আমাদের ভালোবাসার কমিউনিটি-
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমার আবহাওয়ার পরিবর্তন হয়েছে। পারিবারিক কারণে আজকে সকাল সকাল ঠান্ডা ঠান্ডা আবহাওয়া গায়ে লাগিয়ে ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে আসলাম। গতকাল বৃহস্পতিবারে সারাদিন অফিস করেছি, তখনো চিন্তাভাবনা ছিল না ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে আসবো। বিকালের দিকে অফিস শেষ করার পরে হঠাৎ করে মন চাইলো একটু গ্রাম থেকে ঘুরে আসি। শুনেছি গ্রামের মধ্যে শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে ঠান্ডা আবহাওয়া বয়তে শুরু করেছে। সকাল বেলা কুয়াশা পড়তে শুরু করেছে। সেই দৃশ্য দেখার জন্য আজকে সকাল বেলা সাড়ে পাঁচটার সময় বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম।
অনেকদিন যাবত এত সকাল-সকাল ঘুম থেকে উঠা হয় না। কোন কারণবশত এত সকাল বাসা থেকে বের হয় না। বাসা থেকে বের হয়ে রাস্তায় পা দিয়ে, একটি ঠান্ডা আবহাওয়া অনুভব করলাম। ধীরে ধীরে হাইওয়ে রোডের দিকে আসলাম। তখন সূর্য মামা কিছুটা উঁকি দিয়েছে। বাসার পাশেই খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়াম। সেখানে দেখতে পেলাম শত শত মানুষ দৌড়াচ্ছে, কেউ ফুটবল খেলছে, কেউ ক্রিকেট খেলছে। বিভিন্নভাবে সবাই শরীর থেকে ঘাম ঝরাচ্ছে। যেটা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এরকম বিভিন্ন ধরনের দৃশ্য দেখতে দেখতে সাইনবোর্ড পর্যন্ত আসলাম।
তারপরে শুরু হলো গাড়ির বিভিন্ন ধরনের আওয়াজ, গাড়ির ধোঁয়া, ধুলাবালি, বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন কোলাহল। এগুলো দেখতে দেখতেই কমলাপুর পর্যন্ত পৌঁছে গেলাম। আমার ইচ্ছা ছিল, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দিকে যে ট্রেন পাবো, সেটা দিয়েই রওনা দিবো। স্টেশনে গিয়ে জানতে পারলাম সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস সকাল ছয়টার সময় ছেড়ে চলে গেছে। চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ৭ নাম্বার লাইনে মহানগর প্রগতি ট্রেন দাঁড়িয়ে আছে। আমার কাছে কোন টিকেট ছিল না। স্ট্যান্ডিং টিকেট কাটতে গিয়েও জানতে পারলাম, এখন স্ট্যান্ডিং টিকেট নির্ধারিত পরিমাণে দেওয়া হয়। সেটার পরিমাণও শেষ হয়ে গেছে। স্টেশনের গেইট থেকে শর্টকাট টিকিট দিয়ে স্টেশনের ভিতরে প্রবেশ করাচ্ছে। এ নিয়মটা অনেক ভালো হয়েছে। সবাই টিকেট সংগ্রহ করেই স্টেশনের প্রবেশ করছে।
স্টেশনের মধ্যে কিছুক্ষণ বসার পরে স্টেশনের ছোট মাইকগুলোতে জানিয়ে দেওয়া হলো কিছুক্ষণের মধ্যেই ৭ নাম্বার লাইন থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে মহানগর প্রভাতী ট্রেনটি ছেড়ে যাবে। ট্রেন ছাড়ার হুইসাল বাজার সাথে সাথে ট্রেনে উঠে দাঁড়িয়ে রইলাম। যেহেতু শুক্রবার ছিল ট্রেনের মধ্যে তুলনামূলক যাত্রী কমই ছিল। যারা যাওয়ার গতকাল বৃহস্পতিবারই চলে গেছে। কথা বলতে বলতে একজনের সাথে পরিচয় হলো, তিনি ভৈরব স্টেশনে নেমে যাবে,তবে তার টিকেট হলো কুমিল্লা পর্যন্ত। তিনি ভৈরব এসে নেমে যাওয়ার পরে তার সিটে আমি বসে গেলাম। খুব সুন্দরভাবেই ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে চলে আসলাম। আজকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ট্রেন ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে প্রবেশ করেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে নেমে খুবই ভালো লাগলো। মুক্ত আকাশের দিকে তাকিয়ে একটি হাসি দিলাম। নিজেকে কেমন যেন স্বাধীন মনে হলো। অনেকদিন পরে নিজের মাতৃভূমিতে পা রাখলাম। চারপাশে কত গাছপালা, চেনা পরিচিত শহর। ধীরে ধীরে হাঁটতে হাঁটতে স্টেশনের দিকে চলে আসলাম। তারপর একটি অটো নিয়ে কাউতলী বাসস্ট্যান্ড আসলাম। যদিও এখানে আমার পরিচিত কেউ নেই, তবে এই জায়গাটা আমার খুবই পরিচিত। আশেপাশের বিভিন্ন জায়গায় আমার বিভিন্ন স্মৃতি এখানে রয়েছে। আসলে এই অনুভূতিগুলো ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।
