গন্তব্য বিষ্ণুপুর

in hive-129948 •  5 months ago 

নমস্কার বন্ধুরা,

জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে কোথাও ঘুরতে যাওয়ার জন্য মনটা কদিন উসখুস করছিলো। মনে ইচ্ছেরা বাসা বেঁধেছিল বটে তবে হাতে সময় নেই, বড়জোড় একদিনের ট্রিপ করা সম্ভব ছিলো। সকালে গিয়ে রাতেই ফিরে আসতে হবে এমন আরকি। সেই মতো অনুসন্ধান করে ঠিক করলাম মন্দিরের শহর বিষ্ণুপুর যাবো। বিষ্ণুপুরকে মন্দিরের শহর আখ্যায়িত করার কারণ হলো ১৫০০ থেকে ১৬০০ সালে বিষ্ণুপুরে যখন মল্ল রাজাদের রাজত্বকাল ছিলো তারা তখন অনেক গুলো টেরাকোটার মন্দিরের স্থাপন করেন। মল্ল রাজাদের পৃষ্ঠপোষকতায় এই অঞ্চল টাতে পোড়ামাটির মন্দিরের নিদর্শন স্থান রূপে গড়ে ওঠে।, যা বর্তমান সমযয়েও অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন। সেই অনুযায়ী বিষ্ণুপুর যাওয়ার ট্রেন ঘাটাঘাটি করলাম এবং পেয়েও গেলাম। ট্রেনটি রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস। সকাল বেলায় সাঁতরাগাছি স্টেশন ছেড়ে সাড়ে নটা নাগাদ বিষ্ণুপুর পৌঁছে দেবে। আবার ফিরতি পথে বিকেল ছটার কিছু আগে বিষ্ণুপুর ছেড়ে রাত নটা নাগাদ সেটি কলকাতা ফেরত চলে আসবে।

PXL_20240128_095706660_copy_1209x907.jpg

রেলের সময় দেখা মাত্র টিকিট কেটে নিলাম। যাওয়া আসা একসাথে, তবে যাওয়ার টিকিটটা কনফার্ম হয়ে গেলেও ফেরার টিকিটটা কনফার্ম হলো না। এদিকে সকাল সকাল সাতরাগাছি পৌঁছানোটাও একটা ঝক্কির ব্যাপার। যেহেতু সাঁতরাগাছি থেকে ট্রেন সেই জন্য আমি যাওয়ার শনিবার রাতেই রামরাজাতলায় এক বন্ধুর ঠিকানায় পৌঁছে গেলাম। রামরাজাতলা থেকে সাতরাগাছি স্টেশন কিলোমিটার দুয়েক তাই ট্রেন মিস হওয়ার চান্স কম। বন্ধুর ঠিকানায় পৌঁছেছি, সে যখন শুনলো বিষ্ণুপুর যাচ্ছি সেও সঙ্গ ধরে নিলো। তারও একটা ঠিকিট নিশ্চিত করে ফেললাম। যদিও সেখানে বিশেষ ঘুম হলো না। এক প্রকার বিনিদ্র রাত কাটিয়ে দিলাম। জানিনা খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে কোথাও যাওয়ার থাকলে সেই চিন্তায় আগের রাতে কেন যেন আমার ঘুম আসে না। ভোর পর্যন্ত তাই জেগেই কাটালাম। সাড়ে পাঁচটার এলার্ম বাজতে ফ্রেস হয়ে দুজনে নাগাদ বেরিয়ে পড়লাম। হালকা কুয়াশা আর শীত তখনও আছে।

PXL_20240128_062011483_copy_1209x907.jpg

PXL_20240128_063100683_copy_1209x907.jpg

জেলার দিকে শীত থাকবে সে কথা মাথায় রেখে জ্যাকেট সাথে নিয়ে এসেছিলাম। তাছাড়া ট্রেনে ঠান্ডা লাগবে এটাই স্বাভাবিক। সাড়ে ছটার ট্রেন স্টেশনে পৌঁছল ছটা পঞ্চাশ মিনিটে। ট্রেন আর দেরীক করেনি। মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই চলতে শুরু করলো। রাতে ঘুম হয়নি তাই ট্রেনে কিছুদূর পাড়ি দিতেই কখন যে ঘুমের কোলের ঢুলে পড়েছি বুঝতেই পারিনি। নটার দিকে হালকা গরম লাগলে ঘুম ভাঙ্গলো। ট্রেন দেখি বিষ্ণুপুরের কাছাকাছি গড়বেতা পৌঁছে গিয়েছে। প্রাথমিকভাবে যে লেট শুরুটা করেছিল সেটা ভালই টেনে দিয়েছে। কিন্তু যেই ভাবা সেই ট্রেনের গতিতে পরিবর্তন শুরু হলো।

PXL_20240128_095411006_copy_1209x907.jpg

সর্ব সাকুল্যে পনেরো মিনিট দেরী করে সকালে নটা পঁয়তাল্লিশ মিনিটে বিষ্ণুপুর স্টেশনে থামলো। পুরুলিয়া গামী ট্রেন সেখানেই অনেকটা ফাঁকা হয়ে গেলো। স্টেশন নেমে হালকা রোদে দাঁড়িয়ে আড়মোড়া ভেঙে নিলাম। সারাদিন বহু ঘুরতে হবে।

PXL_20240128_095208485_copy_1209x907.jpg




IMG_20220926_174120.png

Vote bangla.witness

Or

Set @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



Hi @kingporos,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.

Come and visit Italy Community

মন্দিরের শহর বিষ্ণুপুর যাওয়া নিয়ে সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন ভাইয়া। মাঝে মধ্য এরকম শর্ট ট্রাভেল খুবেই ভালো লাগে আমার। আপনার ট্রাভেল রাইটিং খুব সুন্দর। খুটিনাটি সব প্রাঞ্জল ভাবে উপস্থাপন করতে পারেন। খুব ভালো লেগেছে গন্তব্য বিষ্ণুপুর। সেই সাথে ছবি গুলোও অনেক সুন্দর হয়েছে। আশাকরি, গন্তব্য বিষ্ণুপুর নিয়ে আরো কিস্তি সামনে পাবো। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

দাদা আপনার মতো আমারও একই অবস্থা, পরের দিন সকালে কোথাও বের হওয়ার কথা থাকলে রাতে ঘুম আসে না। তাছাড়া অন্য কারো বাসায় তো একেবারেই ঘুম হয় না। যাইহোক একজন সঙ্গী পেয়ে বেশ ভালোই হয়েছিল দাদা। দুই বন্ধু মিলে বিষ্ণুপুর গিয়ে মনে হচ্ছে বেশ ভালোই ঘুরাঘুরি করেছেন। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

মন্দিরের শহর বিষ্ণুপুরের কথা অনেক শুনেছি, তবে কখনো যাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি । যাইহোক, তুমি যেহেতু ঘুরতে গেছিলে তার মানে সুন্দর সুন্দর মন্দির দেখতে পারবো দাদা তোমার পোষ্টের মাধ্যমে। আসলে দূরপাল্লার ট্রেন জার্নি করার সময় কিংবা দূরে কোথাও যাওয়ার সময় আমার সাথেও এরকম হয়, যে আগের রাতে ঘুম হয় না। যদিও পরে আবার ট্রেনে উঠে বড় একটা ঘুম দিয়ে দেই। হা হা হা...