কাশ্মীরি শাল কিনতে নিউমার্কেটে যাওয়া।।

হ্যালো প্রিয় বন্ধুরা,
সবাই কেমন আছেন,আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি একটি অনুভূতি মূলক ব্লগ শেয়ার করবো। আশা করি ব্লগটি পড়লে আপনাদের কাছে অনেক ভালো লাগবে।

বন্ধুরা আপনারা হয়তো অনেকে জানেন যে, আমাদের বাংলাদেশ সবচেয়ে বড় দুটি নিউ মার্কেট রয়েছে। একটি হলো বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে, আরেকটি হলো বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে। এছাড়াও প্রতি জেলা এবং বিভাগীয় শহরে নিউমার্কেট নামে কিছু মার্কেট রয়েছে। তবে অরজিনিয়াল ভাবে মূলত ঢাকা এবং চট্টগ্রাম নিউ মার্কেট কে দেশের সবথেকে বড় নিউমার্কেট ধরা হয়।

আপনারা সবাই জানেন যে ঢাকার নিউমার্কেট টি অবস্থিত বাংলাদেশের বিখ্যাত কলেজ ঢাকা কলেজের পাশে। ত্রিভুজ আকৃতির এ নিউ মার্কেটটিতে এমন কোন জিনিস নেই যেটা পাওয়া যায় না। বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পণ্য সেখানে পাওয়া যায়। রাজধানী বাসী সাধারণত নিউমার্কেট থেকেই অনেক পণ্য কিনে থাকেন। নিউ মার্কেটে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার ক্রয় বিক্রয় হয়। যেহেতু নিউ মার্কেটে সব ধরনের পণ্য পাওয়া যায়, তাই সেখানে সব সময় মানুষের জটলা লেগে থাকে।

গত দুইদিন আগে আমার এক আপু ফোন করে আমাকে জানালেন, তিনি তার নিজের বাবার জন্য একটি অরিজিনাল কাশ্মীরি সাল কিনতে চান। কিন্তু যেহেতু তিনি সিলেটে থাকেন তাই আমাকে নিউ মার্কেট থেকে একটি কাশ্মীরি সাল কিনে কুরিয়ার করে সিলেট পাঠিয়ে দিতে বললেন। যেহেতু আমি একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে জব করি, তাই সাধারণত সাপ্তাহিক ছুটি ব্যতীত আমার তেমন কোন ছুটি নেই। যার জন্য আজকে মেডিকেলের কোচিং করে যাত্রাবাড়ী থেকে নিউমার্কেটে যায়। যাত্রাবাড়ী থেকে অনেক গাড়ি নিউমার্কেটের দিকে যায়, আমি ফ্লাইওভার নিচ থেকে টান্স সিলবা নামক গাড়িতে চড়ে নিউমার্কেটে গেলাম। আমি যখন নিউমার্কেটে পৌঁছেছি তখন প্রায় সাড়ে বারোটা বাজে। নিউ মার্কেট সাধারণত সকাল ৯ টা থেকেই চালু হয়ে যায়। সকাল ৯ টা- ৯ঃ৩০ মিনিটের মধ্যে অনেক ক্রেতা মার্কেটে যাই।

আমি যেহেতু কাশ্মীরি শাল কিনতে গিয়েছি, তাই আমি সোজা শালের দোকানে চলে গেলাম। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন আমি জনতা ফ্যাশন নামক একটি দোকানে প্রথম গিয়েছিলাম। সেখানে তারা আমাকে অনেকগুলো সাল দেখিয়েছে। তাদের দোকানে এক হাজার থেকে সাড়ে সাত হাজার টাকার শাল রয়েছে। আমি তাদের দোকানে কয়েকটি সাল দেখে যাচাই-বাছাই করার জন্য অন্য দোকানে চলে গেলাম। তাদের দোকানে আমি একটি সাল দেখেছিলাম যেটার দাম তারা ৫০০০ টাকা চেয়েছিল। তবে সেটা আমি সাড়ে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত বলেছিলাম। কিন্তু তারা দেইনি

তারপর আমি চলে গেলাম উত্তর-পশ্চিমে কাঁচা বাজারের উপরে দুইতলা পাইকারি মার্কেটে। সেখানে গিয়ে আমি কয়েকটি দোকানে যাচাই-বাছাই করলাম। অনেক দোকানে অনেক ধরনের সাল দেখলাম। যেখানেই যাই সেখানেই তারা বলে এটা অরিজিনাল কাশ্মীরি শাল, ওটা অরজিনাল কাশ্মীরি সাল। তবে কয়েকটি সাল যখন একত্রে ছবি তোলা হয়, তখন এমনি বুঝা যায় কোনটি আসলে অরজিনাল কাশ্মীরি শাল। তাছাড়া আরো কয়েকটি পদ্ধতি রয়েছে, যেমন অরজিনাল কাশ্মীরি সালের সুতা যদি আগুনে পোড়ানো হয় তাহলে সেটা চুলের গন্ধ করবে। আর শালের উপরে যদি মোবাইলের ফ্লাশ লাইট মারা হয় তাহলে অল্প চিক দিবে, আর যেগুলো দুই নাম্বার সেগুলো অতিরিক্ত চিক চিক করবে।

অবশেষে আমি অনেক খোঁজাখুঁজির পরে অরিজিনাল একটি কাশ্মীরি শাল পেয়েছি। যে শালটির দাম সাড়ে সাত হাজার টাকা। এই টাকার নিচে তারা কোনভাবেই সালটি দিতে চাইছিল না। আমি ৫০০০ টাকা বলে অনেক রিকোয়েস্ট করেছি কিন্তু তারা শালটি দেইনি। তারপর নাবিল ফ্যাশন নামক একটি দোকানে গেলাম। সেখানেও অরিজিনাল কাশ্মীরি শাল পাওয়া যায়। সেখানেও তারা অরিজিনাল কাশ্মীরি শালটি আমার কাছে সাড়ে সাত হাজার টাকা চেয়েছে। আগের যে দোকানটিতে গিয়েছিলাম সেখানে তারা খুচরা বিক্রি করে না। যার জন্য তারা দাম ছাড়তে চাইনি। কিন্তু নাবিল ফ্যাশনে খুচরা বিক্রি করে। যার জন্য তাদের থেকে আমি ৫৮০০ টাকা দিয়ে অরজিনাল কাশ্মীরি শালটি নিয়ে আসলাম।

আমি নিচে যে পিকটি শেয়ার করেছি এটি হলো অরিজিনাল কাশ্মীরি শাল। এটি থেকে সুতা নিয়ে আগুন দিয়ে পোড়ালে চুলের গন্ধ করে। এই শালটির কাজ ও অনেক সুন্দর। আপনারা সবগুলো ফটোগ্রাফি যদি লক্ষ্য করেন তাহলে আপনারাও বুঝতে পারবেন আসলে কোনটি অরিজিনাল কাশ্মীরি শাল।

বন্ধুরা আজকে আর বাড়াতে চাচ্ছি না। এখানেই ইতি টানতে চাইছি। আশা করি ব্লগটি পড়লে অনেক কিছু জানতে ও বুঝতে পারবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোন ব্লগ নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন।

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।