||আম কুড়ানোর গল্প||১০%@shy-fox এর জন্য

in hive-129948 •  5 months ago 

আমার বাংলা ব্লগের সকলসদস্যবিন্দু আমার নতুন একটি ব্লগে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম !
আমি @mdemaislam00 বাংলাদেশ থেকে।আজ শনিবার, জুন ০১/২০২৪


street-3390317_1280.jpg
Source




হ্যালো বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি। আশাকরি আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যবৃন্দ আল্লাহর রহমতে ভালো আছে। আমার নাম ইমা অন্য দিনের মতো আজও আমি আপনাদের সাথে নতুন কিছু শেয়ার করতে এসেছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে আম কুড়ানোর কিছু গল্প শেয়ার করব ।সবারই হয়তো কিছু না কিছু পুরনো গল্প মনে পড়ে যায় বা পুরনো গল্পগুলো আবারো চোখের সামনে ভেসে ওঠে ।আমারও ঠিক তেমন হয়েছে । কয়দিন ঝড় বৃষ্টির কারণে আবারও ছোটবেলায় সে আম কুড়ানোর কথা মনে পড়ে গেল ।তাহলে চলুন বন্ধুরা দেরি না করে ছোটবেলার সেই আম কুড়ানোর গল্পটা শোনা যাক। নানা নানীর বাসায় হয়তো বেড়াতে সবাই কমবেশি অনেক পছন্দ করে থাকে। আমিও ঠিক তাদের মধ্যে একজন ।আমি নানুদের বাসায় বেড়াতে অনেক পছন্দ করে থাকি। বিশেষ করে যখন গরমের ছুটি পড়তো তখন বেশি নানুদের বাসায় বেড়াতে যাওয়া হতো। নানুদের বাসায় বেড়াতে এই কারণে যাওয়া হতো মামার মেয়ে আমার ঠিক সমবয়সী ।তার সাথে আমার অনেক ভাব ছিল ।তাই ছুটি পেলেই তার টানে টানে নানুর বাসায় চলে যেতাম ।কোথাও যদি সমবয়সী খেলার সাথী থাকে তাহলে হয়তো সেখানে একটু বেশি বেশি যাওয়া হয় । নানুদের বাসায় বেড়াতে যেতে চাইলে আমার আম্মু তেমন একটা যেতে দিত না। কেননা সেখানে গেলে আমি ঠিক মতো খাওয়া-দাওয়া করতাম না ।সারাদিন এখানে ওখানে খেলা করে বেড়াতাম। সেজন্য আমার আব্বু আম্মু তেমন নানুদের বাসায় বেড়াতে যেতে দিতে চাইতো না। তবুও আমি অনেক বাহানা এবং কান্নাকাটি করে যেতাম।


mango-tree-164973_1280.jpg
Source





নানুদের বাসায় যেতাম যখন আমপাকা সময় হতো ।তখন নানুদের বাসার আশপাশের কিছু সমবয়সী মেয়ে ছিল তাদের সাথে আমার অনেক ভালো বন্ধুত্ব ছিল। যখন আমপাকার সময় হতো তখন গরমের ছুটিতে আমি নানুদের বাসায় যেয়ে তাদের সাথে খেলাধুলা করতাম। সেই দিনগুলো আসলেই ভলার নয় ।সেই দিনগুলো মনে পড়লে আবারও মনে হয় ছোটবেলায় ফিরে যায় ।কিন্তু এটা কখনোই সম্ভব না ।আমার মামার মেয়ের নাম নিপা, সে অনেক চালাক এবং বুদ্ধিমান ।সে আমাদেরকে সবকিছু বুঝিয়ে দিত যখন আম পারতে যেতাম। তখন সে গাছে উঠতো এবং আমাদেরকে আম কুড়াতে বলতো ।আমি তেমন একটা গাছে উঠতে পারতাম না। তাই ওরা যদি গাছে উঠতো তখন ওদেরকে বলতাম আমাকে একটা আম দাও আমি নিচে বসে খাই। গাছে বসে আম খাওয়ার মজায় আলাদা। যারা গাছে উঠতে পারে তারা হয়তো জানে কিন্তু নিজ থেকে আম খেতে ভালো লাগে না ।আর যারা গাছে ওঠে তারা সব থেকে ভালো ভালো আমগুলো খাই। আর যারা নিচে থাকে তাদেরকে তেমন একটা ভালো আম দেয় না ।আমি নিচে বসে খেতাম তাই আমি জানি ।আমাদের ছোট নানুদের আম বাগান ছিল সেই আম বাগানের সব থেকে পিছনে একটা গাছ ছিল। সেই আম গাছের আম অনেক মিষ্টি ছিল। আমরা বিকেলে যেয়ে মাঝেমধ্যে সেই আম গাছ থেকে চুরি করে আম পেড়ে এনে ঝাল দিয়ে মাখিয়ে খেতাম। নানুকে বললে নানু আমাদেরকে আম পাড়তে দিত। কিন্তু আমরা প্রায় প্রতিদিন আম ঝাল দিয়ে মাখিয়ে খেতাম তাই মাঝেমধ্যে চুরি করেও খেতাম।


tree-2261027_1280.jpg
Source




একদিন সন্ধ্যা বেলায় হঠাৎ আকাশে মেঘলা মেঘলা দেখে মনে হল বৃষ্টি হবে। তাই আমরা সবাই মিলে প্রস্তুত নিলাম ছোট নানুদের সেই আম বাগানে আম কুড়াবো ।প্রতিবার ঝড় হলে আমরা অনেকগুলো আম কুড়িয়ে আনতাম ।তাই যে বারি ঝড় হতো সেবারি আম কুড়াতাম ।কোন বারি আমাদের মিস হতো না। সবাই মিলে প্রস্তুত নিলাম সাথে কিছু জায়গাও নিলাম আম করিয়ে তাতে রাখবো বলে ।আমার সাথে আমার নানীও গেল আম কুড়াতে ।নানির সাথে আমাদের অনেক ভাবছিল। যে কাজ করতাম সেই কাজে নানী আমাদেরকে উৎসাহিত করত ।তাই আম কুড়াতে যখন আমরা যাচ্ছিলাম তখন নানী আমাদের সাথে গেল ।সন্ধ্যা বেলায় ঝড় উঠেছিল তাই মানুষ আশপাশের প্রয়োজনীয় জিনিস এবং বাইরে খরি থাকলে সেই জ্বালানি খড়ি পানি থেকে রক্ষা করার জন্য ঘরে তুলছিল। তাই চারিদিকে মানুষ হৈই চৈই বেধে গিয়েছিল। বাতাসে এতো হাওয়া বইছিল যে মনে হচ্ছিল আমাদের যেন উড়িয়ে নিয়ে চলে যাবে ।আমার নানী একটু চিকন ছিল তাই নানী ঠিক মতো দাঁড়াতে পারছিল না ।মনে হচ্ছিল যেন উড়ে চলে যাবে ।এদিকে অনেক মানুষ বাগানে আম কুড়াতে এসেছে ।আমাদের সাথে সাথে কেউ আসছিল কেউ আবার এদিক থেকে ওদিকে দৌড়াচ্ছে বাড়ি চলে যাওয়ার জন্য। ঠিক এমন সময় নানীর সাথে এসে একজন ধাক্কা দেয়। সেই ধাক্কায় নানী ছিটকে মাটিতে পড়ে যায়। নানীর মুখে লেগে একটা দাঁত ভেঙ্গে যায়। তখন নানী অনেক কষ্ট পেয়েছিল। নানীর দাঁত দিয়ে অনেক রক্ত বের হচ্ছিল ।তখন আমাদের অনেক খারাপ লাগছিল। হয়তো নারীকে আমাদের সাথে না নিয়ে এলে এমন অবস্থা হতো না ।নানী এতটাই কষ্ট পেয়েছিল যে নানীর চোখ দিয়ে পানি ঝরে গিয়েছিল ।হয়তো লোকটাও ইচ্ছে করে ধাক্কা মেরেছিল না। লোকটা বাড়িতে যাওয়ার জন্য অনেক দৌড়ে যাচ্ছিল তাই নানীর ধাক্কা লেগেছিল। তখন নানীকে বাড়ি নিয়ে এসে চিকিৎসার পরামর্শে কিছু ওষুধ খাওয়ানো হয়েছিল ।আমার অনেক ভয় লাগছিল মামা কিছু বলবে নাকি ।ঠিক তেমনি হলো মামা আমার আর মামার মেয়েকে অনেক বকুনি দিল ।বলল আর যেন আম কুড়াতে না যাওয়া হয় ।আমরা চুপচাপ বসে ছিলাম একটাও কথা বলছিলাম না ।আল্লাহর রহমতে সকালবেলায় অনেকটাই সুস্থ হয়ে গিয়েছিল ।আশা করি আপনাদেরও জীবনে অনেক ছোট ছোট ছোট গল্প আছে ।আপনারা চাইলে আমাদের সাথে সেই গল্পগুলো শেয়ার করতে পারেন। আশা করি আমার ছোটবেলার গল্প আপনাদের ভালো লেগেছে। কতটা ভালো লেগেছে আশা করি কমেন্টে জানাবেন।

🌹 ধন্যবাদ সবাইকে🌹

আশা করি আমার আম কুড়ানোর গল্প আপনাদের ভালো লাগবে । আজকে এই পর্যন্ত শেষ করছি অন্য দিন নতুন কিছু নিয়ে আবার আপনাদের সামনে হাজির হব।

ব্লগার@mdemaislam00
ব্লগিং ডিভাইসvivo y 12a
অনুবাদেমোছাঃ ইমা খাতুন
Screenshot_2024_0519_194135.jpg
আমার নাম মোছাঃ ইমা খাতুন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমার বর্তমান ঠিকানা ষোলটাকা, গাংনী মেহেরপুর। আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি করতে অনেক পছন্দ করি এছাড়াও আমি লেখালেখি এবং ডাই পোস্ট করতে ভালোবাসি। আমি এসএসসি পাশ করেছি আমাদের গ্রাম থেকে এবং পাশাপাশি ব্লগিং করি এবং নিজের যোগ্যতাকে যোগ্য অবস্থান দেওয়ার চেষ্টা করি। আমি বিশ্বাস করি মানুষ একদিন হয়তো থাকবে না কিন্তু মানুষের কর্ম সারা জীবন থেকে যাবে এই জন্য আমি কাজের ভিতরে আসল শান্তি খুঁজে পাই।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

ঝড়ের দিনে আপনার নানির সাথে আম কুড়ানোর সুন্দর একটি গল্প আজকে আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন আপু। আসলে ঝড় বৃষ্টি হলে অনেক মানুষ ভয়ে তাদের বাড়িতে আশ্রয় নেয়ার জন্য দৌড়ে যায়। আর ঠিক তেমন একটি লোক দৌড়ে যেদিকে আপনার নানির সাথে ধাক্কা লেগে আপনার নানীর একটি দাঁত ভেঙে গিয়েছিল। তবে পরবর্তীতে সে সুস্থ হয়ে গেছে এটা জেনে খুবই ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু গল্পটি পড়ার জন্য।

আসলে এই আপু আপনি নানুর বাড়িতে গিয়ে আম কুড়ানোর যে গল্পটি শেয়ার করলেন। এই রকম স্মৃতি বিজড়িত ঘটনা গ্রামীণ পরিবেশে যারা বেড়ে উঠেছে প্রতিটা মানুষেরই রয়েছে। যেটা আমার ক্ষেত্রেও গ্রীষ্মকালীন সময়ে নানুর বাড়িতে গিয়ে আম কুড়ানো সমবয়সীদের সাথে বিভিন্ন খেলায় মেতে ওঠার সেই দিনগুলো খুবই মিস করি। আপনার লেখা গল্পটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো।

গল্পটি ভালো লাগার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।