জেনারেল রাইটিং ✍️ "নেশা"

in hive-129948 •  6 months ago 

১৩জৈষ্ঠ্য , ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আসসালামু আলাইকুম,আমি মোঃআলী, আমার ইউজার নাম @litonali।আমি বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে আমার আজকের পোস্ট শুরু করছি।



শুভ রাত্রি ❤️ আপনাদের মাঝে আজ আবারো হাজির হয়ে গেলাম নতুন একটি জেনারেল রাইটিং পোস্ট নিয়ে। আমার আজকের পোষ্টের আলোচ্য বিষয় "নেশা"। আজকের আলোচনায় থাকছে নেশা কি এবং কত প্রকার?? মানুষ কেন নেশায় আসক্ত হয়?? নেশা করলে মানুষের কি কি লাভ এবং ক্ষতি হয়?? নেশা করলে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে মানুষের জন্য কি কি শাস্তি হতে পারে?? এবং নেশায় আসক্ত একজন মানুষ কিভাবে এই পথ থেকে বের হয়ে আবার সাধারণ জীবন যাপন করতে পারে এই বিষয়ে কিছু তথ্য এবং তথ্যবহুল আলোচনা করার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ। আর অবশ্যই এটা বর্তমান সময়ের সাথে মিল রেখেই লিখব। কেননা বর্তমান সময়ে শতকরা 70% যুবক নেশায় আসক্ত। আশা করছি আমার আজকের এই আলোচনাটি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।

নেশা কি?? নেশা ভালো এবং খারাপ দুটো দিক রয়েছে। ভালো দিক হলো যেমন বই পড়ার নেশা। উন্নয়নমূলক কাজ করা নেশা। গাছ লাগানোর নেশা। এক কথায় ভালো কাজগুলো করাকে বোঝায় ভালো নেশা। এখন নেশা খারাপ দিক হলো যে কোন নেশা জাতীয় দ্রব্য অতিরিক্ত পরিমাণে সেবন করাকে বোঝায়। এরমধ্যে রয়েছে মদ বিড়ি সিগারেট গাজা হিরোইন ইয়াবা ইত্যাদি। এগুলো সেবন করার ফলে মানুষ কিন্তু তার স্বাভাবিক ভারসাম্যটা হারিয়ে ফেলে। এই অবস্থায় কিন্তু সে নিজে এবং সমাজের উপর একটি অপ্রীতিকারক পরিবেশের তৈরি করে। এর মধ্যে কিন্তু তাস খেলা জুয়া খেলা ও অন্যতম। মানুষ অতিরিক্ত লোভে পড়ে কিন্তু এই খেলা গুলো খেলে থাকে যার মাধ্যমে কিন্তু শেষ পরিণতি হয় ধ্বংস।

মানুষ কেন নেশায় আসক্ত হয়?? নেশায় আসক্ত হওয়ার প্রথম এবং প্রধান কারণ হলো অসৎ সঙ্গ। বাংলা প্রবাদে একটি বাক্য আছে সৎসঙ্গ স্বর্গ বাস অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ। পারিবারিক শিক্ষা ভালো না হওয়ার কারণ। অজানাকে জানতে চাওয়া। এবং জানতে গিয়ে নেশার মাধ্যমে অন্যরকম একটি অনুভূতি ফিল করা। এবং এই অনুভূতি বারবার পেতে চাওয়া। আস্তে আস্তে পরিপূর্ণভাবে নেশায় জড়িয়ে পড়া। আমি বাস্তব জীবনে দেখেছি একজন মানুষ যখন নেশা করে বা নেশায় আসক্ত হয়ে যায় সে বারবার সেই কাজটি করতে চায়। কেননা ঐ নেশার মাধ্যমে সে অন্যরকম একটি অনুভূতি ফিরে পায়। যখন নেশা করে তখন তাৎক্ষণিক মনে হয় তার থেকে ভালো এবং সুখী মানুষ পৃথিবীতে আর কেউ নেই। কিন্তু তাৎক্ষণিক সে বুঝতে পারে না যে এই নেশা তাকে আস্তে আস্তে ভয়ানক ক্ষতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আবার কিছু কারণ হতে পারে টেনশন দূর করার জন্য। আস্তে আস্তে টেনশন ভুলে থাকার জন্য অল্প অল্প করে পরবর্তীতে ভয়ানক নেশায় আসক্ত হতে পারে মানুষ।

নেশার মাধ্যমে একজন মানুষের কি কি লাভ বা ক্ষতি হতে পারে? যে ব্যক্তি নেশা করে সেই ব্যক্তির পুরোটাই লস নেশা করার মধ্যে কোন লাভ নেই। কিন্তু যে ব্যক্তি নেশাদার দ্রব্য বিক্রি করে সেই ব্যক্তি ভালো লাভবান হয়ে থাকে। নেশার টাকা জোগাড় করার জন্য মানুষ আস্তে আস্তে তার শেষ সম্বল টুকু নিয়ে পর্যন্ত বিক্রি করেছে এরকম নজির রয়েছে হাজারো। নেশায় আসক্ত ব্যক্তি সুস্থ মস্তিষ্কে কখনোই থাকে না। একজন নেশাদার ব্যক্তির সামাজিক মানসিক এবং ব্যক্তিগত ভাবে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন হয়। তাছাড়া আর নেশাদার ব্যক্তির শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা একে একে তৈরি হতে থাকে। এ থেকে ক্যান্সার আলসার এবং মৃত্যু পর্যন্ত ও পৌঁছে দেয়। আর সব থেকে বড় কথা হলো নেশাদার ব্যক্তির কখনোই পরিবারের প্রতি কোন মায়া থাকে না। তার সামনে শুধু একটাই মিশন থাকে কিভাবে টাকা জোগাড় করব আর কিভাবে নেশা করব। আর এই নেশার টাকা জোগাড় করতে এসে সব ধরনের কাজ করতে বাধ্য। চুরি ডাকাতি ছিনতাই এমনকি মার্ডার করে ফেলতে পারে। আমরা কিন্তু এমন নিউজ সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক দেখি যে নেশার টাকা জোগাড় করতে গিয়ে বাবা-মাকে খুন। অথবা বাবা-মা অতিষ্ঠ হয়ে ছেলেকে ফোন করেছে। নেশার মধ্যে কোন লাভ নেই শেষমেষ জীবনটা ধুঁকে ধুকে শেষ হতে থাকে।

ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে নেশাদার ব্যক্তির শাস্তি কি? একজন নেশা তার ব্যক্তিকে যেমন পরিবার এবং সমাজ গ্রহণ করতে চায় না। তেমনি কিন্তু ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে নানা কথা বলা হয়েছে ওই ব্যক্তি সম্পর্কে। আমাদের ধর্ম অনুযায়ী সৃষ্টিকর্তা বলেছেন নেশাদার দ্রব্য পান কারী ব্যক্তি কখনোই জান্নাতে যেতে পারবে না। যে ব্যক্তি নেশা করে সেই ব্যক্তির ইবাদত বন্দেগী কবুল হয় না। আর সব থেকে বড় শাস্তি হল ওই ব্যক্তি জাহান্নামী। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে সব ধরনের নেশাদার দ্রব্য পান করা সম্পর্কে। কেননা একজন নেশা তার রোগ ও পানকারী ব্যক্তি কখনোই নিজের উপরে কন্ট্রোল রাখতে পারেনা। সে নেশার ঘোরে অনেক কিছু করে ফেলতে পারে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেন যে ব্যক্তি নেশা করল সে হারাম কাজ করলো। ৪০ দিন পর্যন্ত সে অপবিত্র থাকলো। আর এই অবস্থায় তার কোন ইবাদত কবুল হবে না। তওবা করে সঠিক পথে ফিরে না এসে যদি সে মৃত্যুবরণ করে তাহলে সে কাফের অবস্থায় মৃত্যুবরণ করল। আর কাফেরের স্থান হবে জাহান্নাম। আমি যতদূর জানি শুনেছি এবং বিভিন্ন বই পুস্তকে পড়েছি কোন ধর্মই নেশার পক্ষে কথা বলে না। সব ধর্মতেই নেশা করা অবৈধ। এবং কঠোরভাবে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

নেশায় আসক্ত ব্যক্তি কিভাবে আবার স্বাভাবিক পরিবেশে ফেরত আসতে পারে? প্রথমে বলব যে ব্যক্তি মাদকাসক্ত হয়েছে তাকে ধর্মীয় ভাবে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে সে বিষয়ে জ্ঞান দিতে হবে। তার মনোবল শক্ত করতে হবে। এবং কঠোরভাবে প্রতিজ্ঞা করতে হবে ভবিষ্যতে আর এ ধরনের কাজ করবো না। এবং মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে রাখতে হবে। অথবা ভালো ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। কিছু ওষুধের মাধ্যমে নেশা থেকে ফেরত থাকা সম্ভব। এমন না কিন্তু যে সে রাতারাতি নেশা ছেড়ে দিতে পারবে। এজন্য যখন নেশার প্রতি আগ্রহ জন্মাবে তখন একা একা থাকা যাবে না। অন্যমনস্ক হতে হবে এবং লোকজনের মধ্যে মিশে থেকে অন্যভাবে কথা কাজ চালিয়ে যেতে হবে। আর নেশা করার অন্যতম কারণ যদি মানসিক প্রেসার হয়ে থাকে তাহলে সেটা আস্তে আস্তে কমিয়ে ফেলতে হবে এবং তার প্রতিকার খুঁজে বের করতে হবে। এবং সর্ব অবস্থায় নিজেকে অপরাধী মনে করতে হবে। এবং নিজেই নিজেকে ভালো করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে। নিজের মধ্যে থাকা হতাশা এবং বিষন্নতাকে দূর করতে হবে। সর্বাবস্থায় ভালো থাকার জন্য চেষ্টা করতে হবে হাসিখুশি থাকতে হবে। অসৎ সঙ্গ ত্যাগ করতে হবে। ভালো মানুষ এবং ধর্মভীরু মানুষের সাথে পথ চলতে হবে। নেতিবাচক চিন্তা ভাবনা করতে হবে। সর্বোপরি সৃষ্টিকর্তার দেখানো পথ অনুযায়ী নিজের জীবনকে পরিচালনা করতে হবে।

