ভৌগলিক অবস্থান:

ডিভাইস:

আজকে আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক ভ্রমন এর শেষ পর্ব আপনাদের সামনে উপস্থাপন করব। চতুর্থ পর্বে আমি সাফারি পার্কের ভেতরের সুন্দর সুন্দর লোকেশন এবং কিছু প্রাণীর ফটোগ্রাফি সহ সম্পুর্ন পোস্ট শেয়ার করেছিলাম।ক্ষুধা পেট নিয়েই মূলত সুন্দর লোকেশন এবং কিছু প্রাণী দেখেছিলাম এবং ফটোগ্রাফি ও সম্পন্ন করেছেন। প্রাণী গুলো দেখার পর কিছুদূর যেতেই আমরা একটি টং দেখতে পেলাম। ক্ষুধা পেটে নিয়ে হাটাহাটি করার কারণে সবাই বেশ ক্লান্ত ছিলাম। হঠাৎ শক্তি ছিল না বললেই চলে। যার ফলে আমরা সবাই মিলে ওই টং এ বসে রেস্ট নিলাম। মিনিট বিশেক রেস্ট নেওয়ার পর আমরা আবার ঘুরতে লাগলাম।

কিছুদুর যাওয়ার পর একটি ঝুলন্ত ব্রিজ দেখতে পেলাম। ঝুলন্ত ব্রিজে অবশ্য টিকিটের ব্যবস্থা ছিল। আমরা ভেবেছিলাম ফ্রিতে ঝুলন্ত ব্রিজের এপার থেকে ওপারে যেতে পারবো। কিন্তু কি আর করার। প্রত্যেককে ১০ টাকা করে টিকিট কেটে ঝুলন্ত ব্রিজের উপর দিয়ে হাটতে লাগলাম। ঝুলন্ত ব্রিজ দিয়ে হাটার সময় যখন মাঝখানে গেলাম তখন বেশি ভয় কাজ করছিল।ব্রিজটি বেশ ভালোই কাপছিলো। ব্রিজের মাঝখানে গিয়ে আমরা সবাই মিলে ছবি উঠালাম। এর আগে কখনও ঝুলন্ত ব্রিজে ওঠা হয়নি। যার ফলে ভিন্ন রকমের অভিজ্ঞতা নিতে পেরেছিলাম।

ব্রিজে ঘোরাঘুরি শেষ করার পরে আমাদের গাইবান্ধা জেলা ছাত্র কল্যাণ সমিতির সভাপতি ভাই আমাদের ফোন দিলেন। খাওয়া-দাওয়া করার জন্য। ফোন পেয়ে আমরা যত দ্রুত সম্ভব আমাদের ভাড়া করা রিসোর্টে যেতে লাগলাম। কারণ এমনিতেই ঘোরাঘুরির করার শুরুতেই ক্ষুধা লেগেছিল।তার মধ্যে আবার এতক্ষণ না খেয়ে থাকা। ক্ষুধায় পেট চোঁ চোঁ করছিলো। মিনিট দশেক হাঁটার পর আমরা আমাদের ভাড়া করা রিসোর্টটিতে পৌঁছে গেলাম। গিয়ে দেখি বড় ভাই এবং আপুরা ইতোমধ্যে খাওয়া-দাওয়া শেষ করেছেন। আমাদের খাওয়া-দাওয়ার ব্যাচ মূলত শেষ পর্ব ছিল। দুপুরের খাওয়া দাওয়ার আইটেমের বিরিয়ানি, সবজি, বুটের ডাল এবং একবাটি করে গরুর মাংস ছিল। তরকারির এই আইটেম গুলো দিয়ে আমি অবশ্য তিন প্লেট বিরিয়ানি খেয়েছিলাম। সে জন্যই বোধহয় সবচেয়ে বেশি বিরিয়ানি খেয়েছি। আমাদের খাওয়া-দাওয়া পর্বের অবশ্যই কোন ছবি ওঠানো হয়নি।

খাওয়া-দাওয়া শেষ করার পর আমরা ওই রিসোর্ট এর উপরতলায় অনেকগুলো চেয়ার গোল করে নিয়ে একটি গোল টেবিল বৈঠক করলাম। সেখানে অবশ্য নতুন সভাপতি এবং সাধারন সম্পাদক ভাইদের নির্বাচিত করা হয়েছিল। গাইবান্ধা জেলা ছাত্র কল্যাণ সমিতির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের মেয়াদ দুই বছর। প্রতি দুই বছর অন্তর অ্যাক্টিভিটির উপর নির্ভর করে এ দুটি পদ দেয়া হয়। এরপর যারা পড়াশুনা শেষ করে চাকরিতে চলে গেছেন এবং আমাদের বড় ভাইয়েরা যারা গুরুত্বপূর্ণ পদে নির্বাচিত হয়েছেন তারা তাদের বক্তব্য পেশ করলেন। এই গোলটেবিল বৈঠকটি ২ ঘন্টা যাবৎ স্থায়ী ছিল। সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক এর সকল কার্যক্রম শেষ করেছিলাম।

এরপর বাসে করে রওনা হওয়ার পালা। রওনা হওয়ার সময় খুব ক্লান্ত ছিলাম। তার মধ্যে আবার ওই দিন ছিল বৃহস্পতিবার। কমিউনিটির সাপ্তাহিক হ্যাংআউট। ঢাকার রাস্তায় ভালই জ্যাম থাকে। আসার সময় রাস্তায় জ্যামের কারণে দুই ঘন্টার রাস্তা আসতে সময় লেগেছিল প্রায় চার ঘন্টার মত। আমি অবশ্য ঠিক ৯টা বাজার পরপরেই কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে সাপ্তাহিক হ্যাংআউট শুনতে লাগলাম। বাসের মধ্যে অবশ্য অনেকেই বিভিন্ন রকম নাচ-গান করে মজা করছিল। আসার সময় একজন বড় ভাইয়ের সঙ্গে বিপত্তি ঘটলো। জ্যামের মধ্যে আটকে থাকার সময় তার হাতের ফোন একজন টোকাই ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছিল। পরবর্তীতে টোকাইকে ধরার চেষ্টা করা হলেও ধরতে পারা যায়নি। আমরা ক্যাম্পাসে এসে পৌছালাম একদম রাত এগারোটায়।

সমাপ্তি