বিশ্বের বুকে ছড়িয়ে দাও মাতৃভাষা বাংলা-
আমাদের এডমিন আপু আমাদেরকে প্রথম থেকেই বলেছিল,যদি আমরা প্রত্যেকটা জাগায় সময় নষ্ট করি তাহলে সব গুলো স্পট ঘুরতে পারবো না। কিন্তুু আমরা যেখানেই গিয়েছি সেখানেই নির্ধারিত সময় থেকে অতিরক্ত টাইম নষ্ট করে ফেলেছিলাম। যার ফলে আমরা ঝুলন্ত ব্রিজ পরিদর্শন শেষ করে সন্ধার পরে পলওয়েল পার্কে উপস্থিত হয়। সেই পার্কে কি আছে সেটা আমরা আগে থেকে জানতাম না। তাছাড়া দিনের আলো না থাকার কারনে আমরা তেমন ভাবে পার্কের ভিতরে ঘুরতে পারি নাই। পলওয়েল পার্কে অনেক সুন্দর সুন্দর জিনিষ আছে। তবে সময়ের অভাবে আমরা সে গুলো পরির্দশন করতে পারি নাই।
আমরা ঝুলন্ত ব্রিজ পরিদর্শন করে নৌকা দিয়ে উল্টো পথে পলওয়েল পার্কে প্রবেশ করি। যদি মেইন গেইট দিয়ে প্রবেশ করতাম তাহলে গেইটের সামনে থাকা মানচিত্রের মাধ্যমে সেখানে দেখার মত কি কি আছে সে গুলো সম্পর্কে ধারনা নিতে পারতাম। মানে সময় নষ্ট করে আমাদের মারাত্বক ভুল হয়ে গেছে। পরেরবার গেলে আর এই ভুলটা করবো না। এই পার্কটা দিনের বেলা আলো থাকতে ঘুরতে পারলে অনেক মজা পাওয়া যেতো। এখানে প্রবেশ করে আমরা আমাদের নৌকাকে বিদায় জানালাম। যায়হোক যতটুকু সময়ে পেয়েছি, এই সময়ের মধ্যেই অনেক গুলো ফটোগ্রাফি করেছি। সে গুলো এখন আপনাদের মাঝে বিস্তারিত বর্ণনা করছি।
এটা হলো পলওয়েল পার্কে প্রবেশ করার প্রথম গেইট। এখানে বড় করে মানুষের মাথার কিছু খুলি তৈরী করা হয়েছে। মাঝখানের মাথার খুলির ভিতর দিয়ে প্রবেশ করতে হয়। গেইট টা দেখতে খুবই ভয়ংকর লাগছে। এখানে প্রবেশ ফি হলো পঞ্চাশ টাকা। যেহেতো রাত হয়ে গেছিলো তাই গেইটের সামনে বেশ কিছু পুলিশ দেখা যায়। এই ছবি গুলো আসার সময় তুলেছিলাম।
আমরা যখন লেক থেকে পার্কে প্রবেশ করলাম তখন অল্প কিছু আলো ছিল। সেটার মধ্যেই লেকের সামনের দিকের কিছু চিত্র ক্যাপচার করেছি। এখানে অনেক বড় করে আই লাভ পলওয়েল পার্ক লেখা রয়েছে। এখানে দাড়িয়ে বসে সবাই ফটোগ্রাফি করে। বসার বা দাড়ানোর জন্য ব্যবস্থা রয়েছে। যখন লেকের মধ্যে পানি বেশি থাকবে তখন জায়গাটা দেখতে দারুন লাগবে। এখন লেকের পানি খুবই কম যার ফলে তেমন ভালো লাগছে না। আমার ইচ্ছা আছে নভেম্বর বা ডিসেম্বরের দিকে ফেমিলি নিয়ে যাবো।
পার্কের মধ্যে সব থেকে সুন্দর ও ভিড়ের জায়গা হলো এই লাভ সেলফি কর্ণার টা। এখানে দাড়িয়ে দাড়িয়ে মানুষ সেলফি তুলে। লোহার মাধ্যমে লাভ সেলফি কর্ণারটা তৈরী করা হয়েছে। যে কাপ্পলরা সেখানে ঘুরতে যায়,তারা একটি করে তালা লাভ কর্ণারে লাগিয়ে আসে। এটা দিয়ে তাদের ভালোবাসাকে স্বাক্ষী রাখে। অথচ এখানে তালা থাকে, ছয় মাস আর তাদের ভালোবাসা থাকে ছয়দিন,হা হা হা। আপনারা লক্ষ করলে দেখতে পারবেন শত শত তালা সেখানে ঝুলতেছে। সব গুলো তালা একই সাইজের ও একই কালার। যখন তালা লাগানোর আর জায়গা থাকে না। তখনই পার্ক কর্তৃপক্ষ তালা গুলো খুলে ফেলে। পরে দর্শনার্থীরা আবার তালা লাগায়।
পার্কের মধ্যে একটি ছোট ঝুলন্ত সেতুও রয়েছে। যখন লেকের মধ্যে ভরপুর পানি থাকে তখন সেতুটা দেখতে বেশি সুন্দর লাগে। লেকের মাঝখানে গিয়ে সেলফি তুলার বেশ কিছু জায়গা আছে। বর্ষার সময় গেলে সেখানের মূল সুন্দর্যটা উপভোগ করা যাবে। নিচের ছবিতে যে জায়গাটা দেখতে পাচ্ছেন। এখান দিয়ে পার্কের উপর দিকে উঠে মূল সুন্দর্য টা দেখতে হয়। কিন্তুু আমরা সেটা আসার সময় দেখতে পেয়েছি। আলো থাকলে উপরে উঠে বেশি কিছু ছবি তুলতাম।
এখানে পার্কের ভিতরে একটি ফাস্টফুডের দোকান আছে। সেখানে আমরা নিজের খরচে নিজের মত করে রাতের খাবার খেয়েছি। আমরা যে গ্রুপের সাথে সেখানে গিয়েছি, তাদের সাথে কন্টাক্ট ছিল সকালের নাস্তা ও দুপুরের খাবার খাওয়াবে। আর রাতের খাবার নিজের খরচে খেতে হবে। খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমরা বেশ কিছুক্ষন রেস্ট নিয়ে গেলাম শহীদ মিনারে। সেখানে দিয়ে অনেক গুলো আনরস খেলাম। আমি বাসার জন্য বারোটা আনারস কিনলাম। সেখানে পাঁচ টাকা পিচ আনরাস বিক্রয় করে। লাষ্টের দিকে ৩০/৩৫ টা আনারস ১০০ টাকায় বিক্রয় করেছে। সবাই যে যার মত করে আনারস কিনেছে। রাঙামাটি আনারসের জন্য বিখ্যাত।
শহীদ মিনারে আমরা রাত এগারোটা পর্যন্ত ছিলাম। কারন যদি আগে বাস ছাড়তো তাহলে রাত তিনটা বা চারটার সময় এসে ঢাকা পৌছে যেতো। তখন গাড়ি পাওয়া যেতো না। আবার রাস্তায় বের হলে রিক্স আছে। সে জন্য দুই ঘন্টা লেইট করে রাত এগারোটার সময় বাস ছেড়েছে। আসার সময় আকাঁ বাঁকা রাস্তা দিয়ে আসতে অনেক কষ্ট হয়েছে। কারন এক জাগায় উচুঁ এক জাগায় নিচু রাস্তা। খুবই রিক্সের রাস্তা,একটু এদিক সেদিক হলেই সোজা পাহাড়ের নিচে গিয়ে দুনিয়াকে বিদায় জানাতে হতো। তাই খুবই সতর্ক ভাবে ড্রাইভার গাড়ি চালিয়েছে। আমরা সকাল ছয়টার সময় সাইনবোর্ড এসে নামলাম। তখন সূর্য উঠে গিয়েছিলো। রাস্তা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিলো। এই হলো আমার রাঙামাটির ভ্রমনের শেষ পর্ব।
নিজের মতামত-
অবশেষে বলতে হয় রাঙামাটি জেলাটা খুবই সুন্দর। যারা একবার যায় তাদের বার বার যেতে ইচ্ছে করবে। তাছাড়া দিনে দিনে নতুন নতুন জায়গা আবিষ্কার হচ্ছে। তারা সর্বউচ্চ চেষ্টা করছে কিভাবে পর্যটক আকর্ষন করা যায়। আমরা যে গ্রুপের সাথে সেখানে গিয়েছিলাম,তাদের ব্যবহারও খুব ভালো ছিল।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | realme-53 |
শিরোনাম | পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি ভ্রমন- অন্তিম পর্ব ( পলওয়েল পার্ক পরিদর্শন )।। |
স্থান | পলওয়েল পার্ক, রাঙামাটি, চট্রগ্রাম, বাংলাদেশ। |
তারিখ | ০১ /০৩ /২০২৪ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি ভ্রমন ভ্রমণের কিছু মুহূর্ত। আসলে আমাদের প্রত্যেক বাঙালিকে চেষ্টা করতে হবে নিজের মাতৃভাষাকে সারা বিশ্বের মানুষের কাছে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য। আসলে ভাই আমি বিভিন্ন জায়গা ভ্রমণ করেছি তবে রাঙ্গামাটি এখনো যাওয়া হয়নি চেষ্টা করব পরীক্ষার পরে খুব দ্রুত রাঙ্গামাটি ভ্রমণে যাওয়ার জন্য। এত সুন্দর সুন্দর দৃশ্য আছে ওখানে তা আগে জানা ছিল না। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জি ভাই এখন যেতে পারেন, এখন লেকে পানি আছে। অনেক মজা পাবেন। ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit