চলচিত্র রিভিউ : আনচার্টেড

in hive-129948 •  2 years ago  (edited)

নমস্কার বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি ঈশ্বরের কৃপায় সকলে ভালো আছেন। আপনাদের আশীর্বাদ ও ভালোবাসায় আমি ভালো আছি। আজ ১৮-ই ফেব্রুয়ারি ২০২২ সালের রিলিজ হওয়া আনচার্টেড সিনেমাটির রিভিউ নিয়ে হাজির হলাম। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।


প্রাপ্তি : YouTube


চলচিত্র
আনচার্টেড
পরিচালক
রুবেন ফ্লাইসচার
অভিনয়
টম হল্যান্ড, মার্ক ওয়ালবার্গ, সোফিয়া আলি, তাতি গ্যাব্রিয়েল, আন্তোনিও ব্যান্দেরাস
চিত্রনাট্য
রাফে লি জুডকিন্স, আর্ট মার্কাম, ম্যাট হলওয়ে
মুক্তি
১৮-ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২
দেশ
আমেরিকা
ভাষা
ইংরেজি
সময়
১১৬ মিনিট

পটভূমি

সিনেমার শুরু হয় মালবাহী উড়োজাহাজের বাইরে ঝুলতে থাকা একজনকে দিয়ে, যে চেষ্টা করছে কোনো মতে প্লেনের ভেতরে প্রবেশ করতে। কিন্তু কিছু লোক তাকে বারবার বাধা দিচ্ছে। আর তাদের সাথে লড়াই করতে গিয়েই হঠাৎ হাত ফসকে সেই ব্যক্তি নীচে পড়তে শুরু করে, ঠিক সেই সময়ে একটা হাত তাকে ধরে ফেলে। সিন কাট।

1.png

বাবা মায়ের মৃত্যুর পর নাথান তার দাদা স্যামের সাথে বস্টনের একটি অনাথ আশ্রমে থাকে। রাতের অন্ধকারে জানালা দিয়ে স্যামকে পালাতে দেখে নাথান তাকে বাঁধা দিতে আসে। তখন স্যাম বলে যে বস্টন মিউজিয়াম থেকে ম্যাগেলান খনির মানচিত্র চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ার পর তাকে হয়তো অনাথ আশ্রম থেকে বের করে দেওয়া হবে। তাই আগেই স্যাম নিজেই সেখান থেকে পালিয়ে যেতে চায়। অনাথ আশ্রম থেকে চলে যাওয়ার আগে স্যাম নাথানকে জড়িয়ে ধরে প্রতিশ্রুতি দেয় যে ভাইয়ের জন্য সে আবার ফিরে আসবে। যাওয়ার আগে স্যাম ন্যাথানকে তাদের পূর্বপুরুষ স্যার ফ্রান্সিস ড্রেকের একটি আংটি দিয়ে চলে যায়।

পনেরো বছর পর, নাথান এখন বারটেন্ডার হিসেবে কাজ করছে। যেখানে সে এক মহিলাকে ড্রিংকস সার্ভ করার সময় তার ব্রেসলেটটা চুরি করে নেয়। আর নাথানের কীর্তি দূর থেকে লক্ষ্য করে সালি নামে একজন, যে পরে নাথানকে পরিচয় দেয় স্যামের বন্ধু হিসেবে। সালি বলে সে স্যামের সাথে সে ম্যাজেলান খনির সন্ধানের গ্রুপে ছিলো, যারা ম্যাজেলান খনির ধন খোঁজা নিয়ে কাজ করছিল। কিন্তু স্যাম তাকে হুয়ান সেবাস্তিয়ান এলকানোর ডায়েরি চুরি করতে সাহায্য করার পরেই অদৃশ্য হয়ে যায়। আর এখন সালি তাকে খুঁজতে চায়। প্রাথমিক ভাবে ন্যাথান অসম্মত হয়।

সেই রাতে নাথান সালির বাড়িতে চুরি করতে ঢুকে ম্যাজেলান খনির কিছু তথ্য পায় যা দেখার পর নাথান তার দাদা স্যামকে খুঁজতে সালিকে সাহায্য করতে রাজি হয়ে যায়। ম্যাজেলান খনির রহস্য উদ্ধারে নেমে তারা প্রথমে ক্রস আকারের একটি সোনার চাবি চুরি করতে একটি নিলামে যায়। সেখানে, তারা মুখোমুখি হয় সান্তিয়াগো মনকাদার সাথে, যার বংশ অনেক বছর ধরে ম্যাজেলান খনির ধনের পেছনে আছে। নিলামে অনেক কসরত করে নাথানরা চাবি চুরি করতে সক্ষম হয়।

2.png

চাবি চুরি করার পরে ন্যথান সালির সাথে বার্সেলোনা যায়, যেখানে তাদের যোগাযোগ ক্লোইর সাথে, যার কাছে গুপ্তধনের দ্বিতীয় চাবি রয়েছে। প্রথম সাক্ষাৎকারের সময় ক্লোই ন্যাথানের কাছ থেকে তাদের চাবিটা চুরি করে নেয়। উপায় না পেয়ে নাথান ও সালি ক্লোইর সাথে কাজ করতে রাজি হয়। নাথান, ক্লোই, এবং সালি এলকানোর ডায়েরির সূত্র অনুসরণ করে সান্তা মারিয়া দেল পাইক গির্জায় পৌঁছায়, সেখানে তারা একটি গোপন ক্রিপ্ট খুঁজে পায়। নাথান ও ক্লোই সালিকে বাইরে রেখে সেই ক্রিপ্টে প্রবেশ করে। ক্রিপ্টে ঢুকে তারা আরো একটি মানচিত্র খুঁজে পায় যেখানে ম্যাজেলানের গুপ্তধনের পথ নির্দেশনা থাকে। গুপ্তধনের খোঁজ পাওয়া মাত্র ক্লোই বিশ্বাসঘাতকতা করে আর মানচিত্রটি চুরি করে পালিয়ে যায়। সালি নাথানকে ক্রিপ্ট থেকে উদ্ধার করে।

সালি নাথানকে বলে স্যাম এলকানোর ডায়েরি উদ্ধার করার পরে, ব্র্যাডক তাদের অতর্কিত হামলা করে ও স্যামকে গুলি করে মেরে ফেলা হয় যার সাথে ক্লোই কাজ করছে। তারপর তারা দুজনে একটা এয়ারপোর্টে এসে, দূর থেকে দেখে মনকাডা, ক্লোই ও ব্র্যাডকের দলবল গুপ্তধনের সন্ধানের জন্য একটি মালবাহী বিমানে রওনা হচ্ছে। তারাও লুকিয়ে সেই বিমানে উঠে পড়ে। বিমানে ব্র্যাডক মনকাডাকে হত্যা করে দিয়ে বিমানের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়।

বিমান চলাকালীন স্যালি ও ন্যথানের সামনে ব্র্যাডকের দলের মুখোমুখি হয়। তখন ব্র্যাডকের দলের তাদের লড়াই শুরু হয়। লড়াইয়ের মাঝে ন্যথান বিমানের দরজা খুলে দেয় ফলস্বরূপ বিমানে থাকা সব মালপত্র বিমান থেকে বেরিয়ে উড়তে শুরু করে। সেই সময়ে ন্যথান ছিটকে বিমানের বাইরে চলে আসে। সেখানে ন্যথান বিমানের মালের উপরেই লড়াই করতে করতে হাত ফসকে পড়তে থাকে। ঠিক তখনই গুপ্তধনের মানচিত্র সহ ক্লোই ন্যথানের হাত ধরে ফেলে। তারপর তারা সোজা নীচে সমুদ্রে এসে পড়ে। যেখানে একটা দ্বীপে তারা ওঠে।

দ্বীপে তারা একটি হোটেলে উঠে মানচিত্রে গুপ্তধনের অবস্থান চিহ্নিত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। ন্যাথান তখন স্যামের দেওয়া পোস্টকার্ড গুলো দেখে বাকি ক্লু গুলো বুঝে গুপ্তধনের আসল ঠিকানা আবিষ্কার করে ফেলে, যার কর্ডিনেট খাতায় লিখে ঘুমিয়ে পড়ে। সকালে ক্লোই খাতার কর্ডিনেট চুরি করে ন্যাথানকে ছেড়ে পালিয়ে যায়। সকালে ন্যাথান উঠলে বোঝা যায়, সে একটা ভুল কর্ডিনেট লিখে রেখেছিল।

আসল ক্লু ধরে ন্যাথন ম্যাগেলান জাহাজের গুপ্তধন আবিষ্কার করে ফেলে যদিও সে দেখে স্যালি সেখানে আগে আবিষ্কার করে ফেলেছে। অন্যদিকে ব্র্যাডকের দল তাদের অনুসরণ করে জাহাজগুলোকে খুঁজে পায়, তারা ন্যাথন স্যালির অবস্থান না জেনেই জাহাজ গুলো এয়ারলিফট করে বের করে নিয়ে যায়।

জাহাজ গুলো এয়ারলিফট করে পালানোর সময়, স্যালি আর ন্যাথান একটি হেলিকপ্টারকে দখল করে নেয়। ব্র্যাডক স্যালিকে দেখতে পেয়ে আরেকটি তাদের হেলিকপ্টার দিয়ে স্যালির হেলিকপ্টারকে ঠুকে দিতে বলে। অপরদিকে ন্যাথান তাদের জাহাজের কামান ব্যবহার করে অন্য হেলিকপ্টারকে লক্ষ্য করে কামান দাগতে থাকে।

3.png

কন্ট্রোল হারিয়ে ব্র্যাডকদের হেলিকপ্টার ক্রাশ করে যায়, কিন্তু ব্র্যাডক তার আগেই ন্যাথানদের হেলিকপ্টারে উঠে ন্যাথানকে কোণঠাসা করে ফেলে, তখন স্যালি তার সোনার ব্যাগটি নিক্ষেপ করে, ব্র্যাডককে সমুদ্রে ফেলে দেয়। তারপর কন্ট্রোল হারিয়ে স্যালিদের জাহাজ সমুদ্রে পড়ে ডুবে যায়। তারপর ন্যাথান এবং স্যালি তাদের হেলিকপ্টার নিয়ে উড়ে চলে যায়।

4.png

স্কিন শট নেওয়া হয়েছে : Netflix


আমার অভিমত

আনচার্টেড সিনেমাটি একই নামের একটি কম্পিউটার গেমের গল্প থেকে বানানো হয়েছে। যদিও কম্পিউটার গেমটি আমি খেলেনি কিংবা গেমটির আসল গল্প কি তাও আমি জানি না তবে নিশ্চিন্তে বলতে পারি যে আসল গল্পের সাথে অনেক খোশগল্প জুড়ে সিনেমাটি বানানো। অ্যাডভেঞ্চার আমার খুবই পছন্দের জায়গা আর সাথে যদি অ্যাকশন থাকে তাহলে তো কোনো কথাই নেই তবুও সিনেমটার পরিচালনা আমার পছন্দ হয়নি।

সাধারণ ফিজিক্সের ধার ধারেননি পরিচালক। বেশিটাই আজগুবি। বিমানের বাইরে উড়ে হাওয়ার মধ্যে স্থির থেকে লড়াই কিভাবে সম্ভব সেটা একমাত্র ঈশ্বর জানায়।

যারা মনোরঞ্জনের জন্য দেখতে চান তারা অবশ্যই দেখুন। আর বাকিদের বলবো সময় নষ্ট না করতে চাইলে আনচার্টেড সিনেমাটিকে "আ ন চা র্টে ড" রাখুন।


রেটিং

পরিচালনা
কাহিনী৭.৫
অভিনয়


Support @heroism Delegating your SP

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

|| JOIN DISCORD ||

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

দাদা অসাধারণ সুন্দর একটি মুভি রিভিউ করেছেন আপনি। মুভি রিভিউটি পড়ে খুবই ভালো লেগেছে আমার। ন্যাথান এর সর্বক্ষেত্রে চরিত্রটি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। পাশাপাশি স্যালি'র চরিত্রটিও অসাধারণ ছিল। অনেক সুন্দর একটি মুভি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

সিনেমাটা খুব একটা ভালো না। কেমন যেন আজগুবি।

চমৎকারভাবে সিনেমাটি গল্প উপস্থাপন করেছেন দাদা। আজগুবি গল্প আমার একেবারে অপছন্দ। সিনেমায় বাস্তবতা নিরিখে যদি কোন গল্প হয় আমি সেটা অত্যন্ত পছন্দ করি। যাইহোক আপনার রিভিউ করা গল্প থেকে অনেকেই সিনেমাটির সারমর্ম যথার্থ বুঝে গেছেন। সাথে আমি নিজেও নিজেও। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

ফিজিক্সের কোনো ধার ধারেনি। উড়ে বেড়াচ্ছে চারিদিকে। তাহলে কেমন লাগে।