গল্প // ছোটবেলার অতি দুঃখজনক একটি গল্প

in hive-129948 •  last year 

হ্যালো.........
আসসালামু আলাইকুম/আদাব আমার বাংলা ব্লগ স্টিম কমিউনিটির বন্ধু গন আমি @kibreay001 বাংলাদেশ থেকে বলছি আজ (১৯-০৮-২০২৩)

mabry-mill-8184715_1280.jpg

source

আসসালামু আলাইকুম আমার স্টিম বন্ধু গন আশা করি আপনারা অনেক ভালো আছেন । আপনাদের দোয়ায় আমিও অনেক ভালো আছি। আমি @kibreay001 আমি আজকে আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে যাচ্ছি ছোটবেলার অতি দুঃখজনক একটি গল্প। আসলে গতকাল থেকেই মনটা বেশ খারাপ কারণ আমার একজন অনেক কাছের শিক্ষক মারা গিয়েছে। বাড়িতে গিয়ে শিক্ষকের জানাযায় অংশগ্রহণ করে বাড়িতে ছিলাম আর আসা হয়নি মেসে। তাই কালকে আপনাদের মাঝে খুব একটা ভালোভাবে যুক্ত হতে পারেনি। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই হাতমুখ ধুয়ে খাওয়া দাওয়া শেষ করে কিছুক্ষণ বাড়িতে বসে ছিলাম। তারপরে ভাবলাম দুপুরের দিকে একটা প্রাইভেট আছে তাই চলে যেতে হবে। তাই ব্যাগ গুছিয়ে আবারো রেডি হয়ে গেলাম মেসে যাওয়ার উদ্দেশ্যে। বাড়ি থেকে বের হয়ে বাসে উঠে দীর্ঘ দুই ঘন্টা পথ অতিক্রম করে মেসে চলে আসলাম। বাসের মধ্যে আপনাদের সাথে অল্প একটু যুক্ত হয়েছিলাম। মেসে ফিরে বসে গেলাম আপনাদের মাঝে আবারও একটি পোস্ট লেখার জন্য। তবে চলুন শেয়ার করা যাক আমার ছোটবেলার একটি অতি দুঃখজনক ঘটনা........


ঘটনাটি ঘটেছিল আমি যখন ক্লাস থ্রিতে পড়ি। তখন আমার মামা লেখাপড়া করত ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে। আমার মামা আমাকে বলেছিল যদি তোমার স্কুলে তুমি রোল নম্বর এক থেকে তিন এর মধ্যে রাখতে পারো তাহলে তোমাকে একটি সাইকেল কিনে দেবো। ক্লাস টু তে ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়ার পরে আমি যখন ক্লাস থ্রিতে অতিক্রম করেছিলাম তখন আমার নম্বর হয়েছিল দুই। তখন আমি তো বিরাট খুশি হয়েছিলাম আমি সাইকেল পাব বলে। বাড়িতে এসেই মামাকে ফোন দিয়েছিলাম সাইকেল কেনার জন্য। মামা আমাকে বলছিল আমি কয়দিন পরে বাড়িতে যাব তারপরেই তোমার সাইকেল কিনে দেবো। আমি তো তখন সেই খুশি। সেই জন্য আমার মামা একটি সাইকেল কিনে দিয়েছিল আমাকে । মামা বাড়িতে এসেই আমার জন্য সাইকেল কিনে নিয়ে এসেছিল। সেই সময় সাইকেলটির দাম নিয়েছিল মাত্র সাত হাজার টাকা। আসলে মামা ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময় টিউশনি করাতো তাই আমাকে সাইকেল কিনে দিতে পেরেছিল মামা।


সেই সময় আমি আমাদের গ্রামের স্কুলে লেখাপড়া করতাম। তাই তখন আমি স্কুলে যাওয়ার সময় সাইকেল নিয়েই স্কুলে যেতাম। এভাবে প্রায় দুই থেকে তিন মাস চলতে থাকে। তারপরে হঠাৎ করে একদিন সাইকেল নিয়ে এসে আমি বাড়িতে রেখে দিয়েছিলাম। সেই সময় আমাদের গ্রামে চোর ডাকাতের প্রবণতা অনেক বেশি ছিল। একদিন রাতে আমার সাইকেলটি ঘর থেকে চুরি হয়ে যায়। সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে আমি অনেক কান্না করেছিলাম। প্রায় দুইদিন খাওয়া-দাওয়া এবং ইস্কুল যাওয়ায় বন্ধ করে দিয়েছিলাম। তারপরে আমার আব্বু আবার বলেছিল যদি চতুর্থ শ্রেণীতে ওঠার সময় ভালো ফলাফল করতে পারি তাহলে আমাকে সাইকেল কিনে দেবে। কিন্তু চতুর্থ শ্রেণীতে ওঠার সময় আমার রোল নাম্বার হয়েছিল ৪ তাই আমি নিজে থেকেই আর সাইকেল কিনেছিলাম না।


তারপরে নিজের মধ্যেই নিজে একটা প্রতিজ্ঞা করলাম ক্লাস ফাইভে সমাপনী পরীক্ষার সময় আমাকে ভালো রেজাল্ট করতে হবে। তারপরে আমি আবারো ভালোভাবে লেখাপড়া শুরু করলাম। দেখতে দেখতে এক বছর অতিক্রম হয়ে গেল। ক্লাস ফাইভে পরীক্ষা দেওয়ার পরে যখন রেজাল্ট ঘোষণা করা হয় তখন আমাদের স্কুল থেকে আমি প্রথম স্থান অধিকার করেছিলাম। তখন আবারো আমি বেশ খুশি হয়েছিলাম। তারপরে বাড়িতে এসে আমার আব্বু আমাকে আবার সাইকেল কিনে দিয়েছিল। আসলে সাইকেলটা কিনে দেওয়ার মূল উদ্দেশ্য হলো তখন গ্রাম থেকে বাইরের গ্রামের স্কুলে লেখাপড়া করতে যেতাম এইজন্য। আশা করি পোস্টে আপনাদের সকলের কাছে ভালো লাগবে। সকলের মতামত নিচে কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে জানাবেন। আপনাদের সকলের জন্য আমার পক্ষ থেকে শুভকামনা রইল।
💞আমার নিজের পরিচয়💞


IMG-20230321-WA0007.jpg

আমি মোঃ কিবরিয়া হোসেন। আমি বাংলাদেশ খুলনা বিভাগে মেহেরপুর জেলার গাংনী থানায় কামারখালী গ্রামে বসবাস করি। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের সবাইকে জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমি বর্তমানে একাদশ শ্রেণীর ছাত্র। আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি বাংলা ভাষায় কথা বলতে এবং লিখতে অনেক ভালোবাসি। সব থেকে আমি বেশি পছন্দ করি ফটোগ্রাফি করতে। আমি বেশিরভাগ সময় বিভিন্ন জায়গা ঘোরাঘুরি করে থাকি। কয়েকটি শখের মধ্যে আমার প্রধান শখ হচ্ছে ঘোরাঘুরি করা। সংক্ষিপ্ত আকারে আমি আমার নিজের পরিচয় শেয়ার করলাম আপনাদের মাঝে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য শুভকামনা রইল।

(১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য )

banner-abb3.png

Logo.png

7258xSVeJbKkzXhyseBP4PYz11eBDT8sW2oR1a4vfVFS6JTrGU8e1FPUaNdHG5vjXyg2xthV78bDEmEVvKCQpyzX1kq8gAVzGsPp9GqJVRWxb6T9y35PZmQehnLjELdKKmnhdxQjDuny4.png

Steem_Pro.png


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

কিছু কিছু সময় নিজের অনেক শখের জিনিস চুরি হয়ে যায়। আর এটা নিজের কাছে অনেক দুঃখ লাগে। তোমার মামা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করত তখন টিউশনে টাকা দিয়ে তোমাকে একটি সাইকেল কিনে দিয়েছিল ভাগ্নি। সেই সাইকেলটা চুরি হওয়াতে তুমি খুব কষ্ট হয়েছিল। যদিও পরবর্তীতে ভালো রেজাল্ট করতে হলে তোমাকে কিনে দিত কিন্তু তুমি হয়েছিল চতুর্থ। পরবর্তীতে পঞ্চম শ্রেণীতে ওঠার সময় তোমার রেজাল্ট ভালো হওয়াতেয় তোমার বাবা পুনরায় সাইকেল কিনে দিয়েছিল এটা জেনে বেশ ভালো লাগলো।

Posted using SteemPro Mobile

ধন্যবাদ মামা পোস্টটি পড়ে আপনার গঠনমূলক মূল্যবান মতামত শেয়ার করার জন্য।

ভালোভাবে যেন পড়াশোনা করে সেজন্য এই ধরনের প্রত্যাশা প্রত্যেকটা পরিবার দিয়ে থাকে। সেই অনুপ্রেরণা থেকেই আজকের এই অবস্থান যেটা প্রতিটা পরিবারের মধ্যে থাকা উচিত কিন্তু সাইকেলটা চুরি হয়ে গিয়েছিল জেনে খারাপ লাগলো। সত্যিই আনন্দের মধ্যে দুঃখের খবর ভালো লেগেছে গল্পটি।

Posted using SteemPro Mobile

আসলে আমার প্রথম সাইকেলটা চুরি হয়ে যায় আমি অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম ভাই।

ছোটবেলার এরকম কিছু ঘটনা রয়েছে যেগুলো কখনোই ভোলা যায় না। আর আপনার ক্ষেত্রেও এমনটা হয়েছে। আপনি ক্লাসে সবসময় দেখছি এক থেকে পাঁচের মধ্যে ছিলেন। আপনার মামার দেওয়া সাইকেলটি চুরি হয়ে গিয়েছিল এটা জেনে খুব খারাপ লেগেছে। এই ঘটনাটি সত্যি অনেক দুঃখজনক। তবে ক্লাস ফাইভে ভালো একটা রেজাল্ট করার কারণেই আপনার আব্বু আপনাকে আরেকটা সাইকেল কিনে দিয়েছিল এটা জেনে খুশি হলাম। ভালো লাগলো সম্পূর্ণটা পড়ে।

