পাকিস্তানের সাথে ইতিহাস গড়ে জয় পেল বাংলাদেশ।।

Screen Short From-https://www.cricbuzz.com/

গতকাল পাকিস্তানের রাওয়াপিন্ডিতে বাংলার টাইগাররা একটি ঐতিহাসিক জয় ছিনিয়ে এনেছে। গতকাল ছিল বাংলাদেশ দলের ক্যাপটেন নাজমুল হাসান শান্তর শুভ জন্মদিন। এই জয়ের মাধ্যমে তার জন্মদিনটা স্বরণীয় হয়ে রইলো। সেই সাথে পাকিস্তানের সাথে টেষ্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে এটি ছিল টাইগারদের প্রথম জয়। টেষ্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ আর পাকিস্তান ১৪ বার মুখোমুখি হয়েছিল। ১৪ তম ম্যাচে এসে জয় পেলো বাংলাদেশ। এর আগে ২০১৫ সালে বাংলাদেশের খুলনা স্টেডিয়ামে একটি ম্যাচ ড্র হয়েছিল পাকিস্তানের সাথে। এখন টেষ্ট ক্রিকেটে ভারত আর সাউথ আফ্রিকা বাংলাদেশের বিপক্ষে অজয় রয়ে গেলো। আশা করি তাদের সাথেও জয় ছিনিয়ে আনবে টাইগার বাহিনী।

Screen Short From-https://www.cricbuzz.com/

গত ২১শে আগষ্ট স্থানীয় সময় সকাল ১১টার সময় রাওয়ালপেন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ টস জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিং করার জন্য আমন্ত্রন জানায়। পাকিস্তানের পক্ষে ব্যাটিং করতে আসে আবদুল্লাহ সফিক ও সিয়াম আইয়ূব। তবে প্রথমটা তাদের তেমন ভালো হয়নি। আবদুল্লাহ , শাহ মাসুদ ও বাবর আজম তিন জনের মধ্যে বাবর শূন্য রান ও বাকি দুইজন মিলে মাত্র আট রান করে। তবে প্রথম থেকেই দলের হাল ধরে রেখেছেন সিয়াম আইয়ূব। সে ধীরে ধীরে খেলে ৯৮ বলে ৫৬ রান করে। সে চারটি চার ও এক ছয় মেরে তার ইনিংসটি সাজিয়েছে। তবে দলের শক্তিশালী মেরুদন্ড হিসাবে কাজ করেছে সৌদ শাকিল ও উইকেট কিপার রিজুয়ান আহমেদ। তারা খুবই ধৈর্য সহকারে খেলেছিল। তাদের খেলা দেখে বাংলাদেশের নিউজ পেপারে শিরোনাম করেছিল রানের পাহাড়ের নিচে চাপা পড়তে যাচ্ছে টিম বাংলাদেশ। এমন শিরোনাম দেখে ভেবেছিলাম বাংলাদেশ হয়তো হেরে যাবে। তবে ক্রিকেট খেলায় আগাম কিছু বুঝা যায় না। তারা দুইজন দক্ষ হাতে ব্যাট চালিয়ে দুই জনই সেঞ্চুরি করে ফেলে। শাকিল ২৬১ বোল খেলে ১৪১ রান এবং রিজুয়ান ২৩৯ বলে খেলে ১৭১ রান তুলে নেয়। তারপর সালমান ও সাহিন আফ্রদীর উপর নির্ভর করে ৪৪৮ রান করে পাকিস্তান দল। রিজওয়ান নট আউট থাকা অবস্থায় ৪৪৮ রানেই পাকিস্তান দল ইনিংস ঘোষনা করে। আর এখানেই তারা সব থেকে বড় ভুল করে।

বাংলাদেশ দল টার্গেট নিয়ে প্রথম দিক দিয়ে মোটামুটি ভালোই শুরু করেছিল। তবে জাকির হোসাইন ১২ রান, ক্যাপটেন শান্ত ১৬ রান করে আউট হয়ে গেলে কিছুটা চাপে পড়ে বাংলাদেশ। তবে প্রথম থেকেই দলের হাল ধরে ধৈর্যসহারে লেখতেছিল সাদমান ইসলাম। তাকে সঙ্গ দেয় পুরাতন দক্ষ খেলোয়ার মুমিনুল হক। সাদমান ইসলাম অল্প একটুর জন্য সেঞ্চুরির দেখা পেলো না। ১৮৩ বলে ৯৩ রান করে মোহাম্মাদ আলীর বোলে বোল্ড হয়ে যায়। মুমিনুল ও ফিফটি পূর্ণ করে থাকতে পারে নাই। তবে খেলার মোড় ঘুরিয়েছে মুশিফিকুর রহিম আর মেহেদী মেরাজ। মুশফিক ৩৪১ বোল খেলে ১৯১ রান ও ১৭৯ বোল খেলে মেরাজ করে ৭৭ রান। এছাড়া লিটন ৫৬ রান করেছিল। সবাই মিলে ১০ উইকেটে ৫৬৫ রান তুলে। সেখানে ১১৭ রানের লিড পায় পাকিস্তান। তখন আমরা সবাই ভেবেছিলাম খেলাটি ড্র হবে।

Screen Short From-https://www.cricbuzz.com/

দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তান তেমন ভালো করতে পারে নাই। প্রথম থেকেই তাদের মধ্যে একটি চাপ ছিল। প্রথম ইনিংসে ৫৬ রান করা আইয়ূব দ্বিতীয় ইনিংসে ১ রান করে আউট হয়ে যায়। তবে সফিক খেলাটি ধরে রাখার চেষ্টা করেছিল। কিন্তুু বাংলাদেমের বোলিং তুপে টিকে থাকতে পারছিলো না। সফিক ৩৭ রান করে সাকিব আল হাসানের বলে সাদমানের হাতে ক্যাচ দিয়ে মাঠ ছাড়ে। তারপরে মাকসুদ ও বাবর আজম কিছুটা ধরে খেলার চেষ্টা করলেও টিক তে পারে নাই। দ্বিতীয় ইনিংসে ১১ জনের মধ্যে সাত জনই দশের ঘর টপকাতে পারে নাই। তবে টাইগারদের মাথা ব্যাথার কারন হয়ে দাড়িয়েছিল প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা রিজুয়ান আহমেদ। সে ঠিকই তার ফিফটি তুলে নিলো। তবে মেহেদীর স্পিন বোলের কাছে বেশিক্ষন দাড়িয়ে থাকতে পারে নি। মাত্র ১৪৬ রানে তাদের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয়ে যায়। বাংলাদেশ টার্গেট পায় মাত্র ৩০ রানের। তখন বাংলাদেশ বুঝে যায় তারা জয়ের বন্দরে পৌছতে যাচ্ছে।

দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের কোন উইকেট হারাতে হয় নি। অপেনিং জুটি জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে। জাকির হোসেন ১৫ ও সাদমান ৯ রান করলেই খুশির জোয়ারে ভাঁসতে থাকে টাইগার বাহিনী। সেই সাথে রাওয়ালপেন্ডিতে সৃষ্টি হয় এক নতুন ইতিহাস। প্রথম ইনিংসে যেমন ব্যাটার দের অবদান ছিল তেমনি দ্বিতীয় ইনিংসে বোলারদের অবদান রয়েছে। দুই ইনিংস মিলে মেহেদি মেরাজ পেয়েছে পাঁচ উইকেট। এর মধ্যে দ্বিতীয় ইনিংসে পেয়েছে চার উইকেট। এছাড়া সাকিব পেয়েছে চার উইকেট, পাকিস্তানের মধ্যে নাসিম শাহ পেয়েছে তিন উইকেট। সব দিক বিবেচনা করে মুশফিকুর রহিমকে ম্যান অফদা ম্যাচ নির্বাচিত করা হয়। বাংলাদেশের এই জয়ের ধারা অব্যাহত থাকুক। সেই কামনাই করি।

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।