স্টিমিট বিশ্বের নাম্বার ওয়ান কমিউনিটি-
বন্ধুরা আমি গত পর্বে আপনাদের সাথে আমার বাসার পাশের এক জায়গার ভন্ডামী আর ধোঁকাবাজির কিছু চিত্র তুলে ধরেছিলাম। এই চিত্র গুলো শুধু যে আমার বাসার পাশের চিত্র তা নয়। এমন চিত্র দেশের আনাচে কানাচে চোখ বুলালেই দেখতে পাবেন। কিছু ভন্ডরা মানুষের সাথে ধোঁকাবাজি,প্রতারনা করতেছে। বর্তমান সময়ে এসেও মানুষ এই বিষয়টা বুঝতেছে না। কিছু মানুষ না জেনে অন্ধ বিশ্বাস করে এসব জাগায় অনেক কিছু করে থাকে। এখন আধুনিক যুগেও যদি মানুষ এই বিষয় গুলো না বুঝে তাহলে কিছু করার নেই।
ঐদিন আমি বাহিরে ২০ মিনিটের মত দাড়িয়েছিলাম। ঢোল বাঁশি নিয়ে ব্যানপার্টি বাড়ির ভিতরে চলে গেছে। আমি কিছুক্ষন দাড়িয়ে থেকে আমতা আমতা করে নয় ছয় গুনে ভিতরে প্রবেশ করলাম। চিকন একটি রাস্তা দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করতে হয়। গিয়ে দেখি বাড়ির ভিতরে তিনটি রুমে তিনটি কবর রয়েছে। কবর গুলোকে লাল কাপড় দিয়ে ঢেকে রেখেছে। প্রত্যেকটা রুমে দুইটি করে দরজা রয়েছে। তাদের মধ্যে যিনি সবার বড় তিনির কবরটা একটু বড়, অনেকটা জায়গা নিয়ে তার মাজার করা হয়েছে। উপরে ঝিলমিল কাগজ ঝুলতেছে। প্রত্যেকের কবরের পাশে মোমবাতি,আগড় বাতি জ্বলতেছে। একটি কবরের পাশে একজন মহিলাকে দেখলাম বসে আছে। সবার কবরের উপরে আবার জাইয়ের টুপি রাখা আছে। এই মাজারের কারো মৃতুবার্ষিকী উপলক্ষে তারা ঢোলবাঁশি বাজাচ্ছে। চিন্তা করেন মানুষ ধর্মীয় বিষয়ে কতটা মূর্খ হলে তারা এসব কাজ করতে পারে। এখানে যা কিছু দেখলাম সব গুলো ইসলাম ধর্মে সম্পূর্ণ হারাম। এখানে একজন করে মারা যাচ্ছে আর তাদেরকে তাদের বাড়িতেই কবর দিয়ে মাজার বানিয়ে ফেলতেছে। তারপর কবর পাকা করে,লাল কাপড় দিয়ে ঢেকে উপরে লাল-নীল বাতি লাগিয়ে মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছে। আর মানুষও বোকার মত এখানে এসে পড়ে থাকে।
শুধু তাই নয়, এখানে আরো একটি জিনিষ দেখলাম যে কবরের পাশে ছোট ছোট দুইটি ঘর রয়েছে। সে গুলোকেও কাপড় আর লাইট দিয়ে সাজানো হয়েছে। ঘরের মাঝখানে আড়াই ফুটের মত লম্বা একটি মোমবাতি রাখা হয়েছে। আর সেই মোমবাতির চারপাশে বিভিন্ন ধরনের ফল রাখা হয়েছে। উপরে একটি পাঁকা কলার ছড়ি ঝুলতেছে। নিচে রয়েছে কাঁঠাল, আম, বাঙ্গি, আনারস, আতা ফল, অপেল ও কমলা। এগুলো এখানে কেন রাখা হয়েছে,সেটা আমি জানি না। এগুলোর চার পাশে পুরুষ মহিলা ঢোলের তালে তালে নাচানাচি করছে। আবার দুই একজন মূর্খ মানুষ সেই মোমবাতির নিচে টাকাও রাখছে। চিন্তা করেন মানুষ কতটা বোকা হলে এখানে টাকা পয়সা রেখে আসে। সব থেকে অবাক করার বিষয় হলো আরেকটি ঘরের ভিতরে এক কর্ণারের একজন লোককে বসে থাকতে দেখলাম। তিনি হলেন এই মাজারের ভারপ্রাপ্ত খাদেম। তিনির সামনে কয়েকজন মহিলা বসে আছে। তারা কি যেন কথা বার্তা বলতেছে সেটা আমি দুর থেকে শুনতে পারি নাই। এমনি ভয়ে ভয়ে ছবি তুলতেছি,কেউ কিছু বলে কি না। মুখে মাক্স পড়ার কারনে কেউ আমাকে চিনতে পারে নাই।
সেখানে কিন্তুু তেমন জায়গা নেই। অল্প একটু খালি জায়গাতে ব্যানপার্টি ঢোলবাঁশি বাজাচ্ছে। তাদের সাথে পুরুষ মহিলা নাচানাচি করছে। আমি আর বেশিক্ষন সেখানে দাড়াইনি। ফটোগ্রাফি গুলো নিয়ে দ্রুত সেখান থেকে প্রস্থান করলাম। বাড়ির বাহিরে এসে দেখি কিছু ভক্ত বৃন্দ বসে আছে। তাদেরকে দেখলে মনে হবে না তারা স্বাভাবিক মানুষ। শরীরের পোষাক,চুল দাড়ি দেখে পাগল পাগল মনে হয়। আমি কারো সাথে কোন কথা না বলে বাসায় চলে আসলাম। পরের দিন অফিসে যাওয়ার সময় দেখলাম বড় বড় ডেগছির মধ্যে খিচুড়ি রান্না করা হচ্ছে। সব ভক্ত বৃন্দ সহ এলাকার মানুষ এই খিচুড়ি খাবে। তখন বুঝলাম রাতের বেলা কেন তারা ঢোলবাঁশির আওয়াজ সহ্য করেছে।
ইসলাম ধর্মে নবীজির স্পষ্ট হাদিস রয়েছে যে “তোমাদের উপর ইলমে দ্বীন শিক্ষালাভ করা ফরজ”। এই হাদিসের ব্যাখ্যা এটা না যে,কাউকে মাদ্রসায় পড়ে আলেম হতে হবে। এই হাদিসের অর্থ হলো তোমরা এমন জ্ঞান অর্জন করো যেটা তোমাদের দৈনন্দিন কাজে লাগে। অর্থাৎ চলাফেরা করতে গিয়ে,জীবন পরিচালনা করতে গিয়ে যে টুকু জ্ঞান দরকার সেটুকু অর্জন করা ফরজ। এই হাদিসের গুরুত্ব অনেক। আজকে তাদের ভিতরে এই জ্ঞান টুকুও নাই,যে আমরা যেটা করছি এটা সম্পূর্ণ ভন্ডামি,মানুষের সাথে ধোকাবাজি,প্রতারনা। এর জন্য আমাদেরকে একদিন বিচারের কাঠগড়ায় দাড়াতে হবে। একজন মানুষ জীবনে আর কয় বছর বেঁচে থাকে। এভাবে মানুষকে ঠকিয়ে তাদের টাকা খেয়ে কয়দিন চলবে। মানুষ কত বিষয় বুঝে অথচ এই বিষয় গুলো কেন বুঝে না.....।
এখানে যা দেখলাম এগুলা সিম্পল বিষয়। কিছু কিছু মাজারে, দরবারে আরো জগন্য বিষয় দেখা যায়। দিনের পর দিন, মাসের পরে মাস গোসল করে না,পরিবারের খোঁজ খবর রাখে না,মাজারে পড়ে থাকে। আর নামাজ রোজার কথা কি বলবো। এই মাজারে নেশা করতে কাউকে দেখি নাই। অনেক মাজারে নেশা করতেও দেখা যায়। ইসলাম কত সুন্দর জীবন দর্শন, সব সময় পাক পবিত্র থাকতে বলে, সুদ,ঘুষ,হারাম থেকে বেঁচে থাকতে নির্দেশ করে। মা-বাবা, স্ত্রী, পুত্র, আত্বীয় স্বজনের হক আদায় করতে হবে। অথচ তারা এসব বাদ দিয়ে মাজারে পড়ে থাকে,মাজারে গিয়ে টাকা পয়সা দেয়। এগুলো ইসলাম কখনো সাপোর্ট করে না। সৃষ্টিকর্তা সবাইকে সঠিক জ্ঞান দান করুন।।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | realme-53 |
শিরোনাম | ভন্ডামী আর ধোঁকাবাজি সম্পর্কে জানুন-অন্তিম পর্ব।। |
স্থান | পশ্চিম লামাপাড়া, ফতুল্লা, নারায়নগঞ্জ, ঢাকা, বাংলাদেশ। |
তারিখ | ০২ /০৫ /২০২৪ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্রে রাসূল (স )এর ওই হাদিসটি হচ্ছে তলাবুল ইলমি ফরিদাতুন আলা কুল্লি মুসলিম। প্রিয় নবী বলেছেন তোমরা জ্ঞান অন্বেষণের জন্য নিজ বাড়ি হতে বের হয়ে যাও। কেননা প্রত্যেকের উপর জ্ঞান অর্জন করা অতীব জরুরি বাস্তবিক জীবন যাপনের ক্ষেত্রে। সত্য বলেছেন আপনি আমাদের বর্তমান মানুষদের এতটাই অবনতি হয়েছে যেটা আপনার পোস্টে বর্ণনা কৃত ফটোগ্রাফি এবং বর্ণনা গুলি পড়লেই বোঝা যাচ্ছে। জ্ঞান আছে ঠিক ঐ কিন্তু সঠিক জ্ঞান নেই। ইসলাম কত সৌন্দর্যপূর্ণ জীবন দিয়েছে কিন্তু সেটাকে এরা ভন্ডামিতে পরিণত করে ফেলেছে। অবশ্যই এসবের জন্য একদিন বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতেই হবে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জী ভাইয়া জ্ঞান আছে সবার,কিন্তুু সঠিক জ্ঞান নেই। ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
পাগলা চান মাজার শরীফের মত এমন ভণ্ডামি মাজার শরীফ বাংলাদেশে এখন অহরহ রয়েছে। তবে আমার মাথায় একটা বিষয়ে কখনো ধরে না, যারা এখানে অনেক কিছু জিনিস টাকা পয়সা দান করেন এদের মাথায় কি কোন কিছু নেই। এরা কি বোঝেনা মৃত মানুষ কিছু দিতে পারে না। তবে এরা বড় ধোঁকাবাজ। এদের মুখোশ উন্মোচন করা প্রত্যেকটা মুসলমানের দায়িত্ব।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জী ভাইয়া একজন মরা মানুষের কাছে গিয়ে তারা টাকা পয়সা মোমবাতি জ্বালিয়ে আসে। এর দ্বারা কি হবে,,,। সবই ভন্ডামি। ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit