আসসালামুআলাইকু/ নমস্কার/ আদাব।
আজকে আপনাদের সাথে আমার স্কুল লাইফের একটি ছোট ঘটনা শেয়ার করবো।
আমি ছোট সময় বাবা মায়ের সাথে বাস গাড়ি দিয়ে আমাদের বাড়ি থেকে নানা বাড়ি যেতাম আবার বাস গাড়ি দিয়েই নানা বাড়ি থেকে আমাদের বাড়িতে আসতাম। আসা যাওয়ার পথে বাস গাড়ি দেখতে দেখতে এক সময় আমারও বাস গাড়ি চালানোর শখ হলো। মনে মনে চিন্তা করলাম আমিও বড় হয়ে বাস গাড়ি চালাবো। যখন একটু বড় হলাম তখন চিন্তার পরিবর্তন হলো, ভাবলাম নাহ,বাস গাড়ি চালাবো না। মাইক্রো গাড়ি চালাবো। মাইক্রো গাড়ি চালানোর স্বপ্ন নিয়ে স্কুল লাইফের পড়া শোনা শেষ করলাম।
যখন হাইস্কুলে উঠলাম তখন মা-বাবা আত্নীয় স্বজন বলতে লাগলো যেহেতু আমি পড়া শোনায় একটু ভাল তাই আমি বড় হয়ে ডাক্তার হবো। আস্তে আস্তে ডাক্তারি বিষয়টা আমার ভিতরে ভয়ের জন্ম দিতে লাগলো। আমি মানুষের অঙ্গ প্রতঙ্গের কাটা ছেলাই করা,ব্যান্ডেজ করা এসব দেখতে পারি না। অষ্টম শ্রেণীতে থাকার সময় এক ক্লাসমেটের মাথা ফেটে গেছিলো। আমি তাকে ধরে ফার্মেসিতে নিয়ে গেছিলাম। তার রক্ত দেখে আমি অজ্ঞান হয়ে গেছিলাম। আরেকদিন এক স্যারের সাথে ফার্মেসিতে গিয়ে এক রোগির পা সেলাই করতে দেখে মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলাম।তারপর থেকে সবাই বুঝে গেল আমার দ্বারা আর যায় হোক ডাক্তার হওয়া সম্ভব না। এর পর থেকে সবাই আমাকে দিয়ে ডাক্তার হওয়ার আশা ছেড়ে দিল। আমিও আমার মন থেকে ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছাকে মুছে ফেললাম।
আমি একটু লাজুক টাইপের ছেলে। বেশি সময় একা একা থাকতেই পছন্দ করি। বিশেষ কিছু বন্ধু ছাড়া তেমন কারো সাথে কথা বার্তা বলতাম না। কোন কারনে মেয়েদের সাথে কথা বলতে হলে নিচের দিকে তাকিয়ে কথা বলতাম। দশম শ্রেণীতে পড়ার সময় বাংলা স্যার একবার ক্লাসের সবাইকে জিঙ্গেস করেছিল বড় হয়ে কে কি হতে চাও। আমি তখন হঠাৎ বলে ফেলে ছিলাম,আমি বড় হয়ে পাইলট হতে চাই। যদিও এখন পর্যন্ত বিমানকে সরাসরি কাছে থেকে দেখিও নাই,হা হা হা।
পরের দিন থেকে স্কুলে আসার সময় রাস্তায় আমার ক্লাসের দুইটি মেয়ে আমাকে দেখে মুচকি মুচকি হাসতো। আমি তাদের দিকে না তাকিয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে চলে আসতাম। ক্লাসে আসার পরেও তারা আমাকে দেখে দুইজনে কানাকানি ফিস ফিস করে কি জানি বলতো। এটা দেখে আমি অনেক লজ্জা পেতাম। এমনও দিন গেছে যে লজ্জার কারনে আমি স্কুলের বারান্দায় দাড়িয়ে থাকতাম। স্যার ক্লাসে যাওয়ার দুই এক মিনিট আগে বা স্যার আসতেছে দেখে তখন ক্লাসের ভিতরে যেতাম। আমি ক্লাসের প্রথম সারির ফাস্ট বেঞ্চে বসতাম আর তারা দ্বিতীয় সারির ফাস্ট বেঞ্চে বসতো। আমার এই বিষয়টা স্যার প্রায় সময় লক্ষ করেছেন।
একদিন স্কুল ছুটি হওয়ার পর স্যার আমাকে ডেকে পাঠালেন। আমি সালাম দিয়ে সারের সামনে গিয়ে দাড়ালাম। স্যার আমার সাথেই বাসায় যাওয়ার পথে, প্রায় দিন ক্লাসের বাহিরে দাড়িয়ে থাকি কেন বা স্যারকে দেখে ক্লাসে যাওয়ার কারন জানতে চাইলেন। আমি একটু লজ্জা নিয়েই আমার ক্লাসের ঐ দুটি মেয়ের কথা বললাম। স্যার আমাকে বললেন তারা আসলে তোমার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চায়। ক্লাসে বই, খাতা, কলম, ব্ল্যাকবোর্ড, চক, ডাস্টার, মাস্টারমশাই, পড়াশোনা ছাড়াও যে আরো কিছু আছে, সেটা তুমি জানো কিনা সে ব্যাপারে তারা খোঁজ নিতে চায়। আর তাদের দুজনার ভিতর এই নিয়েই হয়তো কানাকানি হয়। ক্লাসে পড়াশোনার পাশাপাশি যে বন্ধুত্ব চলতে পারে এ ব্যাপারে তোমার অভিমত তাদের এখনো জানা হয়ে ওঠেনি।
এজন্য বোধহয় তাদের উৎসাহ এত বেশি ।
তুমি এক কাজ করো তাদের থেকে একেবারে অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে না থেকে তাদেরকে সরাসরি জিজ্ঞাসা করো যে , তারা কেন তোমাকে দেখে ওরকম আচরণ করে। ক্লাসে আর যাই হোক তোমাকে তোমার সহপাঠীরা এত তাড়াতাড়ি সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব দেবে বলে মনে হয় না, একথা বলেই স্যার বিরাট বড় একটি হাসি দিলো, হা হা হা। কাজেই তুমি নির্ভয় চিত্তে পড়াশোনায় মনযোগ দাও । দেখবে তোমার সহপাঠীরাও তোমাকে দেখে কানাকানি বন্ধ করে দেবে। সর্বশেষ এই দুইটি মেয়েই আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড হয়েছিল।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঠিক বলেছেন ভাইয়া, বয়সের সাথে এবং সময়ের সাথে ইচ্ছে গুলো পরিবর্তন হয়। আর আপনার টিচারের এই বিষয়টি আমার বেশ ভালো লেগেছে। কারণ টিচার আপনার সাথে বন্ধুত্বের মতোই আচারণ করে,সমস্যাটা সমাধান করে দিয়েছে, দারুন হয়েছে। আর সেই ২টি মেয়ে আপনার বেস্ট ফ্রেন্ড হয়ে গিয়েছে তা জেনেও ভালো লাগলো। তবে এরকম লাজুক থাকাটা হয়তোবা অনেক কিছুতেই নিজেকে লুকিয়ে রাখতে হয়। আজকের ব্লগটি পড়ে বেশ ভালই লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জী আপু আমার ঐ স্যারটা অনেক ভাল ছিল। সবাইকে সুন্দর ভাবে বুঝাতেন। খুব মিস করি স্যারকে। ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনাকে ও অসংখ্য ধন্যবাদ খুব চমৎকারভাবে আমার মন্তব্যের ফিডব্যাক দেয়ার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার দিকে তাকিয়ে মেয়েরা মুচকি মুচকি হাসত ব্যাপারটি বেশ ইন্টারেস্টিং। ভালই লাগলো আপনার লেখাগুলো পড়ে। আসলে বয়সের সাথে সাথে আমরা নিজের আচরণ যেমন পরিবর্তন করি তেমনি নিজের ইচ্ছাগুলো পরিবর্তন হয়ে যায়। সময় এবং বয়স সবকিছুই পাল্টে দেয়। ভাল লাগল ভাইয়া আপনার লেখাগুলো পড়ে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জী আপু ঐ সময়ের কথা মনে হলে এখন নিজে নিজেই হাসিঁ। মেয়েদের সাথে কথা বলতে কত লজ্জা পেতাম তখন,হা হা হা। ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনি মেয়েদের দেখলে লজ্জা পেতেন আসলে এটা কিন্তু খুবই কম দেখা যায়। আপনার স্যার এর বিষয়গুলো আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। যে দুটি মেয়ে আপনার দিকে মুচকি মুচকি হাসতো তাকিয়ে সেই দুটি মেয়ে আপনার বেস্ট ফ্রেন্ড হয়েছিল এটা জেনে একটু খুশি হলাম। আসলে এরকম ভালো লাগে বিশেষ করে ছোটবেলার কাহিনী পড়তে। আমরা যত বড় হই ততই আমাদের ইচ্ছা গুলো পরিবর্তন হতে থাকে। যাইহোক শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জী আপু আমার লজ্জার জন্য স্যার আমার সাথে বন্ধু মত আচরন করেছে। আমাকে সাপোর্ট দিয়েছে। ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনি একেবারে ঠিক বলেছেন বয়সের সাথে সাথে মানুষের ইচ্ছাগুলো পরিবর্তন হয়। মানুষ চাইলে অনেক কিছু করতে পারে না। শিক্ষকের সাথে আপনার বন্ধুর মত আচরণ এ বিষয়টা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে ভাইয়া। ছাত্র শিক্ষকের এমনটা হওয়া উচিত। মানুষের স্বাদ আহ্লাদ ইচ্ছাগুলো সব কিছুর বয়সের উপর ব্যাপক বিরূপ প্রভাব ফেলে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জী ভাইয়া আমার বয়সের সাথে সাথে আমার কত ইচ্ছা পরিবর্তন হয়েছে,তার কোন ঠিক নেই। আর বন্ধুর মত স্যারকে খুব মিস করি। ধন্যবাদ ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এটা কিন্তু একেবারেই সত্যি যে বয়সের সাথে ইচ্ছার পরিবর্তন হয়। আমরা যতই বড় হই ততই ইচ্ছার পরিবর্তন হতে থাকে। এখনকার দিনে তো কেউ কোন কিছুতেই ভয় পায় না কিন্তু আপনি রক্ত দেখে ভয় পান এটা যদি আমি একটু অবাক হলাম। এরকম হয়ই। শেষ পর্যন্ত তাহলে আপনার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন আপনার বাবা মা ছেড়ে দিল কারণ আপনি রক্ত দেখে ভয় পান এবং অজ্ঞান হয়ে যান তাই। আসলে এমনিতে আমাদের সকলেরই ছোটবেলা থেকে একটা না একটা স্বপ্ন থাকেই। ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জী ভাইয়া আমি রক্ত আর কাটা ছেড়া দেখলে অনেক ভয় পেয়ে যায়। যার জন্য ডাক্তার হতে পারলাম না,হা হা হা। ধন্যবাদ ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit