন্ধ ছিল। যার জন্য বাসাতেই দিনটা অতিক্রম হয়েছে। রোদ আর গরমের কারনে বাসা থেকে কোথাও যায়নি। বাসা আর ছাদের মধ্যেই গতকালকের দিনটা অতিক্রম হয়েছে। গতকাল রোদের প্রচন্ড তাপ থাকলেও আসরের পরে ছাদের মধ্যে ভালোই বাতাস ছিল। যার ফলে আসর থেকে সন্ধা পূর্ব পর্যন্ত ছাদের মধ্যেই বসে ছিলাম। এশার আজানের পরে স্যুপ নুডুলস খেয়ে ল্যাপটপটা অপেন করেই কলকাতা আর পাঞ্জাবের খেলার নোটিফিকেশন পেলাম। আমি কলকাতার মাঝখান থেকে খেলাটি দেখা শুরু করি। খেলাটি শুরু হয় রাত আটটার সময় কলকাতার বিখ্যাত প্রাচীনতম স্টেডিয়াম ইডেন গার্ডেনে। যেটাকে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হোম গ্রাউন্ড বলা হয়ে থাকে। খেলাটি পরিচালনা করেন অনিল চৌধুরী ও যশবন্ত বারদে।

পাঞ্জাবের ক্যাপটেন স্যাম কুরান প্রথমে টস জিতে কলকাতাকে ব্যাটিং করার জন্য আমন্ত্রন জানায়। কলকাতার পক্ষে ব্যাটিং করতে আসে উইকেট কিপার সাল্ট ও হিটার ব্যাটার সুনিল ন্যারিন। দুইজনই দারুন ব্যাটিং শুরু করে। দুই জনের ব্যাটই বারুদের মত জ্বলে উঠে। অন্যান্য খেলায় দেখেছি একজন ব্যাটিং করলে অন্যজন একটু শান্ত থাকে। তবে গতকাল দেখলাম দুই জনই বিজলির গতিতে ব্যাটিং করেছে। তাদের ব্যাটিং দেখে কলকাতার গ্যালারিতে খুশির বন্যা বয়ে গেলো। দুই জনে মাত্র ৬৯ বল খেলে ১৪৬ রান যোগ করে। তাদের ব্যাটিং দেখে ভেবেছিলাম রান ৩০০ ছুঁই ছুঁই হবে। তারা দুইজন মিলে ১৫টা চার ও ১০টা ছয় মেরেছে। তারপর মাঠে আসে ভেঙ্কটেশ আইয়ার ও এন্ডার রাসেল। তবে ভেঙ্কটেশ আইয়ারের ভাগ্য খারাপ ছিল ২৩ বলে ৩৯ রান করে রান আউট হয়ে যায়। সে ক্রিজে থাকতে পারলে রান ৩০০+ হয়ে যেতো। তারপর আসে শ্রেয়াস আইয়ার সেও দারুন খেলেছে। রাসেল আর শ্রেয়াস আইয়ার দুইজন মিলে আঠারো অভার অবদি খেলেছে। রাসেল বল কম খেলেছে ১২ বলে ২৪ যোগ করেছে। সব মিলিয়ে ২০ অভারে ছয় উইকেট হারিয়ে কলকাতার নাইট রাইর্ডাসের সংগ্রহ হয় ২৬১ রান। মাত্র ২০ অভারে এই রানের পাহাড় অতিক্রম করার চিন্তাও কেউ করে নাই। কিন্তুু গোল বলের খেলা কখন কি হয় বলা যায় না।

দ্বিতীয় পর্বে পাঞ্জাবের পক্ষে ২৬২ রানের টার্গেট নিয়ে মাঠে নামে প্রভসিমরন সিং ও জনি বেয়ারস্টো। তারা দুইজন মাঠে নেমে যার শুরু করলো সেটা লিখে বুঝানো সম্ভব না। বোল তাদের ব্যাটে লাগলেই বাউন্ডারির বাহিরে চলে যায়। তাদের থেকে বোলেট বের হতে লাগলো। প্রতি অভারে ১৫/২০ রান করে আসতে লাগলো। এখানে প্রভসিমরন সিং এর ভাগ্যটা তার সঙ্গ দেয়নি। তাকে ন্যারিন রান আউট করে দেয়। তারপরও সে মাত্র ২০ বল খেলে ৫৪ রান যোগ করেছে। সব থেকে আশ্চর্যের বিষয় হলো তার স্টাইক রেট ছিল ২৭০। চিন্তা করা যায় সে আর কিছুক্ষন থাকলে ১৫ অভারেই খেলা শেষ করে দিতো। তবে অপর পাশের জনি বেয়ারস্টো হয়ে যায় অদম্য। তাকে কোনভাবেই দমানো যাচ্ছিলো না। সে আটচল্লিশ বলে ১০৮ রান করে অপরাজিত থাকে। সে একাই ৮টি চার ও ৯টি ছয় মারে। তার স্টাইক রেট ছিল-২২৫। তাকে সঙ্গ দিয়ে ২৮ বলে ৬৮ রান করে অপরাজিত থাকে শশাঙ্ক সিং। সব মিলিয়ে ১৮.৪ অভার খেলে মাত্র দুই উইকেট হারিয়ে ২৬২ রান করে ফেলে। আট বল বাকি থাকতেই তারা জয় ছিনিয়ে নেয়। শুধু পাঞ্জাবই তাদের ইনিংসে ২৪টি ছয় মেরেছে। চিন্তা করা যায় বিষয়টা। অবশেষে পাঞ্জাবের গ্যালারিতে শুরু হয় আনন্দের জোয়ার। জনি বেয়ারস্টোকে ম্যান অফদা ম্যাচ নিবার্চিত করা হয়।

বলিং নিয়ে বিশ্লেষন করলে কাউকে দুষ দেওয়া যায় না। ইডেন গার্ডেনে সবসময় রান বেশি হয়। পাঞ্জাবের পক্ষে আরশদীপ সিং চার অভারে ৪৫ রান দিয়ে দুইটি উইকেট পেয়েছে। আর কলকাতার পক্ষে সুনীল ন্যারিন চার অভার বল করে ২৪ রান দিয়েছে। এক মাত্রই সেই সব থেকে কম রান দিয়েছে। অপর দিক দিয়ে রান করেছে ৭১ রান। সেই দুই ফর্মেটেই ভালো করেছে। যায়হোক খেলায় কখন কি হয় সেটা কেউ বলতে পারে না। কলকাতা এত রান করেও হারবে সেটা কেউ কল্পনা করেই নাই। আর পাঞ্জাব জিতবে এটাও কেউ ভাবতে পারে নাই। মূল বিষয় হলো দর্শকরা খেলাটা দেখে অনেক আনন্দ পেয়েছে।

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা,ডিজাইন করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।