জেনারেল রাইটিং :ঝাড়ুদার।

in hive-129948 •  5 months ago 

হ্যালো..!!
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@md-razu বাংলাদেশের নাগরিক।

আজ -৩০ শে, জৈষ্ঠ্য,|১৪৩১ বঙ্গাব্দ||বুধবার||গ্রীষ্মকাল||



আমি রাজু আহমেদ।আমার ইউজার নাম @md-razu।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।

তাহলে চলুন শুরু করি


জন্মের পর থেকে আমৃত্যু কেউ সুখে বসবাস করেন আবার কাউকে সারা জীবন সংগ্রাম করে বেঁচে থাকতে হয়। তাদের জীবনের সংগ্রাম যেন শেষ হয় না। এমনই এক সংগ্রামী বৃদ্ধ আকো আলী।


cleaning-2650469__480.jpg


প্রথমে কিছু লোক তার এ পেশাকে ভালোভাবে গ্রহণ করেনি। অনেকেই হাসি-ঠাট্টা ও সমালোচনা করতো। আবার কিছু লোক তাকে সহযোগিতাও করেছেন। তার সারাটা জীবন দুঃখে কষ্টে কেটে গেল ।আমি যখন খুব ছোট তখন থেকে তাকে দেখছি বাজারে ঝাড়ু দেওয়া। সে প্রতিদিন দুইবার বাজার ঝাড়ু দিত। সকালে ঘুম থেকে উঠে যেয়ে একবার ঝাড়ু দিয়ে আসতো এবং বিকেলে একবার ঝাড়ু দিত ।এতে বাজারে যতগুলা দোকান আছে তারা প্রত্যেকেই তাকে সহযোগিতা করতেন। কেউ টাকা দিয়ে সহযোগিতা করতো আবার কেউ বিভিন্ন ধরনের পণ্য দিয়ে সাহায্য করতেন।


corona-5123437__480.jpg


এই ঝাড়ু দিতে গিয়ে তাকে অনেক কিছু সহ্য করতে হয়েছে। বিভিন্ন দোকানদার তার উপর চড়াও হয়েছে আবার কিছু দোকানদার তাকে অনেক সহযোগিতা করেছে ।তার পরিবারের একটা ছেলে ও একটা মেয়ে আছে মেয়েটার বিয়ে হয়েছে ।এবং ছেলেটা বর্তমানে লেখাপড়া করেছেন। তার লেখাপড়ার টাকা যোগান দিতে তাকে এই পন্থা বেছে নিতে হয়েছে। আসলে মানুষের জীবনটাই এইরকম কেউ অনেক সুখের জীবন কাটায় আবার কেউ দিনের পর দিন কষ্ট করে জীবন কাটিয়ে থাকে। আসলে সৃষ্টিকর্তা এরকমই হয়তো আমাদের সৃষ্টি করেছেন। কেউ সারা জীবন সুখে দিন কাটিয়ে থাকে আবার কারোর প্রতিটা মুহূর্ত কাটে কষ্টে। হয়তো এই জীবনে সে অনেক কষ্ট করছে কিন্তু পরের জীবনে যে সুখও পেতে পারে।


corona-5123439__480.jpg


তার সংসারের চারজন সদস্য হওয়ায় তাকে প্রতিদিন এই কাজে নিযুক্ত থাকতে হয়েছে। তার ছেলে লেখাপড়ায় ব্যস্ত থাকে এবং সাথে সাথে টিউশনিও করায়। টিউশনি করিয়ে যে টাকা উপার্জন হয় তার লেখাপড়া খরচ চালায় এবং তার বাবার কাছ থেকে কিছু নিয়ে থাকে। সে একটা কথা ভেবে হয়তো সান্ত্বনা পেতে পারে তার ছেলে এক দিন মানুষের মত মানুষ হয়ে অনেক বড় একটা চাকরি করবে। তার দেখাশোনা করবে। আমার জানামতে তার ছেলে খুবই ভালো একজন স্টুডেন্ট সেই লেখাপড়ার পাশাপাশি বাবার কাজে অনেক সহযোগিতা করে থাকে। ঝাড়ুদার আকোর বউ কিছুদিন আগে মারা যায় তাতে তাদের পরিবারে একটা শোকের ছায়া নেমে আসে। আসলে গরিব মানুষ কিছু করার নেই ভালো চিকিৎসা দিতে পারেনি টাকার অভাবে। হয়তো চিকিৎসা করালে আরো কিছুদিন বেঁচে থাকত তাদের মাঝে। কিন্তু এটাই বাস্তবতা এটাই মেনে নিতে হবে তাদের। তার ছেলের ভালো একটা কাজ না পাওয়া পর্যন্ত তাকে এভাবে দিনের পর দিন কষ্ট করে যেতে হবে ।


sweep-6179963__480.jpg


রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে তাকে প্রতিদিন ঝাড়ু দিতেই হবে। আমরা হয়তো অনেকেই চাকরি করি সপ্তাহে একদিন হলেও ছুটি পাই ।কিন্তু তার আর ছুটি পাওয়া হয় না। যে কাজই হোক তার প্রতিদিন দুইবার পুরো বাজারটাকে ঝাড়ু দিতে হয়। সৃষ্টিকর্তা চাইলে এই অভাব থেকে তারা একদিন মুক্ত হতে পারবে ।তারা সুখের সংসার বাঁধতে পারবে ।সৃষ্টিকর্তা চাইলে সবই সম্ভব। যতদিন বেঁচে থাকবে হয়তো তার এই কাজটাই করে যেতে হবে।



আমার পরিচয়

IMG-20240308-WA0014.jpg

আমি মো: রাজু আহমেদ, আমি একজন ছাত্র। আমি বর্তমানে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটিতে মেকানিক্যালে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং এ লেখাপড়া করছি। আমি একজন ভ্রমণ প্রিয় মানুষ। প্রকৃতির মাঝে ঘুরে বেড়াতে ভীষণ পছন্দ করি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, রান্না করতে, বই পড়তে, কবিতা পড়তে, খেলাধুলা করতে খুবই পছন্দ করি।স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ করতে অনেক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।


ধন্যবাদ সবাইকে


standard_Discord_Zip.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

ঝাড়ুদার আকো আলীকে নিয়ে সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন ভাইয়া। কোন পেশাই অবহেলার নয়।আমাদের দেশে সব পেশাকেই সম্মান দেয়ার সংস্কৃতি এখনো গড়ে উঠেনি। হয়ত একদিন আমরা সব পেশাকেই সম্মান দিতে পারবো।জীবন সংগ্রামে ঠিকে থাকতে কতজনেই না কত পেশায় যুক্ত। আমাদের উচিত সব পেশাকেই সম্মান জানানো।ঝাড়ুদার আকো আলীর প্রতি শ্রদ্ধা।পোস্টটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।