চেন্নাইকে কাঁদিয়ে প্লে-অফে বেঙ্গালুর।।

অবশেষে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আইপিলের এবারের আসরের প্রথম পর্বের খেলা শেষ হয়েছে। আর এই আসরে সর্বশেষ দল হিসাবে চেন্নাইকে কাঁদিয়ে প্লে-অফে জায়গা করে নিলো রয়েল চ্যালেঞ্জার বেঙ্গালু। সেই দিনের খেলাটি আমি দেখেছিলাম। সবার ভিতরে একটি টানটান উত্তেজনা ছিল। যে জিতবে সেই প্লে-অফে জায়গা পাবে। আর যে হারবে সে দল এই আসর থেকে বিদায় নিবে। সে কারনে এই খেলাটি অঘোষিত ফাইনাল খেলায় রুপান্তরিত হয়েছিল। বেঙ্গালুর দর্শকরা বিরাট কোহেলিকে সাপোর্ট দিয়ে দায়িত্ব নিয়ে খেলতে আবেদন জানায়। আর চেন্নাইয়ের পক্ষে এম এস ধোনিকে দায়িত্ব নিয়ে খেলার জন্য রিকুয়েষ্ট করে। তবে সেই খেলায় চেন্নাইয়ের দর্শকদের হৃদয় ভেঙ্গে যায়। শত চেষ্টার পরেও বেঙ্গালুর বোলারদের আক্রমনে চেন্নাই জয়ের বন্দরে পৌছাতে পারে নি।

সেদিন খেলাটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল বেঙ্গালুর বিখ্যাত স্টেডিয়াম এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে। চেন্নাই সুপার কিংস টস জিতলেও তারা ব্যাটিং না করে বেঙ্গালুরকে ব্যাটিং করার আমন্ত্রন জানায়। বেঙ্গালুর সেই সুযোগ হাতছাড়া করেনি। বেঙ্গালুর পক্ষে মাঠে নামে ডু প্লেসিস ও ইন্ডিয়ার তারকা খেলোয়ার বিরাট কোহেলি। এখন পর্যন্ত এবারের আসরের সব থেকে বেশি রান সংগ্রহ কারীর তালিকায় এক নাম্বারে রয়েছে বিরাট কোহেলি। এর মাধ্যমে বুঝা যায় বিরাট কোহেলি ভালে ফর্মে রয়েছে। সে হাত খুলেই খেলেছিল। কোহেলি শুরুটা মোটামুটি ভালোই করেছিল। তবে অল্পের জন্য ফিফটির দেখা পায়নি। সে ২৯ বল খেলে সাতটি বাউন্ডারি হাঁকায়। অপর পাশে ডু প্লেসিস ঠিকই নিজের ফিফটি তুলে নেয়। সে ৩৯ বল খেলে ছয়টি বাউন্ডারি মেরে ৫৪ রান তুলে।

তারপরে মাঠে আসে রজত পতিদার ও গ্রিন। তাদের মধ্যে দুই জনই সাহস নিয়ে মেরে খেলেছিল। রজত পতিদার ২৩ বলে ৩৯ রান তুলে। তারা দুইজন মিলে এগারোটি বাউন্ডারি মারে। এখানে গ্রিন শেষ পর্যন্ত টিকে থাকে। সে মাত্র ১৭ বলে ৩৮ রান করে। তার বাউন্ডারীতে রান দ্রুত দুইশোর ঘর ছুঁয়ে ফেলে। যারা মাঠে এসেছে সবাই দুই একটা করে হলেও বাউন্ডারি হাঁকিয়েছে। কারন এটা তাদের জীবন মরন খেলা ছিল। তারপরে আর কোন চাঞ্চ ছিল না। অবশেষে সবাই মিলে ৫ উইকেট হারিয়ে ২১৮ রান সংগ্রহ করেছিল। খেলাটি জিতার জন্য এই রান গুলো যথেষ্ঠ ছিল। মোটামুটি চেন্নাই সুপার কিংসের সব বোলারই মার খেয়েছে। দুইজন বাদে সবার ইকোনোমি দশের উপরে ছিল।

