ছেলেবেলার জোলাভাতি খেলার অনুভূতি

in hive-129948 •  4 months ago  (edited)

আসসালামু আলাইকুম

হ্যালো আমার প্রিয় কাছের দূরের যত ভাই-বোন আছেন সবাইকে সালাম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানিয়ে আজও আপনাদের মাঝে হাজির হয়ে গেলাম। সবাই কেমন আছেন এই কথাটি জিজ্ঞস করবো না। কারন আমি বন্যার কবল থেকে ভালো থাকলেও ভালো নেই আমার দেশের অনেক জেলার মানুষ। তাই আমাদের কারো ভালো থাকার কথা না। দেশের এই পরিস্থিতিতে আমাদের সবার সবার জন্য দোয় ও পারলে সাহায্য সহযোগিতা করা প্রয়োজন। এই অবস্থায় দেশের বানবাসী মানুষের প্রতি আমাদের সবার পাশে থাকা অনেক জরুরী। এবার আসুন আমার মূল পোস্টে চলে যাই।

আমরা সবাই শৈশব পার হয়ে চলে এসেছি। কিন্তু শৈশবের সব স্মৃতি আজও আমাদের তাড়া করে ফেরে। আর শৈশবের কোন স্মৃতি যেন আমাদের জীবন থেকে মুছে ফেলতে পারছি না। সেই সময় কত রকমের খেলা, মা বাবা বকার সব স্মৃতি যেন প্রতিটি ক্ষন আমাদের মানের মাঝে দৌড়ঝাপ করে। তাইতো সময় পেলেই কিছুটাক্ষন বসে ছেলেবেলার ফেলে আসা স্মৃতিগুলো নিয়ে ভাবি আর খিল খিল করে হাসি। আজও মনে পড়ে গেলো শৈশবের হাজার স্মৃতির মাঝে একটি স্মৃতি। তা হলো ছেলেবেলার জোলাভাতি। আর সেই বিষয় নিয়ে আজ আমি আপনাদের মাঝে আমার একটি পোস্ট শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করি সবার ভালো লাগবে।

শৈশবের পিকনিক111.png

Banner credit --@mahfuzanila
Canva দিয়ে তৈরি

হ্যাঁ বন্ধুরা আজ আমি আমার শৈশরের জোলাভাতি নিয়ে কিছু স্মৃতি আপনাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য এলাম। আসলে আমাদের কার শৈশবে কি কি করেছি, সবাই একটু জানলে আমরা একটু আনন্দ পাই। ছেলেবেলার অনেক খেলার মাঝে জোলাভাতি টাকেও মনে করতাম একটি খেলা । তখন বলতাম আয় আমরা জোলাভাতি খেলি। তো জোলাভাতি খেলতে কি কি লাগবে সবাই ভাবতাম। তারপার ভাবতাম যে কি রান্না করবো? আর কে কোন আইটেম দেবে। আর এই প্ল্যান করে সবাই সবার বাসা থেকে জিনিস আনতাম। তো আমি আবার ছোট বেলা অনেক দুরন্ত ছিলাম। তাই আমার শৈশবের সব বন্ধু আমাকে সার্পোট করতো বেশী। অবশ্য আমি জানি না কেন আমাকে সবাই কেন সার্পোট করতো। আসলে ছেলেবেলায় অনেক বান্ধবী অনেক প্রিয় থাকে। শুধু ছেলেবেলায় না এখনও আমার বান্ধবীগুলো আমাকে অনেক ভালোবাসে। তবে শৈশবের বান্ধবীগুলো সব হারিয়ে গেছে। এখন সব নতুন বান্ধবী। চলুন জোলাভাতির কথায় যাই।

তো এলাকার কিছু আমাদের থেকে দু এক বছরের বড় আপু ছিল। তারা আমাদের জোলাভাতির উদ্যোগ নিত। আর আমাদের বলতো যে বাসা থেকে এগুলো নিয়ে আসতে। আর এভাবে আমাদের জোলাভাতির প্ল্যান করে সবাই সবাইকে বলে দিতাম যে কে কার বাসা থেকে কি আনবে। কেউ দিত ডাল, কেউ ডিম, কেউ তেল ময়মসলা, কেউ বা হারিপাতিল। আমি কখনও হারিপাতিল দিতাম না।কারন আমরা জোলাভাতি খেললে ইটা দিয়ে লাকড়িতে রান্না করতাম। আর সেগুলো কালো হয়ে যেত। কিন্তু আমার মা ছিল খুব পরিস্কার।তার ছেলেমেয়ে কাঁদা মাটিতে জামাকাপড় বা শরীর নোংরা করবে এটা সে পছন্দ করতো না। আর হাড়িপাতিল কলো দেখলেতো আরও খবর ছিল। তাই আমি আমার ঘরে যা পেতাম তাই নিয়ে যেতাম। তাই আমি চাল ডাল বা পেঁয়াজ ডিম বা কোন সবজি নিয়ে আসতাম। তবে আমি সব লুকিয়ে নিয়ে আসতাম। সেদিন সকাল থেকে তাকে থাকতাম কখন চুরি করা যায়।

প্রথমে একটা একটা করে জিনিস নিয়ে দৌড় দিয়ে খাটের নিচে লুকিয়ে রাখতাম।এরপর যখন দেখতাম বাসা থেকে সব চুরি করে যোগার হয়ে গেছে তখন দেখতাম মা কোথায়।যখন দেখতাম মা রান্না ঘরে বা এদিক সেদিক যেত তখন সব জামার নিচে করে দরজা খুলে দিতাম দৌড়। অবশ্য অনেক সময় ধরা পড়ে যেতাম। তখন মা বলতো ডালের মজা তলে। আরও একটি কথা বলতো জামাইরে পিঠা খাওয়াবো সেতে মনে মনে আছে। আর এই ডাল আর পিঠা হলো মার হাতের মার। কত মার খেয়েছি মার হাতে। কারন জোলাভাতি আমাদের প্রায় খেলা হতো।

এভাবে করে সবাই সবার বাসা থেকে এক একটা আইটেম এনে শুরু করে দিতাম আমাদের জোলাভাতি রান্না। অবশ্য আমি তখন রান্না করতে পারতাম না। আমাদের এলাকার তখন কিছু বড় আপু ছিল আর তারা আমাদের রান্না করে দিত। আর আমাদের জোলাভাতির খাবার খেত আমাদের সাথে। আর এভাবে চলতো আমাদের রান্না। এবার রান্না শেষে আমি কখনও খাবার টা শেষ করতে পারতাম না।নয়তো খেতামই না। কারন আমার মা চলে আসতো। আর আমাকে কানে ধরে নিয়ে গোসল করাতো আর পিঠে থাবরাতো।আবার অনেক সময় রুটি বানানোর বেলুন বা ডালঘুটনি সামনে রেখে দিত কত যে ডালঘুটনি আর বেলুনের মার খেয়েছি এই জোলাভাতির জন্য।

আর এভাবেই আমার আজকের পোস্ট রেডি করে আপনাদের সবার মাঝে শেয়ার করে দিলাম। যদি আপনাদের ভালো লাগে তাহলেই আমার স্বার্থকতা। আশা করি আপনাদের সবার কাছে আমার আজকের এই পোস্টটি অনেক ভালো লাগবে। আজ তাহলে এই পর্যন্তই। সবার সুস্থতা কামনা করে আজ এখানেই শেষ করছি।

পরিচিতি

আমি মাহফুজা আক্তার নীলা । আমার ইউজার নাম @mahfuzanila। আমি একজন বাংলাদেশী ইউজার। আমি স্টিমিট প্লাটফর্মে যোগদান করি ২০২২ সালের মার্চ মাসে। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে যোগদান করে আমি অনেক বিষয় শিখেছি। আগামীতে আরও ভালো কিছু শেখার ইচ্ছে আছে। আমি পছন্দ করি ভ্রমন করতে, ছবি আঁকতে, বিভিন্ন ধরনের মজার মাজার গল্পের বই পড়তে, ফটোগ্রাফি করতে, ডাই প্রজেক্ট বানাতে ও আর্ট করতে। এছাড়াও আমি বেশী পছন্দ করি মজার রেসিপি করতে। মন খারাপ থাকলে গান শুনি। তবে সব কিছুর পাশাপাশি আমি ঘুমাতে কিন্তু একটু বেশীই পছন্দ করি।

❤️ধন্যবাদ সকলকে❤️

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

আপু সত্যিই সবারই ছোটবেলার অনেক স্মৃতি আর সেগুলো শেয়ার করলে পড়তে খুব ভালো লাগে। তাছাড়া সবগুলো পড়লে নিজের শৈশবের কথাও মনে পড়ে যায়। জোলাভাতি যেন আমাদের শৈশবের সাথে একদম মিশে রয়েছে। আমরাও প্রায় সময় জোলাভাতি খেলতাম। তবে তারজন্য মায়ের কাছে বকা খেতে হয়নি বরং মা নিজেই আমাদের রান্না করে দিতো। কারণ আমরা সবাই ছোট ছিলাম আর রান্না করতে পারতাম না। তাছাড়া আগুনের কাছে গেলে যদি সমস্যা হয় তারজন্য মা রান্না করে দিতো। আমাদের উঠানে একটা গাছ ছিল, আমরা সবাই সেই গাছের ছায়ায় বসে কলা পাতায় খেতাম। সেই আনন্দ আর কখনও ফিরে আসবে না। কিন্তু স্মৃতি গুলো সবসময়ই রয়ে যাবে। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি ব্লগ শেয়ার করার জন্য।

আসলে জোলাভাতি শৈশবের সাথে মিশে আছে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু। সবসময় পাশে থাকার জন্য।

ছোটবেলায় আপনি এমন করতেন বলেই আমরা অনেক সময় পাহাড়ায় থাকতাম। আপনার জন্য ঘরের চাল, ডাল আলু কিছুই থাকতো না। তবে হাসির বিষয় কি জানেন? আপনি চুরি করে নিয়ে যেয়েও জুলাভাতি খেতে পারতেন না। আর আমি যেয়ে আপনার ভাগ খেয়ে আসতাম। যাই হোক ছেলেবেলার কথা মনে আছে যেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে এমন পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

হুম আপনার বন্ধবীরা আমাকে দিয়ে নিত আর আপনি খেতেন। ছোট ছিলাম বুঝতে পারিনি হিহিহি। ধন্যবাদ আপু।

ছোট বেলার মজার স্মৃতি ভুলা বেশ কঠিন। মনে পড়লে বেশ হাসি পয় কতকিছুই না করতাম ছোট বেলায়। নতুন নতুন কত খেলা ও খাবার খেতাম। আর সাথে থাকত মার হাতের পিটুনী। আজকাল বাচ্চারা সেই মজা থেকে বঞ্চিত। তারা মোবাইল ফোনেই আনন্দ খুঁজে পায়। মাঝে মাঝে মনে হয় সেই সময়ে ফিরে যেতে পারলে বেশ ভালো হতো। তাত সম্ভব নয়। শৈশবের মজার স্মৃতি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

সুন্দর কথা বলেছেন আপু এখনকার বাচ্চারা সেই মজা থেকে বঞ্চিত। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে পাশে থাকার জন।

ছোট সময়ের জোলাভাতি খেলার কথা মনে করিয়ে দিলেন। আসলে ঐদিন গুলো আমরা খুবই মিস করি। একবার বৃষ্টি হয় না এইজন্য চাল উঠিয়ে জোলাভাতি খেলেছিলাম। তখন দারুন আনন্দ হতো। আপনার অনুভূতি পড়ে দারুন লেগেছে। ধন্যবাদ।

হ্যাঁ ভাইয়া ছোট বেলা জোলাভাতি অনেক আনন্দ হতো। ধন্যবাদ ভাইয়া। সুন্দর মতামতের জন্য।