যাইহোক আজ এই ছিল আমার নেশা সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা। চেষ্টা করেছি বাস্তবতার আলোকে কিছু কথা শেয়ার করার জন্য। দেখছি আমাদের আশেপাশে থাকা ছোট ভাই বড় ভাই বা বন্ধুদের তারা কিভাবে নিজেকে শেষ করে দিচ্ছে। নিশা নামক বিষাক্ত সাপের ছোবলে কিভাবে তার পরিবারসহ সবকিছু ধ্বংস করে দিচ্ছে। এজন্য আসুন আমরা নেশা থেকে বেঁচে থাকি। ভালো কাজ করি ভালো পথে চলি অসৎ সঙ্গ ত্যাগ করে ভালো সঙ্গ সঙ্গী হিসেবে গ্রহণ করি। সার্বক্ষণিক নেশার ভয়াবহতা সম্পর্কে জ্ঞান রাখি। আজ এ পর্যন্তই দেখা হবে পরবর্তীতে নতুন কোন পোস্টে।


ডিভাইসঃ Redmi Note 5



break .png

Banner.png

|| [আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে]

standard_Discord_Zip.gif

>>>>>|| এখানে ক্লিক করেন ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Witness Banner 2.png


সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

ধন্যবাদ

Posted using SteemPro Mobile

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

image.png

খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় নিয়ে আজকে আপনি আমাদের মাঝে পোস্ট করেছেন ভাইয়া। আপনার এই পোস্ট আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। কারণ এ জাতীয় পোস্টগুলো মানুষের জন্য খুবই উপকারে আসে এবং জনসচেতনতা সৃষ্টি করে। এত সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে পোস্ট করার জন্য ধন্যবাদ।

চেষ্টা করেছি আমার পোষ্টের মাধ্যমে বাস্তবতাকে তুলে ধরার জন্য।
আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে অনেক খুশি হলাম ধন্যবাদ।

আপনি আজকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে লিখনি উপস্থাপন করলেন। বর্তমান সময়ে নেশা একটি মরণব্যাধি রূপে প্রতিীয়মান হয়েছে। সত্যি বলতে যুবক সমাজ এই নেশার কারণে দিন দিন ধ্বংসের মুখে পতিত হচ্ছে। আপনি নেশার ভয়াবহতা এবং এর বিভিন্ন ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে বেশ চমৎকার আলোচনা করেছেন। উপরওয়ালা আমাদের সবাইকে এই খারাপ জিনিসটা থেকে হেফাজত করুন এই কামনা করছি। অনেক ধন্যবাদ ভাই চমৎকার লিখনী উপস্থাপন করার জন্য।

আসলে চোখের সামনে যেটা দেখছি যেভাবে যুব সমাজের অধঃপতন হচ্ছে শুধুমাত্র এই নেশার কারণে সেটাই তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে অনেক খুশি হলাম ধন্যবাদ।

ভাই নেশাগ্রস্ত লোক কখনো সুস্থ ও স্বাভাবিক হতে পারে না, তা স্বচক্ষে দেখেছি অনেকবার। কেননা আমাদের আশেপাশে এমন অনেক নেশাগ্রস্থ লোক রয়েছে যাদের দেখে অনায়াসেই বোঝা যায়, তাদের উশৃংখল জীবন কিভাবে চলছে। নেশায় কোন লাভ নেই, নেশা মানুষকে ধ্বংস করে দেয়, নেশা মানুষকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে, নেশা মানুষকে নিঃস্ব করে পথের ভিখারী বানিয়ে দেয়, তবুও কেন যে মানুষ নেশাগ্রস্থ হয় তা বুঝতে পারিনা। যাইহোক ভাই, নেশা নিয়ে আপনার সুন্দর অনুভূতিগুলো আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

আমিও সেম স্বচক্ষে দেখা অভিজ্ঞতা থেকে আজ আমার পোস্টে কিছু কথা লিখেছে।
কি আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে অনেক খুশি হলাম ধন্যবাদ।

খুবই সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আপনি৷ আসলে নেশা খুবই খারাপ একটি জিনিস৷ এই নেশার কারণে অনেকে অনেকের জীবনকে শেষ করে দিচ্ছে৷ অনেক মানুষ মনে করে যে যেহেতু সে কোথাও শান্তি পাচ্ছে না নেশার পথে গিয়ে সে শান্তি পাবে৷ তবে তা কোনো মতেই নয়। সে নেশার পথে গিয়ে আরো নিজের জীবনকে ধ্বংস করে দিচ্ছে৷ এই নেশা থেকে সে কখনো আর বের হতে পারে না৷