নমস্কার,
আজকে একটু ভিন্ন ধরনের পোস্ট করবো। আজ একটা সিনেমা রিভিউ করবো। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। সিনেমাটার নাম ফ্রি গায়, এটি একটি কল্প বিজ্ঞানের উপর ভিত্তি করে কমেডি ধর্মী সিনেমা। রিভিউ শুরু করার আগে দেখে নিই কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
ফ্রি সিটি হল একটি অনলাইন, ওপেন-ওয়ার্ল্ড ভিডিও গেম। গেমটির মূল চরিত্র একজন নন প্লেয়ার ক্যারেক্টার বা খেলোয়াড় হীন চরিত্র, "গায়" কে ঘিরে।
"গায়" একজন ব্যাংকার। সে প্রতিদিন নিত্যনৈমিত্তিক কাজ সেরে অফিসের জন্য প্রস্তুতি নেয়। অফিসে যাবার পথে এক কাপ কফি নিয়ে বন্ধু "বাডি" র সাথে অফিসে যায়। "বাডি" "গায়ের" ব্যাংকেই সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে কাজ করে। গায়, প্রতিদিনের একঘেয়ে জীবনে আটকে। এরম একদিন ব্যাংক থেকে ফেরাএ পথে "মলোটভ" গার্লের মুখোমুখি হয় গায়, তার পর থেকেই প্রোগ্রামিং বিচ্যুতি শুরু হয়। চিরাচরিত আচরণ থেকে সরে একদিন গেমের এক প্লেয়ারের কাছ থেকে সানগ্লাস ছিনতাই করে, চোখে লাগিয়ে দেখতে পায় গেমের নানান সেটিংস। এদিকে সুনামি গেমসের কর্মী "কীস" এবং তার সহকর্মী "মাউসার" একজন নন প্লেয়ার ক্যারেক্টারের এহেন আচরণে আশ্চর্য হয়ে গায়কর ছদ্মবেশী হ্যাকার মনে করে, তারপর তারা গায়কে খেলা থেকে নিষিদ্ধ করার ব্যর্থ চেষ্টা করে।
এদিকে "মলোটভের গার্লের" সাথে গায়ের পরিচয় হয়। কিন্তু মলোটভ মনে করেন যে "ব্লু শার্ট গায়" একজন খেলোয়াড়, নন প্লেয়ার ক্যারেক্টার নয়। তারপর মলটভের পরামর্শে গায় তার প্রোগ্রামিংয়ের থেকে একদম ভিন্ন আচরন করতে থাকে, যা যা অন্যান্য খেলোয়াড়দের থেকে আলাদা। এটাই গেমিং কমিউনিটির মধ্যে অনেক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। গায়ের ভালো কাজের জন্য, "ব্লু শার্ট গায়" বিশ্বব্যাপী সংবেদন হয়ে ওঠে।
ফ্রি সিটির সোর্স কোড লাইফ ইটসেল্ফ নামক একটি অপ্রকাশিত গেম থেকে চুরি হয়ে গিয়েছিল, যা "কী" এবং মিলি তৈরী করে। ওই সোর্স কোড চুরি করে সুনামি গেমসের হেড ডেভেলপার এন্টওয়ান ফ্রি সিটি তৈরি করে। কী বাধ্য হয়ে তখন থেকে সুনামিতে চাকরি করে, আর লাইফ ইটসেল্ফ এর আরেক ডেভেলপার মিলি ফ্রি সিটির মধ্যেই তার অবতার মলোটভ গার্ল হিসেবে সময় কাটায় যাতে সে নিজের কোডের প্রমাণ খুঁজে পায় এবং প্রমাণ করতে পারে যে তারাই কোডের আসল মালিক।
গেমের মধ্যে মিলি অর্থাৎ মলোটভ এবং গায় প্রেমে পড়ে। তাঁরা গেমের একে অপরমে চুমু খায়। এরপর "কীস" র তদন্তে গায়ের আসল পরিচয় ধরা পড়ে। কীস মিলিকে গায়ের আসল পরিচয় জানালে মিলি আবাক হয়ে যায়। গায় আদপে কম প্লেয়ার নয়, আসলে সে হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই, যা কীস মিলির পছন্দ অনুযায়ী বানায় আর লাইফ ইটসেলফ-এ অন্তর্ভুক্ত করে, আর এর ফলেই গায় মিলির প্রতি রোমান্টিক ভাবে জড়িয়ে পড়ে। এতে মিলি প্রচন্ড আশ্চর্য হয় এবং বুঝতে পারে গায় তাঁদেরই বানানো কোড যা এন্টওয়ান চুরি করেছে। এরপর কীস মিলিকে তাদের কোড পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নেয়।
যখন মিলি গায়কে তার আসল পরিচয় সম্পর্কে অবগত করে, যে সে একটা গেমের এ আই মাত্র। গায় এটাকে অস্বীকার করে এবং মিলির সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে বন্ধু বাডির কাছে পরামর্শ নিতে যায়। বাডির সাথে কথা বলার পর, গায় বুঝতে পারে যে মিলির সাথে তার সম্পর্ক প্রেমের চেয়ে বেশ কিছু। গায় মিলির কাছে ফিরে যায় এবং মিলিকে সাহায্য করতে রাজি হয়।
গায় বাডিকে নিয়ে আবার স্ট্যাশে প্রবেশ করে, যেখানে তার মালিক, গায়কে চিনতে পারে, সহজেই প্রমাণ গায়ের হাতে দিয়ে দেয়। গায় মিলিকে প্রমাণ দেখায়, পুরোটা দেখে শেষ করার আগেই এন্টওয়ানের আদেশে, কীস আর মাউসারকে পুরো গেমটি রিবুট করার আদেশ দেয়, কীস অস্বীকার করলে এন্টওয়ান নিজেই গেমটি বুট করে দেয়। এতে গায় মিলির সাথে সমস্ত স্মৃতি ভুলে যায়। আবার শুরু করে নিত্যনৈমিত্তিক জীবন। মলোটভ গায়ের সামসামনি এলেও গায় তাঁকে চিনতে পারে না। তারপর মলোটভ অনেক বোঝানোর পরেও গায়ের স্মৃতি ফিরে না আসায় গায়কে জড়িয়ে চুমু খায় আর এতেই গায়ের সমস্ত স্মৃতি ফিরে আসে। দ্বীপের কথা মনে পড়ে যা লাইফ ইটসেলফের অংশ। এটাই মিলি আর কীসের মূল কোডের একমাত্র প্রমাণ। এন্টওয়ান তখন সরাসরি তাদের "ওয়ান্টেড লেভেল" বাড়িয়ে গেম থেকে গাই এবং মলোটভ গার্লকে সরাসরি বাদ দেওয়ার চেষ্টা করে, কিন্তু তার আগেই গায় এবং মিলি অন্যান্য এন পি সি গুলোকে তাদের প্রোগ্রামিংয়ের কথা জানিয়ে দেয়, তারা এতেই বাইরের পরিচালনায় সাড়া দেয় না।
এন্টওয়ান তখন গায় এবং মলোটভ গার্লকে হত্যা করার জন্য গেম টপোগ্রাফি সরাসরি ম্যানিপুলেট করার চেষ্টা করে। এন্টওয়ান তারপরে ফ্রি সিটি ২ -এর জন্য গায়ের একটি পেশীবহুল, কপি "ডুডকে' গেমটিতে পাঠায়।
অ্যান্টওয়ান তখন সুনামির সার্ভার রুমে ঢুকে ফ্রি সিটির সার্ভার গুলো ধ্বংস করার কথা ভাবে, যাতে তার চুরি প্রকাশ না পায়। একটা কুড়াল দিয়ে গেমের সার্ভারগুলি ধ্বংস করতে শুরু করে, কিন্তু সব সার্ভার ধ্বংস করার আগেই গায় মিলি আর কীস এর লাইফ ইটসেলফ এর দ্বীপে পৌঁছে যায়, যা সারা বিশ্ব জুড়ে মানুষ দেখতে পায়। চুরির ঘটনা প্রকাশের সাথে সাথে, অ্যান্টওয়ান অবশিষ্ট সার্ভারকে ছেড়ে দেয় যখন মিলি অ্যান্টওয়ানকে তাঁর মামলা পরিত্যাগ করার প্রতিশ্রুতি দেয়। গেমের অধিবাসীরা রক্ষা পায়।
মিলি এবং কী'স এর কোড ছাড়াই, ফ্রি সিটি ২ লঞ্চ হয় যা পুরোপুরি ফ্লপ হয়। অ্যান্টওয়ানকে চুরির অপরাধের জন্য গ্রেপ্তার করা হয়। কী, মাউসার এবং মিলি ফ্রি সিটি থেমে উদ্ধার হওয়া কোড দিয়ে একটি সফল নতুন কোম্পানি শুরু করে এবং ফ্রি লাইফ মুক্তি পায়, এতে গায়, বাডি, ডুড এবং অন্যান্য ফ্রি সিটির এনপিসিরা অন্তর্ভুক্তি হয়। মিলি গায়ের মাধ্যমে বুঝতে পারে যে কীসের কোড আসলে তার কাছে একটি প্রেম প্রকাশের মাধ্যম মাত্র। এরপর মিলি কীস একে অপরকে জড়িয়ে ধরে এবং চুমু খায়।
গেমের মধ্যে গায় বাডির সাথে পুনরায় দেখা পায়, তারা তাদের কোডিং অনুসরণ না করে নিজের মতো জীবনযাপন শুরু করে।
ফ্রি গায় একটি প্যারোডি সিনেমা। ফোর্ট নাইট, গ্র্যান্ড থেফট অটোর হাঁসজারু বাচ্চা বলা চলে। তবে প্রতিটা পরতেই রয়েছে ভালো লাগার খোরাক। যথারীতি রায়ান রেনল্ডস অসাধারণ। অ্যান্টওয়ানের চরিত্রে তাইকার অভিনয় দুর্দান্ত। বাকিরাদের বেশ সাবলীল লেগেছে। এ আই এবং গেম মিশিয়ে ১১৫ মিনিটের টানটান মজার সিনেমা। আমার বেশ ভালো লেগেছে।
এইটা আমার বেস্ট ফ্রেন্ড অনেক আগে সাজেস্ট করেছিলো।
তবে কেনো জানিনা ব্যস্ততায় আমার দেখাই হয়না। তবে এখন মনে হচ্ছে দেখা উচিত।
ভালো লিখেছেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দেখে নাও। বেশ ভালো লাগবে। পুরো সিনেমাটায় কমেডি। আমার বেশ লেগেছে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমি এই মুভি দেখিনি আগে কখনো। সময় করে কখনো দেখতে হবে। রিভিউ টা ভালো করেছো। ট্রেইলার টা দেখে বেশ মজা পেয়েছি কিছু কিছু জায়গায়।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দেখে নাও। অনেক গেমের সংমিশ্রণে একটা খিচুড়ি হলেও বেশ মজার।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
রায়ান রেনল্ডস এর অভিনয় আমার কাছে সবসময় ভালো লাগে। মুভিটি দেখা হয়নি। তবে আপনার রিভিউ দেখে দেখার ইচ্ছে জাগলো দাদা।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলছি বেশ মজা লাগবে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit