মন খুলে বাংলা ভাষায় কথা বলো
গত কয়েক দিন যাবৎ রেডিও টেলিভিশন সহ সকল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে ফলাও করে প্রচার করছে যে বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবারে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তারা সম্ভাবনা অনুযায়ী যে রিপোর্ট করে সেটা ৯৯% মিলে যায়। গতকাল শুক্রবারে সকাল থেকে রোদ থাকলেও রোদের প্রখরতা কম ছিল। আবার মাঝে মাঝে রোদ উদাও হয়ে যেতো। বিকালের দিকে রোদ পুরোপুরি ভাবে মেঘের নিচে হারিয়ে গেছে। আসরের পর থেকে আকাশ প্রচন্ড রকম ডাকা ডাকি শুরু করে। তবে তাদের গর্জনে মেঘ গলে বৃষ্টি হচ্ছিলো না। গতকাল সন্ধার সাতটা থেকে নয়টা পর্যন্ত আমি বাসার ছাদে একটি চেয়ার নিয়ে বসেছিলাম। দক্ষিণের ঠান্ডা বাতাস গায়ে লাগার সাথে সাথে হৃদয় যেন খুশিতে লাফাতে শুরু করলো। আধা ঘন্টা মত বসার পরে নিচ তলা থেকে হোম মিনিষ্টার আমার ছোট ভাগনীকে দিয়ে এক কাপ চা ও তিন পিচ সলেটেস বিস্কিট পাঠিয়ে ছিল। আমি প্রতিদিন চা খায় না। সাপ্তাহে এক বার বা মাসে তিনচারবার চা খাওয়া হয়। তো গতকাল সন্ধার পরে ছাদে বসে বাতাসের সাথে চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে দারুন একটি প্রশান্তি অনুভূব করলাম।
চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছি আর চার পাশে চোখ বোলাচ্ছি। কখন যে কাপের চা শেষ হয়ে গেলো বুঝতে পারি নাই। এত তারাতরি চা শেষ হয়ে যাবে বুঝতেও পারি নাই। মনে মনে আরেক কাপ চা খাওয়ার ইচ্ছা জাগলো। কিন্তুু চায়ের জন্য নিচে আর কোন ম্যাসেজ দিলাম না। একা একাই বসে রইলাম। রাত প্রায়টার দিকে মেঘের গর্জনে কিছুটা বৃষ্টি পড়া শুরু হলো। ছাদে আর থাকা গেলো না। নিচে রুমের ভিতরে চলে আসলাম। রুমে এসে ল্যাপটপ অপেন করে হাতের কিছু কাজ শেষ করে খাওয়া দাওয়া করে তারাতারি ঘুমিয়ে গেলাম। তবে বাহিরের বৃষ্টি থেমে গেছিলো। তখন মনে মনে ভাবলাম বৃষ্টি যদি কন্টিনিউ হতো আরামে ঘুমানো যেতো। তবে বৃষ্টি তো আর আমার কথা শুনে না। সে সৃষ্টিকর্তার নির্দেশে চলে।
রাত চারটার দিকে অনুভব করলাম প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছে। হালকা শীত অনুভব করে কাথা মুড়িয়ে ঘুম দিলাম। মোবাইলে এলার্ম ছিল সকাল আটটায়। কিন্তুু সকাল সাড়ে সাতটায় জেগে গেলাম। চোখের মধ্যে প্রচুন্ড ঘুম ছিল। মনে মনে ভেবেছিলাম আজকে শুক্রবার হলে ভালো হতো। তবে বাস্তবে আজকে শনিবার। আর আমাদের অফিস পূজা, শনিবার এসব দিবসেও খোলা রাখে। তো অনিচ্ছা সত্বেও ঘুম থেকে উঠতে হলো। ঘুম থেকে উঠে দেখি বাবুকে নিয়ে হোম মিনিস্টার গভীর ঘুমে মগ্ন। আবার ছোট ভাগনিও অপাশ ওপাশ করে কাথা মুড়ি দিয়ে ঘুমাচ্ছে। বৃষ্টি যেন তাদের ঘুমে ইন্দিন দিচ্ছে। ভাব দেখে বুঝা যায় মাত্র ঘুমিয়েছে। আমি ঘুম থেকে উঠে গোসল করে ফ্রেশ হয়ে চিন্তা করলাম কি নাস্তা করা যায়। নাস্তা রেডি করতে হলে হোম মিনিস্টারকে ডাকতে হবে। আমি আর আমার সকালের নাস্তা তাদের আরামের ঘুমে বাধাঁ হয়ে দাড়ালাম না। একদিন না হয় নিজেই নাস্তা রেডি করি। নিজেই চুলার মধ্যে পাতিল বসিয়ে পানি গরম করে এক কাপ চা বানিয়ে বারান্দায় গেলাম।
চেয়ারে বসে বৃষ্টি দেখতেছি আর চায়ে চুমুক দিচ্ছি। বাহিরে তাকিয়ে দেখলাম বৃষ্টির শব্দে বাতাস যেন সংগীত হয়ে ওঠেছে। আর মাটিতে পড়া প্রতিটি বৃষ্টির ফোঁটা একটি করে নতুন গল্পের জন্ম দিচ্ছে। আশে পাশে বাসাবাড়ির অনেকেই ঘুমাচ্ছে। এমন এক সকালে,বৃষ্টির নরম ফোঁটায় পৃথিবী স্নান নিচ্ছে, আশে পাশে সবাই ঘুমাচ্ছে আর আমি চায়ের কাপ হাতে নিয়ে নতুন নিভৃত মুহূর্তের অবিস্মরণীয় সাক্ষী হলাম। আকাশ যখন মেঘে ঢেকে যায়, পৃথিবী যেন নিজেকে একধরনের শীতল শান্তিতে মুড়ে ফেলে। এই অনুভূতি প্রকাশ করে শেষ করার নয়।
চায়ের সাথে কয়েক পিস সলটেস বিস্কিট খেতে খেতে ঘড়িতে আটটা পয়তাল্লিশ বেজে গেছে। বাহিরে তখনও বৃষ্টি হচ্ছিলো, ছোট ভাগনিকে ফিস ফিস করে ডেকে বললাম আমি অফিসে চলে যাচ্ছি তুমি দরজাটা লাগিয়ে মন চাইলে আবার ঘুমিয়ে যাও। তোমার মামানীকে ডাকার দরকার নেই। যখন ঘুম ভাঙ্গবে তখন উঠে নাস্তা রেডি করে খাবে। আমি ছাতা নিয়ে রাস্তায় বের হয়ে দেখি অনেক দোকান বন্ধ। কয়েকটা চায়ের দোকান খোলা আছে। আমার মত কিছু অফিস গামী মানুষ কিছু কর্মজীবী মানুষ সেই টং গুলোতে দাড়িয়ে বসে চা খাচ্ছে। তখন বুঝতে পারলাম তারাও হয়তো তাদের সকালের নাস্তার জন্য তাদের সহধর্মীনির আরামের ঘুমে ডিস্টার্ব দেয় নি। তাছাড়া এই বৃষ্টিতে রাস্তার পাশে টং এ দাড়িয়ে এককাপ চা যেন নতুন অনুভূতি সৃষ্টি করে। আমি হাটতে হাটতে শিবুমার্কট এসে একটি অটো নিয়ে অফিসে চলে আসলাম। দশটার দিকে হোম মিস্টিার ঘুম থেকে উঠেই ফোন দিয়ে জিঙ্গেস করলো.. কেন তাকে ডাক দিলাম না, সকালে কি নাস্তা করে অফিসে এসেছি। আমি তাকে বললাম একদিন না হয় এক কাপ চা আর কয়েক পিস সলটেস বিস্কিট দিয়েই নাস্তা সেরে নিলাম.......😘।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগলো। সত্যি ভাইয়া সকালে চোখে ঘুম থাকলেও নাস্তা রেডি করার জন্য উঠতে হয়। যাইহোক এমন মেঘলা আকাশে ছাদে বসে চা খেতে অনেক ভালো লাগে। বেশ ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে। ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জী নীরব একটি মূহর্ত অতিক্রম করেছিলাম। ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
চা আমি আগের থেকে এখন কিছুটা কম খেয়ে থাকি। ঐ দিন এক কাপ। তবে বৃষ্টি এবং চা এর তুলনা সত্যি হয় না ভাই। প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে এক কাপ গরম চায়ের কাপে চুমুক দেওয়ার মধ্যে যে প্রশান্তি আছে কী বলব। আপনার পোস্ট টা পড়ে অনূভুতি টা বুঝতে পেরেছি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জী ভাইয়া মেঘলা দিনে চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে বৃষ্টি দেখার মজাই আলাদা। ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit