লোকজ উৎসব ২০২৩ এর চতুর্থ পর্ব।।

in hive-129948 •  2 years ago 

আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার

আমি @joniprins বাংলাদেশ থেকে। আজ আমি "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটিতে নতুন একটি পোস্ট শেয়ার করতে যাচ্ছি। আমি সবসময় পোষ্টের মাঝে ভিন্নতা আনার চেষ্টা করি। তাই সাত দিন পরে আজকে লোকজ উৎসব ২০২৩ এর চতুর্থ পর্ব শেয়ার করতে যাচ্ছি। চলুন শুরু করি।

101.jpg

আজকে যে ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করবো সে গুলো দেখলে আপনাদের মাথা ঘুরে যাবে। আমাদের দেশে যে এত হস্ত শিল্প ছিল সেটা আমি কখনো কল্পনাও করি নাই। পাট যে আমাদের দেশের সোনালী আঁশ সেটা আমি ঐদিন ঠিক ভাবেই বুঝেছি। একসময় বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতো পাট রপ্তানি করে। এজন্য বাংলাদেশকে সোনালী আঁশের দেশ বলা হয়।

আজকে আমি সোনালী আশঁ দিয়ে তৈরী অনেক জিনিষ পত্র দেখাবো। সব থেকে আকর্ষনীয় জিনিষ হলো জুতা। পাট দিয়ে যে জুতা বানানো যায় সেটা আমি জানতাম না। আমার তো মন চাইছিলো এক জোড়া জুতা কিনে নিয়ে আসি। আমারা সেই মেলা থেকে বের হয়ে অন্য এক জাগায় যাওয়ার প্লান ছিল। যার জন্য আর কেনা হয় নি। পরের বার গিয়ে আর সেখানে জুতা পায় নি। হয়তো বিক্রয় হয়ে গিয়েছিল।

এছাড়াও আজকে দেখতে পারবেন বাশঁ ও বেত দিয়ে তৈরী নানা জিনিষ পত্র। বাশঁ ও বেত দিয়ে তৈরী জিনিষ গুলো দেখেও আপনারা অবাক হয়ে যাবেন। এখন তো এগুলো কোথাও দেখা যায় না। আমরা আগে বেত দিয়ে তৈরী বিভিন্ন জিনিষে চিড়া, মুড়ি,মুয়া খেতাম। আবার বাশঁ,বেত দিয়ে তৈরী টুকরি দিয়ে চাল,ধান, গম,সরিষা মাপা হতো। এখন তো ধান ছাড়া আর কিছু চাষই হয় না। তাই এসব টুকরিরও দরকার পড়ে না। প্রকৃতপক্ষে বাঁশ,বেতের স্থান অনেকটাই প্লাস্টিক সামগ্রী দখল করে নিয়েছে। বর্তমানে বাঁশ ও বেতের সামগ্রী থেকে প্লাস্টিক সামগ্রী কেনার প্রতি মানুষের আগ্রহ বেশি। তাছাড়া এখন বাঁশ ও বেতের উৎপাদন কমে যাওয়ায় এর দামও বেড়ে গেছে। ফলে বাঁশ ও বেতের সামগ্রীর ব্যয়ও বেশি হচ্ছে। শৌখিন মানুষের ঘরে বাঙালির ঐতিহ্য প্রদর্শনের জন্য বাঁশ বেতের সামগ্রী বেশি দাম দিয়ে কিনলেও মূলত ব্যবহারকারীরা বেশি দাম দিতে চান না। স্বল্প আয়ের মানুষেরা বিভিন্ন সমিতি থেকে সুদের বিনিময়ে টাকা নিয়ে বাঁশ ও বেতজাত দ্রব্যসামগ্রী তৈরি করে বিক্রি করলেও এতে তাদের খরচ পোষায় না। তাই তারা শহরের বিভিন্ন মেলাতে তাদের তৈরীকৃত জিনিষ গুলো নিয়ে হাজির হয়। যায়হোক চলুন ফটোগ্রাফি গুলো দেখি।

101.jpg

102.jpg

প্রথমেই দেখতে পাচ্ছেন সোনালী আশঁ বা পাটের জুতা। এগুলোকে পূর্বে মানুষ পাদুকাও বলেও ডাকতো। কি সুন্দর নিখুঁত তাদের কাজ,কি সুন্দর তাদের কারুকার্য। পাদুকা গুলোর দামও কিন্তুু বেশি না। প্রতি জুড়া ১৫০ থেকে ২০০ শত টাকা। শীতরে সময় বাসায় পড়ার জন্য পারফেক্ট।

103.jpg

104.jpg

105.jpg

এই জিনিষ গুলো আগে দাদি নানীরা ব্যবহার করতো দেখতাম। এই সব গুলোর নামও আমি জানি না। জিনিষ গুলো খুবই মজবুত। কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে বাঁশ-বেত শিল্প। যে গুলো আমাদের পরিবেশের জন্য ভাল ছিল সে গুলো আমরা ছেড়ে দিয়ে পরিবেশের জন্য যে গুলো ক্ষতি কর,সে বিষাক্ত প্লাস্টিক কে আঁকড়ে ধরেছি।

106.jpg

107.jpg

এখানে দেখতে পাচ্ছেন, বাশঁ দিয়ে তৈরী রিকশা, ভ্যানগাড়ি, ঠেলা গাড়ি,পালকি, গরুর গাড়ির পিছনের অংশ। তাছাড়া আরো রয়েছে ফলমূল রাখার ঝুড়ি। এগুলো মানুষ খুব শখ করে কিনে নিয়ে বাসায় সাজিয়ে রাখে।

109.jpg

110.jpg

এখানে দেখা যাচ্ছে আমাদের প্রিয় আপুদের কিছু জিনিষ পত্র। কসমেটিক্স সামগ্রি সহ পাটের তৈরী বিভিন্ন ব্যাগ এবং ঘর সাজানোর হরেক রকম জিনিষ পত্র। কি নেই এই লোকজ মেলাতে। সব কিছু পাওয়া যায়।

108.jpg

111.jpg

এখানে প্রথম ছবিতে কি দেখা যাচ্ছে সে জিনিষটার নাম কি অবশ্যই এটা আমাকে আপনাদেরকে বলে দিতে হবে না। আপনারা খুব ভাল ভাবেই জানেন জিনিষটার নাম কি। “একতা তুই বলরে এবার দেশের কথা বল”। আর নিচের ছবিতে রয়েছে কাঠের চায়ে কাপ সহ ঘর সাজানোর বিভিন্ন জিনিষ।

112.jpg

114.jpg

এখানে দেখা যাচ্ছে কাঠের তৈরী বিভিন্ন ঘর বাড়ি ও মসজিদ। দ্বিতীয় ছবিটা ভালভাবে খেয়াল করলে বুঝবেন ইশা খাঁর রাজপ্রাসাদ কে কাঠ দিয়ে তৈরী করা হয়েছে। এগুলো দেখতে এত সুন্দর লাগে যে, না কিনে আসতে পারবেন না।

113.png

সর্বশেষ এই ফটোতে কি দেখা যাচ্ছে এটা আপনারাই বলেন। আমি এটার নাম জানি না। আমার যথা সম্ভব নারিকেলের খোসা দিয়ে এগুলো বানিয়েছে। এটাকে কি ভয়ংকর বলবো না কি হাবলু বলবো সেটাই বুঝতেছি না।

বন্ধুরা আজকে এ পর্যন্তই। কেমন হলো আজকের পোষ্ট অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আমি ফটোগ্রাফি গুলো রাতের বেলা করেছি। সব গুলো ফটোগ্রাফির মাঝে বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফুটিয়ে তুলা হয়েছে। এগুলো দেখলে বুঝা যায় পাট,বেত,বাশঁ দ্বারা কি না করা সম্ভব। সবাই ভাল থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। আবার দেখা হবে পরের পর্বে।

ফটোগ্রাফির বিবরণ:

2gsjgna1uruv8X2R8t7XDv5HGXyHWCCu4rKmbB5pmEzjYSj1ATxRsaEvyH89EyziiK3D1ksn1tTDvDwLCveqrhctVcDnDqtNbsqFMtuqD1RetzrgjG.png

ডিভাইসমোবাইল
মডেলরেডমি নোট-৭
উৎসবের নামলোকজ উৎসব
স্থানসোনারগাঁও,নারায়নগঞ্জ
কমিউনিটিআমার বাংলা ব্লগ
ফটোগ্রাফার@joniprins

সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।

JvFFVmatwWHRfvmtd53nmEJ94xpKydwmbSC5H5svBACH7xbS7ungTbMjNMsQ7fPnm8uUBT2bU8Azf8zCDQrq3tkzHjjCFyraxJQeY79tPTN45w8XxU9wtvaFmWRaLhgHSy5GYKQ6bg.png

IMG_20190907_175336_618.JPG

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।

FNeY1coMNUL9WkErUPeUKmtGszS37qoEdLJEhh8bj8LkMZg4ZnLbSCPtsqdFwbPFaU6vxamfJRhKsAXwWBZmAwtf2KFjktn9asDsnKpUF6cbBcNYFzwcTbFb5dfFf7N5Lt5j8KUqpB64Bhu5yFCR9Qn5uG4sQo8t4PYbc7VJq37PW7258mLRbFTrsBTtbAnos9AJnU46Lv3HqXsN7s.gif

45GhBmKYa8LQ7FKvbgfn8zqd6W2YEX34pMmaoxBszxVcFaFYLUUkHV6dSwLV7zz7zNE5rVJ5qtN3Zm6SdmcqGFekXXVnJVmd6y7N12FUdQdbdzipDFEFaWmdmFe1K9CCqMuRmX9o7cDLXe7oZxUwNZXbSxanRUefX7PYzUbi2zovtPsG5QcGuGgiyhkJur9LnLhaBtL31haW2181Ss.png

KNoz79cGRt58XHcjM3shjWsSEtKgRtxoVdChppmw4FvW2CQtZxVJGen4yBCeRMj2Y2h9ttHevCs9rtWncvn3FXAHo5MrkNBCbLay5LtH7wgCA27mBRvWM5GDKNQKzJk62Dz8KRvqdiFsZ66guzvyhyBYqJu6KB21dLiPDmtFGR2yvqBCtUPp3Rscm37PwtDEWYMtuKM5v3qhNod24L.png

7258xSVeJbKkzXhyseBP4PYz11eBDT8sW2oR1a4vfVFS6JTrGU8e1FPUaNdHG5vjXyg2xthV78bDEmEVvKCQpyzX1kq8gAVzGsPp9GqJVRWxb6T9y35PZmQehnLjELdKKmnhdxQjDuny4.png

Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন

HNWT6DgoBc14riaEeLCzGYopkqYBKxpGKqfNWfgr368M9VRjuxKSTKuNvqEk1nfiYiKKnHbcTuABq9Fu2qE77V9BjGsoqkb23ngKUAk2mCBmjpG3wz3go7Vd2YW.png

2r8F9rTBenJQfQgENfxADE6EVYabczqmSF5KeWefV5WL9WP87ckB6VoL3UD42BtkosJzLXYjuCC4ws3sxuihZ3nhDfd815qMJiiETpWAiutfN7bjurhaBbivMFVTYEDiv.png

download-03.png

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif

এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য

download-044.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP

RGgukq5E6HBM2jscGd4Sszpv94XxHH2uqxMY9z21vaqHt1rDaeRdtDvsXGmDbuRg1s1soomTEddbTFxfMMYzob4oRFK8fTZQyYP8LbQ4tbMTAd2enV3Wq9Ze3N8TTU2.png

Click Here For Join Heroism Discord Server

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

আজকের পর্বে অনেকগুলো ভালো ভালো ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন বিশেষ করে পাটের তৈরি হস্তশিল্প গুলো দেখতে সবথেকে বেশি ভালো লাগছে।।
বাংলাদেশের মানুষ অনেক সৌখিন প্রিয় এই জিনিসগুলা ঘরে রাখলে ঘরে সৌন্দর্য অনেক ভাবে বাড়িয়ে দেয়।।

জ্বি ভাই আপনি ঠিক বলেছেন। বর্তমানে পাটের জিনিস সৌখিনতার জন্যই মানুষ কিনে থাকে। ধন্যবাদ ভাইয়া।

ভীষণ সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন। পাট আসলেই আমাদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। তবে পাটের তৈরি জুতা এই প্রথম দেখলাম। আসলে পাটের তৈরি ব্যবহৃত সকল জিনিস যদি আমরা ব্যবহার করি তাহলে আমাদের পরিবেশ আরো সুন্দর থাকবে। খুব সুন্দর সুন্দর ঐতিহ্যের ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করেছেন।

যে আপু আমিও মেলাতে প্রথম পাটের তৈরি জুতা দেখলাম। ধন্যবাদ আপু।

ভাইয়া আপনি লোকজ মেলা নিয়ে খুব সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন। এসব মেলায় বিভিন্ন ধরনের জিনিস উঠে । বিভিন্ন হস্তশিল্পের জিনিস আমার ভীষণ পছন্দের। আসলে ভাইয়া আমাদের দেশে যে এত রকম হস্তশিল্পী রয়েছে সেটা আমার নিজেরো জানা নেই। পাটের তৈরি জুতোগুলো দেখে আমার খুবই ভালো লেগেছে। ইচ্ছে করছে এক জোড়া কিনে নিয়ে আসি।

জি আপু আমাদের দেশে পাটশিল্প অনেক গুরুত্বপূর্ণ সেটা আমি মেলাতে গিয়ে বুঝতে পেরেছি। ধন্যবাদ আপু।