বেগুন আলু দিয়ে মজাদার বোয়াল মাছ রেসিপি

in hive-129948 •  2 years ago  (edited)

আসসালামু আলাইকুম।

শীতের আগমনী বার্তা বইছে চারদিকে। বাংলার ঋতু বদলের এই সময় আমরা অসাবধনতা বশতঃ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ি। এরই মধ্যে সকলের সুস্থ্যতা কামনা করি। আশা করি সকলে ভাল ও সুস্থ্য আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে এবং আপনাদের দোয়ায় বেশ ভাল আছি।

শীতের এই আগমনী বার্তা আমাদের কে জানান দিয়ে যাচ্ছে যে কনকনে ঠান্ডায় নতুন সবজীর নতুন রেসিপি তৈরি করতে হবে। আর বাঙ্গালী নারী হিসাবে প্রতিটি নারীই চায় তার খাওয়ার টেবিলটি সাজানো হোক শীতের সবজির নতুন নতুন আকর্ষণীয় রেসিপিতে।

আজ আমি আপনাদের জন্য সেরকমই একটি শীতের রেসিপি নিয়ে এসেছি। যে রেসিপিটি হলে খাবার টেবিলে এক প্লেট বেশী খাবার সবাই খেতে চাইবে অনায়াসে। বিশ্বাস না হলে রেসিপিটি একবার বাসায় চেষ্টা করে দেখার অনুরোধ রইল। আর আমার আজকের রেসিপিটি হলো বেগুন আর আলু দিয়ে বোয়াল মাছ রান্না।

image.png

তাহলে চলুন দেখে আসি আমাদের আজকের বেগুন আর আলু দিয়ে বোয়াল মাছ তরকারি রান্নার রেসিপি।

বেগুন আর আলু দিয়ে বোয়াল মাছ তরকারি রান্নার রেসিপি

প্রয়োজনীয় উপকরণ সমূহ

ক্রমিকবিবরনপরিমান
বোয়াল মাছ৬ পিস
তেলপরিমান মত
কাঁচা মরিচ৪/৫টুকরা
পিয়াজ কুচি৩/৪টি
আদা বাটা১ চা চামচ
রসূন বাটা১চা চামচ
হলূদ গুড়া১ চা চামচ
মরিচ গুড়া১চা চামচ
জিরা গুড়া১চা চামচ
১০লবনপরিমান মত
১১আলু২/৩টি
১২বেগুন২৫০গ্রাম
১৩ধনেপাতাপরিমান মত

প্রস্তুত প্রণালী

প্রথম ধাপ

প্রথমে রান্নার জন্য একটি মাঝারী সাইজের বোয়াল মাছ কেটে পিস করে ভালভাবে ধুয়ে রাখতে হবে। এবার ২৫০ গ্রাম বেগুন ও ২/৩ টি আলু কে তরকারির জন্য কেটে ভাল করে ধুয়ে আলাদা আলাদা পাত্রে রাখতে হবে। মাছ ও তরকারি কাটা হয়ে গেলে ৩/৪ টি পিয়াজ কুচি, আদা রসুন বাটা, ৪/৫টি কাঁচা মরিচ, লবন এবং হলুদ, মরিচ, জিরা গুড়া ও ধনিয়া পাতা কুচি রান্নার জন্য গুছিয়ে রাখতে হবে।

image.png

দ্বিতীয় ধাপ

এবার চূলায় একটি পাত্রে পরিমান মত তেল দিয়ে তাতে কুচি করে রাখা পিয়াজগুলো ভাল করে ভেজে নিতে হবে। যাতে ভাজা পিয়াজগুলো বাদামী রং এর হয়।

image.png

তৃতীয় ধাপ

এবার ভেজে রাখা পিয়াজগুলো তে একে একে আদা রসুন বাটা, হলুদ মরিচ গুড়া এবং সামান্য একটু লবন দিয়ে নেড়েচেড়ে দিতে হবে। যাতে করে মসল্লার গন্ধটা চলে যায়। এবার ভালভাবে মেশানো হলে তাতে সামান্য একটু পানি দিয়ে আবার ভালভাবে নেড়ে দিতে হবে। যাতে মসল্লা পোড়া না লাগে।

image.png

চতুর্থ ধাপ

এ পর্যায়ে কষানো মসল্লাতে আরও এককাপ পানি দিয়ে তাতে ঢাকনা দিয়ে মসল্লা ভালভাবে কষিয়ে নিতে হবে। যাতে মসল্লার উপর তেল ভেসে উঠে এবং কাচাঁ মসল্লার গন্ধটা না থাকে। প্রায় ১০ মিনিটের মত মসল্লা কষানো হয়ে গেলে তাতে ধুয়ে রাখা মাছের পিছগুলো দিয়ে একটু নাড়া দিয়ে মসল্লার সাথে মাছ গুলো মিশিয়ে দিতে হবে।

image.png

পঞ্চম ধাপ

কিছুক্ষন পরে ঢাকনা তুলে কষানো মাছগুলো আরও একটু নেড়ে দিতে হবে। যাতে মাছ গুলোতে মসল্লা ঢুকে যায়। এভাবে আরও কিছুক্ষন ‍চুলার আচ মাঝারী আকারে রেখে মাছগুলো কষানোর জন্য চুলায় রেখে দিতে হবে।

image.png

ষষ্ঠ ধাপ

মাছগুলো মসল্লার সাথে ভালভাবে কষানো হলে খুব সুন্দর মসল্লার একটি ঘ্রাণ ভেসে আসবে। এরপর কষানো মাছগুলো কে একটি আলাদা পাত্রে নামিয়ে রাখতে হবে।

image.png

সপ্তম ধাপ

এখন আগের পাত্রে কষানো মসল্লার মধ্যে প্রথমে কেটে রাখা আলুগুলো দিয়ে বেশ কিছুক্ষন মসল্লার সাথে ভালভাবে কষিয়ে নিতে হবে। যাতে আলুগুলো একটু একটু লাল রং ধারন করে। এরপর এরমধ্যে কেটে রাখা বেগুনগুলো দিয়ে আলু ও বেগুন ভাল করে মসল্লার সাথে মিশেয়ে নিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিতে হবে এবং এভাবে বেশ কিছু সময় রেখে দিতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে আলু আর বেগুন পোড়া না লেগে যায়। এজন্য কিছুক্ষন পর পর ঢাকনা তুলে একটু নেড়ে দিতে হবে।

image.png

অষ্টম ধাপ

তরকারি গুলো মসল্লার সাথে ভালভাবে কষানো হলে কিছুক্ষন পর ঢাকনা তুলে আবার ও ভাল ভাবে নেড়ে চেড়ে তাতে পরিমান মত পানি দিয়ে দিতে হবে। এবার কিছুক্ষন অপেক্ষা করে তরকারি ঝোল একটু ফুটে উঠলে এবং তরকারি ভালভাবে জ্বালে আসলে কষিয়ে রাখা মাছের পিছগুলো তরকারির উপর একে একে ছড়িয়ে দিয়ে হালকাভাবে নেড়ে দিতে হবে। যাতে মাছগুলো মসল্লার মধ্যে ডুবে যায়। তারপর আবার ঢাকনা দিয়ে তরকারি ঢেকে দিতে হবে। দশ মিনিট পর ঢাকনা তুলে তাতে কয়েকটি কাঁচামরিচ দিয়ে কিছুক্ষন অপেক্ষা করতে হবেে। এর মধ্যে তরকারিতে লবনের পরিমান চেক করে নিয়ে প্রয়োজনে সামান্য লবন দিতে হবে।

image.png

নবম ধাপ

কিছুক্ষণ পর ঢাকনা তুলে তাতে কুচি করে রাখা ধনে পাতা ছড়িয়ে দিয়ে একটু নেড়েচেড়ে দিতে হবে। তারপর তরকারির ঝোলগুলো একটু শুকিয়ে আসলে তার উপর ভেজে রাখা জিরা গুড়া দিয়ে দিতে হবে। এবার লক্ষ্য করলে দেখা যাবে তরকারি থেকে একটি সুন্দর ঘ্রাণ বের হচ্ছে। তো হয়ে গেল বেগুন আলু দিয়ে মজাদার বোয়াল মাছ রান্না। এবার চুলা হতে তরকারি নামিয়ে ফেলতে হবে।

image.png

পরিবেশন ও শেষ ধাপ

শেষ হয়ে গেল মজাদার বেগুন আলু দিয়ে বোয়াল মাছের তরকারি রান্না। এখন একটি ডিসে নামিয়ে নিয়ে সুন্দর ভাবে পরিবেশন করতে হবে গরম গরম বেগুন আলু দিয়ে বোয়াল মাছের তরকারি রান্না রেসিপি।

image.png

তো বন্ধুরা হয়ে গেল আমাদের মজাদার বেগুন আর আলু দিয়ে বোয়াল মাছ তরকারি রান্নার রেসিপি। কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না যেন।

ছবিতে ব্যবহার করা ডিভাইসOppo
মডেলA16
ফটোগ্রাফার@maksudakawsar
ক্যাটাগরীমজাদার বেগুন আলু দিয়ে তরকারি রান্নার রেসিপি
ফটোগ্রাফির অবস্থানখিলগাঁও, ঢাকা

ধন্যবাদ সকলকে। আপনারা সকলে ভাল ও সুস্থ্য থাকুন।

মাকসুদা আক্তার
খিলঁগাও, ঢাকা, বাংলাদেশ
@maksudakawsar

image.png

HNWT6DgoBc14riaEeLCzGYopkqYBKxpGKqfNWfgr368M9WUZdzPkwTENnojKDHvr5DRhZDAbzcbZLMvzP7a4yGroX9CFKkqrkiC7r9ti1h6vx7rfrRtSCF6wiyt.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

শরীরে হালকা শীতের অনুভূতি আমাদেরকে শীতের আগমনী বার্তা দিয়ে যাচ্ছে। শীতকাল মানেই মজার মজার সব খাবার। শীতের সবজি খেতে খুবই ভালো লাগে। বোয়াল মাছের সাথে বেগুন আলু দিয়ে রান্না করেছেন দেখেই খেতে ইচ্ছা করছে। আসলে আপনার রেসিপির কালার এত সুন্দর এসেছে মনে হচ্ছে খেতেও বেশ মজার হয়েছিল। সত্যি আপু আপনার তৈরি করা রেসিপি দারুন লোভনীয় হয়েছে।

ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য। তবে হ্যাঁ রেসিপি অনেক মজাদার ছিল।আমার যতদূর মনে পড়ে আপনার ভাইয়া সেদিন ৪ প্লেট ভাত খাইছে

অনেক মজাদার এবং সুস্বাদু একটি মাছ হচ্ছে বোয়াল মাছ। শীতকালীন সময়ে বেগুন 🍆 আলু 🥔 দিয়ে রান্না করলে এক প্লেট খাবার আমার বেশি লাগে এটা শিওর। রান্নার পরিবেশনা দেখে বোঝা যাচ্ছে অনেক সুস্বাদু হয়েছে। রান্নার প্রসেস সমূহ প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত খুবই সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। ধন্যবাদ আপু আপনাকে সুন্দর এবং মজাদার একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য।

জ্বী ভাইয়া আমি এই কথাই বলি শীতকালে বল মাছ দিয়ে ভাত খেলে এক প্লেট ভাত বেশি লাগে। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

image.png

Thank you

আগে আমাদের এদিকে বিভিন্ন জলাশয় প্রচুর পরিমাণ বোয়াল মাছ পাওয়া যেতো ।এখন যত দিন যাচ্ছে ততই বোয়াল মাছ আর পূর্বের মতন পাওয়া যায় না। আপনি খুব সুন্দর করে বেগুন আলু দিয়ে মজাদার বোয়াল মাছের রেসিপি তৈরি করেছেন। আসলে অনেকদিন হয়েছে বোয়াল মাছ খাওয়া হয়নি আপনার রন্ধন প্রক্রিয়া দেখে খেতে খুব ইচ্ছে করতেছে। এত চমৎকার একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।

ভাইয়া এটা শুনে অনেক মজা লাগলো যে আপনাদের এখানে বোয়াল মাছ পাওয়া যেত। সেই সাথে আপনাকে অত্যন্ত ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

বোয়াল মাছ আমার খুবই প্রিয় তবে অনেক বছর হয়েছে বোয়াল মাছ খাওয়া হয়না। আজ আপনি বোয়াল মাছ দিয়ে বেগুনের তরকারি রান্না করেছেন দেখে খেতে ইচ্ছে করছে। আপনার রান্নার ধরন আমার খুবই পছন্দ হয়েছে আপনি খুব সুন্দর ভাবে দেখিয়েছেন ধন্যবাদ।

যে আপু একবার রান্না করে খেয়ে দেখেন অনেক মজা পাবেন। আর আপনার এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

শীতের আগমনী বার্তা জেনে শীতেী রেসিপি তৈরি করেছেন দেখে খুব ভালো লাগলো।বেগুন আলু দিয়ে বোয়াল মাছের রেসিপি টি দেখে খেতে ইচ্ছা করছে আপু।আপনি ধনে পাতা দিয়ে পরিবেশন করেছেন এজন্য আরও বেশি ভালো লাগছে।অনেক ধন্যবাদ আপু চমৎকার রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

আপু আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ অনেক সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য। তবে আপনার মন্তব্যটিতে একটু সামান্য বানানে ভুল আছে।

বোয়াল মাছের রেসিপি বেগুন আলু দিয়ে কালার টা দারুন হয়েছে আপু।খেতেও নিশ্চয় দারুন হয়েছিল।বোয়াল মাছ আমাদের বাসায় কেউ খায় না ।এই মাছ শুনেছি খেতে ভালোই হয়।ধন্যবাদ সুন্দর বেগুন আলু দিয়ে বোয়াল মাছের রেসিপি শেয়ার করার জন্য।

আপু আপনাকে ধন্যবাদ অনেক সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য। এই মাছটি খেতে অনেক সুস্বাদু হয়।

আপু আপনাকে ধন্যবাদ অনেক সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য। এই মাছটি খেতে অনেক সুস্বাদু হয়।

বোয়াল মাছ আমি তেমন একটা পছন্দ করি না তবে আপনি বোয়াল মাছের যে রেসিপিটি তৈরি করেছেন তা দেখে মনে হচ্ছে অনেক টেস্টি এবং মজাদার ছিল। আর রেসিপির প্রতিটি ধাপ অনেক সুন্দর ভাবে বর্ণনা করেছেন এটি আমার অনেক ভালো লেগেছে।

রেসিপিটি খুব টেস্ট হয়েছিল। যে কেউ অনায়েসে চার প্লেট ভাত খেতে পারতো।

অনেক সুন্দর হয়েছে আপু।শীতের সবজী দিয়ে অনেক সুস্বাদু ও পুষ্টিকর রেসিপি শেয়ার ।মৌসুমী রেসিপি বলা যেতে পারে। হাহাহা।অনেক ধন্যবাদ আপু সুন্দর,সুস্বাদু ও পুষ্টিকর রেসিপি শেয়ার করার জন্য।বানান এর প্রতি আরেকটু যত্নশীল হবেন আশা করি।

জ্বী ভাইয়া আগামীতে পোস্টগুলো অবশ্যই আরো যত্ন নিয়ে দিব। সুন্দর একটি নাম দিয়েছেন মৌসুমী রেসিপি। ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।