বাঙালিরা অনেক রসনা বিলাসী হয়ে থাকে। আর খুব কম সংখ্যক বাঙালিই আছে, যারা তাদের রসনা কে কন্ট্রোল করতে পারে। আর তাই তো তারা সুযোগ পেলেই ভাল মন্দ খাওয়ার চেষ্টা করে। আমিও তাদের ব্যতিক্রম নয় কিন্তু। এই তো কয়েকদিন আগের কথা একটু ঝাল ঝাল মাংসের সাথে সাদা ঝড় ঝড়া পোলাও খেতে খুব ইচ্ছে হচ্ছিল। কিন্তু তাও আবার নিজের হাতে নয়। অন্য কারো হতে। তেমন কাউকেই তা আর বলতে পারলাম না। তাই নিজে নিজেই রান্না করে ফেললাম সাদা ঝড় ঝড়ে পোলাও। আর নিজের রান্না যে এত সুস্বাদু তা আমি সেদিনই বুঝতে পারলাম। আশা করি আপনাদেরও রেসিপিটি দেখে খুব ভাল লাগবে।

প্রস্তুত প্রণালী

ধাপ-১

প্রথমে ১কেজি পোলাও এর চাল ভালভাবে ধুয়ে নিয়ে তা হতে পানি ভাল করে ঝড়িয়ে আলাদা পাত্রে রেখে দিতে হবে। তারপর পেঁয়াজ কুচি করে কেটে আলাদা পাত্রে রাখতে হবে। এবার আলাদা একটা পাত্রে পোলাও রান্না করার জন্য চুলায় গরম পানি দিতে হবে। একটি গ্লাসে একগ্লাস গুড়ো দুধ কে নরমাল পানি দিয়ে লিকুইড করে নিতে হবে।এবার আলাদা একটি পাত্রে লবন , কাঁচা মরিচ, আদা রসুন বাটা, দারচিনি, এলাচ, লং এবং তেজপাতা গুছিয়ে রাখতে হবে।

ধাপ-২

চুলায় একটি পাত্র বসিয়ে তাতে পরিমান মত তেল দিয়ে গরম করে নিতে হবে। তেলটা একটু গরম হয়ে আসলে তার মধ্যে কুচি করে রাখা পেঁয়াজ হতে অর্ধেক টা পেঁয়াজ দিয়ে সামান্য লবন দিয়ে বেরেস্তা ভেজে নিতে হবে। বেরেস্তা ভাজা হয়ে গেলে, তা আলাদা একটি পাত্রে নামিয়ে রাখতে হবে।

ধাপ-৩

এবার ঐ একই পাত্রে আরও সামান্য তেল দিয়ে তাতে বাকী অর্ধেক পেঁয়াজ কুচি দিয়ে সামান্য লবণ দিয়ে ভেজে নিতে হবে। পেঁয়াজ গুলো একটু ভাজা ভাজা হলে তাতে একে একে এলাচ, দারচিনি এবং লং দিয়ে ভালভাবে লাল লাল করে ভেজে নিতে হবে। পেঁয়াজ ও মসল্লা ভাল করে ভাজা হয়ে গেলে তাতে আগে থেকে ধুয়ে রাখা পোলাও এর চালগুলো দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিয়ে আবার একটু নেড়ে দিয়ে ভেজে নিতে হবে।

ধাপ-৪

প্রায় পাঁচ মিনিট পোলাও এর চালগুলো ভাজা হলে, তাতে আদা রসুন বাটা আর তেজ পাতা চিরে দিয়ে দিতে হবে। এবার চালগুলো যতক্ষন না একটু লাল লাল হয়ে ভাজা হয়ে যাবে, ততক্ষন ভালভাবে নেড়েচেড়ে ভেজে নিতে হবে।খেয়াল রাখতে হবে যাতে চালগুলো পুড়া না লেগে যায়। |

ধাপ-৫

এবার চালগুলো ভাল করে ভাজা হয়ে গেলে তাতে আগে থেকে গরম করে রাখা পানি হতে পরিমান মত পানি দিয়ে চাল গুলো নেড়েচেড়ে দিতে হবে। তবে এই ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে যে , যাতে পানির পরিমান চার আঙ্গুলের বেশী না হয়। তারপর ঢাকনা দিয়ে চুলার আচঁ মিড়িয়াম করে প্রায় বিশ মিনিট রেখে দিতে হবে। এটাও খেয়াল রাখতে হবে যে, এই বিশ মিনিটের মধে কোন ভাবেই ঢাকনা তুলা যাবে না।

ধাপ-৬

প্রায় বিশ মিনিট পর ঢাকনা তুলে তাতে একে এক সামান্য লবন, আগে থেকে গুলিয়ে রাখা লিকুইড দুধ আর কয়েকটি কাঁচা মরিচ দিয়ে ভাল করে একটু নেড়ে দিয়ে আবার ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। এভাবে বেশ কয়েক মিনিট আরও ঢেকে রাখতে হবে। যাতে চালগুলো ফুটে উঠে।

ধাপ-৭

কিছুক্ষণ পর চালগুরো যখন ফুটে আসবে তখন ঢাকনা তুলে আবার ভাল করে নেড়ে দিতে হবে এবং চুলা নিবেয়ে দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ চুলার পর ঢাকনা দিয়ে দমে রেখে দিতে হবে। এতে করে পোলাও গুলো একটু ঝড় ঝড়ে হয়ে যাবে।

ধাপ-৯

পোলাও টা একটু ঝড় ঝড়ে হলে তা চুলা হতে নামিয়ে নিয়ে আলাদা একটি ডিসে নামিয়ে নিতে হবে।

শেষ ধাপ

এবার ডিসে নামিয়ে রাখা পোলাও এর উপর আগে থেকে ভেজে রাখা বেরেস্তা গুলো ভাল ভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে। এখন পোলাও এর একটি সুন্দর লুক ফুটে উঠবে।

উপস্থাপনা

তো তৈরি হয়ে গেল আমার ঝড় ঝড়ে পোলাও রান্না। রান্নাটি করার পর খেয়ে আমি বেশ স্বাদ পেয়েছিলাম। তাই আগে থেকে রেসিপিটির কিছু ছবি আপনাদের জন্য কাভার করে রেখে ছিলাম। যাতে করে আপনারাও জানতে পারেন আমার পোলাও রান্নার বিভিন্ন ধাপ সম্বেন্ধে।

ডিভাইস ও মডেল	Oppo A16
ফটোগ্রাফার	@maksudakawsar

কেমন লাগলো আমার আজকের রেসিপি? জানাতে ভুলবেন না যেন।

আপনারা সবসময় প্রাণবন্ত, ভাল ও সুস্থ্য থাকুন।

❤️ধন্যবাদ সকলকে।❤️

@maksudakawsar