কোন জিনিষ কিনতে গেলেই আমার মনে শঙ্কা বাঁধে,জিনিষটা আসল তো...।

হ্যালো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আজকে আমি আবার আপনাদের মাঝে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে একটি মজার পোষ্ট শেয়ার করবো। যদিও মজার পোষ্ট বললাম তবে প্রত্যেকটি কথা এবং কাজ বাস্তব ভিত্তিক। আমাদের দৈনন্দিন কাজের আংশ। চলুন তাহলে আর দেরি না করে শুরু করা যাক।

গত শুক্রবারে মেডিকেল সেন্টার থেকে ক্লাস শেষ করে যাত্রাবাড়ি মাছের আড়তে গেলাম, কিছু মাছ কেনার জন্য। আপনারা সবাই হয়তো জানেন যে যাত্রবাড়ি মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের দুই পাশেই মাছের বাজার বসে। বিশাল বড় মাছের আড়ৎ সেখানে। সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা মাছ নিয়ে যায়। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ ,সবজি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষ কেনা বেচা হয়। আমি ঘুরে ঘুরে দেখতেছি কোন মাছ নেওয়া যায়।

আমার একটা অভ্যাস আছে,আর সেটা হলো প্রত্যেকটা জিনিষের যাচাই বাছাই করতে মন চাই। যদিও যাচাই বাছাই করতে একটু সময় লাগে,ঘুরতে হয়। তারপরও আমার সেটা করতে মন চাই। জানিনা আমার এই অভ্যাসটা ভালো না কি মন্দ। আমি জিনিষ পত্র যাচাই বাছাই করতে এক মিলোমিটারও হেটেছি,সে রেকর্ডও আমার আছে। তবে এর পিছনে একটি কারনও আছে। আর সেটা হলো কোন জিনিষ কিনতে গেলেই আমার মনে শঙ্কা বাঁধে,জিনিষটা আসল তো...। আমি জানিনা আপনাদের মনে এমন শঙ্কা বাঁধে কি না।

মূল কথায় ফিরে আসি। আমার টার্গেট হলো কিছু পাবদা মাছ নিবো,আর কিছু ইলিশ মাছ নিবো। যেখানেই পাবদা মাছ দেখি সেখানেই মাছ গুলো সাদা দেখি। তার মানে মাছের মধ্যে প্রবলেম আছে। তাই সাদা পাবদা মাছ দেখলে দামও জিঙ্গেস করি না। ঘুরতে ঘুরতে এক জাগায় কিছু টাটকা মাছ পেলাম। পাবদা মাছের সাথে টেংরা মাছ মেশানো আছে। মাছ গুলো দেখে অমার পছন্দ হলো। দাম জিঙ্গেস করলাম কত টাকা। ব্যবসায়ী ভাই বললো একদাম ৪০০ টাকা কেজি। অনেক রিকুয়েষ্ট করে ৩৫০ টাকা দিয়ে এক কেজি মাছ কিনলাম। এখন ইলিশ মাছ কেনার পালা। বড় ইলিশ যা দাম চায়, তাতে আমার বাজেটে আসে না। আবার ছোট ইলিশ গুলো পছন্দ হয় না। মাছের উপরে বরফের পাহাড় দিয়ে ডেকে রাখছে। তাই মনের মাঝে শঙ্কা বাঁধে মাছ গুলো ভালো তো নাকি পঁচা মাছের উপরে বরফ দিয়ে তাজা করে রাখছে। অনেক চিন্তা ভাবনা করে ইলিশ মাছ ছাড়াই শুধু পাবদা আর টেংরা মাছ নিয়ে বাসায় ফিরলাম। রিক্স নিলাম না। কারন কয়দিন পর আবার আসবো তখন নেওয়া যাবে।

বাসায় আনার পরে বউ সাথে সাথে মাছ কাটতে বসে গেল। আর আমি পোষ্ট লিখতে বসে গেলাম। মাছ কেটে শেষ করে বউ আমাকে দেখালো অর্ধেক মাছই পচাঁ। মানে ভালো মাছ আর পচাঁ মাছি মিক্স করে বিক্রয় করেছে। চিন্তা করেন তখনে কেমনটা লাগে। মনে মনে চিন্তা করলাম ইলিশ মাছ আনলে না জানি কি অবস্থা হতো। আচ্ছা আপনাই বলেন তো বাঙ্গালী মানুষ এত বাটপার কেন..।

মাছ কিনতে গেলে শঙ্কা বাঁধে,মাছ গুলো আসল তো.. নাকি নদীর মাছ চলে চাষের মাছি দিচ্ছে। ফল কিনতে গেলে শঙ্কা বাঁধে, ফল গুলো আসল তো, নাকি পচাঁ ফল দিয়ে বা ওজনে কম দিয়ে ঠকিয়ে দিচ্ছে। মুরুগি কিনতে গেলে শঙ্কা বাঁধে, দেশি বলে পাকিস্তানি মুরগি দিচ্ছে না তো। মাংস কিনতে গেলে শঙ্কা বাঁধে বাধে, গরু,ছাগল বলে অন্য প্রাণীর মাংস বা বাসি মাংস ধরিয়ে দিচ্ছে না তো। সবজি কিনতে গেলে শঙ্কা বাঁধে,সবজি গুলো তাঁজা তো না কি ফরমালিন মিশিয়ে রেখেছে। জমি কিনতে গেলে শঙ্কা বাঁধে,দলিল কাগজ পত্র আসল তো না কি কয়েক জাগায় বিক্রয় করেছে। ছাদে বাতাস খেতে গেলে শঙ্কা বাঁধে, দূষিত বাতাস নয় তো। কেউ সম্মান করলে শঙ্কা বাঁধে, কোন জামেলা আছে না কি ভয়ে সম্মান করলো। রাস্তা দিয়ে হাঁটলে শঙ্কা বাঁধে,এই বুঝি এক্সিডেন্ট হয়ে মারা যাবো। ইলেক্ট্রনিক কোন ডিভাইস কিনতে গেলে শঙ্কা বাঁধে, অরিজানাল বলে চায়না অথবা ঢাকার জিন্জিরার জিনিষ ধরিয়ে দিচ্ছে না তো। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিষের দাম দেখে শঙ্কা বাঁধে,ঢাকা শহরে টিকে থাকতে পারবো তো।

ভোট দিতে গেলে শঙ্কা বাঁধে, নিজের ভোট নিজে দিতে পারবো তো। কোন এমপি-মন্ত্রীকে দেখলে শঙ্কা বাঁধে,দিনের ভোটে না কি রাতের ভোটে নির্বাচিত হয়েছে। সরকারি অফিসে কোন কাজের জন্য গেলে শঙ্কা বাঁধে, ঘুষ ছাড়া কাজটা করতে পারবো তো। চিকিৎসার জন্য গেলে শঙ্কা বাঁধে,সঠিক চিকিৎসা পাবো তো। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গেলে,শঙ্কা বাঁধে ছেলে মেয়েকে সঠিক শিক্ষা দিবে তো। ক্ষমতায় যারা বসে আছে, তাদের দেখলে শঙ্কা বাঁধে,সঠিক সময়ে ক্ষমতা ছাড়বে তো। দেশের যা অবস্থা তা দেখে শঙ্কা বাঁধে,ভোট দিতে বাড়ি যাওয়া লাগবেতো, নাকি এবারও ভোট দিতে গেলে বিরিয়ানী খাওয়ার অফার পাবো।

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা,ডিজাইন করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।