শুরু হলো রহমত,বরকত ও নাজাতের মাস।।

LINK

হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আপনাদের সাথে পবিত্র মাহে রমজান মাসের আগমন ও প্রথম রোজা রাখার অনুভূতি শেয়ার করবো। আশা করি ব্লগটি সবাই পছন্দ করবেন।

ইসলামি বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী রমজান হলো ৯ম মাস। গতকাল ১১ তারিখ চাদঁ দেখার মাধ্যমে পবিত্র মাহে রমজান শুরু হয়েছে। ত্যাগের মাস আত্নশুদ্ধির মাস হলো রমজান মাস। রহমত,বরকত ও নাজাতের মাস হলো রমজান মাস। এই মাসেই সর্বশ্রেষ্ট মহা মানব, নবীদের ইমাম, বিশ্ব মুসলিমের নয়নমনি, বিশ্ববাসীর শান্তির দূত, সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ট নবী হযরত মোহাম্মাদ মোস্তফা (সাঃ) এর উপর পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ট মহা গ্রন্থ পবিত্র আল কোরআনুল কারীম নাযিল হয়েছিল। আর এই রমাজান মাসে প্রায় সব মসজিদেই খতমে কুরআনের মাধ্যমে তারাবীহ নামাজ আদায় করা হয়। রমজান মাস ও রোজা নিয়ে পবিত্র কোরআনে অনেক হুকুম আহকাম রয়েছে। মুসলিম জাতি সহ পৃথিবীর অন্যান্য ধর্মালম্বী মানুষেরাও এই মাসকে সম্মান করে। মুসলিমরা এই মাসে সব থেকে বেশি ইবাদত বন্দেগী করে থাকে।

রোজা ইসলামের দ্বিতীয় স্তম্ভ। রোজা শব্দটি ফারসি শব্দ। যার আভিধানিক অর্থ উপবাস থাকা। পারিভাষিক সংঙ্গা হলো,সুবেহ সাদেকের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সকল প্রকারের পানারহার ও শারিরীক সর্ম্পক থেকে বিরত থাকা। সমস্ত বালেগ পুরুষ মহিলার উপর রোজা রাখা ফরজ। তবে যারা অসুস্থ, মুসাফির অথবা যার উপর শর্ত আরোপ আছে তার ক্ষেত্রে রোজার হুকুম ভিন্ন। তবে ইচ্ছাকৃত ভাবে রোজা না রাখলে তার ব্যাপারে কঠিন আদেশ রয়েছে। রোজা শরীরের জন্যও অনেক উপকারী। রোজা ভাঙ্গা ও নষ্ট হয়ে যাওয়ার অনেক গুলো কারন রয়েছে।

পৃথিবীর প্রথম মানব হযরত আদম (আঃ) থেকেই রোজা শুরু হয়েছে। তারপর হযরত নূহ (আঃ),হযরত ইবরাহীম (আঃ),হযরত দাউদ (আঃ) হযরত মুসা ও ঈসা (আঃ) এর যুগেও রোজা পালন করা হতো। তারপর সর্বশেষ নবী হযরত মোহাম্মাদ (সাঃ) উপর পবিত্র কোরআনুল কারীমের আয়াত নাযিলের মাধ্যমে রোজাকে ফরজ করা হয়েছে। রোজার ব্যাপারে কারো কোন দ্বিমত নাই। সমস্ত মুসলিম জাতি একমত যে রোজা পালন করতে হবে।

গতকাল চন্দ্র দেখার মাধ্যমে রমজান মাস শুরু হয়ে গেছে। অন্যান্য দিন অফিস থেকে একটু দেরীতে বের হলেও গত কাল সবাই একটু তারাতারি অফিস থেকে বের হয়ে গেছে। যে দিন একটু তারাতারি বাসায় যাওয়ার প্লান থাকে সেদিন জামেলা আরো বেশি থাকে। তারপরও সব সমস্যা সমাধান করেই বের হতে হয়েছে। বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হতে হতে এশার নামাজের আযান হয়ে গেছে। গত কাল আবার নিসার প্রথম টিক দেওয়া হয়েছে। বাচ্ছা মানুষ হাত পা নাড়ালেই কান্না করে। আর রাতে জ্বরও এসেছিল। কোন রকম সব কিছু গুছিয়ে আটটা দশ মিনিটে মসজিদে যাওয়ার উদ্যেশ্যে বাসা থেকে বের হয়েছি। কোন রকম দৌড়ে গিয়ে নামাজ পেয়েছি। প্রথম ছয় রমজানের তারাবীহ একটু দেরী হয়। কারন প্রথম ছয় দিন দেড় পারা করে কুরআন পাঠ করা হয়। সাতাইশে রমজানের মধ্যে শেষ করার জন্য প্রথম ছয় দিনে নয় পারা শেষ করতে হয়।

আমাদের বাসার দুই পাশেই মসজিদ রয়েছে। গতকাল হযরত শাহ জালাল (রঃ) নামে একটি কেন্দ্রীয় মসজিদে তারাবীহ নামাজ পড়েছি। ঐ মসজিদের ইমাম সাহেবের কুরআন তেলাওয়াত অনেক সুন্দর। উনার পিছনে নামাজ পড়লে কুরআন তেলাওয়াত শুধু শুনতেই মন চাই। সাড়ে নয়টার মধ্যেই তারাবীহ নামাজ সহ সব নামাজ শেষ হয়ে গেছে। মসজিদ থেকে বের হয়ে নিসার জন্য ঔষুধ আনতে হোমিও ডাক্তারের কাছে গেলাম। কারন ছোট বাচ্ছাকে এলোপ্যাতিক ঔষুধ না খাওয়ানোই ভালো। টিকার পরে জ্বর আসলে ঔষুধ না খাওয়ালেও হয়। কিন্তুু বাবুর মায়েরা তো সেটা বুঝে না। তাই বাধ্য হয়ে ঔষুধ নিতে হয়েছে।

গতকাল একটু আগে ঘুমিয়েছিলাম। কারন সেহরীর সময় আবার উঠতে হয়েছে। প্রথম প্রথম সেহরীর সময় উঠতে ও রোজা রাখতে একটু কষ্ট হয়। তবে দুইতিন দিন চলে গেলে আর কোন সমস্যা হয় না। তখন অভ্যাসে পরিনত হয়ে যায়। আমি রমজান মাস ছাড়া সকালের নাস্তা নয়টার পরে দশটা হলেই পেটে গন্ডগোল শুরু হয়ে যায়। আবার লাঞ্চের সময় দুইটার পার হয়ে আড়াইটা হলেই শরীর আর চলে না। কিন্তুু রমজান মাসে সারাদিন না খেলেও শরীর ক্লান্ত হয় না। এটা সৃষ্টিকর্তার একটা রহমত। তিনি যদি তার বান্দাদের উপর দয়া না করে তাহলে কেউ রোজা রাখতে পারতো না। আশা করি সব গুলো রোজা সুস্থ ও সুন্দর ভাবেই রাখতে পারবো। আশা রাখি সবাই রমজান মাসের হুকুম আহকাম গুলো যথাযথ ভাবে পালন করার চেষ্টা করবেন। ধন্যবাদ।

Link

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা,ডিজাইন করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।