১৭ বছর পর...

in hive-129948 •  3 days ago 

নমস্কার বন্ধুরা,

এভাবেও ফিরে আসা যায়। হয়তো ২০২৪ টি-টোয়েন্টি ওয়ার্ল্ড কাপ টা ভারতের দুই সেরার হাতের ছোঁয়া চেয়েছিল। যদিও পুরো ম্যাচ জুড়েই চলেছে নানা টানা পোড়েন। এক সময়ে মনেই হয়েছিল এবারের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হবে সাউথ আফ্রিকা। কিন্তু সেখানে পাহাড় সমান বাধা হয়ে দাঁড়ালো জসপ্রীত বুমরা। ভারত বিগত এক বছরের অন্তরালে তিন তিনটি আইসিসি ট্রফির ফাইনালে গিয়েছে তার দুটিতে হেরেছে। সে জন্য ম্যাচ শুরুর প্রথম থেকে একটা ভয় ছিল। সব বাধা অতিক্রম করে শেষমেষ রোহিত শর্মার অধিনায়কত্বে ভারত দ্বিতীয় বারের জন্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ কাপ জিতে গেল। ১৭ বছর পর ফের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্বাদ পেলো ভারত।

20240630_000118.jpg

ছবি: Disney Hotstar

টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা। অধিনায়কের সাথে বিরাট কোহলি শুরুটা দুর্দান্ত ভাবেই শুরু করে। সারা সিরিজ জুড়ে রান না পাওয়া বিরাট কোহলি প্রথম ওভারে ছন্দে ফেরার ঝলক দেখিয়ে যায়। ৮ বলেই কুড়ি রানের গন্ডি পেরিয়ে যায় ভারতের স্কোর বোর্ড। তখনই মহারাজের বলে সারা বিশ্বকাপ জুড়ে বিধ্বংসী ফর্মে থাকা রোহিত আউট হয়ে যায়। পন্ত ব্যাট করতে নেমে মহারাজের চতুর্থ বলে প্যাভিলিয়নে ফিরে যাই। দু উইকেটের ঝটকা সামলানোর আগেই সেমি ফাইনালে দুর্দান্ত খেলা সূর্যকুমার যাদব প্রতিয়াদের তৃতীয় শিকার হয়ে যায়। প্রথম ওভারের দুরন্ত শুরুর পর ভারত চাপে পড়ে যায়। কোহলিকে সঙ্গত দেওয়ার জন্য পঞ্চম উইকেটে নামে অক্ষর প্যাটেল। দুই ব্যাটার তারপর ধীরে ধীরে ভারতের স্কোর বোর্ড রান জুড়তে থাকে। অক্ষর ৩১ বলে ৪৭ রানের দারুন এক ইনিংস খেলে আউট হয়ে যায়। দুবে নেমেই ব্যাট চালাতে থাকে। বিরাট ৪৮ বলে নিজের অর্ধ শতরান পূরণ করে, যেটা মোটেই বিরাট কোহলিচিত ইনিংস ছিলো না। অর্ধ শতের পরে বিরাটের ব্যাট পঞ্চম গিয়ারে চলে যায়, মাত্র ১১ বলে খেলে কোহলি ২৬ টা রান স্কোর বোর্ডে জোরে। ৭৬ রানে বিরাট কোহলি আউট হলে ততক্ষণে ভারত একটা সম্মানযোগ্য স্কোরে। উল্টো দিকে অনরিখ নটজের দারুন বোলিংয়ে সাউথ আফ্রিকা শেষটা দারুন করে।

20240630_000014.jpg

20240629_235953.jpg

ছবি: Disney Hotstar

প্রোটিয়ারা ১৭৭ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভার বেশ সাবধানেই করে। দ্বিতীয় ওভারে বুমরার দারুন বলের ওপেনার রেজা হেন্ড্রিক্সকে প্যাভিলিয়নে ফিরে যাই। কিছুক্ষণ পরে ক্যাপ্টেন আইডেন মারক্রামকে প্যাভিলিয়নে পাঠিয়ে দেয় অর্শদীপ। শুরুতেই 2 উইকেট হারিয়ে ভারত সাউথ আফ্রিকার উপরে চেপে বসে। অন্য দিকে থাকা কুইন্টন ডি-কক এবং সাউথ আফ্রিকার উঠতি প্রতিভা স্টাবস ইনিংসের হাল ধরে দ্রুত রান করতে থাকে। দ্রুত খেলতে গিয়ে স্টাবস অক্ষর প্যাটেলের বলে আউট হয়ে যায়। উল্টোদিকে পিচে নতুন আসা ক্লাসেনকে নিয়ে রানের গতি চালিয়ে যায় কুইন্টন ডি-কক। মনে হচ্ছিল সাউথ আফ্রিকার দিকে ম্যাচটা ঘুরে গেছে তখনই অর্শদীপ সিং ১২ তম ওভারে চমক দিয়ে গেল। কুইন্টন আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলে বিশ্বকাপ জুড়ে দুর্ধর্ষ খেলে আসা ক্লাসেন ব্যাট থেকে আগুন ঝড়াতে থাকে। অক্ষর প্যাটেলের এক ওভারে ২৬ রান নিয়ে খুব তাড়াতাড়ি সাউথ আফ্রিকার স্কোর ১৫০ রানের কাছে পৌঁছে দেয়। দরকার ৩০ বলে ৩০ রান। রোহিত বুমরার হাতে তুলে দেয়, ১৬ তম ওভারে বুমরা রান দিলো মাত্র ৪। ১৭ তম ওভারের পান্ডিয়ার প্রথম বলে ক্লাসেন আউট হয়ে যায়। ক্লাসেনের উইকেট পড়তে ভারত কিছুটা খেলায় ফিরে আসে। ১৮ তম ওভারে ফের বুমরা, ২ রান দিয়ে ১ টা উইকেট তুলে নিয়ে সাউথ আফ্রিকাকে চাপে ফেলে দেয়। তখন শেষ দুই ওভারে রান করতে হবে ২১। ১৯ তম ওভারে অর্শদীপ দুর্দান্ত বলে সাউথ আফ্রিকা মাত্র চার রান করতে পারে। পান্ডিয়ার শেষ ওভারে দরকার ১৬ রান, ব্যাটার ডেভিড মিলার। প্রথম বলেই দারুণ একটা শট, কিছুক্ষণের জন্য নিস্তব্ধতা তারপরেই মাঠ চিৎকারে ফেটে পড়লো, মিলার আউট। সূর্যকুমার যাদব নিশ্চিত ছক্কাকে বাঁচিয়ে ক্যাচে পরিণত করেছে।

20240629_235716.jpg

ছবি: Disney Hotstar

তারপরের পাঁচটা বল স্বপ্নে গাথা...। দ্বিতীয় বারের জন্য টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয় পেলো ভারত।




IMG_20220926_174120.png

Vote bangla.witness

Or

Set @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

সত্যিই সব ভারতীয়র জন্য এক অসাধারণ মুহূর্ত। এত বছর পর আবার বিশ্বকাপ জয়। এই মুহূর্ত মনে রাখবার মত। যেভাবে ভারত অপরাজেয় দল হিসাবে এই ট্রফি জয় করলো তা কখনো ভোলার নয়৷ আর সূর্য কুমারের ক্যাচের কথা আজীবন মনে থাকবে৷ 🇮🇳🇮🇳

অনেক প্রচেষ্টার পর আমরা জিতলাম। বারবার ফাইনালে হার মেনে নেওয়া যাচ্ছিলো না।

দম ফাটানো খেলায় এবার ভারত ১৭ বছর পর টি টুয়েনটি বিশ্বকাপ নিজেদের ঘরে তুলে নিয়েছেন। আর আপনিও বেশ আনন্দ নিয়ে পুরো খেলাটি আমাদের মাঝে দারুন ‍সুন্দর করে রিভিউ করেছেন। বেশ ভালো লাগলো দাদা আপনার পোস্টটি পড়ে।

দারুন খেলা হলো। ফাইনালের মতো ফাইনাল।

একদম ঠিক বলেছেন দাদা আসলেই মনে হচ্ছিলো সাউথ আফ্রিকা চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু শেষের দিকে এসে ভারত একেবারে পরিবর্তন করে ফেলল। মনে হচ্ছিল যে জেতা ম্যাচ সাউথ আফ্রিকা হেরে গেল। অবশ্য খেলায় শেষ পর্যন্ত জয়ী হওয়ার একটা চান্স থেকেই যায় তা ভারত আবারও প্রমাণ করলো। টানটান উত্তেজনায় শেষ হয়েছে সেদিনকার ইনিংসটি। বেশ ভালোই লেগেছিল দেখতে।

বুমরাহ-অর্শদীপ-পান্ডিয়ার জুটি আমাদের জিতিয়ে দিলো।

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



Hi @kingporos,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.

Come and visit Italy Community

সেদিনকার ফাইনাল ম্যাচটি সত্যিই চমৎকার উপভোগ করেছি। সাউথ আফ্রিকার খেলা দেখে মনে হয়েছিল কাপটা তারাই নিয়ে যাবে ।কিন্তু ভারত শেষ মুহূর্তে তাদের জয়টা ছিনিয়ে নিলো। দারুন উপভোগ করেছি খেলাটা ।বেশ ভালো লাগলো আপনার রিভিউ দেখে। ধন্যবাদ আপনাকে দাদা।

উপভোগ করার থেকে বেশি আমি চিন্তায় ভুগেছি। একসময় মনে হলো এবারেও হাতছাড়া

আসলে ফাইনাল ম্যাচ এমন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ না হলে, দেখতে একেবারেই ভালো লাগে না। ক্লাসেন আউট হওয়ার আগ পর্যন্ত সত্যিই ভেবেছিলাম সাউথ আফ্রিকা ম্যাচ জিতবে। কারণ ৩০ বলে ৩০ রান দরকার ছিলো এবং হাতে ছিলো ৬ উইকেট। এমন সহজ সমীকরণ দেখে সবাই ভেবেছিল ইন্ডিয়া হেরে যাবে। তবে এই ম্যাচে ভারতের কামব্যাক দেখে সত্যিই অবাক হয়েছি। বুমরাহ এবং হার্দিক এককথায় দুর্দান্ত বোলিং করেছে শেষের দিকে। যাইহোক এতো চমৎকার ভাবে এই ম্যাচের রিভিউ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

একেই বুঝি বলে ইতিহাসের পূণরাবৃওি। ২০০৭ সালে শেষ ওভারে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তান কে হারিয়ে প্রথম শিরোপা জেতে ভারত। আজ ১৭ বছর পর আবার সেই শেষ ওভারেই ম‍্যাচ জিতে শিরোপা নিজেদের করে নেয়। এখানে আমি কৃতিত্ত্ব দেব বুমরাহ কে। তার চারটা ওভারই ছিল ম‍্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। এবং কোহলির ব‍্যাটিং নৈপুণ্য তো আছেই।