হ্যালো বন্ধুরা,
সবাই কেমন আছেন। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে ব্লগটি শেয়ার করতে যাচ্ছি।
বন্ধুরা আপনারা সবাই জানেন যে, আগামী রবিবারে বাংলাদেশের দ্বাদশ সংসদীয় জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা আগে থেকেই জানতে পেরেছিলাম যে, নির্বাচন উপলক্ষে আমাদের অফিস থেকে সমন্বয়ের সাপেক্ষে চারদিন ছুটি দিবে। যার ফলে আমি গত ২৫শে ডিসেম্বর সকালবেলা ৫ ই জানুয়ারির উপকূল এক্সপ্রেসের দুইটি টিকেট অনলাইন থেকে সংগ্রহ করেছিলাম। কিন্তু ৪ই জানুয়ারি রোজ বৃহস্পতিবার অফিসে নোটিশের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয় যে, শুধুমাত্র নির্বাচনের দিন তথা ৭ ই জানুয়ারি রোজ রবিবার একদিন অফিস বন্ধ থাকিবে। যার ফলে আমার ৫ই জানুয়ারি রোজ শুক্রবার বাড়িতে যাওয়ার প্রোগ্রাম ক্যানসেল হয়ে যায়।
যেহেতু শুক্রবারে বাড়িতে যাওয়ার কোন প্রোগ্রাম নেই, তাই বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক হ্যাংআউট শেষ কর, যাবতীয় কাজ করে, রাত একটার দিকে ঘুমাতে যাই। ভেবেছিলাম যেহেতু শুক্রবারে অফিস বন্ধ তাই অনেক বেলা পর্যন্ত ঘুমাবো। কিন্তু সকাল সাড়ে সাতটার সময় আমার ছোট বোনের এক ফোনের মাধ্যমে আমার ঘুম ভাঙ্গে। ছোট বোনের ফোন রিসিভ করার পরে যা শুনতে পেলাম, সেটা শোনার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। ছোট বোন ফোন দিয়ে জানাই আমার মেজো মামা রাত ৩টার সময় ইন্তেকাল করিয়াছেন। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)
আমার পাঁচ মামা এবং পাঁচ আন্টি। আজকে দুই নাম্বার মামা মারা গেছে। আমি তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে মামার বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হলাম। সাইনবোর্ড এসে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও গাড়িতে উঠতে পারি নাই। যার ফলে বাধ্য হয়ে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে গেলাম। সেখানে গিয়ে দেখতে পাই ১১ টা ১৫ মিনিটে যাওয়ার জন্য জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস নামক একটি ট্রেন দুই নাম্বার লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। আমি উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকেটটি নিয়ে টিকেট চেকের কর্তব্যরত একজন অফিসারের সাথে কথা বললাম। আমি তিনি কে জানালাম যে আমি উপকূল এক্সপ্রেসের দুইটি টিকেট সংগ্রহ করেছি, তবে আমার মামা মারা যাওয়ার কারণে জরুরী ভিত্তিতে আমাকে এখনই যেতে হবে, তাই আমি উপকূল এক্সপ্রেসের এই টিকেট দিয়ে জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেনে ভ্রমণ করতে পারবো কিনা। তিনি তখন আমার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুমতি দিলেন।
টিটি সাহেবকে ধন্যবাদ জানিয়ে আমি আর আমার ওয়াইফ জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেনে উঠে বসলাম। ট্রেনটি ১৫ মিনিট দেরি করে ১১ঃ৩০ মিনিটে কমলাপুর স্টেশন ত্যাগ করেছিল। কমলাপুরের পরে বিমানবন্দর স্টেশনে স্টপিজ দিয়েছিল। তারপর সোজা আশুগঞ্জ চলে আসে, মাঝখানে আর কোন স্টেশনে থামে নি। একটা ত্রিশ মিনিটে আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে পৌছালাম। সেখান থেকে সিএনজি নিয়ে সোজা মামার বাড়িতে চলে গেলাম।
রাস্তায় আসার সময় ছোট মামার সাথে কয়েকবার ফোনে যোগাযোগ করে জানতে পেরেছিলাম যে, জানাজার নামাজ আসরের নামাজের পরে দেওয়া হবে। আমি যখন মামার বাড়িতে প্রবেশ করি, তখন ২ টা ৪৫ মিনিট বাজে। গিয়ে দেখি আন্টিরা সহ আমার বাবা মা ছোট বোন সহ সব আত্মীয়-স্বজন চলে এসেছে। সবাই মামাকে নিয়ে কান্নাকাটি করতেছে। বিভিন্ন মানুষ মামার বিভিন্ন কাজ,কথাবার্তা, স্মৃতি নিয়ে আলোচনা করতেছে। মামা একজন ব্যবসায়ী মানুষ ছিলেন। যার ফলে উনাকে সবাই চিনতো।
দেখতে দেখতে চারটা বেজে গেল। আর চারটার আগেই মামাকে জীবনের শেষ গোসল দিয়ে জানাযার জন্য রেডি করা হলো। বাড়ির সবাইকে শেষ বিদায় দিয়ে চারটার সময় মামাকে নিয়ে মসজিদের মাঠে চলে গেলাম। সেখানে আসরের নামাজের পরে জানাজা দিয়ে মামাকে নিয়ে কবরস্থানে গেলাম। সেখানে মামাকে চিরতরে মাটির ঘরে শুয়াইয়ে উপরে বাশঁ আর মাটি দিয়ে দিলাম। তারপর মামার জন্য সবাই মিলে দোয়া করে কবরস্থান ত্যাগ করলাম।
বাসায় এসে দেখি অনেক মেহমান যারা মামাকে শেষ বিদায় দিতে এসেছিল,তারা অনেকেই চলে গিয়েছে। শুধু যারা অতি আপনজন তারাই রয়ে গেছে। হয়তো তারাও দু-একদিনের মধ্যে চলে যাবে। কিছুদিন পরে সবাই মামাকে ভুলে যাবে। এটাই দুনিয়ার রীতি, কেউ আসে, কেউ চলে যায়।।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা,ডিজাইন করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দুনিয়াটা এমনই আসলে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সবাই মনে রাখে। হয়তো মৃত্যুর পরে কিছুদিন স্মৃতি থাকে। সবাই আস্তে আস্তে মন থেকে মুছে ফেলে। এই তো কিছুদিন আগে আমার আম্মু মারা গেল। কিন্তু কিছুতেই ভুলতে পারছি না হয়তো মা বলে। আপনার মামা মারা গেল শুনে খুব খারাপ লাগলো। উনাকে আল্লাহ বেহেস্ত নসিব করুক।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জী আপু আপনজনদের ভুলা যায় না। আপনজনদের বিয়োগ মেনে নেওয়া যায় না। ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit