বাংলা ভাষা ছড়িয়ে দাও সবার মাঝে-
বন্ধুরা আপনারা সবাই জানেন যে আজকে দক্ষিণ এশিয়া তথা ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, ফিলিপাইন, ব্রুনাইসহ বিভিন্ন দেশে পবিত্র ঈদুল আযহা পালিত হচ্ছে। ঈদের আনন্দ, খুশি শুরু হয়ে যায় কয়েকদিন আগে থেকেই। বিশেষ করে পবিত্র ঈদুল আযহার আনন্দ শুরু হয়ে যায় ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকেই। কারণ আপনারা সবাই জানেন পবিত্র ঈদুল আযহাতে মুসলিম সম্প্রদায় সৃষ্টিকর্তার নৈকট্য লাভের আশায় তাদের প্রিয় জিনিসকে কুরবানী করেন। কুরবানীর পশু কিনার জন্য এক সপ্তাহ আগে থেকেই বিভিন্ন জায়গায় পশুর হাট বসে। সেই হাটে পশু নিয়ে যাওয়া, পশু ক্রয় করা, ঈদের আগে বিভিন্ন মার্কেট শপিং করা, আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে দাওয়াত পৌঁছানো সহ বিভিন্নভাবে মানুষ আনন্দ উপভোগ করে।
এবছর আমাদের বাজার থেকে পশু কিনতে হয়নি, আমাদের ঘরের পালিত পশু কুরবানী করা হলো। যার ফলে বাজার থেকে পশু কেনার কোন ঝামেলা ছিল না। গতকালকে ১৬ই জুন আমি ঢাকা থেকে বাড়িতে এসেছিলাম। সন্ধ্যার দিকে বাড়িতে যারা ছিল তাদের জন্য মেহেদী কিনে দিলাম। তারা খুবই আনন্দের সাথে মেহেদী পড়েছে। এশার নামাজের পরে গ্রামের মসজিদের মাইকে মাইকে সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হলো যে ঈদুল আযহার নামাজের জামায়াত সকাল আটটার সময় আমাদের গ্রামের ঐতিহ্যবাহী সৈয়দাবাদ জামিয়া ছানিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। যেহেতু সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতে হবে তাই কমিউনিটির কিছু কাজ করে রাত বারোটার মধ্যেই ঘুমিয়ে গেলাম।
সকাল সাতটার সময় মোবাইলের এলামের মাধ্যমে ঘুম ভাঙলো। ঘুম থেকে উঠে দ্রুত ব্রাশ করে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। পাঞ্জাবি পায়জামা নতুন কাপড় পড়তে পড়তে টেবিলে মিষ্টান্ন খাবার দেওয়া হলো। আমি মিষ্টি জিনিস তেমন একটা খাই না, তারপরেও একটি রুটি ও কিছু সেমাই খেয়ে দ্রুত মাদ্রাসার ময়দানের দিকে রওনা দিলাম। কারণ তখন ৭ টা ৫০ বেজে গেছিলো। নামাজের আর মাত্র ১০ মিনিট বাকি ছিল। নামাজে যাওয়ার আগে বাড়ির ছোট বাচ্চাদেরকে ঈদের সালামি দিয়ে গেলাম। আমাদের বাড়ি থেকে মাদ্রাসার ময়দানে যেতে মাত্র তিন থেকে চার মিনিট সময় লাগে। আমি যখন মাদ্রাসার মাঠে পৌঁছলাম তখন ৭:৫৫ বাজে। তারমানে নামাজের আরো পাঁচ মিনিট বাকি ছিল। আমি মাঠের মাঝখানে গিয়ে বসে গেলাম। তারপর মোবাইলটি বের করে কয়েকটি ফটোগ্রাফি নিলাম।
