যে জীবন পথশিশুদের।

in hive-129948 •  7 months ago 


আসসালামু আলাইকুম




আশা করি সকলেই ভালো আছেন।আপনাদের দোয়া ও আশীর্বাদে আমিও ভালো আছি।আজকে আপনাদের সামনে শেয়ার করবো "যে জীবন পথশিশুদের!" বিষয়টি নিয়ে।এ বিষয়ে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করবো।যাতে করে এই শিশুদের জীবনমানের উন্নতি ঘটানো সম্ভব হয়।এরা সমাজের জন্য ক্ষতিকর নয় বরং এরাও সমাজের সম্পদ হতে পারে এই বিষয়টি তুলে ধরার ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা চালাবো।


free-photo-of-boys-on-street-in-village.jpeg
সোর্স


দেশে বাড়ছে পথশিশুর সংখ্যা। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, দেশের রাজনৈতিক দলের অপ্রত্যাশিত কর্মসূচি নানা হরতাল অবরোধ, মানুষজনের উদাসীনতা এসব নানাবিধ কারণে বাড়ছে পথশিশুর সংখ্যা। এই পথশিশুদের সম্পদে পরিণত করতে পারলে আমাদের দেশের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব, অন্যথায় এই শিশুরাই একসময় সমাজের জন্য হুমকি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আমাদের এক কোটির কাছাকাছি চলনশীল পরিবার রয়েছে।পথশিশু রয়েছে আনুমানিক ৩৬ লাখ। যদি একজন পথশিশুর দায়িত্ব একটি পরিবার নিতো তাহলে আমাদের দেশে পথশিশু খুজে পাওয়া যেতো না।


pexels-photo-3276967.jpeg
সোর্স



যে জীবন পথশিশুদের :

আপনি যদি রাত ১২ টার পর ঢাকার নিরিবিলি রাস্তাতে বের হয়ে কিছুপথ হাঁটেন।তবে আপনি নিশ্চিতভাবে বেশ কিছু সুন্দর ফুটফুটে বাচ্চা খুঁজে পাবেন।যদি আপনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন যে, 'কোথায় থাকো?' জিজ্ঞেস করতেই বলবে ফুটপাতের একাংশে পলিথিনের এক ছাপড়ায় মায়ের সঙ্গে থাকি বা রাস্তাতেই ফুটপাতে ঘুমায়।
গত কয়েকদিন আগে কমলাপুর স্টেশনে আমার সাথে দেখা হয় পথশিশু খোরশেদ আলম, লিমন ও অলিনের। বাড়ি কোথায় জিজ্ঞেস করতেই খুরশেদ আলম জানায় তার গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জে। 'কি করে এলে এখানে?'জিজ্ঞেস করলে প্রশ্নের জবাবে বলে, 'সিলেট থেকে আইছি ১৫ দিন আগে। তারা জানায় তাদের গ্রামের বাড়িতে তাদের থাকার এবং খাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই।তাই বাধ্য হয়ে শহরে এসেছে।বাবা মায়ের কথা জিজ্ঞেস করলে বলে কারো বাবা বা কারো মা নেই।যার বাবা নেই তার মা অন্যের সংসারে কাজ করেন তাই তার সেখানে জায়গা হয় নি। যাদের মা নেই তাদের বাবা অন্য বিয়ে করে তাদের খুঁজ খবর নিচ্ছে না।তাই বাধ্য হয়ে ঢাকা এসেছেন নিজের খাবারের খুঁজে।ঢাকাতে কেউ আছে কিনা জিজ্ঞেস করলে জানায় যে, 'যার দুনিয়াতে কেউ নাই তার এইনে কে থাকবে!' ওদের এই হৃদয়বিদারক কথা শুনে নিজের শরীর কাঁটা দিয়ে উঠে।


pexels-photo-3827820.jpeg
সোর্স



আমরা কি করতে পারি ওদের জীবনমান পরিবর্তনের জন্য :

জন্মের পর থেকেই পথশিশুরা জীবনযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে।নানা অপুষ্টিতে ভুগে বড় হতে থাকে ওরা। ওরা মানুষের মৌলিক অধিকারের সবগুলো থেকেই বঞ্চিত। না পায় শিক্ষার সুযোগ।না পায় চিকিৎসা। না পায় বাসস্থান। না পায় ভালো খাবার।এমন অনেক পথশিশু রয়েছে যারা জন্মের পরে মা কি জিনিস সেই স্বাদ নিতে পারে নাই।বাবা কি রকম হয় কখনো উপলব্ধি করার সুযোগ পায় নি।
বড় হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে শিশুরা পেটের ক্ষুধা মেটাতে নানা রকম কাজ বেছে নেয়। হকার, শ্রমিক, রিক্সাচালক, ফুল বিক্রেতা ইত্যাদি। অনেকে চুরি পকেট কাটার মতো নোংরা কাজে জড়িয়ে পড়ে ।অনেক শিশু মাদকসহ নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে যায়।
আমরা যদি এই পথশিশুদের নিয়ে কাজ করি, তাদের একটা সুস্থ জীবন দিতে পারি এরাও আমাদের দেশের সম্পদে পরিণত হবে।শিক্ষিত হলে এরা নিজেদের ভালো মন্দ বুঝতে সক্ষম হবে।তাই তাদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। পথশিশুদের নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে যাতে করে এদের মূল্যবোধ বৃদ্ধি পায়।মূল্যবোধ না থাকলে মানুষের জীবন ভুলপথে পরিচালিত হয়। তাদের দৈহিক ও মানসিক শক্তির সদ্ব্যবহার করার সুযোগ দিয়ে সমাজের মূলধারায় পুনর্বাসিত করতে হবে।তাদের অধিকারগুলো ভুগ করার সুযোগ দিতে হবে।কারণ এরাই ভবিষ্যতে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিবে। এরাই হবে আগামী দিনের দেশ ও জাতির কান্ডারি।আজকের শিশুরাই আগামীর ভবিষ্যৎ।


pexels-photo-12127821.jpeg
সোর্স


আর বড় করবো না।আশা করি সকলেই পথশিশুদের দিকে সুদৃষ্টি দিবেন।তাদের জীবনমান উন্নত করণে ভুমিকা রাখবেন।ধন্যবাদ সকলকে।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

এককভাবে কোনদিনও এই সমস্যাটির সমাধান করা সম্ভব নয় ভাইয়া। আমরা যদি সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে চেষ্টা করি সকলে একত্রিতভাবে তাহলে এই সমস্য কে নিরসন করা সম্ভব। হতে পারে এই পথ শিশুরাই আমাদের আগামী দিনের ভবিষ্যতের উজ্জ্বল নক্ষত্র। এখন কি দেশের জন্য গৌরব বয়েও নিয়ে আসতে পারে। এক কোটি পরিবার যেখানে সেখানে ৩৬ লাখ শিশু এক একটা পরিবারে নেওয়াটা কোনো ব্যাপার না। কিন্তু কে বা নিতে চাইবে। তবে এই পথশিশু গুলো যদি একটা আশ্রয় খুঁজে পেতো তাহলে হয়তো সমাজ পাল্টে যেত। বর্তমান সময়ের বাস্তবিক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন আপনি ধন্যবাদ।

সুন্দর মতামত দিয়েছেন।হ্যাঁ এককভাবে সম্ভব না এটার সাথে আমি সম্পূর্ণ একমত।তবে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পালটিয়ে এদের পাশে দাঁড়ানো উচিত। ধন্যবাদ আপনাকে মতামত দেওয়ার জন্য।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.