ভ্রমন পোস্ট- ঈদে আনন্দ ভাগাভাগি করতে শ্বশুর বাড়ী

in hive-129948 •  last year 

আসসালামু আলাইকুম

কেমন আছেন সবাই? আশা করি আপনারা সবাই বেশ ভালোই আছেন। আমিও আপনাদের দোয়া ও ভালবাসায় বেশ ভালই আছি । তবে গরমে বেশ অতিষ্ট হয়ে আছি। তবুও তো চলতে হয়। চলে যায় জীবন। তাই প্রতিদিনের মত করে আজও চলে আসলাম আপনাদের নতুন একটি পোস্ট নিয়ে।

চলে গেল ঈদ। আর এই ঈদ কে ঘিরে সবার কত আনন্দ আর ‍ উদ্দীপনা। ঈদের আনন্দ কে ভাগাভাগি করে নিতে মানুষ ছুটে যায় তার পরিবার পরিজনের কাছে। ছুটে যায় নারীর টানে গ্রামে। প্রতি ঈদেই আসলেই কিন্তু আমাকে যেতে হয় আমার শ্বশুরবাড়ী। না বেশী দূরে না। এই ঢাকায়। তাই এবারও গেলাম শ্বশুর বাড়ী ঈদ করতে। তবে আমার এবারের ঈদে বাড়ী যাওয়াটা কিন্তু অন্যবারের তুলনায় ভিন্ন ছিল। আর আজ আমি আপনাদের মাঝে এবারের ঈদে বাড়ী যাওয়ার ঘটনাটিই শেয়ার করবো।

ঈদে আনন্দ ভাগাভাগি করতে শ্বশুর বাড়ী.png

ছবি সোর্স
Made By-@maksudakawsar

যেহেতু এবার ঈদে আমার ছুটি ছিল না, তাই এবারের ঈদের আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম যে ঈদের দিন সকালে যাবো। আর সারাদিন বাড়ীর সবার সাথে ঈদ পালন করে বিকেলে ঢাকায় চলে আসবো। কারন তারপর দিনই শুধু ছুটি ছিল। আর সেই ছুটির দিনটা একটু রেস্টে থাকতে চেয়ে ছিলাম। তাই তো শ্বশুড়ী কে আগে ভাগে বলে রাখলাম। শ্বশুড়ীও না করলো না। এজন্য কোন আর গোছগাছ করার প্রয়োজন হয়নি। সিদ্ধান্ত হলো খুব ভোরে উঠে ফজরের পরে আমরা একেবারে ঈদের নতুন পোশাক পড়ে রওনা দিবো। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম আমি আর ঘুমাবো না সারারাতই জেগে থাকবো।

image.png

image.png

কিন্তু কি যে হলো, কখন যে চোখ লেগে এলো। আর আমরা যখন ঘুম থেকে উঠলাম তখন সকাল ৭.০০। অথচ সেখানে ঈদের জামাত সকাল ৮.৩০ মিনিটে। কি করবো এত অল্প সময়ে? বেশ তাড়া হুড়া করে তৈরি হয়ে দুজনে বের হয়ে গেলাম। বাসার নীচেই পেয়ে গেলাম একটা সি এন জি। তার সাথে এত বারগেনিং না করে ৫০০ টাকায় ঠিক করে নিলাম নারায়ণগঞ্জের জন্য। সিএনজি ওয়ালা মামাও বেশ ভালো ছিল সেও খুব দ্রুত আমাদের কে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলো। কিন্তু ভাগ্য বলে কথা ডেমরা স্টাফ কোয়াটারে যেয়ে সি এনজি গেল নষ্ট হয়ে । তাই বাধ্য হয়ে আবার নতুন সি এনজি ঠিক করতে হলো। এদিকে তো বাড়ি থেকে ফোনের উপর ফোন।

image.png

image.png

image.png

image.png

image.png

আমাদের ও বেশ টেনশন হচ্ছিল। অবশেষে পৌছে গেলাম আমরা সকাল ৮.০০টায় আমাদের গন্তব্য স্থলে।বাড়িতে যেয়ে কোন রকমে একটু সেমাই মুখে দিয়ে চলে গেল ঈদের জামাতে। যতক্ষনে সে ঈদের জামাকে গেল আমি বাড়ীর সবার সাথে ঈদের সালাম বিনিময় করে নিলাম। তারপর ঈদের জামাত শেষে আমরা আমাদের ঈদের মজার মজার খাবার খেলাম। খাওয়া দাওয়ার পর্ব শেষ হওয়ার পর পেলাম দুটো গিফট। একটা ব্যাগ আর একটা ঘড়ি। বেশ ভালোই কিন্তু লেগেছিল। বিশেষ করে ব্যাগটা কিন্তু আমার বেশ পছন্দ হলো।

image.png

image.png

image.png

তারপর শুরু হয়ে গেল সালামী দেওয়ার পর্ব। বাড়ীর ছোটদের কে কিন্তু ঈদ সালামী দিতে আমার প্রায় ৩৫০০/- চলে গেল। আর বিনিময়ে কিন্তু আমি সবার থেকে সালামী পেলাম ৪৫০০ টাকা। তার সাথে ব্যাগ আর ঘড়ি তো আছেই। বলেন তো দেখি আমার কত লাভ হলো। এবার শুরু করে দিলাম বাড়ীর পিচ্চি কাচ্চাদের ফটো সেশন পর্ব। বেশ কিছুটা সময় ওদের সাথে সময় কাটিয়ে নিলাম। আসলে বাচ্চাদের সাথে ঈদের আনন্দ টা ভাগ করে নেওয়ার মজাটাই আলাদা।

image.png

image.png

image.png

তারপর শ্বাশুড়ীর আদেশে এ বাড়ী সে বাড়ী করতে করতে বেলা প্রায় ১.০০ বেজে গেল। কোথা দিয়ে যে ঈদ চলে গেল বুঝতেই পারলাম না। তবে বাসায় বাসায় ঘুরে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগছিল। সেই ছেলে বেলার কথা মনে হয়ে গেল। যাই হোক বাড়ীর ছোট বউ বলে কথা। তাই আমাকে আর চূলার কাজে দেওয়া হয় না। আমার বড় ঝাঁ রা বলে বাড়ীতে আসছো একটু ঘুরো ফিরো আর খাও। তো কি আর করার।
তারপর দুপুরের খাওয়া দাওয়া করে বেশ কিছু ক্ষন বিশ্রাম নিলাম। বিকেলে আমরা একটু ঘুরতে বের হলাম। নদী পাড়, ব্রীজ আর মুড়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কিছু টা সময় কাটিয়ে নিলাম। আসলে এত গরমের মধ্যে বিকেলের সেই সময় টুকুই ছিল প্রানবন্ত। আর ব্রীজে তো মানুষের ভিড়ে পা রাখা যায় না। মানুষ মানুষের মাথা খায়। আর রিক্সা ভাড়ার কথাটা নাই বা বললাম।তারপর একটু সন্ধে হয়ে আসলে আমরা দুজনে রুপগঞ্জের পাগলা মামার ঝাল ঝাল পানি পুরি খেয়ে নিলাম। কি যে সেই পাগলা মামার ঝাল ঝাল ভিন্ন স্বাদের পানিপুরি। পুদিনার টক, তেতুলের টক , লেবুর টক আর যে কত নামের টক রয়েছে তার কাছে। সে আর বলতে। আমি পুদিনার টক দিয়ে দু প্লেট খেয়ে নিলাম। ঈদের দিনে একটু ফুচকা আর চটপুটি না খেলে তো আর ঈদ ঈদ লাগে না। তাই না?

image.png

image.png

image.png

image.png

বেশ কিছু টা সময় স্নিগ্ধ বাতাসে কাটানোর পর আমরা বাড়িতে চলে আসলাম। তারপর বাড়িতে এসে বাড়িরর সবার সাথে বেশ গল্প করতে বসলাম। যেহেতু ঢাকায় মায়ের বাসায় রাতের দাওয়াত ছিল তাই আর বেশী দেরী না করে সবার থেকে বিদায় নিয়ে ঈদের আমেজ কাটিয়ে চলে আসলাম ঢাকায়। তবে ঈদের আমেজের রাত্রের রাস্তা কিন্তু বেশ ভালোই লাগছিল। সি এন জি তে আমার তেমন সময় লাগে নি। মাত্র ৩০.০০ মিনিটে পৌছে গেলাম

image.png

কেমন লাগলো বন্ধুরা আপনাদের কাছে ঈদের দিনের আমার সারা দিনের ভ্রমন এর গল্প? আমি কিন্তু গিফট আর সালামী পেয়ে বেশ আনন্দে ছিলাম। আপনাদের মতামত গুলো জানার অপেক্ষায় রইলাম।

❤️ধন্যবাদ সকলকে।❤️

@maksudakawsar

image.png

image.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

image.png

কর্ম জীবনে মানুষের ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে তবুও ঈদের দিন বাড়িতে পরিবারের সাথে কাটাতে কতই না চেষ্টা করে থাকে। যেটা আপনি করেছেন ঈদের দিন সকালে বাড়িতে গিয়ে পৌঁছেছেন। সত্যিই তবুও এটা সেরা মুহূর্ত ছিল যতক্ষণই বাড়িতে ঈদের মুহূর্তটা ভাগাভাগি করেছেন। পরিবারের সাথে দারুন সময় উপভোগ করেছেন অনেক ভালো লেগেছে ভাই। তাছাড়া ঈদ সালামি পেয়েছেন নিজেও ঈদ সালামি দিয়েছেন তার পাশাপাশি ঘরি গিফট ওয়াও অসাধারণ।

জ্বী ভাইয়া বেশ সুন্দর সময় কাটিয়েছিলাম। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

আপনার ঈদের দিন তো তাহলে বেশ ভালোই কাটল পড়ে অনেক ভাল লাগলো। ঈদের মুহূর্তটি একা একা কাটালে ভালো লাগেনা সবার সাথে ঈদ করার মজাই আলাদা। আপনি তো ঈদের সময় খুব সুন্দর সুন্দর গিফট পেলেন দেখে অনেক ভালো লাগলো। তাছাড়া অনেক গুলো ঈদের সালামি টাকা পেলেন। বাচ্চাদেরকে ঈদের সালামি টাকা দেওয়ার আনন্দ অন্য রকমের ভাল লাগে। সাথে তো আপনি আরো অনেক বেশি পেয়ে গেলেন। অনেক সুন্দর একটি মুহূর্ত ছিল আপনার।

জ্বী আপু ঈদের সালামি দেওয়ার মাঝে আনন্দে অন্যরকমের । ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

ঘুম থেকে উঠতে প্রায় সাতটা বেজে গেলেও আমি মনে করি খুব তাড়াতাড়ি পৌঁছে গিয়েছেন‌। আর সবার সাথে খুব মজা করে ঈদ আনন্দ করেছেন। ছোটদেরকে ঈদের সালামি দেওয়ার মজাটাই অন্যরকম। তার মধ্যে আপনি অনেক টাকা সালামি পেয়েছেন। সাথে ব্যাগ ও ঘড়ি উপহার পেয়েছেন দেখে ভালো লাগলো। ঈদের দিন সবার সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করে সুন্দর মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

উপহার পেয়ে আমার বেশ ভালো লেগেছিল। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

আপু, আপনার শ্বশুর বাড়ি আত্মীয়-স্বজনদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়ার মুহূর্তটুকু পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। বিশেষ করে সকলের সাথে ঈদের সালাম বিনিময়ের কথাটি জানতে পেরে আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে। আপনি প্রতিটি যেন আপনার স্বজনদের সাথে এভাবেই উদযাপন করতে পারেন, এমনটাই আমি প্রত্যাশা করি।

জ্বী ভাইয়া দোয়া রাখবেন প্রতিবার যেন এভাবে ঈদ উদযাপন করতে পারি। ধন্যবাদ ভাইয়া।