রাস্তায় যেতে যেতে পরিচিত ও অপরিচিত অনেক মানুষের সাথে দেখা হলো। অনেক মানুষকে অনেকদিন পরে দেখে অনেক ভালো লাগলো। নামাজ শুরু হওয়ার আগে সম্মানিত মাদ্রাসার মুহতামিম সাহেব কিছু উপদেশ দিলেন, মাদ্রাসার সভাপতি সহ গণ্যমান্য কয়েকজন ব্যক্তি কিছু কথা বললেন। ঠিক যখন আটটা বাজে তখন সবাই নামাজের জন্য দাঁড়িয়ে গেলো। আপনারা সবাই জানেন যে ঈদের নামাজের মধ্যে অতিরিক্ত ছয়টি তাকবীর দিতে হয়। এটা অনেকেই ভুল করে ফেলে। যার কারণে মুহতামিম সাহেব হুজুর প্রতিবছর আমাদেরকে নামাজের নিয়মটা শিখিয়ে দেন। তারপর যথা নিয়ম অনুযায়ী আমরা ঈদুল আযহার নামাজ আদায় করলাম। আমাদের মাদ্রাসার মাঠ সবুজ ঘাসের ডাকা,তারপরও মাঠের মধ্যে চাটাই বিছানো হয়েছে, আর সবাই নিজ নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে গেছিলাম।
আপনারা সবাই আরেকটি বিষয় জানেন যে ঈদের নামাজের পরে দুইটি খুতবা পড়া হয়। নামাজের মত এই খুতবা শোনাও সমস্ত মুসল্লিদের ওপর ওয়াজিব। নামাজ শেষ করে সবাই নিজ নিজ জায়গায় বসে পড়ে। তারপর ইমাম সাহেব হুজুর দুইটি খুতবা আদায় করে মুসলিম জাহানের শান্তি কামনায়, সারা বিশ্বের মানুষদের কল্যাণ কামনাই দোয়া মোনাজাত করেন। আমরা সবাই মাঠের মধ্যে বসে বসে আমিন আমিন বলতে থাকি।
নামাজ এবং দোয়া শেষ করে সবাই নিজ নিজ পারিবারিক কবরস্থানের দিকে হেঁটে যাই। আমাদের গত হওয়া পূর্বপুরুষদের মাগফিরাত কামনায় সবাই কবরের পাশে দাঁড়িয়ে দোয়া মোনাজাত করে। সেখানেও আমাদেরকে শিক্ষা দেওয়া হয়, এই পৃথিবীতে কেউ স্থায়ী নয়, সবাইকে দুনিয়া ছেড়ে একদিন কবরের ভিতরে যেতে হবে। সৃষ্টিকর্তার নৈকট্য লাভ ছাড়া পরপারে গেলে আমাদের জন্য কঠিন আজাব অপেক্ষা করছে। তাই পৃথিবীতে যতদিন বেঁচে থাকি সবাই সঠিক পথে জীবন পরিচালনা করার চেষ্টা করি।
কবর জিয়ারত শেষ করে সবাই নিজ নিজ বাড়িতে এসে সৃষ্টিকর্তার নৈকট্য লাভে পশু কোরবানি করে। যেহেতু আমাদের নিজের ঘরের পশু কুরবানী করবো, তাই সর্বপ্রথম আমাদের এলাকার মধ্যে আমাদের গরুটাই জবাই করলাম। তারপর ধীরে ধীরে আমাদের এলাকার আরো কিছু পশু কোরবানি করে আমাদের বাড়িতে চলে আসলাম। আজকের সারাদিন খুবই ব্যস্ত ছিলাম। দুপুরের খাবার খেয়েছি প্রায় সাড়ে তিনটার দিকে। তারপর আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে মাংস পাঠানোর মাধ্যমে খুবই ব্যস্ততাময় একটি দিন অতিক্রম করলাম। যাইহোক একটি দিনই কষ্ট করতে হবে। আমি জানি আমার মতো আপনাদের সবার ব্যস্ততার মাধ্যমে আজকের দিনটি অতিবাহিত হয়েছে। এটাই আমাদের আনন্দ। অবশেষে সবাইকে পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে এখানেই আমার আজকের ব্লগের ইতি টানলাম।।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | realme-53 |
শিরোনাম | সবাইকে জানাই পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।। |
স্থান | সৈয়দাবাদ,কসবা,ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম , বাংলাদেশ। |
তারিখ | ১৭/০৬ /২০২৪ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
Hari raya idul Adha adalah hari raya kita yang berkurban dan menaikkan ibadah haji di Mekkah semoga anda senang di sana sahabat baik muslim semoga kita dipertemukan di dunia dan akhirat kelak dalam satu darah keluarga.
