জেনারেল রাইটিং ✍️ সম্পদ বিপদের কারণ।

in hive-129948 •  7 months ago 

১৩বৈশাখ , ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

২৮এপ্রিল ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৯শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

গ্রীষ্মকাল ।



আসসালামু আলাইকুম,আমি মোঃআলী, আমার ইউজার নাম @litonali।আমি বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে আমার আজকের পোস্ট শুরু করছি।



শুভ রাত্রি ❤️ আজ আপনাদের মাঝে হাজির হলাম আরেকটি জেনারেল রাইটিং নিয়ে। আমার আজকের পোস্টের আলোচ্য বিষয় সম্পদ। এবং এই সম্পদ যে আমাদের বিপদের কারণ এবং সব ধরনের ভয়াবহতা এর সম্মুখীন করে এই বিষয় নিয়ে কিছু বাস্তব উদাহরণের সাথে আলোচনা পেশ করব। আপনাকে কেউ যদি প্রশ্ন করে যে সারা বাংলাদেশে এত বৃদ্ধাশ্রম কেন হল?? এবং এই বৃদ্ধাশ্রম গুলোতে কোন শ্রেণীর মানুষ বেশি পাওয়া যায়?? এবং এদের বৃদ্ধাশ্রমে আসার কারন কি কি?? ফেসবুকে মাঝে মাঝেই এমন ক্যাপশনে পোস্ট দেখা যায় যে, সম্পদ মানুষকে ভাসিয়ে দিতে পারে। আবার ওই সম্পদ মানুষকে ডুবিয়ে দিতে পারে। এখন প্রথম পোস্ট নিয়ে আসি সম্পদ। সম্পদ হলো আমাদের জমানো টাকা পয়সা বাড়ি-গাড়ি বা জমি জমা কে বোঝায়। আমার দ্বিতীয় প্রশ্ন ছিল দেশে এত বৃদ্ধাশ্রম কেন?? আমি আমার দৃষ্টিকোণ থেকে এর উত্তরে বলব বৃদ্ধাশ্রম থাকার প্রথম এবং প্রধান কারণ হলো সম্পদ। আপনি বৃদ্ধাশ্রম গুলোতে গেলে দেখবেন এক সময়কার কোটিপতি সরকারি চাকরিজীবী ধনাঢ্য ব্যক্তি গুলো আজ বৃদ্ধাশ্রমে ধুঁকে ধুকে শেষ বয়সে এসে জীবন কাটাচ্ছে। সারা জীবনে যে সম্পদ গুলো অর্জন করেছে তার সঠিক ব্যবহার এবং ছেলেপেলে গুলো সঠিক পন্থায় বড় করে তুলতে না পারা ছিল তার প্রধান ব্যর্থতা। যার কারণে এখন সে বৃদ্ধ আর সন্তান-সম্পদ ভাগ করে নিয়ে বাবা মাকে বোঝা মনে করে তাদেরকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দিয়েছে। এই সম্পদ মানুষকে কতটা নিচে নামাতে পারে একটু ভেবে দেখেছেন?? বাবার অর্জিত সম্পদ নিজেদের মধ্যে বন্টন করে নিয়ে বাবাকে রেখে আসে বৃদ্ধাশ্রমে। অথচ ওই বাবা যদি তার সম্পদ সঠিক পথে ব্যবহার করে ছেলে গুলোকে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করত তাহলে আজ তার এরকম পরিণতি দেখতে হতো না।

এজন্য সৃষ্টিকর্তা বলেছেন সম্পদ এবং সন্তান মানুষের বিপদের কারণ। যেহেতু তিনি বলে দিয়েছেন যে এগুলো আমাদেরকে বিপদে ফেলতে পারে এজন্য আমাদেরকে আগে থেকেই সতর্কতা অবলম্বন করার দরকার রয়েছে। বৈধ পথে সম্পদ উপার্জন করে সেই সম্পদ ছেলেমেয়েদের জন্য বৈধভাবে খরচ করতে হবে। আপনি যদি শেষ বয়সে ভালো থাকতে চান তাহলে অবশ্যই ছেলেপেলেদের কে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। তা না হলে দেখবেন এক সময় ছেলেপেলে এই সম্পদ তাদের নিজেদের করে নেওয়ার জন্য আপনাকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। এখন আর একটা প্রশ্ন আসতে পারে বৃদ্ধাশ্রমে কারা থাকে। দেখবেন এক সময়কার ধনাঢ্য ব্যক্তি গুলো আজ বৃদ্ধাশ্রমে। আপনি কি কখনো দেখেছেন একজন রিকশাচালক ভ্যানচালক বা কৃষিকাজ করে দিন এনে দিন খায় তাদের বাবা-মা বৃদ্ধাশ্রমে রয়েছে। কখনোই না কারণ তাদের জমান কোন সম্পদ নেই। আর সম্পদ না থাকার কারণে তাদের মধ্যে আত্ম অহংকার টাও নেই। মাঝে মাঝে অনেক কষ্ট হয় সোশ্যাল প্লাটফর্মে কিছু ভিডিও বা লেখাগুলো পড়ে। যে বাবা এত কষ্ট করে সম্পদ উপার্জন করে ছেলেমেয়েদের কে দিল অথচ ছেলেমেয়েরা তাকেই ছুড়ে ফেলে দিল বৃদ্ধাশ্রম। অথচ ওই বাবা মায়ের উপার্জন করা সম্পদ এখনো তারা ভক্ষণ করছে। আর পক্ষান্তরে দেখুন একজন রিক্সা চালক শ্রমজীবী বা ভ্যানচালক তিন এনে দিন খাচ্ছে তবুও বাবা মাকে মাথায় তুলে রেখেছে। একবেলা না খেয়ে চলছে তবুও বাবা মাকে গভীর শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা জ্ঞাপন করছে। অথচ সম্পদশালী ছেলে-মেয়ে আজ বাবা-মাকে ভুলে আরো বেশি সুন্দর কিভাবে উপার্জন করা যায় সেদিকে ব্যস্ত রয়েছে।

ভাই কি হবে এত সম্পদ। আপনি যেমন আপনার বাবা মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসলেন। তেমনি আপনার ছেলে-মেয়ে একসময় আপনার সম্পদ আপনার কাছ থেকে নিয়ে আপনাকে যে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসবে না এর গ্যারান্টি কতটুকু। সম্পদ মানুষকে ভাসিয়ে দেয় সম্ভব মানুষকে নিস্তব্ধ করে দেয়। একটি জিনিস ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন যারা হতদরিদ্র তাদের জীবন সব থেকে বেশি সুখে কাটে। ব্যাংক ব্যালেন্স নেই নেই আলিশান বাড়ি দামি গাড়ি ফুটপাতে থেকে মুখ ভরা হাসি নিয়ে দিন কাটিয়ে দিচ্ছে। আসলে সম্পদ থাকলে যে মানুষ সুখী হতে পারে এমনটা কিন্তু নয়। যে সকল ছেলে-মেয়ে তাদের বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে সম্পদ নিয়ে সুখে থাকে আপনি এই সুখটাকে কোন শ্রেণী ভুক্ত করতে চান। বাবা মা বা ফ্যামিলি ছাড়া কখনো কি সুখী হওয়া যায়। তাদের ভালোবাসা পাওয়া দেওয়া বা তাদের মুখের হাসি না দেখলে কি ভালো থাকা যায়। অথচ সম্পদ তাদেরকে অন্ধ করে রেখেছে।

