🙏🙏সকলকে স্বাগত জানাই🙏🙏

এবার নিয়ে এলাম শারদীয়া কনটেস্টের দ্বিতীয় পর্বের পোস্ট। এই পোস্টে আমি আপনাদের সঙ্গে মহানবমী এবং বিজয়া দশমীর দিন ঘোরাঘুরির ও ঠাকুর দেখার ছবি পোস্ট করব। পুজো হল পাঁচ দিনের অনুষ্ঠান। বাঙালির কাছে এর থেকে বড় অনুষ্ঠান আর নেই। তাই এই উৎসবে চুটিয়ে আনন্দ করায় বাঙালির কোনো ক্লান্তি নেই। যদিও আমি ভিড় ঠেলে অনেক দূরে ঠাকুর দেখতে যেতে খুব একটা পছন্দ করি না। তাই বেশিরভাগ দিনেই কাছাকাছি থাকি। আর আমাদের বাড়ির আশপাশে অনেক বড় বড় পূজো হয়। তাই সব মিলিয়ে খারাপও লাগে না। এখন শহরতলীর পূজাগুলোও প্রতিযোগিতা করছে কলকাতার সাথে। তাই কোন ঠাকুরকেই কম বলা যাবে না। আসুন এবার চলি পুজো পরিক্রমার পথে।

🙏🙏নবমী নিশি🙏🙏

তারিখ - ১২ই অক্টোবর, ২০২৪

এবার আসি নবমীর কথায়। নবমী মানে সেই বিষাদের সুর। তবুও এই নবমীর রাতে প্রত্যেকটি মন্ডপে মন্ডপে ভেঙে পড়ে মানুষের ঢল। আমি এই বছর নবমীর দিন শারদ সম্মানের বিচারক হিসেবে বেরিয়েছিলাম যুক্তিমন সংস্থার তরফে। আমাদের বিচার করার দিকটি ছিল পরিবেশবান্ধব পুজো। আর সেই বিচার করার ফাঁকেই ক্যামেরাবন্দি করেছি বেশ কয়েকটি পছন্দসই পুজো মণ্ডপ এবং মাতৃ প্রতিমা। এখন সেগুলোই আপনাদের সামনে নিয়ে এলাম। দেবী প্রতিমা প্রত্যেকটিই ভীষণ সুন্দর। এবার লক্ষ্য করার বিষয় ছিল প্রত্যেকটি মন্ডপে প্লাস্টিক এবং থার্মোকলের বর্জন। কর্পোরেশন বা মিউনিসিপ্যালিটিগুলো এটি কড়া হাতে দমন করেছে এইবার। তাই বিচার করতে বেরিয়েও কোন মণ্ডপেই পরিবেশের ক্ষতিকারক প্লাস্টিক ও থার্মোকলের ব্যবহার চোখে পড়েনি।

💐কোন্নগর বড় কালীতলা সর্বজনীন💐

লোকেশন - কোন্নগর, হুগলি

এই পুজোর প্রতিমা এইবারে বেশ নজরকাড়া হয়েছে। পাহাড়ের উপর মন্দিরের আদলে এদের মণ্ডপটি তৈরি। সামনে থেকে প্রতিমাটি দেখে একরাশ মুগ্ধতা ভিড় করেছিল আমার। কিন্তু আমি ছিলাম বিচারকের আসনে। তাই সেই দিক থেকেই বিচার করেছিলাম সার্বিক পূজা মন্ডপটি।

💐নবগ্রাম দেশবন্ধু ক্লাব💐

লোকেশন - কোন্নগর, হুগলি

এই মন্ডপটি আমার বিশেষ ভালো লেগেছিল। এরা মণ্ডপ সজ্জায় ব্যবহার করেছিল রিবন এবং পাটকাঠি। খুব সাধারন কিছু জিনিসপত্র ব্যবহার করে মণ্ডপটি অসাধারণ ভাবে সাজিয়ে তুলেছিল এই ক্লাব। প্রতিমাতেও রয়েছে অভিনবত্বের ছোঁয়া।

🙏🙏দশমী বিষাদে🙏🙏

তারিখ - ১৩ই অক্টোবর, ২০২৪

দশমী মানে বিষাদের ছায়া। মায়ের ফিরে যাওয়ার দিন। তবু তিথি অনুযায়ী এই বছর দুই তিথি একদিনে পড়ে যাওয়ায় ১২ তারিখেই নিয়ম মত বিজয়া দশমী হয়ে গেছে। কিন্তু বাঙালি কি তা মানে? পাঁচ দিন পূজো না হলে কোনভাবেই যেন আনন্দ পরিপূর্ণ হয় না। তাই ১৩ তারিখ বিজয় দশমী হিসাবে সমস্ত জায়গায় মানুষের লাইন ছিল চোখে পড়বার মতো। আমিও আমার দ্বাদশ স্পর্শীয় কন্যার ইচ্ছা অনুযায়ী বেরিয়ে পড়েছিলাম আরো কিছু ঠাকুর দেখতে একবার জন্য। তার মধ্যে বেশ কিছু মন্ডপ এবং প্রতিমা তুলে আনলাম আপনাদের জন্য।

💐কোন্নগর বড় বহেরা সর্বজনীন💐

লোকেশন - কোন্নগর, হুগলি

এই পুজো এবার মণ্ডপসজ্জায় কেদারনাথ এবং বদ্রীনাথ এর মন্দির তৈরি করেছিল। এই দুই মন্দির একেবারে নিখুঁতভাবে বানিয়ে তারা দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছে। এবারে এই মন্ডপটি না দেখলে একটা বড় আক্ষেপ রয়ে যেত। এখানকার চারদিকের পরিবেশ যেন বিশাল এক মন্দিরের আদলে তৈরি হয়েছিল। আর তার ভেতরেই পাশাপাশি এই কেদার ও বদ্রী মন্দির।

বদ্রীনাথ মন্দির

কেদারনাথ মন্দির

💐কোন্নগর দামোদর সংঘ💐

লোকেশন - কোন্নগর, হুগলি

দামোদর সংঘ প্রত্যেকবার বিশাল প্যান্ডেল এবং ঠাকুরের মাধ্যমে তাদের অভিনবত্ব বজায় রাখে। এবারেও তারা প্রাসাদোপম এই মন্ডপটির তৈরি করেছে। সামনের দরজা দিয়ে ঢুকে ভেতরের বিভিন্ন কারুকাজ এবং প্রতিমার মুখ আমাকে মুগ্ধ করেছিল।

💐কোন্নগর ঝিলপাড়💐

লোকেশন - কোন্নগর, হুগলি

এবারে একটা অভিনব মণ্ডপ সজ্জা দেখাবো। এদের থিম এবার আমাকে মুগ্ধ করে দিয়েছে। বর্তমানে মোবাইলের ব্যবহার একটি প্রধান সমস্যা। ছাত্র-ছাত্রী এবং তরুণ প্রজন্মের কাছে এটি একটি নেশার মতো। এখন এই মোবাইলের পাল্লায় পড়ে বহু তরুণ ও কিশোর নিজের ন্যূনতম কাজটুকই মন দিয়ে করেনা। সে ক্ষেত্রে সাফল্য তারা সহজে ছুঁতে পারে না। আর এই পূজা মন্ডপটি সেই বিষয়টাকে তুলে এনেছে খুব যত্ন করে। মোবাইল কিভাবে বর্তমান সময়ে বর্তমান প্রজন্মকে নষ্ট করছে তা তারা দেখিয়েছে চোখের সামনে। ভালো করে দেখুন। সমস্ত বিষয়গুলি উঠে এসেছে কত সুন্দর করে। তাই প্রাসঙ্গিক একটি সমস্যার বিষয়কে থিম হিসেবে গ্রহণ করে তারা তাদের মন্ডপ সজ্জায় সকলকে চমকে দিয়েছে।

পুজো পরিক্রমার দ্বিতীয় পর্ব শেষ হলো। আশা করি আপনাদের মন্ডপ এবং প্রতিমা ভালো লেগেছে। আসলে পূজো চলে গেলেও থেকে যায় পূজোর রেশ। আর সেই থেকেই যেন মাথার মধ্যে বসে যায় এই সুন্দর সুন্দর মণ্ডপ ও প্রতিমা গুলি। আপনাদের ভালো লাগলে নিশ্চয় মন্তব্যের মাধ্যমে আমায় জানাবেন।

---

চিত্রগ্রহণ	ইনফিনিক্স হট ৩০
ক্যামেরা স্পেশিফিকেশন	৫০ মেগাপিক্সেল
স্ট্যাটাস	আনএডিটেড
চিত্রগ্রাহক	কৌশিক চক্রবর্ত্তী
লোকেশন	কোন্নগর, পশ্চিমবঙ্গ
কভার ছবি এডিটিং সৌজন্য	অণুলিপি

---

---

🙏 ধন্যবাদ 🙏

---

(১০% বেনিফিশিয়ারি প্রিয় লাজুক খ্যাঁককে)

---

---

---

---

--লেখক পরিচিতি--

কৌশিক চক্রবর্ত্তী। নিবাস পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়। পেশায় কারিগরি বিভাগের প্রশিক্ষক। নেশায় অক্ষরকর্মী। কলকাতায় লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত৷ কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবিতার আলো পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। দুই বাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির পত্রিকা ও দৈনিকে নিয়মিত প্রকাশ হয় কবিতা ও প্রবন্ধ। প্রকাশিত বই সাতটি৷ তার মধ্যে গবেষণামূলক বই 'ফ্রেডরিক্স নগরের অলিতে গলিতে', 'সাহেবি কলকাতা ও তৎকালীন ছড়া' জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সাহিত্যকর্মের জন্য আছে একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। তার মধ্যে সুরজিত ও কবিতা ক্লাব সেরা কলমকার সম্মান,(২০১৮), কাব্যলোক ঋতুভিত্তিক কবিতায় প্রথম পুরস্কার (বাংলাদেশ), যুগসাগ্নিক সেরা কবি ১৪২৬, স্রোত তরুণ বঙ্গ প্রতিভা সম্মান (২০১৯), স্টোরিমিরর অথর অব দ্যা ইয়ার, ২০২১, কচিপাতা সাহিত্য সম্মান, ২০২১ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।

---

---

কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

ধন্যবাদ জানাই আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবন্ধুদের৷ ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।

---