আসলে ভাই ছোটবেলায় ভালো লেখাপড়া করতাম কিন্তু এখন আর লেখাপড়া করতে মন চায় না কি যে করি সেটাই ভাবছি। ধন্যবাদ পোস্টটি পড়ে মূল্যবান মতামত শেয়ার করার জন্য।

ছোটবেলার গল্প গুলো পড়তে আমার কাছে বেশ ভালই লাগে। আজ আপনার গল্পটি পড়ে আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। আপনার মামার দেওয়া সাইকেলটি চুরি হয়ে গিয়েছে জেনে খারাপ লাগলো। আবার আপনি পঞ্চম শ্রেণীতে ভালো রেজাল্ট করায় আপনার বাবা আপনাকে সাইকেল কিনে দিয়েছে এটা জেনে ভালো লাগলো। এত সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

আসলে আপু মামার দেওয়া সাইকেলটি চুরি হয়ে গিয়েছিল বলে আমি বেশ কষ্ট পেয়েছিলাম। পঞ্চম শ্রেণীতে ভালো রেজাল্ট করেছিলাম বলে বাবা আমাকে সাইকেল কিনে দিয়েছিল। ধন্যবাদ পোস্টে পড়ে মতামত শেয়ার করার জন্য।

আমি তো মনে করি আমাদের প্রত্যেকটা মানুষের জীবনে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে ছোটবেলার। আর সেগুলো এভাবে বলতে বলতে ও শেষ হবে না কখনো। তবে আপনি সেই স্মৃতিগুলোর মধ্য থেকে একটা দুঃখজনক স্মৃতি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আসলে আগে কিন্তু দেখা যেত ভালো ফলাফল লাভ করলে এরকম গিফট পাওয়া যেত। আপনিও সাইকেল পেয়েছিলেন। তবে চোর তো আপনার সাইকেলটা আপনার কাছে বেশিদিন রাখতেই দেয়নি। তবে পরবর্তীতে ফাইভে প্রথম হয়েছিলেন এটা জেনে ভালো লেগেছে। আর আপনারা মোটরসাইকেল কিনে দিয়েছিল এটা পেয়ে আপনি নিশ্চয়ই অনেক খুশি হয়েছিলেন।

আসলে আপু আপনি একদম ঠিক বলেছেন এটা আমার অনেক দুঃখের স্মৃতি। আসলে সাইকেলটি মামা আমাকে উপহার দিয়েছিল সেটা যদি চুরি হয়ে যায় সব মানুষেরই অনেক দুঃখ লাগে। ধন্যবাদ পোস্ট পড়ার জন্য।

সত্যি কথা বলতে কি মামা অনেকের জীবনে এমন অনেক ঘটনা ঘটে থাকে যা ওই অবস্থায় মেনে নেওয়া বড়ই কঠিন হয়ে পড়ে। আর ছোট মন মানসিকতাটা এতটাই নিরীহ ও সহজ সরল হয়ে থাকে সে মনকে বুঝ দেওয়া বড় কঠিন। আর আগে আমি একটা জিনিস বেশি লক্ষ্য করতাম পিতা-মাতা সহ আপন জনেরা ভালো রেজাল্ট করানোর জন্য বিভিন্ন আশ্বাস দিয়ে থাকতো। হয় সাইকেল কিনে দেবো না হয় মোবাইল কিনে দিবো না হয় ভালো কিছু কিনে দেবো এমনটা বলে লেখাপড়ার সঠিক পর্যায়ে আনার চেষ্টা করত। যাই হোক পরবর্তীতে তোমার আব্বু সাইকেল কিনে দিয়েছিল জেনে খুশি হলাম।

ঠিক বলেছেন মামা আপনি ছোটবেলায় স্কুলে ভালো রেজাল্ট করলে অনেকে অনেক ধরনের আশা দিয়ে থাকে। সে আশা আমার বাস্তবায়ন হয়েছিল কিন্তু অবশেষে সাইকেলটা চুরি হয়ে গিয়েছিল বেশ খারাপ লেগেছিল।

আসলে ছোটবেলার স্মৃতি কোনভাবেই ভুলে যাওয়া সম্ভব। তোমার মামা যখন তোমার জন্য সাইকেল কিনতে গিয়েছিল আমিও সাথে গিয়েছিলাম। আমি নিজেই সাইকেল টা পছন্দ করে কিনে দিয়েছিলাম। যখন সাইকেলটা হারিয়ে গিয়েছিল আমার অনেক খারাপ লেগেছিল।

আসলে মামা সাইকেলটা আমারও বেশ পছন্দ ছিল কিন্তু অবশেষ চুরি হয়ে গিয়েছিল বেশ খারাপ লেগেছিল আমার। ধন্যবাদ মতামত শেয়ার করার জন্য।