লেকচার-জন্ডিস (Jaundice)

হ্যালো আমার বাংলাব ব্লগবাসি,
আমার প্রাণপ্রিয় বন্ধরা,সবাই কেমন আছেন। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে স্বাস্থ সচেতনতা মূলক একটি ব্লগ শেয়ার করবো। আজকে যে রোগের বিষয়ে আলোচনা করবো সেটা হলো “জন্ডিস”। আশা করি ব্লগটি মনযোগ সহকারে পড়লে এই রোগটি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারনা পাবেন।

Link

জন্ডিস একটি বহুল আলোচিত রোগ। বর্তমানে বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বে এই রোগের রোগি রয়েছে। প্রাপ্ত বয়স্ক ছাড়াও সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুরাও এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এটি এমন এক রোগ যাহা শরীরে স্বাভাবিক কালার পরিবর্তন করে দেয়। এ্রই রোগের কিছু লক্ষন রয়েছে যে গুলো দেখলে যে কেউ বলে দিতে পারে যে তার জন্ডিস হয়েছে। চোখ ও প্রস্রাবের রং হলুদ হয়ে যায়,পায়খানার রং সাদাটে বা ফ্যাকাশে হয়ে যায়,বমির ভাব বা বমি হতে পারে। তবে মূল কথা হলো জন্ডিস আসলে কোন রোগ নয় এটা হলো রোগের লক্ষণ।

কারো জন্ডিস হলে খুব তারাতারি ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। অনেক মানুষ আছে জন্ডিস হলে কবিরাজের কাছে যায়। কবিরাজের মাধ্যমে যদি রোগ ভালো হয় তাহলে তো আলহামদুলিল্লাহ। তবে পরিক্ষা-নিরীক্ষা করে ঔষুধ খাওয়াই উত্তম। ছোট বাচ্ছাদের জন্ডিস হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ কোন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে ভুল করবেন না। যদি জন্ডিস নিয়ে অবহেলা করা হয় তাহলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। জন্ডিস আবার কয়েক প্রকার ভাগ আছে। নিচে বিস্তারিত বর্ণনা করছি।

সংজ্ঞা:-

সাধারন ভাবে যদি বলি তাহলে রক্তে বিলিরুবিনের পরিমান বেড়ে গিয়ে চোখের সাদা অংশ (sclera),প্রস্রাব (urine),ত্বক (skin) হলুদ বা সাদা হয়ে যাওয়াকে জন্ডিস বলে। রক্তে বিলিরুবিনের স্বাভাবিক পরিমান হলো 0.2 থেকে 1.2 mg.

বিলিরুবিন কি..?

বিলিরুবিন হচ্ছে এক ধরনের রাসায়নিক উপদান যেটা RBC বা রক্তের লোহিত কনিকা ভেঙে গিয়ে তৈরি হয়। বিলিরুবিন লিভারে গিয়ে পিত্ততে পরিণত হয়। পিত্ত আবার লিভার থেকে বের হয়ে যায়। সুতরাং কোন কারণে লোহিত
রক্ত কনিকা ভেঙে বেশি বিলিরুবিণ তৈরি হলে, আর সেই বিলিরুবিন লিভারে পিত্ততে পরিণত না হতে পারলে অথবা পিত্ত লিভারে তৈরি হলেও তা ঠিক ভাবে বের হতে না পারলে জন্ডিস হতে পারে।

জন্ডিসের প্রকারভেদ-

জন্ডিস বা কামেলা তিন প্রকার.যথা-

০১/ হেপাটোসেলুলার জিন্ডস
লিভার সেলের অস্বাভাবিক কাজের জন্য অতিরিক্ত লিভার সেল ভেঙ্গে যে জন্ডিস হয় তাকে হেপাটোসেলুলার জন্ডিস বলে। অতিরিক্ত অ্যালকোহলের ফলে, লিভার ক্যান্সার হলে বা ঔষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারনে অতিরিক্ত লিভার সেল ভাঙ্গতে পারে।

০২/ অবস্ট্রাকটিভ জন্ডিস
পিত্তস্থলী ও পিত্তনালীর যে কোন স্থানে পাথর বা টিউমার হয়ে পিত্তরস আসতে বাধাগ্রস্থ হয়ে যে জন্ডিস হয় তাকে অবস্ট্রাকটিভ জন্ডিস বলে।

০৩/ হিমোলাইটিক জন্ডিস
কোন কারনে অতিরিক্ত RBC বা রক্তের লোহিত কনিকা ভাঙ্গনের ফলে যে জন্ডিস হয় তাকে হিমোলাইটিক জন্ডিস বলে। যেমন-হিমোলাইটিক এনেমিয়া বা ম্যালেরিয়ার কারনে ভাঙ্গতে পারে।

জন্ডিস চেনার লক্ষণ সমূহ-

• চোখের সাদা অংশ হলুদ হয়ে যাওয়া।
• ত্বক বা চমড়া হলুদ হয়ে যাওয়া।
• প্রস্রাব হলুদ হয়ে যাওয়া।
• শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়া
• বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
• খাবার খাওয়ায় অরুচি বা ক্ষুধামন্দা হওয়া।
• কারো কারো পাতলা পায়খানা হতে পারে।
• কুষ্ঠকাঠিন্য বা মল শক্ত হয়ে যেতে পারে।
• জ্বর হতে পারে আবার ওজনও কমে যেতে পারে।

চিকিৎসা বা পরামর্শ

• কয়েকটি টেষ্ট করা লাগতে পারে যেমন- CBC,Urine Test,HBS Ag,S.Bilirubin,FNAC etc.
• IV সেলাইন 5% DNS.
• Ceftriaxone 1gm / 2gm.
• Rabeprazole গ্রুপের ক্যাপসুল বা ট্যাবলেট।
• Pancreatin গ্রুপ।
• Ondansetron গ্রুপ।

ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী জন্ডিস হলো উক্ত গ্রুপের ঐষুধ নেওয়া যেতে পারে। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন ঔষুধ গ্রহন করা যাবে না। যদি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন ঐষুধ সেবন করা হয় তাহলে হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই যে কোন প্রকার ঔষুধ সেবন করার ক্ষেত্রে সবর্দা সাবধান থাকতে হবে।

উপদেশ বা এডভাইস

• রোগিকে সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে।
• তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে।
• সব ধরনের মাদক দ্রব্য সেবন থেকে বিরত থাকতে হবে।
• অতিরিক্ত তৈলাক্ত,চর্বি যুক্ত,মসলা যুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে।
• হেপাটাইটিস বি টিকা টিকা দিতে হবে।
• বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে।
• ধুলাবালি যুক্ত এলাকা পরিহার করতে হবে।

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা,ডিজাইন করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।