কোন্নগর বইমেলা ও পুষ্পপ্রদর্শনী
🙏 সকলকে স্বাগত জানাই 🙏
শুরু হয়েছে কোন্নগর বইমেলা। শুধুমাত্র বইমেলা নয়, এখানে বইমেলার সাথে সাথে শুরু হয়েছে পুষ্পপ্রদর্শনী এবং হস্তশিল্প মেলা। সব মিলিয়ে একেবারে জমজমাট হুগলি জেলার এই মফস্বল শহরটি। বইমেলা এবং হস্তশিল্প মেলা শুরু হলে প্রত্যেকদিন প্রাঙ্গণে থাকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আর সেই উপলক্ষে সারা কোন্নগর জুড়ে একেবারে যেন সাজো সাজো রব। আর প্রতিদিন ভিড় হচ্ছে প্রচুর। অনুষ্ঠান দেখতে এবং পুষ্প প্রদর্শনী ঘুরতে প্রচুর পরিমাণে মানুষ আসছে প্রতিদিন। পুষ্প প্রদর্শনীতে অনেক রকমের ফুলের বাহার বেশ নজর কেড়ে নিচ্ছে সকল দর্শকদের। বিশাল বড় বড় ডালিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন রঙের গাঁদা ফুলের বাহার চোখে পড়ার মত।
আমি গতকাল পৌঁছে গিয়েছিলাম কোন্নগর বইমেলা ও পুষ্পপ্রদর্শনীর মাঠে। কিছুক্ষণ সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখবার পর ঘুরে দেখলাম বইমেলার প্রত্যেকটি স্টল। কলকাতার সমস্ত বড় বড় প্রকাশনার স্টল বসেছে। যেমন আনন্দ প্রকাশন থেকে শুরু করে দেজ পাবলিকেশন। এছাড়াও অন্যান্য বড় প্রকাশনীগুলি কোন্নগর বইমেলায় তাদের নিজস্ব স্টল দিয়েছে। সেখানে প্রচুর মানুষ ভিড় করে বই কেনাকাটি করছেন। আর কোন্নগর বইমেলা থেকে বই বিক্রি ভালোই হচ্ছে। সমস্ত মেলার মাঝখানে তৈরি হয়েছে বিশাল পুষ্পপ্রদর্শনী। আর তার ঠিক সামনেই তৈরি হয়েছে বিরাট স্টেজ। সেখানে প্রতিদিন নামি শিল্পীদের গানের অনুষ্ঠান চলছে। বিভিন্ন নামিদামি শিল্পীরা আসছেন প্রত্যেকদিন তাদের গানের ডালি নিয়ে অনুষ্ঠান করতে। আমি যখন বইমেলায় গিয়েছিলাম, তখন গান গাইছিলেন বাংলার বিখ্যাত তরুণ শিল্পী এবং ইন্ডিয়ান আইডল খ্যাত উজ্জয়িনী৷ তিনি বিভিন্ন ধরনের গান দিয়ে মাতিয়ে রেখেছিলেন শ্রোতাদের। এছাড়াও প্রত্যেকদিন বিভিন্ন বাংলা গানের শিল্পীরা মঞ্চ মাতাচ্ছেন সন্ধ্যাবেলা।
আমি বইমেলায় প্রত্যেকদিন যাই বইয়ের নেশায়। প্রচুর পরিমাণ বই নেড়েচেড়ে দেখতে ভালো লাগে। আর বইমেলা মানেই প্রচুর বইয়ের সম্ভার। তাই গান শোনার সঙ্গে সঙ্গে দেখা হয়ে যায় বিভিন্ন ধরনের অজানা অচেনা বই। দুই একটা বই উল্টে পালটে কিছুটা পড়েও নেওয়ার সুযোগ থাকে। কারণ বইমেলা গেলে আমি হাতে সময় নিয়েই যাই। আর বিভিন্ন স্টল থেকে বই দেখে শুনে কেনাকাটি করতে পছন্দ করি।
মেলায় গেলে খাওয়া দাওয়া হবে না তা কি হয়? তাই যথারীতি খাওয়া-দাওয়া স্টলে ভিড়ে লাইন দিলাম কিছুক্ষণ। ঘুগনি থেকে শুরু করে চিকেন পকোড়া, সবকিছুই চেখে দেখলাম অল্পস্বল্প। খাওয়া দাওয়া করতে আমি ভালোইবাসি। ফলে কোন্নগর বই মেলায় গিয়ে বই, ফুল, গানের অনুষ্ঠান এবং খাওয়া দাওয়া মিলেমিশে এক দারুন প্যাকেজের প্রাপ্তি হয়ে গেল।
কোন্নগর বইমেলার গেটটিও খুব সুন্দর করে তৈরি করা হয়েছে পুরসভার সৌজন্যে। এবারের বইমেলার প্রধান থিম হল বাংলার বিখ্যাত লেখক ও সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাহিত্য। আমরা প্রত্যেকেই আরণ্যক বা পথের পাঁচালীর মত উপন্যাস পড়ে বড় হয়েছি। আর এই বছর বইমেলায় শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করা হচ্ছে সেই বিখ্যাত সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সবকিছু মিলিয়ে একেবারে জমজমাট আয়োজন যাকে বলে। প্রায় দশ দিনের জন্য এই বিশাল আয়োজন করেছে কোন্নগর পৌরসভা। আর সেখানে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। আসলে বাঙালি উৎসব নিয়ে বাঁচতে ভালোবাসে। আর এই শীতকালে উৎসবের শেষ নেই। সবকিছু মিলিয়ে একেবারে আনন্দের সময়।
🙏 ধন্যবাদ 🙏
(১০% বেনিফিশিয়ারি প্রিয় লাজুক খ্যাঁককে)
--লেখক পরিচিতি--
কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Daily tasks-
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
https://x.com/KausikChak1234/status/1876319911343214638?t=sxH8wRTWTvMmPzI5GNsDRA&s=19
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit