আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা

in hive-129948 •  3 years ago 

শুভ সন্ধ্যা,

"আমার বাংলা ব্লগ" এর সকল সদস্যদের প্রতি আমার আন্তরিক সালাম জ্ঞাপন করছি-আসসালামু আলাইকুম। আশা করি
মহান আল্লাহর তায়ালার রহমতে সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আজকে আমি যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবো সেটি হলো-"আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা " আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।

hello-i-m-nik-z1d-LP8sjuI-unsplash.jpg

Image Source by Unplash

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও রয়েছে নিজস্ব শিক্ষাব্যবস্থা,শিক্ষানীতি । সরকারি পর্যায়ের নীতি-নির্ধারকেরা তাদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে দেশের কল্যাণ-উপযোগী এ শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেন। বর্তমানে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা কেমন? আজকে অনেকটা তুলে ধরবো। আশা করি বুঝতে অসুবিধে হবে না।

আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা তিন স্তরবিশিষ্ট। প্রাথমিক স্তর, মাধ্যমিক স্তর এবং উচ্চশিক্ষা বা বিশ্ববিদ্যালয় স্তর। সরকারি-বেসরকারি বিদ্যালয়গুলো পরিচালিত হয় পাঁচ বছর মেয়াদী প্রাথমিক, সাত বছর মেয়াদী মাধ্যমিক, এর মধ্যে তিন বছর মেয়াদী জুনিয়র, দুই বছর মেয়াদী মাধ্যমিক এবং দুই বছর মেয়াদী উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়।

বেসরকারি বিদ্যালয়গুলো নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত হয়। বাংলাদেশে তৃতীয় পর্যায়ে অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষা তিন থেকে পাঁচ বছর মেয়াদী। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত ৪৬টি পাবলিক ও প্রায় ১০৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তত্ত্বাবধানে অধিভুক্ত কলেজের মাধ্যমে এ শিক্ষা দেয়া হয়। শিক্ষার্থীরা শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে বাংলা বা ইংরেজির মধ্যে যে কোনোটিকে বেছে নিতে পারে।

আমরা জানি,
শিক্ষা মন্ত্রণালয় হলো শিক্ষার জন্য রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ দফতর। এর অধীন কয়েকটি অধিদপ্তরে রয়েছে। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের (শিক্ষা প্রকল্প ও কারিগরি প্রকল্প) মাধ্যমে এ অধিদপ্তরগুলোর কার্যক্রম পরিচালিত হয়। সংবিধানের (১৭) নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রতিটি শিশু মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত বিনামূল্যে শিক্ষা সুবিধা পাওয়ার অধিকার রাখে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো দশটি (১০) শিক্ষা বোর্ডে অধিভুক্ত।
বোর্ডগুলো তিনটি পাবলিক পরীক্ষা পরিচালনা করে: জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা, মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা এবং উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষা। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কলেজ হিসেবে পরিচিত। এছাড়া রয়েছে মাদ্রাসা ও ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল। এগুলো যথাক্রমে মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড এবং বিদেশি শিক্ষা বোর্ডের তালিকাভুক্ত। মাধ্যমিক পরবর্তী পর্যায়ে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ স্কুল পরিচালনার জন্য কারিগরি শিক্ষা বোর্ড গঠন করা হয়েছে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড প্রাথমিক, নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যবই উন্নয়ন, অনুমোদন এবং ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্ত্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশ ব্যুরো অব এডুকেশনাল ইনফরমেশন অ্যান্ড স্ট্যাটিসটিক্স (ব্যানবেইনস) গঠন করেছে, যা সব পর্যায়ের শিক্ষাসংশ্লিষ্ট তথ্য সংরক্ষণ করে। বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন সময়ে গঠিত বিভিন্ন শিক্ষা কমিশন থেকে পাওয়া তথ্য ও অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে একটি শিক্ষানীতি প্রকাশ করে। এছাড়া অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশে অনেক অলাভজনক সংগঠন রয়েছে, যারা সামাজিক সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য অনানুষ্ঠানিক ও আধা-আনুষ্ঠানিক শিক্ষাদান কার্যক্রম পরিচালনা করে।

আমরা জানি যে,
শিক্ষা মানবিক গুণসম্পন্ন নাগরিক সৃষ্টির কারখানা। শিক্ষা মানুষের নৈতিক ভিত্তি শক্তিশালী এবং ভালো অভ্যাস রপ্ত করার সুযোগ তৈরি করে। এছাড়াও ভালো মানুষ তৈরীর মাধ্যম। শিল্প, প্রশাসনসহ প্রতিটি সেক্টরেই দক্ষ সংগঠক সৃষ্টিতে শিক্ষার বিকল্প নেই। কিন্তু পরিহাস এটাই, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা স্থায়ী ভিত্তির ওপর এখনও দাঁড়ায়নি। আবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি-বেসরকারি এ দুপর্যায়ে বিভক্ত। শিক্ষা প্রশাসন হলো সরকারি। ফলে শিক্ষায় দুর্নীতির পথটা বিস্তৃত। যদিও কেউ কেউ বলছে, শিক্ষায় দুর্নীতি কমেছে, আসলে কমেনি। শিক্ষক এবং ছাত্র উভয়কেই টু পাইস দিয়ে শিক্ষা প্রশাসনে কাজ করাতে হচ্ছে। যারা শিক্ষা প্রশাসনে কাজ করছেন তারা প্রায় সবাই শিক্ষকতা থেকে এসেছেন; তাদের মানসিকতা নিম্নমানের হবে এটা ভাবতেও লজ্জা লাগে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখন বাণিজ্যভিত্তিক ছেড়ে দেয়ায় হতদরিদ্রের সন্তানেরা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খরচ কোনোভাবেই জোগান দিতে পারছে না। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো কাদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে, এটাও বিবেচ্য বিষয় হওয়া জরুরি। একজন উগ্রবাদী যদি কোনো উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পায় সেখানে উগ্রবাদীমনা শিক্ষকরা শিক্ষকতা করার সুযোগ পেয়ে ছাত্রদের জঙ্গিবাদী দীক্ষা দেবে, এরকম ঘটনা তো এখন অহরহই ঘটছে। শিক্ষার ব্যবস্থা এক চক্ষুপনা হয়ে উঠেছে। সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে অঙ্গীকারবদ্ধ; কিন্তু দৃশ্যমান বিষয় হলো সরকার বেছে বেছে মনগড়াভাবে কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ল্যাপটপ বিতরণ করছে এবং গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠানে ডিজিটালাইজ কক্ষ তৈরির সুযোগ দিচ্ছে। অনুরূপ বৈষম্য রেখে শিক্ষায় অগ্রগতি হয়েছে কথাটা নিতান্তই বেমানান।

এদিকে রয়েছে সরকারি-বেসরকারি শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য। ইনক্রিমেন্ট ও বাড়ি ভাড়ায় বৈষম্য রয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধানেরা উচ্চতর স্কেল পাচ্ছে, কিন্তু বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানেরা তা পাচ্ছে না। পাহাড়সম বৈষম্য রেখে শিক্ষায় ভালো কিছু আশা করা যায় না। শিক্ষা জাতির অগ্রগতির অন্যতম অনুষঙ্গ, তাই শিক্ষায় বৈষম্য কোনোক্রমেই বাঞ্ছনীয় নয়। এতকিছুর পরও শিক্ষামন্ত্রীর নেতৃত্বে বছরের শুরুতে একসঙ্গে যত বই ছাত্রদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে, এটা বিশ্বের মাঝে নজির বটে। শিক্ষা ক্ষেত্রে অপরাজনীতির কারণে সংঘাতের নির্মম পথ রচিত হয়ে গেছে। যদি প্রশাসনিকভাবে শক্ত পদক্ষেপ ছাত্রদের অপকর্মের বিরুদ্ধে নেয়া হয়, শিক্ষা প্রশাসন যদি অটল ভূমিকায় থাকে তবে অনিবার্যভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কমে আসবে।
শিক্ষায় সমস্যা অদৃশ্য কিছু নয়। আবার শিক্ষায় বৈষম্যও দৃশ্যমান। স্বাধীনতার ৪৫ বছরেও এসব সমাধান হবে না, এটা ঠিক নয়। এত টাকা পাচার হচ্ছে! এত টাকা লুটপাট হচ্ছে! তাছাড়া থোক বরাদ্দের টাকাগুলোর সঠিক ব্যবহার হলে শিক্ষায় সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে যা বৈষম্য রয়েছে তা অবশ্যই সমাধান সম্ভব।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

হ্যালো বন্ধুরা, আমি জানি আপনি STEEMIT-এ নতুন, কিন্তু চুরি এড়াতে আপনার আরও ভালভাবে গাইড করা উচিত, আমি আপনাকে সম্প্রদায়টি Newcomers Community দেখার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। এই নিবন্ধটি এখান থেকে কপি এবং পেস্ট করা হয়েছে।

তন্ময় শাহরিয়ারের কলাম ‘বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা’

অনুগ্রহ করে @rme, @shy-fox নতুনদের সাথে আরও সতর্ক থাকুন, তাদের গাইড করার চেষ্টা করুন যাতে তারা তাদের সম্প্রদায়ে এই ধরনের চুরির কাজ না করে।

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে @ruzmaira । আপনি দারুন একটি কাজ করেছেন । ঠিকই বলেছেন এটি ১০০% plagiarized পোস্ট । @rex-sumon দয়া করে এই পোস্টটি চেক করে দেখুন ।

কখনও কখনও এই নতুন ব্যবহারকারীরা জানেন না কী পোস্ট করতে হবে এবং এই ধরনের কাজ করতে হবে এবং নির্দেশিকা প্রয়োজন৷
যাইহোক, এমন একটি সম্ভাবনা রয়েছে যে এই অ্যাকাউন্টগুলি সম্প্রদায় থেকে ভোট গ্রহণের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছিল এবং এটি প্রকৃত ব্যবহারকারী নয়।

আইটেম চুরির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য তাদের একটি টাস্কফোর্স তৈরি করা উচিত।

মাফ করবেন আমার বাংলা হল আমি গুগল ট্রান্সলেটর ব্যবহার করছি এবং আমি যা লিখতে চাই তা কখনই খুব ভালোভাবে প্রকাশ করে না।

Yes, our new project @abb-school will be launched soon.

That project sounds great, a question in your community tends some users to plagiarize. I work as a private detective at Mosquito Squishers although I am still a beginner in the community, but I have experience on other platforms such as whaleshares catching plagiarists.

You would give me permission to post a list of new article thieves every 2 days in your community to help you combat plagiarism.

Plz join first our discord channel for further discussion:

https://discord.gg/6Khunw2y

Tell me with whom I can speak directly in the discord to request authorization to create 2 or 3 articles a week with a list of plagiarists that operate in the community.

আমি আসলে খুবই দুঃখিত, আমি নতুন ইউজার ছিলাম, আমি বুঝতে পারিনি,আমার ভুল হয়ে গেছে। আমি পুরো বিষয় বুঝতে পারলাম। ইনশাল্লাহ পরবর্তীতে আমি সবকিছু আসল দেয়ার চেষ্টা করবো। দয়া আমার করে এই প্রথম ভুল ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

তোমাকে আমার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে না। আপনার অবশ্যই সম্প্রদায়ের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত

শিক্ষা নিয়ে বেশ গভীর কথা লিখেছেন আপু। অনেক শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।

সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ।

@mirakhatun আপনি কি আপনার steem i'd কন্টিনিউ করতে ইচ্ছুক ?
যদি আপনি আপনার steem i'd পুনরায় চালু করতে চান তবে আপনাকে আমাদের discord এ আপিল চ্যানেলে যোগাযোগ করতে হবে।
আশা করি আপনি আমার কথা বুঝতে পেরেছেন।