দ্বিতীয় পর্বে ২১৯ রানের টার্গেট নিয়ে মাঠে নামে চেন্নাই সুপার কিংস বাহিনী। রুতুরাজ গায়কওয়াড় ভালো মানের একজন ব্যাটসম্যান। সে সব খেলায় অপেনার হিসাবে খেলে এসেছে। আমি আগে তার কয়েকটি খেলা দেখেছিলাম। তার সাথে সঙ্গি হিসাবে সাপোর্ট দেয় রচিন রবীন্দ্র। তবে রুতুরাজ যখন শূণ্য রানে আউট হয়ে যায় তখনই সব থেকে বড় ধাক্কা খায় চেন্নাই সুপার কিংস। ম্যাক্সওয়েলের বল খেলতে গিয়ে যশ দয়ালের হাতে ধরা পরে যায় রুতুরাজ। তবে রচিন রবীন্দ্র দায়িত্ব নিয়ে খেলতে থাকে। সে ৩৭ বলে ৬১ রানের দারুন একটি ইনিংস খেলে। তবে ড্যারিল মিচেল যখন মাত্র চার রানে আউট হয়ে যায় তখনই ম্যাচটা চেন্নাইয়ের বিপক্ষে চলে যায়। পরে অজিঙ্কা রাহানে কিছুটা রান করলে আবার আশায় বুক বাধেঁ চেন্নাই। শেষ ভরসা ছিল রবীন্দ্র জাদেজা ও এমএস ধোনি। তবে তারাও শেষ রক্ষা করতে পারেনি। যদিও জাদেজা ২২ বলে ৪২ রান করে অপরাজিত ছিল,তবে ধোনি চারটি বাউন্ডারি মেরে ১৩ বলে ২৫ রান তুলে আউট হয়ে যায়। আর সেই সাথে এবারের আসর থেকে চেন্নাই ‍সুপার কিংসের পরিসমাপ্তি ঘটে।

ঐদিনের খেলায় বেঙ্গালুর ব্যাটসম্যানরা যেমন সফল হয়েছিল তেমনি বোলারগণ সফল ভাবে তাদেরে ডেলিভারি গুলো সম্পূর্ণ করতে পেরেছিল। মানে দুই দিকেই তাদের ভাগ্য সুপ্রসন্ন ছিল। বেঙ্গালুর যত গুলো বড় শর্ট খেলেছে প্রায় সব গুলোই বাউন্ডারি হয়েছে। অথচ চেন্নাই বড় শর্ট খেলতে গিয়েই ধরা পরে যায়। আর বড় শর্ট ছাড়া রানের চাকাও চলছিলো না। তবে চেন্নাই বাহিনী চেষ্টা ত্রুটি রাখে নাই। বোলারদের মধ্যে ঠাকুর আর যশ দয়াল দুইটি করে উইকেট পায়।

এই দিনের খেলাটি দেখে অনেক মজা পেয়েছি। কারন দুই দলেরই ছিল জীবন মরন লড়াই। আর সে জন্য হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। দর্শকরা খেলাটি দেখে মজা পেয়েছে। খেলার মধ্যে হার জিত আছে বলেই এত আনন্দ। এখন দেখার বিষয় প্লে-অফে বেঙ্গালুর কিভাবে রাজস্থান রয়্যালসকে মোকাবেলা করে। বেঙ্গালুরকে ফাইনালে যেতে হলে আরো দুইটি খেলায় জিততে হবে। যদি দুইটি পরিক্ষায় পাশ করে তাহলে হয়তো ফাইনালে হায়দ্রাবাদ অথবা কোলকাতার সাথে দেখা হতে পারে। দেখা যাক সামনের বেঙ্গালুর ভাগ্যে কি আছে।

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা,ডিজাইন করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।