এবার ছোট্ট একটি উদাহরণ দিয়ে বলি তাহলে পরিষ্কারভাবে বোঝা যাবে যে সম্পদ কিভাবে আমাদের বিপদের কারণ। কুষ্টিয়া মিরপুর আমি যেখানে থাকি এখানকার একটি সত্য ঘটনা। এক ব্যক্তির তিন ছেলে তার প্রায় 100 বিঘা জমি। তিন ছেলের নামে সমান ভাগ করে দেওয়া হয়। একটি ছেলে একটু পাগল কোয়ালিটির ছিল সেও সমান ভাগ পায়। কিন্তু আর দুইটা ভাই এটা মেনে নিতে পারে না এজন্য তাকে চিকিৎসার নামে আজ পরিপূর্ণভাবে পাগল করে রেখেছে। এই বিষয়টা সবাই জানে বোঝে। এখান থেকে আমি এতোটুকু উনি দেখতে পেলাম যে যদি তাদের সম্পদের পরিমাণ আরো কম হতো এবং ভালোবাসাটা থাকতো তাদের মাঝে তাহলে তারা তাদের ভাইকে চিকিৎসার মাধ্যমে ভালো করত। সেটা না করে ভাইয়ের সম্পদের লোভে তারা ভাইকে ভালো তো না করে উল্টো আরো বিপরীত চিকিৎসা দিয়ে বেশি পাগল করে রেখেছে। আসলে সম্পদ এমনই মানুষের চরিত্রকে ধ্বংস করে দেয়। মানুষের বিবেককে মৃত করে দেয়। মানুষের মধ্যে থাকা মনুষ্যত্বকে নষ্ট করে দেয়।

জীবনের সম্পদ উপার্জন করার প্রয়োজন রয়েছে। ভালোভাবে জীবিকা নির্বাহ করা ছেলে মেয়েদের ভালো ভাবে লেখাপড়া শেখানো ভালো খাবারের যোগান দেওয়া এসবের জন্য। কিন্তু সতর্কতা অবলম্বন করে সেই সম্পদ উপার্জন করা এবং খরচ করা। সম্পদ উপার্জন করে ছেলে মেয়ের পিছনে ব্যয় করে যদি তাদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে না পারেন তাহলে অবশ্যই সেটা পরবর্তীতে বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। এই ছেলে মেয়ে এক সময় আপনাকে ছুড়ে ফেলে দিবে। কারণ তাদের মধ্যে তো শিক্ষার কোনো জ্ঞান নেই আলো নেই। অবশ্যই পৃথিবীতে থাকতে হলে সম্পদ একটি অনিবার্য উপাদান। সম্পদের উপার্জনের পথ হোক হালাল। হালাল খাবার ভক্ষণ করে ছেলেমেয়েদেরকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে। এবং এই সম্পদটা যেন আমাদের সুখের কারণ হয়। এতোটুকুনি ছিল আমার আজকের এই সংক্ষিপ্ত আলোচনা আশা করছি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।


ডিভাইসঃ Redmi Note 5



break .png

Banner.png

|| [আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে]

standard_Discord_Zip.gif

>>>>>|| এখানে ক্লিক করেন ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Witness Banner 2.png


সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

ধন্যবাদ

Posted using SteemPro Mobile

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

image.png

অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আপনি পোস্ট সাজিয়েছেন। আপনার লেখা পড়ে আমি সত্যি মুগ্ধ হয়েছি এই জন্য যে আমরা যতই সম্পদ গুছাই না কেন সেই সম্পদ অবশ্যই সঠিক পথে ব্যয় হচ্ছে কিনা এবং সেই সম্পদ দ্বারা সঠিক কাজ হচ্ছে কিনা সেই বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে। অনেক টাকা উপার্জন করে সেই টাকা দিয়ে যদি ছেলেপেলেকে মানুষ না করতে পারা যায় তার পরিণাম কিন্তু একদিন ভয়াবহ হতে পারে। যাইহোক অনেক সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে লিখেছেন আপনি। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

অবশ্যই সম্পদ একসময় আমাদের বিপদের কারণ হয়ে আসতে পারে এজন্য তার আগেই আমাদেরকে প্রস্তুতি নিয়ে থাকতে হবে।
ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি পড়ে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

