হরিপুর সমুদ্র সৈকতের নির্জনতা

নমস্কার বন্ধুরা,

বর্তমান সময়ে যারা অল্পবিস্তর ঘুরতে পছন্দ করেন তারা একটি কথার সাথে অত্যন্ত সুপরিচিত, সেটি হচ্ছে অফ বিট ডেস্টিনেশন। যদি সহজ ভাবে বলতে যাই তাহলে, যে সমস্ত জায়গা বেশি পর্যটকরা এখনো পর্যন্ত খোঁজখবর পাননি তাদেরকেই বলে অফ বিট ডেস্টিনেশন। আর যেহেতু সেই জায়গাগুলোর খোঁজ মানুষের কাছে কম রয়েছে সেজন্য সেসব জায়গা তুলনামূলক ভাবে অন্যান্য দর্শনীয় জায়গার থেকে বেশ ফাঁকাই থাকে। সেই রকম অফ বিট ডেস্টিনেশবের খোঁজে গিয়েছিলাম পূর্ব মেদিনীপুর জেলায়। প্রথমে লাল কাঁকড়া বিচ থেকে হরিপুর সমুদ্র সৈকতে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় অবস্থিত এই সমুদ্র সৈকতটি লাল কাঁকড়া বিচের থেকে মাত্র ১০ কিমি দূরেই রয়েছে এই পর্যটক হীন সৈকতটি।

লাল কাঁকড়া সৈকত থেকে শৌলা ব্রিজ ধরে চলে গেলাম হরিপুর সমুদ্র সৈকতের দিকে। পথে যেতে যেতে দেখলাম বহু রিসর্ট ও হোটেল ভাঙা অবস্থায় পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে আছে। কথায় কথায় জানতে পারলাম এই হোটেল এবং রিসর্ট গুলো আমপানে গুঁড়িয়ে দিয়ে গেছে। আমপানের তান্ডবের পর থেকে এই জায়গাটিতে তেমনভাবে রিসর্ট গজিয়ে ওঠেনি। আর সেজন্যই জায়গাটি ছিলো অত্যন্ত নিরিবিলি ও সুন্দর। যেহেতু আমাদের দেশের পর্যটকেরা কোনো এক জায়গার নাম হলেই সেখানে সবাই একঝাকে চলে যান সেই পরিস্থিতি থেকে হরিপুর সৈকত এখনো সুরক্ষিত। আমরা যখন পৌঁছেছিলাম তখন মাত্র একটি দম্পতি তাদের কোলে সন্তান নিয়ে বিচে ঘোরাফেরা করছে।

মানুষের কোলাহল থেকে দূরে সমুদ্রের আওয়াজে যেন এক অদ্ভুত প্রশান্তি পাচ্ছিলাম। একলা ভাবে একটু দূরে দাঁড়িয়ে সমুদ্রের গভীরতা মাপতে বেশ ভালো লাগছিল। সৈকতের ভেজা বালিতে ঘোরাফেরা করতে করতে হঠাৎ ক্ষীণ গলার আওয়াজ পেয়ে এগিয়ে গেলাম। দেখি সমুদ্র সৈকতে ক্রিকেট খেলা চলছে। হাতে সময় বেশি না থাকার কারণে খেলাটা দাঁড়িয়ে দেখতে পারিনি। তবে সমুদ্র সৈকতে ক্রিকেট খেলা সম্ভব সেটা জেনেও অভিভূত হয়েছিলাম। এতদিন সৈকতে ফুটবল কিংবা ভলিবল খেলা দেখেছি কিন্তু ক্রিকেট। সে যেন অন্য ধরনের অনুভূতি।

সমুদ্র সৈকতের ক্রিকেট বেশি উপভোগ না করেই বেরিয়ে পড়লাম। আর যারা মন্দারমনি ঘুরতে আসবেন তাদের বলবো হরিপুর সমুদ্র সৈকতে অবশ্যই একবার আসুন। সাথে স্কুটার বা মোটরবাইক থাকলে বেশি ভালো হবে কারণ এখানে একবার আসলে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছেটাই করবে না।

---

---

||আমার বাংলা ব্লগ & ডিসকর্ড||

---

Vote bangla.witness

Or

Set @rme as your proxy