রাতের নীরবতা

in hive-129948 •  2 years ago 

হ্যালো আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আসসালামু আলাইকুম/আদাব। সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন আশা করছি। আমিও মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ। সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমার ব্লগ লেখা শুরু করছি।

Picsart_23-04-16_12-10-17-937.jpg

রাতের নীরবতা দেখতে খুব ভালো লাগে। অসাধারণ একটা অনুভূতি হয় নির্জন নিস্তব্ধ রাস্তা দিয়ে একা একা হাঁটতে। যদিও মনের মাঝে একটু ভয় কাজ করে। যখন মৃদু বাতাস এসে গাছের পাতাগুলো দোলা দিয়ে যায় তখন আশেপাশের হালকা শব্দে কেঁপে ওঠে মন।

জানি এটা বাতাসের শব্দ তবুও এত রাতে নির্জন ফাঁকা রাস্তায় কেমন জানি মনে হয়। মনটা ধুকধুক করে, কখনো রাত্রে এভাবে একা বাইরে আসা হয় না তাই এমনটা মনে হচ্ছিল। আসলে হরর মুভি দেখতে দেখতে আমাদের এই অবস্থা হা হা হা।

গতকাল রাতের কথা বলছি, সারা দিনের প্রচন্ড তাপদাহের পর রাতে একটু শান্তিতে ঘুমাবো এটাই প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু গরম শুরু হতে না হতেই প্রচন্ড লোডশেডিং শুরু হয়ে গিয়েছে। সবেমাত্র চোখে ঘুম ঘুম ভাব চলে এসেছে ঠিক সেই মুহূর্তে লোডশেডিং শুরু হয়ে গেল। প্রচন্ড গরমে ঘরে টিকতে পারছি না।

এমনিতেই সারাদিন রোজা রেখে প্রচন্ড গরমে শরীর ক্লান্ত ছিল। অল্প কিছুক্ষণ পরেই সেহরির জন্য উঠতে হবে কিন্তু ঘুম আর হলো না। বাইরে হাঁটতে বেরিয়ে পড়লাম যদি কিছুটা ঠান্ডা বাতাস পাওয়া যায় সেই আশায়। এক্ষেত্রে একটু বেশিই পাওয়া গেল, ঠান্ডা বাতাসের সাথে রাতের সৌন্দর্য উপভোগ করলাম।

IMG_20230416_120038.jpg

যদিও কিছুক্ষণ পর কারেন্ট চলে এসেছিল কিন্তু আমি যখন একবার বেরিয়ে পড়েছি তখন সহজে আর বাসায় ফিরছি না। সেহরির আগ মুহূর্ত পর্যন্ত বাইরে সময় কাটিয়েছি। যাইহোক ধানক্ষেতের উপর যখন রোড লাইটের আলো পড়ছে তখন সেই দৃশ্য দেখে খুব ভালো লাগলো।

সারাদিনের কর্মব্যস্ততার মাঝে রাতের নীরবতা শুরু হয় আজ সেই দৃশ্যগুলো দেখার খুব ইচ্ছা হল। তাই ধীরে ধীরে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকলাম।

IMG20230415223906.jpg
IMG20230415224327.jpg

রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে রক্ষা করলাম রাতের নীরবতা আজকে একটু বেশি। হঠাৎ অন্ধকারে একটি সাইকেলের আওয়াজ শুনে ঘুরে তাকালাম। আবারো সেই হরর মুভির কথা মনে পড়ে গেল।

যাইহোক আজকে যখন হাঁটতে বেরিয়েছি রাতে তখন যতদূর যাওয়া সম্ভব ঘুরে আসি। নির্জন ফাঁকা রাস্তা দেখতে কিন্তু বেশ ভালোই লাগছে। দিনের বেলা কর্মব্যস্ততার মাঝে ব্যস্ত রাস্তাঘাট এতটা ভালো লাগে না।

IMG20230415224453.jpg
IMG20230415224515.jpg

কিছুক্ষণ নিরবে হাঁটতে হাঁটতে মাঝে মাঝে দু একটা মোটর বাইক ও রিক্সার দেখা পাওয়া যাচ্ছিল। তারা নিশ্চয়ই আমার মত রাতের নীরবতা দেখতে বের হয়নি। কোন না কোন প্রয়োজনের তাগিদেই বাইরে বের হয়েছিল।

কিছুক্ষণ পর রিক্সায় দুজন যাত্রীকে দেখতে পেয়ে একটু আশ্চর্যই হলাম। তাদের হাতে বেশ কিছু ব্যাগ দেখে বুঝতে বাকি রইলো না যে তারা ঈদের জন্য শপিং করে আসছিল। কি আশ্চর্য ব্যাপার এত রাতেও কেনাকাটা চলে। শহরের দোকানপাট অনেক আগেই বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা। সম্ভবত তারা রংপুর থেকে আসছিল।

IMG20230415224409.jpg
IMG20230415224434.jpg

আরেকটু এগোতেই পানির কল কল শব্দে আবারও নীরবতা কেটে গেল। কাছে গিয়ে দেখি সেচ পাম্প চলছে এভাবেই সারারাত চলবে ধান খেতে সেচ দেয়া। সবাই যার যার মত ব্যস্ত জীবন কাটায়। আমাদের মধ্যে অনেকেই সে সময়ে ঘুমিয়ে রাত কাটাচ্ছে।

অথচ যারা কৃষি কাজের সাথে জড়িত তারা এই সময়টাতে দিনরাত পরিশ্রম করে আমাদের জন্য খাদ্যের যোগান দেয়। আমরা কখনো ভেবেও দেখি না এই খাদ্যশস্য ফলানোর পিছনে তারা কতটুকু পরিশ্রম করে। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে আমাদের খাদ্য ভান্ডার এত সমুন্নত।

IMG20230415224118.jpg

এটি আমাদের জেলা শহরের প্রধান খাদ্য গুদাম এখানে দিনের বেলা অনেক কর্মচাঞ্চল্য থাকে। অথচ এখন দেখে বোঝাই যাচ্ছে না। কি পরিমান নিরবতা বিরাজ করছে এইখানে।

দিন ও রাতের আলাদা আলাদা সৌন্দর্য্য আছে। রাতের অন্ধকার না থাকলে দিনের আলো এত চমৎকার হতো না। রাতের অন্ধকারে একাকিত্বে চলতে থাকলে ভালো লাগার অনেক মুহূর্ত খুঁজে পাওয়া যায়। শেষ পর্যন্ত রাতের নীরবতাকে পেছনে ফেলে বাসায় ফিরতে হলো।

বন্ধুরা আজ আর লিখছিনা। অন্য কোনদিন অন্যকিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে আসবো। আজকের জন্য বিদায় নিচ্ছি। সবার জন্য শুভকামনা। আল্লাহ হাফেজ।


আমাদের উইটনেসকে সাপোর্ট করুন

"Please support Bangla Witness"


https://steemitwallet.com/~witnesses




VOTE @bangla.witness as witness
witness_proxy_vote.png
OR

SET @rme as your proxy

witness_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

কি আর বলবো ভাই আমারও একই অবস্থা। বাড়িতে এত পরিমান গরম ঘরের মধ্যে টেকা দায় হয়ে গিয়েছে। তাই তো কারেন্ট যখন চলে যায় তখনই বাইরে বের হয়ে যাই। কারণ কারেন্ট যাওয়ার সাথে সাথে ঘরের মধ্যে যেন আগুন খেলা খেলতে থাকে। বাইরে কিছুটা শীতল বাতাস যেটা শরীরে শান্তি নিয়ে আসে। তবে আপনি হাঁটতে হাঁটতে রাতের শীতলতা এবং নীরবতা দুটোই উপভোগ করেছেন, পড়ে ভালই লাগলো।