আমাদের দেশে এমন ঘটনা কিন্তু অনেক আছে বাবা মা বড় সরকারি কর্মকর্তা ছিল আর শেষ বয়সে এসে তারা বৃদ্ধাশ্রমে কাটাচ্ছে। আমার মনে হয় এরকম জীবন গুলো পুরোটাই ব্যর্থতায় ঘেরা।

বর্তমান সময়ে আপনি লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন একসময়ের কোটিপতি এবং ধনাত্ম্য ব্যক্তিগুলোই আজ বৃদ্ধাশ্রমের করিডোরে বন্দী।
ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য।

এই ক্ষেএে আমি দোষ দিব ঐ বাবা মাকে। কারণ তাড়া তাদের সন্তানদের সঠিক সময়ে সঠিক শিক্ষা দিতে পারেনি। ঐ বাবা মা যদি সেটা দিতে পারত তাহলে আর যাইহোক সম্পদের জন্য তাদের বৃদ্ধাশ্রমে পাঠাত না ঐ সন্তানেরা। সম্পদ মানুষকে একেবারে ধ্বংস করে দিতে পারে। আর বৃদ্ধাশ্রমে কখনো গরীব মানুষের বাবা মা থাকে না। ওখানে থাকে সব সম্পদশালী ছেলেদের বাবা মা।

আপনি একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া সম্পদ অর্জনের সাথে সাথে যদি সন্তানদেরকে সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা হতো তাহলে হয়তো দেশে আজ এত বৃদ্ধাশ্রম হতো না।
ধন্যবাদ আপনাকে।

সম্পদ বিপদের কারণ। সম্পদের পিছনে ছুটতে ছুটতে মানুষ এতোটাই বেহুস হয়ে যায় যে পরিবার পরিজন সন্তানকে সঠিক শিক্ষা দিতে পারে না। আসলে ধর্মীয় শিক্ষা আমাদের কে নমনীয় করে।আপনার একটি কথায় এক মত হতে পারলাম না ভাইয়া যে রিক্সা, চালক ও দিনমুজুরদের বাবা,মাকে বৃদ্ধাশ্রামে দেখা যায় না এটা ভুল কারণ আমি ছোট বেলা থেকে গ্রামে থাকি আর নিম্নশ্রেণী মানুষের মা,বাবারা কতোটা কষ্টে থাকে ও অমানবিক অত্যাচার সহ্য করতে হয় তা দেখেছি ও জানি।গরীব কিংবা ধনী সবার উচিত সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষা দেয়া যদিও না যদি সে শিক্ষা আমরা গ্রহণ করি তবেই ভালো নইলে কতে সাধু,সন্যাসিও হুজুর কে দেখেছি বাবা মা কে এক মুঠো ভাত না দিতে।

হতে পারে জায়গা বিশেষ এমন কিছু ঘটনা।
তবে আমাদের অঞ্চলে দেখেছি আমি ছোটবেলা থেকে ধনীদের বাবা-মা সব বৃদ্ধাশ্রমে।
আর যত মধ্যবিত্ত এবং গরিব লোক আছে সবাই বাবা মাকে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে এক সাথে আছে।

খুব সুন্দর ও বাস্তবিক কিছু বিষয় নিয়ে আজকে আপনার এই পোস্টটি আপনি ফুটিয়ে তুলেছেন৷ আসলে অনেকেই রয়েছে যারা নিজের সম্পদ বৃদ্ধি করার জন্য সবসময়ই মগ্ন থাকে৷ তাদের সন্তানদেরকে যে তারা শিক্ষা দিবে সেই শিক্ষা দেওয়ার কথা তাদের চিন্তায় থাকে না। প্রতিনিয়তই তারা এভাবেই সম্পদের পিছনে ছুটতে ছুটতে একটা সময় তাদের সন্তানের প্রতি যে শিক্ষার্থী দেওয়া উচিত ছিল সেই শিক্ষার অভাবে তাদেরকে বিভিন্ন বৃদ্ধাশ্রমে কাটাতে হয়। ধন্যবাদ রকম একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য৷

ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য।