আজকে আমার সময় নিয়ে তেমন কোন অভিযোগ ছিল না। আজকে আমি ধীরে ধীরে আসতে চেয়েছিলাম। কাউতলী মোড়ে এসে দৌড়ে ব্রিজের নিকট গেলাম। তিতাস নদীর পানি পূর্ব দিক থেকে এসে পশ্চিম দিকে চলে যাচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের মাছ খেলা করছে। মাঝি ভাই জাল ফেলে মাছ ধরছে। কত মানুষ বড়শি ফেলে মাছের আশায় বসে আছে। বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত। কিছুক্ষণ পরে একটি সিএনজি নিয়ে নিজ গ্রামের দিকে রওনা হলাম। আসতে আসতে প্রকৃতির লীলা দেখতে লাগলাম। এবছর একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম, সেটা হলো প্রচুর পরিমাণে সবজি চাষ হচ্ছে। হয়তো সবজির দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে সবাই এই উদ্যোগ নিয়েছে। গত বছরের যেসব জায়গা খালি পড়ে ছিল। সেগুলোতে এ বছর সবজি দেখতে পেলাম। তবে দুঃখের বিষয় হলো ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে কুমিল্লার দিকে যে রাস্তাটা এসেছে, ডাবল লাইনের কাজ চলছিল। মোটামুটি ভাবে একটি লাইন হওয়ার পরে সরকার হওয়ায় বর্তমানে কাজ বন্ধ আছে। যার জন্য সাময়িকভাবে কিছুটা অসুবিধা হচ্ছে। আশা করা যায় রাস্তাগুলো ঠিকঠাকভাবে হয়ে গেলে আসা-যাওয়া করাটা খুবই সহজ হবে।
এভাবে ধীরে ধীরে আস্তে আস্তে আমাদের গ্রামের স্টেশনে এসে নামলাম। তখন দুপুর বারোটা বাজে। যেহেতু শুক্রবার সেজন্য মানুষজন খুব কম ছিল। একটি রিক্সা নিয়ে গ্রামের আঁকাবাঁকা রাস্তা পেরিয়ে বাড়িতে চলে আসলাম। আসার সময় চেনা অচেনা অনেক মানুষের সাথে দেখা হয়েছে। বাড়িতে এসে হালকা নাস্তা করে গোসল করতেই জুম্মার নামাজের আজান হয়ে গেলো। মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করে অনেক পরিচিত মানুষের সাথে কথা হয়েছে। অনেক মানুষের সাথে দেখা হয়েছে। যে অনুভূতিগুলো প্রকাশ করার মতো না। দেখা যাক গ্রামের মুক্ত আবহাওয়া কতক্ষণ গ্রহণ করতে পারি।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | realme-53 |
নাম | আবহাওয়ার পরিবর্তন।। |
স্থান | ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঢাকা, বাংলাদেশ। |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
এখনতো গ্রামে শেষ রাতে ভালই ঠান্ডা পরার কথা। গ্রামে শীতকাল বেশ ভালো লাগে। প্রকৃতির মধ্যে একটা নির্মল আমেজ অনুভব করা যায়। সেই সাথে গ্রামে গেলে অনেক পরিচিত মানুষের সাথে দেখা হয় যা বেশ ভালো লাগে। নির্মল বাতাসে কিছু সময় কাটিয়ে আসেন। শহরেতো দূষিত বায়ুর মধ্যে দিন কাটে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
যেমন ঠান্ডা পড়বে ভেবেছিলাম তেমন ঠান্ডা পড়ে নাই। এখনও গরম লাগে। ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সত্যি আবওহাওয়ার একটা পরিবর্তন ইতিমধ্যে হতে শুরু করেছে। এটা সকালে উঠলে বোঝা যায়। তবে ঢাকা শহরে একটু বেলা বাড়ালেই ঐ গাড়ির আওয়াজ ধুলাবালি এসব সহ্য করতে হয়। নিজের শহরে পা দিয়ে যেন একটা শান্তি এবং স্বস্তি কাজ করে। চমৎকার লাগল আপনার পোস্ট টা ভাই। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জী ভাইয়া সকালে রাস্তায় বের হলে, ঠান্ডা কিছুটা বুঝা যায়। ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit