রহস্যময় গল্প ✍️ মহব্বত মামার চা।

in hive-129948 •  6 months ago 

১৮জৈষ্ঠ্য , ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আসসালামু আলাইকুম,আমি মোঃআলী, আমার ইউজার নাম @litonali।আমি বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে আমার আজকের পোস্ট শুরু করছি।



শুভ রাত্রি ❤️ আজ আবার চলে আসলাম আপনাদের মাঝে রহস্যময় গল্পের দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে। মহব্বত মামার চা কিন্তু খুব সুস্বাদু ছিল। আশপাশ এলাকায় নাম ছড়িয়ে পড়েছিল এমন কেউ নেই যে তার চায়ের সুনাম করেনি। এখনো কিন্তু মুরুব্বিদের মুখে মুখে এই গল্প শোনা যায়। সেই স্বাদের চা নাকি এখন আর কেউ বানাইতে পারে না। যাহোক গল্পটা কিন্তু সম্পূর্ণ রহস্য ঘেরা। দ্বিতীয় পর্ব শুরু করি তার আগে বলে রাখি প্রকৃতির এক বিরূপ প্রভাব কিন্তু আমাদের উপর অর্পিত হচ্ছে। এখন হওয়ার কথা ছিল বৃষ্টি অথচ হয়ে গেল ঘূর্ণিঝড় হালকা বৃষ্টি আবার সেই প্রচন্ড গরমের সম্মুখীন হয়ে গিয়েছে আমরা। এমন অবস্থায় অনেক জায়গাতেই দেখছি অনেক মানুষ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ছে। অনেক জায়গাতেই দেখছি অনেক মানুষ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ছে। সবাই সাবধানে থাকবেন নিজের শরীরের যত্ন নিবেন আবহাওয়ার প্রিয় প্রভাব থেকে যতটা সম্ভব মুক্ত থাকার চেষ্টা করবেন। ইতিমধ্যে চায়ের দোকানের নাম গাম ছড়িয়ে পড়েছে চারিদিকে। সবাই আসে বসে এবং চা খেয়ে সুনাম করে। চায়ের দোকানদার এক পর্যায়ে ভালো বিশ্বস্ততা অর্জন করে ফেলেছে পুরো এলাকার মানুষের কাছে। এখান থেকেই গল্পের আসল রহস্য শুরু। কোন বয়স্ক মুরব্বি বা এমন মানুষ এসে যদি চায়ের দোকানে বসত যার সাথে মন খুলে দুটো কথা বলা যায়। তখনই তিনি 1998 সালে খুন হওয়া ওই পরিবারের 9 জনের বিষয়টা তুলে ধরতেন। এবং ওই বিষয়ে বিভিন্ন কথা শোনার চেষ্টা করতেন। যদিও এমন অবস্থায় ভয় কেউ মুখ খুলতো না তবে দু একজন দু একটা কথা মুখ ফুকসে বলে ফেলত সেটাই সবাই মন দিয়ে শুনত। তবে তাকে কেউ সন্দেহ করত না। আসলে সিআইডি বলুন আর ডিবি পুলিশ বলুন এদের কাছে যখন একটি তদন্ত বা মামলা আসে তখন কিন্তু এরা একদম প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত খুব ভালোভাবে বিশ্লেষণ করে। যদিও বর্তমান সময়টা কিন্তু অন্যরকম। ঘুষের পাল্লা যেদিকে ভারী হচ্ছে মামলার রায়টা সেই দিকে যাচ্ছে। আবার অনেক ভালো পুলিশ অফিসার রয়েছে যাদের কারণে ন্যায় বিচার এখনো সমাজে টিকে রয়েছে।

আপনারা জানেন বেশ কিছুদিন আগের কথা সিরাজগঞ্জ জেলার একটি জায়গায় প্রায় ১৫ বছর আগের একটি হত্যা মামলার উন্মোচন হয়েছে এবং রহস্য মানুষ জানতে পেরেছে। একজন পুলিশ অফিসার কতটা সৎ এবং কঠোর পরিশ্রম হলে দীর্ঘ তিন বছর ধরে একই অঞ্চলে থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত থেকে মামলার তথ্য উদঘাটন করেছে। খবরের মাধ্যমে জানতে পারলাম সে ঘোড়ার গাড়ি চালানো। বাদাম বিক্রি করা এবং নৌকায় মানুষ পারাপারের মতো কাজ করেছে। আসলে এমন সৎ পুলিশ অফিসার আমাদের খুব দরকার। এই পুলিশ অফিসার কিন্তু আমাদের কুষ্টিয়ার গর্ব। যাইহোক আস্তে আস্তে দোকানও বড় হতে থাকলো মানুষের সাথে মিল মহব্বত ভালো হলো। এবং এই বিষয়ে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে বিভিন্ন কথা সে শুনতে থাকলো বিভিন্নভাবে। এরকমভাবে প্রায় একটি বছর কেটে গেল চায়ের দোকানদারের। পুরো এলাকায় সে পরিচিত লাভ করল মহব্বত মামার চা বলে।


এই মহব্বত মামা যে একজন পুলিশ কর্মকর্তা এই কথা কেউ জানতো না। এবং সে জেলা পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করা অবস্থাতে এখানে বদলি হয়ে এসে এই মামলার তদন্ত শুরু করে। কতটা পরিশ্রমী এবং বুদ্ধিমান হলে এরকম ভাবে কাজ করা যায় একটু ভাবুন। সে পুরো কেসটা জেনে বুঝেই নিজের দায়িত্ব নিয়ে আসল সত্যটা প্রকাশ করার জন্য এখানে এসেছে। যাইহোক আস্তে আস্তে সে মানুষের মধ্যে মিশতে থাকলো বিশ্বস্ততা অর্জন করতে থাকলো এবং এই কেস নিয়ে অনেক দূর এগিয়ে গেল। একটি পর্যায়ে তার কাছে অনেক কিছুই পরিষ্কার হয়ে গেল যে আসলে এই খুনগুলা কারা করেছে। যদিও কেউ সরাসরি মুখ খুলে নেই তারপরেও তার আর বোঝার বাকি নেই। হঠাৎ একদিন রাতে পুরো এলাকা পুলিশের ঘিরে ফেলল। সে অবস্থাতেও কিন্তু তিনি চায়ের দোকান চালাচ্ছেন। এবং এমন অবস্থায় জিজ্ঞাসা করল একজনের কাছে যে এত পুলিশ এই এলাকায় কেন এসেছে। তখন সবাই বলল যে অমুক দিনে অমুক পরিবারের ৯ জনকে হত্যা করা হয়েছিল সেই হত্যা মামলার নাকি আবার কাজ শুরু হয়েছে। ওই এলাকারই প্রভাবশালী ব্যক্তিরা যে এই কাদের সাথে জড়িত এই কথা কেউই মুখ খুলে বলতে পারতো না। পুরো এলাকায় পুলিশ ঘিরে ফেলানোর পরে তিনিও তাদের মধ্যে চলে গেলেন। এবং যাদের নিয়ে সন্দেহ ছিল তাদের বাড়িতে গিয়ে তাদেরকে এরেস্ট করার অনুমতি দিলেন।

চা ওয়ালা মামার এমন আচরণ দেখে সবাই তো হতবাক। অথচ দুইটা বছর ধরে এই এলাকায় রয়েছে কেউ জানতেই পারে নাই যে তিনি একজন বড় পুলিশ অফিসার। তাদের পরিবারের খুঁটিনাটি জানার পরে তারা কে কোথায় থাকে কবে সবাই বাড়িতে থাকে এসব তথ্য নিয়েই কিন্তু তিনি পুরো এলাকায় এবং সেই বাড়িটি ঘেরাও করেছিলেন। ওই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ওই পরিবার এবং আশপাশের লোকসহ একই দিনে 16 জনকে অ্যারেস্ট করা হয়। এবং এরই মধ্যে দিয়ে সবাই জানতে পারে যে মহব্বত মামা একজন পুলিশ অফিসার। এবং সে এই হত্যা মামলার সত্য উদঘাটন করার জন্য এখানে এসেছিল। অথচ যে পরিবারের লোক খুন হয়েছে তারা নিজেরাও জানতো না যে এই লোকটাই গুপ্তচর হিসেবে এখানে আছে এবং এই হত্যা মামলার নিষ্পত্তিকা কাজ করবেন। এমন অবস্থায় তাদের করা হলো থানায় নেওয়া হলো এবং কোর্টে মামলা উঠলো। বিভিন্ন তথ্য এবং আসামিদের জবানবন্দীর মাধ্যমে প্রায় 15 বছর পরে হত্যা মামলার বিচার হলো। যাদের পরিবারের সবাই খুন হয়েছিল তারাও স্বস্তির নিঃশ্বাস পেল। এবং এলাকার সবাই আসল খুনি সম্পর্কে জানতে পারল। এবং এরই মধ্যে দিয়ে মহব্বত মামার চায়ের দোকানে এখানে শেষ হলো। আসলে পুলিশ যদি মনে করে যে বাংলাদেশ থেকে ৪৮ ঘন্টা বা 24 ঘন্টার মধ্যে সব ধরনের অপরাধ দমন করবে এটা কিন্তু সম্ভব। কারণ তারা আইনের লোক তারা যেটা বলবে সেটাই হবে। কিন্তু ঘুষ এমন একটা জিনিস যেটার লোকে পড়ে অনেক মানুষই বিপদে চলে যায় এবং যারা অন্যায় অত্যাচার করে তাদের সহায়তায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে। যাইহোক খুনিরা শাস্তি পেল এবং অত্যাচারিত ব্যক্তিরা তাদের ন্যায় বিচারটা বুঝে পেল। এবং এরই মধ্যে দিয়ে মোহাম্মদ মামা এই অঞ্চল ত্যাগ করলো এবং অন্য অঞ্চলে গিয়ে এমন আবারও অনেক দায়িত্ব পালন করতে থাকলো। শেষ হলো হত্যাকাণ্ডের রহস্যময় গল্প।


ডিভাইসঃ Redmi Note 5



break .png

Banner.png

|| [আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে]

standard_Discord_Zip.gif

>>>>>|| এখানে ক্লিক করেন ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Witness Banner 2.png


সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

ধন্যবাদ

Posted using SteemPro Mobile

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

image.png

আসলেই গল্পটা রহস্যময় ছিল। এরকম গল্প অনেক শুনেছি পুলিশের গোয়েন্দাগিরি ি কখনো চা বিক্রি কখনও পাগল আবার কখনো রাস্তায় রাস্তায় ঝাল মুড়ি বিক্রি। এভাবে তারা অনেক অপরাধীকে ধরেছে । যেটা একটা কৌশল একটি গ্রামের মানুষ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। এর সাথে জড়িত হতে পারে আসলেই গল্পটির রহস্যময়।

ধন্যবাদ আপনাকে গল্পটা পরে সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য।

গল্পের শেষের পর্যায়ে এসে আসল মজা পেলাম যখন জানতে পেলাম মহব্বত মামা আসলে একজন পুলিশ অফিসার। আসলে বাংলাদেশের সিস্টেমটা অন্যরকম সবাই শুধু কালো টাকার পিছে ছুটে এজন্য সাধারণ জনগণ সঠিক বিচার পায় না।

গল্পটা পরে সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।