মিরপুর শেরে-ই -বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিপিএল খেলা দেখার অনুভূতি।।

হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আপনাদের সাথে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিপিএল খেলা দেখার অনুভূতি শেয়ার করবো। আশা করি ব্লগটি সবার কাছে ভালো লাগবে।

আমি ঢাকাতে আছি প্রায় নয় বছর যাবৎ। এই নয় বছরে বিভিন্ন ব্যস্ততার কারনে অনেক কিছু মিস করেছি। সুযোগ থাকা সত্বেও সময়ের অভাবে অনেক জাগায় যাওয়া হয়নি, অনেক কিছু দেখা হয়নি। এখন সে গুলো খুব মিস করতেছি। যেমন ধরেন, ঢাকার বিভিন্ন বিনোদন স্পটে যাওয়া, বিভিন্ন জাগায় ভ্রমন করা, জাতীয় স্টেডিয়ামে গিয়ে সরসারি খেলা দেখা। এত বছর ঢাকা থাক সত্বেও মাত্র দুই বার স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলা দেখেছি। একবার দেখেছিলাম নারায়নগঞ্জ খানঁ সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে। সেখানে বাংলাদেশ বনাম সাউথ আফ্রিকার খেলা দেখেছিলাম। আর গত মাসের ২৬ তারিখ মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিপিএল খেলা দেখেছিলাম।

স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলা দেখতে মন চাই,তবে খেলার টিকেট ম্যানেজ করাই কঠিন বিষয়। বিভিন্ন সময় খেলার টিকেট কাটার সিরিয়াল দেখলে আর মন চাইনা স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলা দেখতে। গত মাসের ২৬ তারিখ আমাদের অফিস শবে বরাতের বন্ধ ছিল। তো আমার এক কলিগ সকাল ১১টার সময় ফোন করে বলতেছে মিরপুর যাবে খেলা দেখতে। আমি বললাম টিকেট পাবো কোথায়,সে বললো একটি টিকেট আছে কারওয়ান বাজারে তার এক ফ্রেন্ডের কাছে। আর একটি ব্ল্যাকার থেকে ম্যানেজ করতে হবে। তখন আমি চিন্তা করলাম যেহেতো,অফিস বন্ধ,বাসায় আছি তাই চিন্তা করলাম যায়। আমরা ঐদিন পল্টন থেকে মেট্রোরেলে কারওয়ান বাজারে গেছিলাম। ঐদিন আমার প্রথম মেট্রোরেলে ভ্রমন করা।

কারওয়ার বাজার থেকে একটি টিকেট নিয়ে আমরা আবার মেট্রোরেলে চড়ে মিরপুর গেলাম। আমরা যেতে যেতে একটি খেলা প্রায় অর্ধেক শেষ হয়ে গেছে। একটি টিকেট দিয়ে দুইটি খেলা দেখা যায়। একটি খেলা শুরু হয় দুপুর দেড়টার সময় আর একটি খেলা শুরু হয় সন্ধা সাড়ে ছয়টার সময়। সাধারনত মিরপুর স্টেডিয়ামে যে কোন খেলার টিকেট দেওয়া হয় শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে আর মিরপুর শেরে-ই -বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের এক নাম্বার গেইটের একডেমিক মাঠে। আমরা যখন মিরপুর পৌছেছি তখন এই দুই জাগায় কোথাও টিকেট ছিল না। খেলা শুরু হওয়ার আগেই সব টিকেট শেষ হয়ে গিয়েছিলো। তার কারন হলো ঐদিন সরকারি বন্ধের দিন ছিল। যার ফলে স্টেডিয়ামের ধারন ক্ষমতার চেয়েও বেশি মানুষ খেলা দেখতে গিয়েছিলো। মানুষের জন্য রাস্তা দিয়ে হাটা যাচ্ছিলো না।

এখন ব্ল্যাকে টিকেট নেওয়া ছাড়া মাঠের ভিতরে প্রবেশ করে খেলা দেখা সম্ভব নয়। এখন টিকেট ব্ল্যাকার খুঁজতে শুরু করলাম। আমার মত হাজার হাজার মানুষ টিকেট খুঁজতেছে। মাঝে মাঝে দুই একটা টিকেট পাওয়া যায়,তারা দুইশোত টাকার টিকেট চায় এক হাজার টাকা আর তিনশো টাকার টিকেট চায় ১৫০০ টাকা। মানে টিকেটের দাম চার পাঁচ গুন বাড়িয়ে দিয়েছে। তারপরও মানুষ কিনতেছে। চিন্তা করেন বাংলাদেশে খেলার টিকেট নিয়ে কি ব্যবসা চলে। এই অবস্থা দেখে চিন্তা করলাম আমি খেলা দেখবো না,কলিগ কে ভিতরে দিয়ে আমি বাসায় চলে যাবো।

খুঁজতে খুঁজতে হঠাৎ স্টেডিয়ামের পাঁচ নাম্বার গেইটের সামনে এক লোক বলতেছে একটি বিক্রয় করবে। তখন আমি জিঙ্গেস করলাম কত টাকা। সে বললো টিকেটের গায়ে ৩০০ টাকা লেখা। আপনি কত টাকা দিবেন। সাথে সাথে আরো অনেক মানুষ জড়ো হয়ে গেলো। আমি বললাম পাঁচশো টাকা দিবো। তখন সে দিতে রাজি হয়েছে,সাথে সাথে কিছু কিছু মানুষ বলতে লাগলো, ভাই ৭০০ টাকা দিবো, কেউ বলেলো ১০০০ টাকা দিবো। আমি ৫০০ টাকা দিয়ে সাথে সাথে টিকেট টা হাতে নিয়ে নিলাম। পরে জানতে পারলাম মানুষ ১৫০০ টাকা দিয়েও দিয়েও এই টিকেট কিনেছে। কিছু করার নেই,আমি দুইশো টাকা বেশি দিয়েই টিকেট নিলাম। তারপর ভিতরে প্রবেশ করে টিকেট খেলছে এমন একটি ভাষ্কর্যের সামনে দাড়িয়ে কয়েকটি ফটোগ্রাফি নিলাম।

উপরের ফটোগ্রাফিতে দেখতে পাচ্ছেন একটি সেলফি কর্ণার। এখানে ক্যামেরা রেখে ক্যামেরা ম্যান বিভিন্ন সময়ের ফটো শুট করে। এই বছরের বিপিএল ছিল ইস্পাহানী আর নগদের সৌজন্যে। যখন এখানে ক্যামেরা সেটিং করা হয় বিভিন্ন কোম্পানির লোগো লাগানো থাকে। আর নিচের ছবিটা আমরা মূল স্টেডিয়ামের ভিতরে প্রবেশ করার সময় নিয়েছিলাম। আর একটি বিষয় হলো ভিতরে খাবার দাবাড় ও পানির প্রচুর দাম। বাহির থেকে সব কিছু নিয়ে গেলেই ভালো হয়। তাহলে টাকা সেইভ হবে।

এগুলো মেইন গেইট দিয়ে প্রবেশ করার সময় ফটোগ্রাফি করেছিলাম। এখানে লম্বা একটি খুঁটি দেখা যাচ্ছে এটি হেড লাইটের খুঁটি এবং ভিতরে স্টেডিয়ামের উপরে খেলা চলাকালিন সময় একটি ক্যামেরা ঘুরে সেটিও এই খুঁটিতে লাগানো তারের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রন করে। যায়হোক ভিতরে প্রবেশ ও খেলার ফটোগ্রাফি পরের পর্বে শেয়ার করবো,ইনশাআল্লাহ। সবাই ভালো থাকবেন।

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।