#indonesia 🙏🫶🏻
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনাকে ঈদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন ভাইয়া। ঢাকা থেকে গ্রাম ঈদ করতে এসেছেন। আসলে এই অনুভূতি টা অসম্ভব দারুণ হয়।সকল আত্মীয়-স্বজন পাড়া-প্রতিবেশীদের সাথেও দেখা হয়।এই আনন্দের দিনে।আর দায়িত্ব করে মেহেদী এনে দিয়েছেন। আসলে ঈদে মেহেদী না পড়লে মনে হয় না ঈদ ঈদ। অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জী গ্রামে ঈদ করলে ছোট বড় পরিচিত অপরিচিত অনেক মানুষের সাথে দেখা সাক্ষাৎ হয় খুবই ভালো লাগে। ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনাকেও অনেক অনেক ঈদের শুভেচ্ছা রইল। আশা করছি দিনটা অনেক আনন্দের সাথে উপভোগ করেছেন। আসলে আজকের দিনের অনুভূতিটা অসাধারণ ছিল, শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
যে ভাইয়া মোটামুটি ভালোই আনন্দ করেছি। ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
প্রথমেই জানাই পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। বাংলাদেশের অন্যান্য এলাকার মতো আপনাদের এলাকায় ও খুবই সুন্দর ভাবে ঈদগাহ মাঠে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছিল, এটা দেখে বেশ ভালো লাগলো। আসলে অনেক জায়গায় আজকে ঈদের নামাজ মাঠের মধ্যে পড়তে পারেনি বৃষ্টির কারণে। আপনারা ঈদগাহ মাঠে ঈদের নামাজ পড়তে পারছেন এটি বেশ ভালো লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জি ভাই আমরা ভেবেছিলাম ঈদের নামাজের সময় বৃষ্টি আসবে, তবে আমাদের ভাগ্য ভালো বৃষ্টি আসে নাই। ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঈদ মোবারক ভাই। ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হোক আমাদের সকলের হৃদয়। ঈদের মুহূর্তগুলো বেশ সুন্দরভাবে অতিবাহিত করেছেন জেনে খুশি হলাম। আপনাকে ঈদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন ভাইয়া। ঈদের দিনের অনুভূতি সত্যি বেশ দারুন। ধন্যবাদ আপনাকে ভাই ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই, খুব সুন্দর মন্তব্য করে পাশে আছেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনাকেও ঈদের অনেক শুভেচ্ছা।বছরে দুইটি ঈদে একে অন্যের সাথে দেখা করার সুযোগ হয়ে থাকে যারা কর্মব্যস্ত মানুষ তাদের। মেহেদী এনে দিয়েছেন এটা ভালো লাগলো।প্রতিবার আব্বুও মেহেদী নিয়ে আসে আমাদের জন্য ।ভালো লাগলো পোস্টটি।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জী আপু এখন ঈদের আগে মেহেদী পড়ার উৎসব পালন করা হয়। ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঈদ মানেই অন্য রকমের অনুভূতি। ঈদের সময় সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে সবার সাথে সুন্দর সময় কাটানো সত্যি অনেক বেশি আনন্দের। আপনার কাটানো সুন্দর মুহূর্ত গুলো আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit