"বাংলা মোদের গর্ব" : পর্ব ৪

in hive-129948 •  2 months ago 

নমস্কার বন্ধুরা,

ব্রিটিশ সরকার যেমনভাবে কলকাতার ২ জেলকে কাজে লাগিয়ে বিপ্লবীদের দমনে নেমেছিল তেমনি তারা অন্যান্য স্বাধীনতার সংগ্রামের মূল জায়গা গুলোতে জেল স্থাপন করে সেখানে একের পর এক বিপ্লবীকে আটকাতে শুরু করে দেয়। তাঁর মধ্যে ছিলো, মেদিনীপুর সেন্ট্রাল জেল অন্যতম। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে মেদিনীপুর অবদান সীমাহীন।সেই জেলার বিপ্লবী দের আটকাতে ১৮৬৮ সালে স্থাপিত হয় মেদনীপুর সেন্ট্রাল জেল। এই জেল হয়ে ওঠে মেদিনীপুর জেলার বিপ্লবী দমনে ইংরেজ দের মূল হাতিয়ার।

PXL_20231209_162931648_copy_1209x907.jpg

মেদিনীপুর সেন্ট্রাল জেলে যুগান্তর সমিতি এবং অনুশীলন সমিতির বহু নেতৃবৃন্দকে বন্দী করে রাখা হয়। তাদের মধ্যে ছিলেন গোপাল মুখোপাধ্যায়, অমৃতলাল সরকার, রবীন্দ্রমোহন সেন প্রমুখ বিপ্লবীরা। লবণ সত্যাগ্রহের সময় এই জেলেই বন্দি রাখা হয় ডঃ প্রফুল্ল ঘোষ, সুরেশ ব্যানার্জি, সতীশ সামন্তের মতো মানুষদের। হাজারো বিপত্তি ও কড়া পাহারা উপেক্ষা করেই দীনেশচন্দ্র মজুমদার, শচীন্দ্রলাল করের মতো বিপ্লবীরা রাতের অন্ধকারে জেল থেকে পালিয়ে যান। মেদিনীপুর সেন্ট্রাল জেলে বহু বিপ্লবীকে ফাঁসি দেওয়াও হয়। যে সমস্ত বিপ্লবীদের ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল তাদের মধ্যে ছিলেন প্রদ্যোত ভট্টাচার্য, ব্রজকিশোর চক্রবর্তী, রামকৃষ্ণ রায়ের মতো বহু বীরগতিপ্রাপ্ত বিপ্লবীরা।

PXL_20231209_163242877_copy_589x906.jpg

PXL_20231209_163255904_copy_1209x907.jpg

মেদিনীপুর জেলার পশ্চিমেও বিপ্লবীদের আখড়া ছিলো। বিপ্লবী কর্মকাণ্ড রুখবার জন্য খড়গপুরের কিছুদুরে হিজলিতে ইংরেজরা নতুন আরেকটি জেল তৈরি করেন। উঁচু প্রাচীর এবং কাঁটাতার দিক ঘেরা এই জেলের বৈশিষ্ট্য তা সত্ত্বেও নলিনী দাস এবং ফনী দাশগুপ্ত এর মত বিপ্লবীরা এখান থেকে পলায়নে সক্ষম হন। ১৯৩১ সালেই বিনা প্ররোচনায় ইংরেজ পুলিশ হিজলির বন্দীদের উপরে গুলি চালায়। এই জায়গা টিই বর্তমানে খড়গপুর আইআইটি।

PXL_20231209_163302286_copy_1209x907.jpg

মেদিনীপুর জেলার মত আরেকটি জেলায় পাহাড়ের উপরে বিপ্লবীদের বন্দী হিসেবে আটকাবার জন্য ইংরেজরা ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরি করেন। সেটি ছিল বক্সা ডিটেনশন ক্যাম্প যেটা বর্তমানে আলিপুরদুয়ার জেলার বক্সা পাহাড়ের তিন হাজার ফুট উঁচুতে গভীর জঙ্গলের মধ্যে একটি পাহাড়ি গ্রামে অবস্থিত।ব্রিটিশরা বিভিন্ন রাজবন্দীদের এখানে আটক করে রাখতেন। ২০১৯ সালে এই জেলটিতে গিয়ে দেখি একদম ভাঙাচোরা অবস্থায় পড়ে আছে।

PXL_20231209_163313296_copy_676x907.jpg




IMG_20220926_174120.png

Vote bangla.witness

Or

Set @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



আগের পর্বগুলো যদিও পড়িনি, তবে এই পর্বটি বেশ শিক্ষণীয় ছিল দাদা। ভারতীয় ইতিহাসে এর মধ্যে থেকে বেশ কিছু ঘটনা পড়েছি, আজ আবারও আরও অনেক কিছু জানতে পারলাম আপনার পোস্ট থেকে।

Hi @kingporos,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.

Come and visit Italy Community

এই পোস্টটি অসাধারণ লাগলো। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের উজ্জ্বল ইতিহাসের যে পর্বটা এখানে তুলে আনলে তা সত্যিই বিশেষ একটি অধ্যায়। মেদিনীপুর স্বাধীনতা সংগ্রামের দিক থেকে উজ্জ্বল এক জেলা। সেখানে এই ঐতিহাসিক সেন্ট্রাল জেলের ইতিহাস পড়ে খুব ভালো লাগলো। ছবিগুলোও ভীষণ ভালো। স্বাধীনতা সংগ্রামের সকল অমর শহীদকে প্রণাম জানাই।

দাদা,যদিও আগের পর্বগুলি আমার দেখা হয়ে ওঠেনি।তবে এই পোস্টটি পড়ে ধারণা করতে পারলাম যে বিপ্লবী বিষয় নিয়ে।আসলে আপনার পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারলাম ইংরেজরা তো অনেকগুলো জেল তৈরি করেছিলেন আবার আমাদের দেশের বিপ্লবীদের ইচ্ছে মতো মেরেও দিয়েছেন।যেটা খুবই নির্মম নির্যাতন করে ,এটা আমাদের হৃদয়ে দাগ কাটার মতোই।এইসমস্ত বিপ্লবীদের জন্য মন থেকে রইলো অফুরন্ত সম্মান ও হৃদয়ভরা ভালোবাসা।ধন্যবাদ দাদা।

এই ধরনের পোস্ট পড়লে ইতিহাস সম্পর্কে অনেক কিছুই জানা যায়। আসলে ব্রিটিশরা বাঙালিদের উপর প্রচুর নির্যাতন করেছিলো। তবে সাহসী বাঙালিরা শক্ত হাতে তাদেরকে দমন করার চেষ্টা করেছিলো। আর সেজন্যই শেষ পর্যন্ত স্বাধীনতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। যাইহোক ফটোগ্রাফি গুলোও জাস্ট অসাধারণ হয়েছে দাদা। এমন তথ্যমূলক একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।